বিষে যার তৃষ্ণা মিটে
তুমি তাকে তিক্ত করবে কোন বিষাদে?
জানো না-
দুঃখ নিষিক্ত অন্তরে অন্ধকারের ভয় থাকতে নাই।
আমি তো ভালোবাসতেই জানিনে; তবে
কিসের এতো লালসা তোমার
কিসের নেশায় বার বার খোঁচাচ্ছো হৃদয়!
চোখের বাঁকে বিষ মাখা উলঙ্গ তলোয়ার; হতাশ হবে
সর্বনাশ ঝেঁকে বসবে! আমি নই পাশা

দেয়ালের শরীরে শরীর বেঁধে দিব্যি গজিয়েছে শ্যাওলার জীবন। খুঁজে দেখিনি
কোন খেয়ালে বশ মেনে ছিলো মন, কোমল স্পর্শের মতন ছুঁইয়ে ছিলাম
বাতায়নের পাশে দেয়াল ভেদ করে গজে উঠা আগাছার শ্যামল বদন!
জীর্ণ ছাদে, কার্নিশে নূতন পুরাতন অসংখ্য মাকড়সার জাল, হাওয়ার খোপে
উঁকি মারা সূর্যের

শোক হারিয়েছে শোকেরই চাপে,
কান্না থেমে গেছে কান্নারই মৃত্যু কূপে
মুখের ভাষা নাই
বুকের স্পন্দনে ভীষণ ক্ষোভ;
রক্ত ঘাম করে অন্ন জোগায় যে মানুষ
তার তো আর কিছুতেই ছিলনা লোভ! রক্তের উপর দাঁড়িয়ে করছে নিঃশ্বাসের রোধ
জীবনের দাম হাঁকাচ্ছে সমাজ দেবতারা
রক্তে ঘামে মিটিয়ে দিয়েছি যার শোধ।

মৃত্যুর মিছিল, লম্বা হচ্ছে লাশের সারি
রক্তের স্রোত, মাংসের দলা, চূর্ণ বিচূর্ণ হাড় গোড়
রক্ত, শরীর, প্রাণ, আহাজারি
যন্ত্রণার আর্ত-চিৎকারে ভারী হয়ে গেছে গোটা বাংলাদেশের বাতাস
চারিদিকে হা হুতাশ; শোকের মাতম, মর্মস্পর্শী দৃশ্যপট
নির্বাক মনুষ্যত্ব! বিমূঢ় জাতির অন্তর্যামী কে শুনবে কার কান্না
কে গুছাবে কার বেদনা
ভাষা হীন মানুষ কি বলে

মানুষ হবো বলে সে দিন আমি কবি হতে চাইনি,
আমি চাইনি যে বহুদূর উড়ে এসে প্রজাপতিরা আমার আঙ্গুলের ডগায় আশ্রয় নিক,
তুমিই আমাকে কবিত্ব দিলে, প্রজাপতির আশ্রমের ঢাল বানালে! তোমার প্রতি আমার কোন অভিযোগ নাই।
যে দিন ঝর্না স্নানে সিক্ত হতে হতে নিজের বুকের কপাট উন্মুক্ত করে
পৃথিবীর

মৃত্যু!
সে তো একটা পর্দা মাত্র, যার
এপার- ওপারের মধ্যে দূরত্ব হচ্ছে একটি মাত্র নিঃশ্বাস!
প্রত্যেকের জীবনে এটি একবারই আসবে,
আপনি চাইলেই এর স্বাদ দুবার পেতে পারবেন না;
সুতরাং সবার উচিত
একে তৃপ্তির সাথে গ্রহণ করার জন্য নিজেকে তৈরি করা। যেন বলতে পারি
আহ তৃপ্তি
যাচ্ছি চির পূর্ণিমার দেশে

এককালের জংলি গন্ধ বয়ে আনা আমাদের হিঙ্গুলী খাল, এখনো আঁকে ধড়াসের পিঠের মতন বক্র ফুলি, আজকাল পলি জমা ক্লেদে গোমরা মুখি হয়ে থাকে, গোলা জলে মিশে থাকে দু’ পাড়ের বসতির কষ্ট, প্রাচীন কালকেউটেরা এখনো ভাসে- নতুন নতুন খোলসে। ভাঙ্গা পাঁজরে

খুঁজি আর ঘুরি
তল অতল সিম অসীম গুপ্ত অন্দর
জল স্থল ও গগন বিচারী; খুঁজি অস্তিত্বের আমারি
অনল বিক্ষিপ্ত দুর্গম প্রান্তর, কৃষ্ণ গুহ ‘ভূত অভ্যন্তর
আদৌ কি পাবো? স্বীয় ব্রহ্মাণ্ডের পবিত্র মোহনা
এও এক দারুণ বিদ্রোহ
এও এক দারুণ আগ্রহ! কে বলতে পারবে-
এই গ্রহে জন্মেছি বলেই কি

আমাকে শুইয়ে দিও নরম মৃত্তিকার কোলে
সেখানে কষ্টরা শীতল, নির্জীব হয়ে লেপটে থাকে চির পঙ্কজলে।
অথবা ভাসিয়ে দিও সাদামাটা কন ভেলায়
নামিয়ে দিও অথৈ সমুদ্রে, দীর্ঘশ্বাসে যার বুক সর্বদা ফুসে থাকে
সুনামির কম্পনে যার অতলে অবিরাম ভাঙ্গা গড়ার খেলা চলে। তোমার আঁচলে মুছে দিও আমার

না,
অবশিষ্ট নেই
কোন উদ্দীপনা! কিছু অজানা আবশ্যিক ছাড়া
এখানে,
আমার মন ও মস্তিষ্কে ভর করছে মারাত্মক হিংসে পনা!
নিজেকে হিংসে করার মত অতটা আলোকিক নই যদিও
তবু ঘৃণার পরিবর্তে হিংসা করাটাই অনুকূলিক!
ক’ফোটা চোখের জলে
অথবা
ক’টা মায়া কথার ভাষায় আশ্রয় নিই নি
কথিত সংসারে! ব্যর্থতা টা আরো

এক মুঠো মাটি আলিঙ্গন করি বুকে তুলে
এক মুঠো স্বপ্ন বপন করি হৃদয়ের চাতালে।
সোনা রোদ্দুর উজ্জ্বল সকালে
এক বিন্দু শিশির ছুঁই রুক্ষ আঙ্গুলে;অরণ্যেক প্রহেলিকায়
নির্মল সজীবতায় হেসে উঠে লাল সবুজের পতাকা,
– এই টুকু প্রশান্তির নামই স্বাধীনতা!
এই টুকু ভালোবাসারই কাঙাল বাংলার আমজনতা। ফাগুনের তপ্ত

হে বসন্ত হও অনন্ত
সূর্যের ডানায় উড়ে বেড়াও আদিগন্ত পথ
দীপালির গ্রীবায়- কাঁচা দুষ্টুমিতে
ছুঁইয়ে দাও তোমার প্রাণবন্ত পেখম
অনুপম লজ্জারা পালিয়ে যাক আমার প্রিয়তমার ওষ্ঠ থেকে তেপান্তরের মাঠ ছুঁইয়ে আয়ুষ্মান করে দাও
বিস্তীর্ণ শস্য ক্ষেত। গুন গুন গুঞ্জরনে উঠে আসুক মৌমাছিরা
প্রাণান্ত উল্লাসে ছুটে আসুক কৃষাণীর

রাতের আকাশ ছিল কান্না ভেজা
হিম ঝরা বাতাসে জড়ানো বিষণ্ণতা
অলস মেঘের আড়ালে এক ফালি চাঁদ,
ভাবনার বিষাদ চোখে
আমার মনের খাঁচার অচিন পাখি হয়েছিলো উন্মাদ! জানালার কার্নিশে এক সংসার জালালি কবুতর
উর্বার গুঞ্জরনে মেতে থাকে নিরন্তর
তুচ্ছ সব দুঃখ বিলাস;
বুক পেতে বরণ করে জীবনের আমূল