শখের বশে কবিতা লেখা শুরু, কিন্তু নিজেকে কবি বলে পরিচয় দেন না। প্রচুর বই পড়েন, বই পড়া পছন্দ করেন, শুধুমাত্র কবিতার বই নয় যেকোন বই। আর মাঝে মধ্যে টুকিটাক লেখালেখি। বর্তমানে শখের বশেই সম্পাদনার সাথে যুক্ত আছেন “দ্বিপ্রহর” কবিতা ও গল্প সংকলন এবং “দ্বিপ্রহর” ম্যাগাজিনের সাথে।
প্রিয় কবি জীবননান্দ দাশ, এছাড়া রবীন্দ্রনাথ, বুদ্ধদেব বসু, হেলাল হাফিজ, শামসুর রাহমান, সুনীল, আবুল হাসানের কবিতাও প্রিয়। প্রিয় উপন্যাসিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। পড়ালেখা ছাড়া বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন, পছন্দ করেন একা একা বেড়াতে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় জিনিস ঘুম আর অপ্রিয় জিনিস ধর্মীয় তর্ক….
পাখির ব্যাথা বুঝে না বলেই
তীরন্দাজ অনুশোচনায় ভুগে না।
সব সিঁড়িই উপরের দিকে নেয় না
শেষটায় যে ছাদের কার্নিশ;
লোভে পড়ে টপকাতে গেলে
নিশ্চিত পতন।
কতটুকু এগুবো
তা না ভাবলেও,
জানতে হয়
থামবো কখন
—————-
#লোভ
২৮ ০২ ২০২০
আজিমপুর, ঢাকা।
প্রত্যাগত না হয়েও প্রতিদিন
আমাদের খুন হতে হয়,
বিবর্ণ দেয়ালে প্রিয় বর্ণমালায়
লেখা হয় ব্যার্থ প্রতিবাদ।
সময়ের পরিবর্তনের সাথে
অস্পষ্ট হয়ে যায় সব,
তনুদের অভিশাপে কিছুই
যায় আসে না কারো।
অস্থিরতায় কাটে সময়
ভোর হতেই না জানি
কে হয়ে যায় আবারও
শেষ সংবাদ!
—————
১৪০১২০২০
শেওড়াপাড়া, ঢাকা।
জীবনটাও যে বড্ড জটিল
অনেকটা সরল অংকের মতোই।
প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়
বন্ধনী পার হওয়ার আগেই
যে থাকে রেখা বন্ধনীর বাঁধা।
কোন মতে তা না হয়
পার হওয়া গেল,
কিন্তু এরপর–
এরপর শুরু গোলকধাঁধা ;
গুণ আগে না ভাগ আগে
তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই
বেজে উঠে প্রথম ঘন্টা শেষের ধ্বনি;
এখনো যে বাকি সুদকষা, জ্যামিতি,
পাটিগণিত আর পরিমিতি!
সরলটা
রাতের শেষ প্রহর;
অস্পষ্ট আলোয়
চুলে ঢাকা তোমার মুখ,
তুমি গভীর ঘুমে বিভোর।
মধ্যরাতে যখন পড়ছিলাম
টেবিল ল্যাম্পের আলোয়,
তখন ডেকেছিলে কাছে
কিন্তু তাকাইনি আমি, দেইনি সাড়া
তোমার কাঙ্খিত আহবানে।
জানি তুমি এক খরস্রোতা নদী
যেখানে সাঁতরিয়েছি আমি হাজারবার,
জানি আমি এ নদীর গভীরতা ;
কত নিস্তরঙ্গ ঢেউ আসে
সময় – অসময়ে।
আজ আর
তুমি আমার অধর ছুঁয়ে দেখ
রক্তের শিহরণ।
শরতের সাদা মেঘ,
ঐ দূরের শুভ্র কাশফুল
ডাকছে তোমায়।
বিকেলের পরাজিত সূর্য,
নীলাভ আকাশ লাল করে ফেলবে।
তখন হয়তো তোমার
সময় হবে না রংধনু দেখার;
সময়ের স্রোতে ভাসিয়ে দিবে নিজেকে।
সময় তোমাকে দিবে
অনেক কিছুই,
কিন্তু নিয়ে যাবে
কিছু বন্ধুকে,
দূর থেকে আরও দূরে।
হঠাৎ কোন একদিন
অস্বচ্ছ চোখ
রাত নেমেছে আজ আবার,
হাজার বছরের নিষিদ্ধ
পূর্ণিমার রাত।
কুয়াশায় মাখা, রক্তে ভেজা
অপার্থিব আলোয় ভেসে যাওয়া
এক দুঃস্বপ্নের রাত।
ঘুম গুলো সব
পড়েছে ঘুমিয়ে,
নিঃশ্চুপ এই আলো আঁধারিতে।
আকাশ ভরা রূপালী আলোগুলো
একা একা থাকে জেগে, তাই
অপেক্ষায়, ফিরে আসার
হারিয়ে যাওয়া সুসময়ের।
রাত নেমেছে আবার আজ,
শূণ্যতা গুলোকে
আরও শূণ্য করে,
হাজার বছরের আরও এক
মৃত স্বপ্নের রাত।
কীট দংশনে শিব হয়নি নীল,
নীল হয়েছিল হিংসায় –
নিজ অর্ধাঙ্গি দেবী চণ্ডীর।
ষড়যন্ত্রের ভুল পূজোয়
স্বর্গ হারায় নীলাম্বর।
অভিশাপের মর্তলোকে
জীবন সুতো এক হয় আবার
কালকেতু – ফুল্লরার।
শিব পূজারীর অব্যর্থ শরে
অস্থির সব বনচর,
ছলনাময়ী চণ্ডী ফিরে
রূপ নিয়ে গোধিকার।
আপন পূজোয় তুষ্ট দেবী
বর পায় আবার নীলাম্বর,
ছলনাময়ীকেই ছলনায় ফেলে
করে তারা আবার,
স্বর্গ পুনরুদ্ধার।
শুকতারা না চিনে
কালপুরুষ দেখতে চাওয়া যেমন ভুল,
জীবন বেদ না জেনে
তোমাকে বুঝতে যাওয়াও ছিল ভুল।
গিয়েছিলাম ভুলে,
কচুরিপানা আর পদ্মের,
মৌলিক পার্থক্য।
একজন পাল্টায় ঘাট অবিরাম,
আর অন্যজন ?
অন্যজন জীবন কাটায় স্থির থেকে
হৃদয়ে বাঁধা যে তার অদৃশ্য শিকল !
যে শহর ঘুমিয়ে পড়ে অসময়ে,
ক্লান্ত মানুষের শ্রান্তি ভুলে।
জীবন্মৃতের মতন পড়ে রয়
স্বপ্নগুলো বেহিসাবে যে শহরে;
সেই শহর তো আমার নয়।
যে শহরে পড়ে থাকে আজ
হাজারো স্বপ্নের লাশ,
রঞ্জিত রাজপথ আর
বারুদের গন্ধে ভরা বাতাস;
সেই শহরতো আমার নয়।
আমরা জানি না
দিন কিভাবে বদলায়,
শীতে রং হারানো
গাছেরও যে প্রাণ আছে
তা অস্বীকারে গাছের
কী আসে কী যায়?
ঘুমবিহীন চোখ
ছুটে চলে মানুষ,
শহর থেকে শহর
নগর থেকে নগর,
এখন সময়
রাত্রি দ্বিপ্রহর
মেঘফুল নেই বলেই
বৃষ্টিতে আপ্লুত হই আমরা,
জলের কোন রঙ নেই বলে
কান্নায় কখনো রংধনু হয় না।
ঝড় ও জলের অদৃশ্য সমীকরণ
বীজগাণিতিক কোন নিয়ম মানে না,
তাই হয়তোবা বিপাশার উপেক্ষা
কখনো নিরঞ্জনের অপেক্ষার মাঝে
কোন দেয়াল হয়ে দাঁড়ায় না।
শীতের শেষ, কালবৈশাখীর দিন
আসি আসি করছে তখন,
এমন এক কুয়াশাচ্ছন্ন হিমেল সকালে
নিরঞ্জনকে জিজ্ঞেস করলাম-
“ঝড়কে