শীত
শীত এলো বুঝি!
তোমার নাইটগাউনের ভেতর ঢুকে পড়ি
শীতলপাটির মতন সুখ!
হাত কী ঠান্ডা – জলের মতন
কাজ করার বড্ড সময় আছে বাকি
নাইটগাউন একটা রক্তিম উত্তাপের নাম
খুব সহজ ইকোয়েশন!
আঙুল থেকে চুঁইয়ে পড়ে আরণ্যক প্রেম
বিয়ারিং জীবন! গড়িয়ে গড়িয়ে ঠিকই
দুপুরের দিকে যাত্রা করা যাবে।
মা (২০)
মানুষ মারা গেলে আকাশের তারা হয়
খুব ছোটবেলায় মা এভাবেই বলতেন
বলতেন – আমি যখন চোখনিদ্রায় যাবো তখন তুইও আমায়
এই তারাদের মাঝেই খুঁজে পাবি।
আজ দীর্ঘ নয় বছর হলো মা নেই
সেই যে তিনি চোখনিদ্রায় গেলেন আর চোখ খুললেন না
আমি পুব আকাশে খুঁজি – নেই
পশ্চিমে – নেই
দক্ষিণে
শীতজন্ম
শীতের জানালাটা এবার খুলে দাও
সকালের হলুদ রোদটুকু তোমার নরম শরীরে পড়ুক,
সারারাত গুহায় থেকে যে মানচিত্র এঁকেছো মনের ভেতর
এবার তাকে পৃথিবীর বাইরে ছেড়ে দাও দলছুট পিঁপড়ার মতো।
তৃতীয় চোখে মেলে তাকিয়ে দেখ দিগন্তের ওপারে
বুক খোলা শার্টে যে ছেলেটি দাড়িয়ে আছে সীমান্তের শেষ দাগে
শিশির ভেজা কম্পিত
কেউ নদী হতে পারে নাই
একটা নদীর মতো লম্বা হওয়ার সাধ ছিল তার
গোপনে গাভীর দুধ দোহন পদ্ধতিটা যদি জানা যেতো
তবে হতে পারতো পদ্মা নদীর মাঝি
কথার তীব্র স্রোতে মাঝ দরিয়ায় ঝড় তুলতো
সাধ ছিল কার্তিক মাসে কুকুরের গলায় ঘণ্টি বাঁধার
চুকচুক আওয়াজ উঠলে কেমন দেখায় চোরের মুখ
যে কিনা
আলো
এতোটা অন্ধকার – যেন এক হতাশার নাম
কবর থেকে উঠে আসা রসবর্জিত মানুষ
রক্তের মিছিল – অধিকার অধিকার বলে চিৎকার
অতঃপর মৃত্যু – অন্ধকার জীবন।
আলো – শুদ্ধ আলোয় ভরে থাক জীবন
কবর এক অন্ধকারের নাম
জান্নাত – জাহান্নাম দূরে থাকো আজ তুমি
আমিতো মানুষ – অন্ধকার ভেদ করি।
অসহায়ত্ব
চোখ কান খোলা রেখে বসে আছি ধীর স্থির
কোথাও পা বাড়াতে পারি না আগের মতো
হাত গুটিয়ে বসে আছি
না শহর না গ্রাম কোথাও যাচ্ছি না আর
দেখছি মানুষের হিংস্রতা
পৃথিবীর স্রোতে ভেসে আসে পাপ
বসে আছি – পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে শহুরে স্রোত
দয়া মায়া নৈতিকতা সব বিসর্জন দিয়েছি
চোখ কান
নির্জলা প্রসাদ
আরণ্যক সময় এখন
হিসেবের পাঠ চুকিয়ে অবেলায়
আবার প্রেমে পড়বো আমরা
দুঃখমোচন দিনে
হাত ফসকে পড়ে যাচ্ছে প্রেম
ইতি টানবো চিরচেনা গানের
পুনরাবৃত্তি হচ্ছে তোমার নাম
এই নির্জলা প্রসাদ
রাক্ষসী! তোমার তরে
কতো কথাই বলা হয় মুদ্রাদোষে
নস্টালজিক সময় এখন
বাড়ছে প্রেমক্ষুধা
ধরে নাও ক্ষুধার রং লাল
লাল মানে বিপদ
লাল মানেই প্রেম
তৃষ্ণারা শুধু হাততালি দিতে জানে
নিজেকে
জিনতত্ত্বের সমস্ত ইতিহাস মিথ্যা বলে ডেকে উঠি মা
মা! এই শব্দটির ক্ষেত্রে কোন তত্ত্ব লাগে না
কোন ইতিহাস – পরওয়ানা কিছুই না
মা বলে ডাকলে সমস্ত বুক শীতল হয়ে যায়
নাতিশীতোষ্ণ মনন ও জীবন
মা রাঁধতেন পুঁটি মাছের ঝোল, আলুর চচ্চড়ি
মুরগির মাংস, বেগুন ভাজা, ডালের তরকারি
টাকি মাছ আর
ভাতসময়ের গান
তখন আমাদের ভাতসময় চলছিল
পুকুর ভরা মাছে সাঁতার কাটছিলেন বাবা
ভাইটি তখন এটো মুখে ধরছিল গান
মা আঁচল ভরে মাচা থেকে তুলছিলেন শিম
শিশুর মতো সহজ করেই বলি সব
বোনটি তখন উনুনে চড়িয়ে ছিল ভাত
আজ বাবা নেই – পেরিয়ে গেছেন তেপান্তরের মাঠ
মাও নেই – হাওয়ার সাথে আমার নিত্য
বয়স আঠারো পেরিয়ে গেলে
সমস্ত শৈশব ধুলায় উড়িয়ে আগামীর সম্ভাবনা খুঁজি সম্পর্কের গভীরে। যৈবনবতী মন যার ধারালো আকুতি তার জন্য। পাতাদের হাহাকার -ক্রন্দন ফেলে যায় দীর্ঘছায়া। এইমাত্র প্রত্যাশার বৈশাখ জানান দিয়ে গেল – এ মাসে বৃষ্টি হবে না আর। তৃষ্ণার্ত প্রেমিক – প্রেমিকারা জমা করে
মানুষ মহীয়ান
কতো সময় গেছে তীর্থভূমি দিকে চেয়ে
শিশুর মতন টেনে নিয়েছ অসাধু জীবন
বোহেমিয়ান সন্ধ্যায় কিছু পাপ এসে দাঁড়িয়েছে দরজায়
আত্মাটাকে ধরে রাখ নয়তো
অতীতের পড়শী খুবলে খাবে সব
মানুষের কাটছে এখন মধ্যবিত্ত জীবন
পাপ মাফ চাই প্রভু
কদর্যতা ছাড়া কিছুই নাই সঞ্চয়
মদ মাংসে কেটেছে অষ্টপ্রহর
জান্নাত জাহান্নাম কিছুই বুঝি না
খুঁজতেও যাইনি