পালাবার কোনো পথ নেই
কয়েকটা মাছি ওড়াউড়ি করছে রেলস্টেশন, নদীঘাট, হাটবাজার
পৃথিবীর মতো ওদেরও মাথার চারদিকে চোখ, তবে কি ওরাও পৃথিবী?
তবে কি ওরাও নিসিন্দার নীল নীল লেলিহান চোখ?
তবে কি ওরাই এখন স্তন্যপায়ী পৃথিবীর ভুমিকার মুখ?
অনেকদিন কবিতা লিখি না, কবিতাই আমাকে লিখে গল্পের ছল
অস্থিরতা এসেছিলো প্রবাদ
একটি দায় এবং সাঁয়ের কবিতা
কোনো ভাবনাযুক্ত না করেই বলে দেওয়া যেতো
আমার ভেজাহাতে এক নিমিষেই হতে পারতে
একটি দায় এবং সাঁয়ের কবিতা
অতঃপর এখন আর কোনো সম্ভাব্যতা নেই!
যে মেঘ পথিকে ছায়া দেয়
পথিক কি জানে না, সে মেঘে বজ্র লুকায়িত থাকে?
যে ব্যাঙ কুঁয়োয় বসে সাগরকে ডাকে
নির্মম মহাকাল তারও
ম নো বে দ না
ভেতরে ভেতরে কতো মামলা নগদ জট পাঁকিয়ে আছে
আমার প্রিয়তমা নগরীর আখাম্বা যানজটের মতো বিরক্তিকর
তবুও আমি কি কোনোদিন তোমাকে কিছু বলেছি? বলিনি।।
যেভাবে গাড়ীগুলো কখনও পথের ভালোবাসা ভুলেনা,
ভুলতে পারে না;
গন্তব্যের আশায় মন্তব্য করে না, ভুলে থাকে প্রভারণা প্রতারণা
আমিও তেমনি বারবার ভুলে
ডুবসাঁতার
ইদানিং সারাদিন সরস শৈল্পিক গালিগালাজের মধ্যেই
মুখথুবড়ে পড়ে থাকি
কানে কম শোনার নিরলস অধ্যবসায় করি, করতেই থাকি
সুখ আর অসুখের পার্থক্যও খুব একটা বুঝি না
বুঝতে চাইও না
কেবল
এক টুকরো আকাশ চিলেকোঠায় পুনঃপুনঃ মুদ্রিত করি
সেখানেই কোনোমতে দিন গুজার চলে অংশীদারী কারবার
সেখানেই নিয়ত চলতে থাকে ভালো
পালানোর কোনো পথ নেই
কিছু কিছু নষ্ট কষ্ট বুক থেকে আলগোছে তুলে আনি
ছেঁড়া শার্টের বুক পকেটে সযতনে জাগ দিই
ওরা জাবরকাটে, আমি সে শব্দ শুনতে শুনতে নিদ্রার কথা ভাবি,
মাঝেমাঝে প্রসন্ন হয় ঘুম, আলতো করে দিয়ে যায় চুম!
বাকিটা সময় আশপাশ করি, কোলবালিশে জড়াজড়ি;
ঘৃণাদের দূরদেশে রফতানির
অবরোধ
সব ছেড়ে ছুঁড়ে এখন আমার খুব খুব ইচ্ছে করে
তোমার মতো একটা কবিতা লিখি জীবনের নুক্যাম্প,
কবিতায় ঝরে যাওয়া ফুলগুলোর কথা বলি
কবিতায় সদ্যমৃত জলসিঁড়ি নদীটার কথা বলি
যে আর কোনোদিন ফিরে আসবে না সকালের
সোনা রোদ, এই ডাঙা ছেড়ে একবার তাকে দিয়ে
আসি প্রবোধ,
কে তুমি দেশ-মহাদেশ?
আমাকে করে রেখেছো
প্রেমহীন প্রণয়
একদিন শরীর কথা বলেছিলো
মন কথা বলেনি
আর একদিন মন কথা বলেছিলো
শরীর কথা বলেনি!
প্রেমহীন প্রণয় তবুও বৃক্ষের দিকে তাকিয়ে থাকে
ঝরাপাতার নগ্ন উল্লাসে পতিত নক্ষত্ররাও রাগবিমোচনে যোগ দেয়
দেহের দেশে বিজাতীয় সংস্কৃতির নামতার পাঠ হয়
উড়ুক্কু পাখির কথা সবাই ভাবে,
নিরাক পড়া ভালোবাসার কথা কেউ ভাবে না।
একদিন পাথর প্রেম
মধ্যরাত্রির কিছু ছেঁড়া অংশ
রাতের কিছু ছেঁড়া অংশ জোড়াতালি দিয়ে একটি
আহত কবিতার বীজ বুনতে চেয়েছিলাম
কিছুক্ষণ আগে তিনি বললেন, অল ডিলিটেড!
এখন হাত-পা ভেংঙে আমি আচানক দাঁড়িয়ে আছি
আমার চারপাশে মাথাব্যথা
খুচরা যন্ত্রাংশের মতো দু’একটি ভালোবাসার কথা!
আমি কিছু বলিনি অর্ধেক ছল
একবার কসমসের কথা বলেছিলাম
দুর্বাসা মুনির কোপানল!
এতো টিনি সাগরজল তবুও
একপায়ে দাঁড়িয়ে আছি সন্ধ্যা অবধি, আশেপাশে কুয়াশার
ঘাতক ফোঁটা; রাত্রির পথ ক্রমেই দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর,
শবের মিছিলে এ তবে কিসের শোরগোল ?
কাদাজলে জড়াজড়ি পিচ্ছিল পায় কখনও গড়াগড়ি,
লজ্জাবতীর মত দু’চোখের পাতাও স্পর্শ কাতরতায়
একটানা চেয়ে আছে মাটির দিকে,
কখন সমান্তরাল রেললাইন মিলবে কোনো এক ফ্ল্যাটফরমে !
কখন বধির কর্ণকুহরে
গুরু-শিষ্যের কথোপথনঃ
শিষ্য গুরু লেখালেখি বাদ দিতে চাই।
গুরুঃ সাধু! সাধু! কেনো বাদ দিবে?
শিষ্যঃ কী হবে লিখে গুরু! কোনো হিসাব ইতো-ই মিলে না।
গুরুঃ সাধু! সাধু! যদি তুমি এতোদিন মানুষের জন্য লিখে থাকো, তাহলে এখনো তাদের জন্য লিখে যাও।
আর যদি এতোদিন নিজের জন্য লিখে
রোড় টু ময়মনসিংহ
লক্করঝক্কর বাসে বসে আমি যখন একটি কবিতার কথা
ভাবি
তখন সদ্য ফুটন্ত গোলাপের মতো দেখতে সৈয়দ নজরুল ইসলাম
মেডিকেল কলেজের সামনে আসতে না আসতেই শুরু হয়
ভানুমতির খেল
লারা সামনেলারা সামনে
আমি তখন ব্রায়ান লারার ক্যারিশমেটিক ব্যাটিংয়ের দর্শক
কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না লারার উপাচার
রোগীদের আনাগোনা দেখে একটু পরেই রচিত
শাবক
(পৃথিবীর সকল মায়ের মহান চরণে নিবেদিত)
—————————————————
শতবর্ষী বট গাছটির শীতল ছায়ার নিচে বসে
এখনও আমি নিজেকে বাঁচাই রোদ, বৃষ্টি, ঝড় থেকে
এখনও অহর্নিশি ছাতার মতো আগলে আছেন
আমাকে, অংকুর থেকে চারা, চারা থেকে কুঁড়ি
অতঃপর ফুল, ফসল ।
সদ্য পোয়াতি পাখি যেমন মেলে রাখে ডানা
অসহায় ছানাগুলো যেখানে খুঁজে পায় ঠিকানা
দিনে
কবিতার কথা আর কাকে বলি
কবিতার কথা আর কাকে বলি
সবাই মুখ লুকিয়ে নেয় দ্বিপান্তর;
যতোটা প্রকাশক, ঠিক ততোটাই ঘাতক পাঠকের অন্তর!
তবুও আমি সস্তা ভালোবাসার লোভে শব্দদাহ করি
চেরাপুঞ্জি থেকে ঘাড়ধরা করে নিয়ে আসি
অসুর্যস্পর্শা রমণীর মতোন কিছু সুডৌল বাক্য; কী হয় তাতে?
কবিতা আমাকে যন্ত্রণা দেয়, মন্ত্রণা
আজ আর বেদনা লুকোবো না
সবাইকে বলেছি আজ আর কোনো বেদনা লুকোবো না
রাত্রি আর আমি ডানপিটে শীতের পেটে যমজ চামচিকা হবো
পুনর্বার পুনর্বাসনে পাঠিয়ে দেবো আধুলি দিনের শেষভাগ
আবার সবকিছু নতুন করে শুরু করবো চৈত্র অথবা বৈশাখ!
অতঃপর পৌষ পার্বণের নামে বেদনা গিলে খাওয়ার উৎসব নামে
ঘিয়ে ভাজা শন