অনেকগুলো দাগ পড়ে আছে
অনেকগুলো দাগ,
জলের ভেতরে জমে আছে হীরে
ঘুমের ভেতরে ঘুম
তুমি বললে—
আসলে ওগুলো কিছু নয়
এতটুকু মৃত্যুর পরাগ !
আমি আবার তাকালাম
নতুন করে চিহ্নায়নের সূত্র
সাজাবো বলে—
দেখলাম পুরনো মুদ্রার কোণে
লেগে আছে,
সহস্র বছরের পুরোনো বিরাগ !
আলো দিয়ে বানাবার কথা ছিল ঘর, তা দখল করে নিচ্ছে
ফিকে রেখা। মানুষের মনে জমে থাকার কথা ছিল যে
বিনীত ধর্মের বয়ন, তা চলে যাচ্ছে মিথ্যের দখলে।
কিছু প্রতারক ছবিদোকান খুলে, বিক্রি করছে, মেকি
হাড়-মাংস, অনুভুতি,অহংকার, প্রেম, এবং ভূমিমাটি।
যাদের প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা ছিল, তারা বেছে
নিয়েছে অন্ধপ্রায় জীবন।
যে আমি আত্মগোপন করে ছিলাম, আজ ভোরে তারই অস্তিত্ব
খুঁজেছি প্রথম। তারপর এই হাডসন নদীর পাড় মোড়া সাদা
কংক্রিটগুলোকে স্পর্শ করে দেখেছি, প্রাতঃভ্রমনকারীরা কীভাবে
ছুটে চলে ঢেউয়ের সমান্তরাল। ছোঁয়া পেলে অনাবাদী গ্রহও বিতরণ
করে জীবনের ঘ্রাণ। উষ্ণতার আঙিনায় দাঁড়িয়ে যে ঋষি করে
আলোর আরাধনা, কিংবা বনান্তরে একাকী হেঁটে যেতে
এসো প্রাণের বদলে আগুনকেই শুকিয়ে,
স্তরে স্তরে এই পথে রাখি।
যে পথে সহস্র কররেখা উঁচিয়ে
একদিন হেঁটে গিয়েছিল সহস্র পালক।
যে রোদে, একদিন বিন্যস্ত হয়েছিল আমাদের
উজ্জ্বল ভাগ্যরেখা। আর বাজপাখিরা গোলাপের
প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দখল করতে চেয়েছিল, গোলাপের
ভালোবাসার আকাশ।
আকাশে মূলত প্রাণগুলোই নক্ষত্র হয়ে স্থির হয় অবশেষে।
সারি
শপথের শব্দগুলো শুনে হেসে উঠে কুমিরের দল।
”আমি ফকির সালাহউদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াস এই মর্মে
শপথ করিতেছি যে ”
বলার পর পরই থমকে উঠে আমার কণ্ঠ। কাঁটাবিদ্ধ
হরিণের গলা কিংবা ধনুকবিদ্ধ পাখির ডানা এর আগেও
স্পর্শ করেছে আমার হাড়।আমার দেহের পরাজিত লৌহকণিকা
আমাকে জানিয়েছে,নদীর প্রতিটি বাঁকেই গড়ে উঠেছে
প্রতারকের ফাঁদ।যে ফাঁদে
ঋতুর রঙের কাছে ঋণ চেয়ে হাত পাতি। কিছু ভোর চাই।
কিছু ভালোবাসা বিনিময় করবো বলে নদীর স্রোতে ডুবাই
চোখ। ফিরে আসে নিজের প্রতিবিম্ব আর পরখ করে দেখা
কালের রজক। জানি আমিও এভাবেই মুক্ত আকাশের লেখা
ধার করে সাজিয়েছি কাব্য। বাজনার অজস্র নহরে রেখে হাত
অনুভব করেছি গ্রীষ্ম কিংবা বৈশাখের
এই জমি খুব পরিচিত আমার। এই নদীর সকল উজানী
ঢেউ- একদিন আমার বুকে রুয়েছিল যে বীজ, আমি যতনে
বৃষ্টি ছড়িয়েছিলাম সেই মনবৃক্ষে। জোড়াসাঁকোর ভোরে
খুব একাকী পড়েছিলাম গন্তব্যের গীতবিতান।
এই গান খুব স্বজন আমার। যে প্রেমিকা আমাকে হাত ধরে
নিয়ে গিয়েছিল প্রান্তিক চত্বরে- সেদিন সেখানেও উপস্থিত
ছিলেন একজন রবীন্দ্রনাথ। তিনি
পথ মিশে যায়, ছাপগুলো হারায়
পাঁজর খুঁজে চূর্ণ
এর আগে যারা, হলো মাতোয়ারা
তাদের ভুলে পূর্ণ !
চাঁদ এসে বলে, দূরের সকালে
লিখেছো যতো নাম
সবাই কি তবে, এই পরাভবে
হেঁটেছিল অবিরাম।
কেউ থেমে থেমে, এসেছিল নেমে
পূণ্য পরিত্রাণে
কেউ ফিরে গিয়ে, এ মাটি সরিয়ে
ডুবেছে ভুলের ঘ্রাণে।
ভুল করে তবে, সুখের এই ভবে
এসেছে আদম -হাওয়া
সেই
আর কোনও দিন বৃষ্টি এসে আমাদের ডাকবে না তাদের কাফেলায়।
বলবে না- চলো সমুদ্র দেখে আসি। দেখে আসি পাখিদের সংসার, আর
লাঙল কাঁধে যে পিতামহ প্রত্যুষে ছুটে চলতেন মাটির টানে-তার পদছাপ।
আর কোনও দিন আমাদের ডাক দেবে না কোনও প্রতিবেশী আগুন।
বলবে না- উষ্ণতা নেবে, উষ্ণতা ! সওদাপাতি
কতটা পথ হাঁটলে হওয়া যায় পথিক! কতটুকু ভূমি
পেলে নির্মাণ করা যায় একটি সড়ক, তা ভেবে আমি,
কখনোই পথে দাঁঁড়াই’নি। বরং কয়েকটি হাসনা-হেনার
ডাল রুয়ে রেখেছি, পথের দু’পাশে। কেউ এসে
নেবে সেই সুবাস।
অথবা কেউ পাঠ করবে মমিচিত্র,মনচিত্র,মানচিত্র
এমন আরাধনায় সাজিয়েছি ভোর, সেরেছি
পরাণপর্বের পঞ্চম সুরবীক্ষণ।
মানুষেরা অনেক কণ্ঠধ্বনিই শোনে না,
মানুষেরা অনেক
অভয় আনন্দ এসে খুঁজে কার ঘর, কার পথে
অনেকগুলো পথ মিশে যায়- কালের প্রভাতে
আমি তো ব্রাত্যজন-আজীবন অন্বেষণে আছি
একটু সবুজ পেলে, ঘাটে বসে প্রাণ নিয়ে বাঁচি
অথবা সাঁতরে শেষে; সমুদ্রের গভীর প্রণয়ে
থেকে যাই শুদ্ধাচারে- কবিতার নামগুলো লয়ে
অপার উদ্ভিদে এই ভালোবাসা রাখে যে আঙুল
কিংবা ঝড়ের কাছে সারিবদ্ধ রেখে
মিথের মর্গ দেখে বড় করুণা হয়।
অনেকটা দূরেই থাকি আজকাল কোলাহল থেকে।
তবু এই সিঁড়ির সংসার দেখে মায়া হয় খুব। এই রাত সুবর্ণ জয়ন্তীর।
এই দিন মুখোশের প্রথম পালক। সবই লেখা আছে আমার অভিধানে। তার
পরও খুলে দেখতে মন চায় মুছে যাওয়া আলতার প্রকৃত উজ্জ্বলতা। এবং চন্দ্র
ভেজা
সবাই জেগে থাকতে পারে না। কেউ কেউ আয়ু পাহারা
দেয়। কেউ কেউ হাতঘড়ির কাটার মতো, ঘুরে পৃথিবীর
উত্তর প্রান্তে – যেখানে কেবলই ঢেউ, কেবলই ধূসর।
যারা ঘুমায়, তারা ভালো থাকে অবশেষে। না দেখার
সাম্রাজ্যে সেতু বানাতে বানাতে, অন্যকে পার করার
তাড়না অনুভব করে না। অথবা ধার ধারে না হিসেবের।
জীবনের
তিনবছর আগে যে স্থানটিতে হলুদ ফুল ছিল, সেখানে ফোটে রয়েছে
কয়েকটি শাদা ফুল। আমি সেই ফুলগুলোর সামনে দাঁড়ালাম। এখনও
বসন্ত আসেনি এই সেন্ট্রাল পার্কে। ঋজু অশ্বখুর, ভেদ করে যাচ্ছে পীচ
ঢালা পথ। দূর থেকে ছুটে আসা পর্যটক পুরুষ, ধরে আছে প্রেমিকার
হাত। ছুটছে অশ্ব-ডানে বামে ঝুলে আছে বিক্রেতাদের
কবিতা|
১টি মন্তব্য
| মন্তব্য বন্ধ রাখা আছে
|
১৭০ বার দেখা
| ১৩২ শব্দ