সান্নিধ্যের সনদ
তুমি যখন জমাট হতে শিখলে তখন দেখলাম,
তোমার কনুই থেকে গড়িয়ে পড়ছে ক’ফোটা ঘাম
একটা নীল প্রজাপতি বসে আছে তোমার ঠিক
মুখোমুখি। একটা আলনায় জমাট হয়ে আছে
একাকী, আমার খুব পরিচিত বন্ধনশিল্প।
তুমি যখন জমাট হতে শিখলে, মনে পড়ছে
এর দুদিন পর আমার সংগ্রহ থেকে গলে পড়লো
চারটুকরো বরফ। আমি
আর যারা সমুদ্রের প্রতিবেশী []
আমার কাছে বসে বৃষ্টি, গল্প শোনায় না এখন আর।
কোনো মেঘ ছায়া দেবে বলে, করে না অঙ্গীকার
কিছু বিজলী, পাশ কাটিয়ে অন্যত্র চলে যায়
কিছু ঝড়, হারিয়ে যায় খড়ের বক্ষদেশে।
আমি আর আমার পালিত দুঃখ’রা জেগে থাকি
আর যারা সমুদ্রের প্রতিবেশী, তারা বসে থাকে
তৃণতারকাগুলো
আমার বুকের ভেতর যে তৃণতারকাগুলো বসত করে, আমি তাদের
রোদন শুনি মাঝে মাঝে। দেখি কক্ষচ্যুত প্রেম আমাকে পেছনে ফেলে
মিলিয়ে যাচ্ছে অন্য আকাশে। আর আমি কেবল পাহারাদার হয়ে,
তাকাচ্ছি একবার জমিনের দিকে। অন্যবার নীল সাগরের দিকে।
জমিন ও সাগর একসময় আমার খুব প্রতিবেশী ছিল। এখন আমার
খুব কাছেই যেভাবে
সারারাত জলের জোনাকে
আবার বৃষ্টি এলে সারারাত জলের জোনাকে
লিখে নাম, দেবো ভাসিয়ে কাগজ
কেউ জানবে না এই হেমন্তে, কে ছিল গোলাপ বাগানে
কে ছিল প্রথম শ্রোতা, ভূপেনের পদ্মা– গঙ্গা — গানে
কে ছিল স্বীকৃত আলো- কে ছিল পাখা হাতে বসে
পাশে রেখে স্মৃতিঠোঙা, বুকে নিয়ে
রক্তমেঘতন্ত্রী বৃষ্টিলোকালয়
ফিরে এলো না অনেকেই। অনেকগুলো ঘর, পুরুষশূন্য
থেকে গেল। অনেকগুলো সংসার থেকে চিরতরে,
হারিয়ে গেল নারীর শাড়ীর আঁচল। কোর্তাবিহীন শিশু-
মা মা বলে কাঁদলো ডিসেম্বরের তীব্র শীতে। কেউ,
শুনতে চাইলো না সেই ডাক। ধীরে ধীরে পশ্চিমা ট্যাংকগুলো,
অতিক্রম করলো আমাদের গ্রামের পথ।
আমরা আকাশের দিকে তাকিয়ে থোকা থোকা
রক্তমেঘ
কবিতাটি একাত্তর পরবর্তী ♥
যে তুমি জানতে চাওনি, আমি কি কবিতা লিখি
অথবা আমার চোখে কি পড়ে গেছে ছানি,
ভুলে গেছি অশ্রুপাত এবং পিতৃহারার কাহিনি-
কিংবা অর্ধেক অন্ধ হয়ে বেঁচে আছি কী না
কেঁদে উঠি কি! দেখলে শাপলা ফুল কিংবা একটি সবুজ পাখি
যে তুমি জানতে চাওনি, আজীবন কেমন
ছায়ামনে, মেঘের সংসার
ভেসেছিলাম একক সায়রে, সাথে নিয়ে পিতল বরণ মেঘ
নিধুয়া নদীর বাঁকে জমে থাকা বিরহ অপার
বলেছিলো সাথে যাবে, যদি যাই হিজল জমিনে
হতে পারে দেখাদেখি— ছায়ামনে, মেঘের সংসার।
আঁকড়ে যে জন থাকে ভিটেজল, ঢেউয়ের আকর
টেনে নেয় কাছে ঝড়, বসন্তের অরূপ মহিমা
বীমাহীন জীবনের যতসব লেন-দেন সেরে
অতিক্রম
হে পরিব্রাজক
চারপাশে ভিড় করে আছে অগণিত ক্লাউন ও কিলার !
কোনদিকে যাবে, কোন পথ তোমার হবে হে পরিব্রাজক !
কোন সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে তুলবে হাত—
কেউ কি আছেন ! আমাকে একটু পার করে দেবেন পথ ।
চারপাশে জমে আছে বরফ ও বিচ্ছিন্নতাবাদ। হাতুড়ি হাতে
যে শিশু ইট ভাঙে,
পুনর্পাঠের তথ্যতালিকা
অসম্পূর্ণ থেকে যায় পাওনার ছায়াতালিকা। দেনার নক্ষত্রগুলো লাল চোখ দেখিয়ে
পাড়ি দেয় অন্য ভূপৃষ্ঠে। এখানে কোনও সম্প্রদান নেই। যে আলো ঘিরে রাখে
প্রাকৃত সুন্দর— সেই তপস্যাগৃহে মানুষেরাই শিখে নেয় জন্মদান পদ্ধতি, প্রেমহিস্যা।
মূলতঃ এই পৃথিবীও একদিন পাঠগামী ছিল। যারা পড়তে পারতো না
বৃক্ষের শরীর, তাদেরকেই বলা
প্রণাম নিও হে পাতার প্রভাব। একটু সবুজ রেখে দিও
আমার জন্য। রাঙাতে চাই। রঙিন হতে চাই, নিজেও
এই জলক্যাম্পে ; এই উনুন উপত্যকায়। বিষ্ণুপ্রিয়ার মুখ
দেখে, চিনে নিতে চাই কুড়িয়ে রাখা শেষস্মৃতি। আবার জয়
হবে, আবার নুয়ে পড়া লতাগুল্মে সূর্যও দেখবে নিজের মুখ-
সেই ভাবনা
কবিতা|
৩ টি মন্তব্য
| মন্তব্য বন্ধ রাখা আছে
|
৪২২ বার দেখা
| ৮৩ শব্দ ১টি ছবি
ডিসেম্বর ১৯৭১
অনেকটা রোদকে চিনে নিয়েছি তখন। সেই ভোরবেলা
সেই তুমুল সর্ষে ক্ষেতে হলুদের ঢেউ দেখতে দেখতে খুব
সাবধানে এগিয়েছি বাঁকে। সুরমা আর বাসিয়া নদী দুটির
মিলন মোহনায়, একটি সূর্যকে স্বাগত জানাবো বলে।
একটি শিখার কাছে বন্ধক রেখেছি আমার সব প্রেম, আর
প্রতিমার প্রথম চুম্বন। এই মাটিঘেরা উষ্ণ বাদাড়। কিছুটা
অবহেলায়,
ছায়াগুলো সাজানো ছিল []
নাটকের যবনিকা এলে বদলে যায় পর্দার রঙ। যারা
অভিনয় করেছিল,তারা পোশাক পাল্টে মিশে যায় জনস্রোতে।
হাততালি দিতে দিতে যারা উপভোগ করেছিল দৃশ্যাবলি-
তারাও ভুলে যায় বিগত সংলাপ।
নাটকটি মূলত সাজানো ছিল,বলতে বলতে নাট্যকার
হাত দেন পরবর্তী পরিচ্ছেদ পরিকল্পনায়।বোকা মাটির ঘ্রাণ
বুকে নিয়ে পাখিরা সেরে নিতে চায় দেশান্তরের
কবিতা|
১টি মন্তব্য
| মন্তব্য বন্ধ রাখা আছে
|
২৭৭ বার দেখা
| ১০০ শব্দ