তোমার বসন্তের আগুনে
জলগুচ্ছ আবার উড়ে যাক। কিছু বাষ্প থেকে যাক
আমাদের চয়নসম্বন্ধের যাবতীয় দ্রোহ হয়ে। আর
বিলাপ বনান্তে এই পাখিদের পালক ধারণ করুক
আগুনের রঙ। তোমার বসন্তভোরে নিয়ামক সূর্যশিথান।
কীভাবে আমরা লিখেছিলাম প্রথম প্রেমপত্র, কতোটা
জলে ভিজে আমরা পরখ করেছিলাম নদীর গভীরতা,
সে কথা আজ জমা থাক ২০৫০ সালের
মেঘভাস্করদের তালিকা []
আমি কোনও আবিষ্কারক নই। পথের সন্ধান
নিয়ে কোনও অরণ্যের শোভা দেখবার কৃতিত্বও
নেই আমার। তবু প্রেমিকা হবে বলে আমার হাত
ঝাপটে ধরেছিল যে সিরামিক সন্ধ্যা—
আমি আজও তাকে মনে রেখেছি।
বিমূর্ত ভালোবাসা নিয়ে আমার ছায়া হয়েছিল
যে ত্রিমাত্রিক আকাশ, তাকে জানিয়ে রেখেছি
ভ্রমণের বিকাশপর্ব। দক্ষতা দেখাতে না পারলেও,
আঁকায়
পথ অথবা পাখির মৃতদেহ
লুজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের সড়কে যে পাখিগুলোর মৃতদেহ পড়ে আছে,
ওরা সবাই নিউইয়র্কে ছুটে আসতে চেয়েছিল। ব্রাজিল থেকে যে
পায়রাটি সুইডেনের স্টকহোম শহরে নতুন নিবাস গড়ার কথা তার
সতীর্থকে বলেছিল, আমি আঁতকে উঠেছি তার মৃতদেহ দেখেও।
আর আরকানসাস শহরের সেই প্রায় পাঁচ হাজার পাখির জন্য এই
অশুদ্ধ সূর্যতলে
শিশুপদ্মের পদ্য
আসলে কবিত্বের কোনো জীবন নেই। জীবনের কবিত্বই
শিশুপদ্মের মতো মানুষের পাশে দাঁড়ায়।যারা দেখে না,
তাদের স্বেচ্ছান্ধ বলা যায়।
কবিতার জন্য কোনোদিনই অপেক্ষা করেনি কোনও
ছন্দেশ্বর। বরং যারা ধলেশ্বরী নদীতে এর আগে
ভেসেছিল একা- তারাই কেটেছে সাঁতার। বাকী
সবাই ঢেউয়ে ভেসে গেছে।
মিথ্যা-সত্য কিছুই আরাধ্য নয় কবির। দর্পণে
আগুনচূর্ণ দেখে, যারা সনাক্ত
বিনম্র বিষের মায়া
সাক্ষী দিতে গিয়ে দেখি আমার ছাউনি সরিয়ে নেয়া হয়েছে
বেশ আগে। দংশনের বিপক্ষে কথা বলার আগে, আমিই হয়েছি
দংশিত লখিন্দর। বিনম্র বিষের মায়া আঁকড়ে ধরেছে আমার
সর্বাঙ্গ। ভঙ্গ করে সকল অঙ্গীকার আমি দাঁড়িয়েছি জলের
কাঠগড়ায়। বৃষ্টিতে ভিজে একটি আশ্বিন খুঁজে বার বার গিয়েছি
সমবেত শরতের কাছে। এভাবে
শীতের ওজনগুচ্ছ
১
অবশেষে তুমিই আমাকে
শিখিয়ে দিলে-
শীত ও ঠাণ্ডার পার্থক্য!
২
তোমার কাছে এলেই
আমি ক্রমশ
মাইনাস আঠারো হয়ে যাই!
৩
মাপার যোগ্যতা না থাকার পরও
তুমি,
আমাকে বললে, নব্য ওজনদার!
৪
জানুয়ারির এই ভোরে
দেখলে সূর্যের নিক্তি,
মনে হয় শীতের সাথেই
হয়েছে শেষ চুক্তি!
৫
ভালোবাসি বলে
হাত বাড়িয়ে দিলেই
আমার দিকে এগিয়ে আসে
গুচ্ছ গুচ্ছ সুবর্ণ শীত।
৬
শীতসংগ্রহের রাতে,
আমিও ছিলাম তোমার পাশে
রাগ ভরা
পুনরায় জন্মজীবনে
খুব বেশি হাঁটতে পারিনি। খুব বেশি বলতে পারিনি
এখানে দাঁড়াও। আমার জন্য অপেক্ষা করো, অথবা
আমিই থেকে যাবো অপেক্ষায়- এমন ওয়াদা,
কোনোদিনই দেয়া-নেয়া হয়নি আমার। বিরহী জলে
আর অবশিষ্ট মেঘাবর্তে- শুধুই লিখেছি মরম, মৃত্তিকা।
একদিন ভূমিষ্ঠ হবো, তা যেমন জানা হয়নি, তেমনি
জানা হয়নি হামাগুড়ির কৌশল, পদরেখার ছাপতন্ত্র
জেনে
তুষারপাতের ঘ্রাণ ♦
তুষারের গন্ধ পেলেই আমি হয়ে উঠি, বারুদময়।
রোদ দেখবো না জেনেও আকুতি রাখি, সূর্যের চরণে
আহা! বিগত পৌষ! তুমিও আমার জন্য-
রেখে গেলে না কিছু উষ্ণ হিম, কাঁথার করুণা!
আগামী চব্বিশ ঘন্টা এই নগরের সড়কে সড়কে
ঝরবে যে বরফ, কিংবা যে ঝড়োহাওয়া
উড়িয়ে নিয়ে যাবে পুরনো বৃক্ষের বাকল,
কি
কেউ কেউ জানতে চাইবে
অনেকের ভালো লাগে না বিচ্ছেদভৈরবী। যারা শালুক সন্ধানে
মাড়িয়েছিল বিলের ছায়া, তারা দেখেছে হাওয়ার ভরাট সামন্ত
কী যাদু নিয়ে লিখে রাখে পাখিদের কোলাহল। কবিতার খাতায়
প্রিয়তমার নাম লিখে রাখার সাহস দেখাতে পারেন ক’জন কবি।
অথবা যার কোনো আরাধনা নেই- সেই মানুষটি পাপ মোচনের
পরীক্ষা পাতায় কেমন
জলের জন্মদাতা
তুমি চেয়েছিলে জলতন্ত্র
আর আমি শুধু বৃক্ষের পাতায়
লিখে রাখতে চেয়েছিলাম রাতগুলোর জন্মবার্ষিকী,
কিন্তু এখন দেখি – এ কী !
ঝরে যাচ্ছে পাতা
আর কিছু ভুল জমা করে করে
কেবলই দেশান্তরি হচ্ছে জলের জন্মদাতা
তুমি চেয়েছিলে পর্বত
আমি যে ক্ষত বুকে নিয়ে
ভেসেছিলাম সমুদ্রে,
তারপরও তৃষ্ণায় কাতর হয়ে
আমি পান করেছিলাম ভোর
একান্তই মঙ্গলগ্রামের রৌদ্রে
আমি
সব দুঃখই পাখি হয়ে যায় []
সব দুঃখই পাখি হয়ে যায়। সকল বেদনাই চৈতন্যের
জল হয়ে সমুদ্রে ভাসে। কোনো পরদেশী জাহাজের
পাটাতন তা ছুঁতে পারে, কখনও থেকে যায় অস্পর্শের অতল।
ঝড়গুলো বিভক্ত হয়ে প্রদক্ষিণ করে উত্তর এবং
দক্ষিণ মেরু। যারা পূর্বে থাকে, তারা তাকায় পশ্চিমে।
সূর্য ডুবলো বলে, জোনাকিরা গায়ে