‘২টা মাঝারি সাইজের বুদ্ধিজীবি বিক্রয় করা হবে। ঘাড়ের হাড্ডি নরম, সহজেই সামনের দিকে ঝুঁকে যায়। মেরুদণ্ড ফ্লেক্সিবল। হাতের রেখা মুছে গেছে। দীর্ঘদিন পাম ওয়েল বিক্রি এবং ম্যাসেজ পার্লারে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।’ বুদ্ধিজীবী দু’জন বিমর্ষ দৃষ্টিতে বিজ্ঞাপনটির দিকে তাকিয়ে আছেন। দেশের জনপ্রিয় দৈনিক পত্রিকায় টানা ৩দিন ধরে বিজ্ঞাপনটি ছাপানো হচ্ছে, কিন্তু কেউ যোগাযোগ করেনি। কারোই বুদ্ধিজীবী কেনার আগ্রহ নেই।
চাহিদা হ্রাস পেলে পণ্যের দাম কমে- চাহিদা ও যোগান তত্বের ওপর দীর্ঘ আলোচনা শেষে নির্ধারিত হলো তিন দিন বিরতি দিয়ে ফের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হবে। তবে এবার প্রথম লাইনটার আগে যোগ হবে, ‘একটা কিনলে আরেকটা ফ্রি।’
নতুন করে বিজ্ঞাপন প্রকাশের দিনেই প্রথম কল এলো। স্পিকার চালু করে কল রিসিভ করলেন বুদ্ধিজীবীদের একজন-
: হ্যালো। কে বলছেন?
: আমি মোয়াজ্জেম। গাবতলী হাটের গরুর লবিস্ট।
: গরুর লবিস্ট মানে!! আপনি কি গরুর দালাল?
: জ্বি, স্যার। ওই একই হইলো।
প্রচণ্ড বিরক্তি এবং তুমুল কৌতূহল নিয়ে বুদ্ধজীবী জানতে চাইলেন-
: আপনি এখানে ফোন করেছেন কেনো?
: স্যার, একটা রিকুয়েস্ট – দয়া কইরা বিজ্ঞাপনটা আর ছাপায়েন না। পেটে লাত্তি মাইরেন না।
: শাট ইউর মাউথ স্টুপিড। আমরা বিজ্ঞাপন ছাপালে তোর সমস্যা কি!
এসব গালিগালাজ গায়ে না মেখে মোয়াজ্জেম কান্নাজড়িত স্বরে বললো-
: স্যার, আপনাদের বিজ্ঞাপনের কারণে ভেড়ার বাজারে ধ্বস নামছে। ছাগলের দাম কইমা গেছে আর
মোয়াজ্জেমকে ‘ফাক ইউ’ বলে গালি দেবার আগেই মোয়াজ্জেম যোগ করল-
: আপনাদের দুইটারে গরুর হাটে বলদ হিসাবে বেঁচতে তুললে ব্রয়লার মুরগির দাম দিয়াও কেউ কিনবো না।
সব কথা গায়ে মাখলে, গুরুত্ব দিলে বুদ্ধিজীবী হওয়া যায় না। বুদ্ধিজীবী হওয়া কি সহজ কথা! বুদ্ধিজীবীতা এক অতিপক্ক কাঁঠাল, কোষ গলে ল্যাদল্যাদে, বহু বিঁচির গর্বে বলীয়ান ভুতি গরুর প্রিয় খাদ্য, মাছির আবাস।
loading...
loading...
অসাধারণ অণুগল্প উপহার দিয়েছেন স্যার।
loading...