সে চলে যাবার পর আজ ভোররাতে পাঁচ বছর পর দেখা করতে এলো। আমি স্বস্বভাব মতো দেখামাত্রই ধুম ধাড়াক্কা জুড়ে দিলাম… কি ব্যাপার বলতো,
দুম করে কোথায় চলে গেলে, আমাকে বলে পর্যন্ত যাবার প্রয়োজন বোধ করলে না?
আমার রাগকে ও থোড়াই গ্রাহ্য করে। আগের মতোই মিটিমিটি হাসতে লাগলো।
… বলবে তো কোথায় গেছিলে? আবার রয়েও গেলে এতোদিন ধরে?
সে তো হাসি মুখে মুখ বুজেই রইলো।
আমার রাগ তাতে আরো বাড়তে লাগলো,… কতো দিকে কতো ঝামেলা সংসারের, আমি এসব কখনো কোনোদিন করেছি? বাজার হাট, ব্যাঙ্ক পোস্টঅফিস, পারিবারিক দায়িত্ব কর্তব্য কখনো কোনো দিনও করতে দিয়েছো আমায়? তবে আজ এমন আমার আনাড়ি কাঁধে এমন গন্ধমাদন চাপিয়ে দিলে কেন বলো।
এতক্ষণে কথা বললো,… আমি তো তোমাকে সবদিক দিয়ে তৈরি করে দিয়েছি। তুমি সামলাতে পারবে জেনেই তো দায়িত্ব দিয়েছি তোমায়।
… বয়ে গেছে আমার তোমার এইসব এলেবেলে দায়িত্ব নিতে। আমার লেখা পড়া হয়না, কঠিন কিছু বুঝিয়ে দেবার কেউ পাশে নেই, তাছাড়া এটা আমার একার সংসার নাকি! পালাবো একদিন আমি এইসব ঘরবাড়ি সংসার ছেড়ে…
… সত্যি, সেই একই রকম অবুঝ আর রাগী রয়ে গেলে তুমি। আমার কোনো উপায় থাকলে তোমার ওপর এ্যাতো বোঝা চাপাই? বলো, চাপিয়েছি কখনো?
… সেই জন্যেই আমার রাগ হচ্ছে। এখন শক্তি কমে গেছে আমার, গুছিয়ে কিচ্ছুটি করতে পারিনা… আর…
কথা শেষ করতে না দিয়ে ও এগিয়ে এসে আমার হাতটা ধরে নরম করে বললো,… অধৈর্য হয়ো না, আমি রয়েছি তোমার সঙ্গে… তবে এখন আমাকে একটু বেরোতে হবে… রাগ কোরোনা…
… আবার! আবার বেরোবে তুমি!
বলতে বলতে ও সদর দরজার দিকে এগোতে লাগলো… আমি হাত ধরেও আটকাতে পারছি না… এই প্রথম আমি কেঁদে ফেললাম, বেশ.. তবে তোমার ফোন নং টা দিয়ে যাও…
ওরও দুচোখ ভর্তি জল, ধরা গলায় বলে গেলো… আর তো আমি মোবাইল ইউজ করিনা গো…
( আমি মৃত্যু পরবর্তী আত্মায় বিন্দু মাত্রও বিশ্বাসী নই। একটা স্বপ্ন দেখলাম এইরকম)
loading...
loading...
অসাধারণ আপনার শব্দ-কল্প-চিত্র।
অভিভূত হলাম লিখাটি পড়ে। শুভেচ্ছা প্রিয় কবিবন্ধু।
loading...