কেবল বৈধ কাগজপত্র ও আর্থিক সংগতি থাকলেই ইসরায়েলের মত সমস্যাসংকুল দেশে যাওয়া যায়না। সমস্যার আগ্নেয়গিরিতে বাসকরে দেশটা। কখন সে আগ্নেয়গিরি হতে লাভা বিস্ফোরিত হবে কেউ জানেনা।
একদিকে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন, ইসলামিক জেহাদের মত পশ্চিম তীরের সংগঠন, উত্তরে লেবাননের হেজবল্লাহ, গোলান হাইটসের ওপারে সংঘাতময় সিরিয়া। সবমিলিয়ে ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরির সাথেই হতে পারে দেশটার তুলনা। তবে গেল ক’বছর ধরে সব ফ্রন্টেই শুনশান নীরবতা। মাঝেমধ্যে স্যাটলারদের সাথে প্যালেষ্টাইনিদের সংঘাত সাময়িক উত্তেজনার সৃষ্টি করলেও তা অল-আউট ইন্তেফাদায় গড়ায়নি। রাজনৈতিক বাস্তবতা সহসাই পরিস্থিতি বদলে দেবে তেমন অবস্থাও ছিলনা।
মনের গভীরে কিছুটা দ্বিধা থাকলেও অজানাকে জানার, অচেনাকে দেখার পুরানো ইচ্ছাটারই জয় হল। দুদিনের অনুসন্ধানের পর মনের মত রুট ও দামে টিকেট পাওয়া গেল।
জুলাই ১৯, ২০১৯ সাল। চমৎকার রৌদ্রজ্জ্বল একটা দিন। আমেরিকার হিংস্র পশ্চিমে বছরের এ সময়টায় সূর্যের দাপাদাপিতে কেউ ভাগ বসাতে পারেনা। একটানা গরমে জীবন অনেকসময় অতিষ্ঠ হয়ে উঠে। মাঠ-ঘাট, চারিদিকে পাহাড় পর্বতেও চলে সূর্যের রাজত্ব।
আজকেও এর ব্যতিক্রম হলোনা। এয়ার ট্রাভেলের নিখুঁত আবহাওয়া। বিকাল ৪টায় ফ্লাইট হলেও দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় সানপোর্ট এয়ারপোর্টে হাজির। লাগেজ বলতে মধ্য সাইজের একটা সুটকেস ও হাল্কা একটা হাতব্যাগ। জানতাম মধ্যপ্রাচ্যের যে কোন দেশে এটা গরমের সময়। অনেক জায়গায় রাতে বেশ ঠাণ্ডা পরে। তাই দু’ধরণের আবহাওয়ার জন্যেই কাপড় নিতে হল।
নিউ মেক্সিকোর আলবুকুরকে হতে ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রানসিসকো তিন ঘণ্টার সরাসরি ফ্লাইট। ইউনাইটেড এয়ার লাইন্সে ক’মাস আগে একই পথে ভ্যানকুভার ঘুরে এসেছি। চরম বিরক্তিকর অভিজ্ঞতার পর প্রতিজ্ঞা করেছিলাম এই কোম্পানির ফ্লাইটে আর উঠবো না। কিন্তু সময় ও দামের সাথে কম্প্রোমাইজ করতে হল এ যাত্রায়।
দু’ঘণ্টা সময়ের পার্থক্যের কারণে সান ফ্রানসিসকো পৌঁছানোর পর একই দিন রওয়ানা দিব তেল আভিভের পথে। অযথা এয়ারপোর্টে সময় নষ্ট করতে হবেনা, এটাই ছিল ফ্লাইট সিলেকশনের আসল কারণ। এ যাত্রায় ইউনাইটেড হতাশ করেনি। আলবুকুরকে হতে ফ্লাইট ছাড়তে একমিনিটও দেরী হয়নি।
পথে দু’একবার ঝাঁকি লাগলেও গোটা ফ্লাইট ছিল শান্ত। যাত্রীদেরও তেমন ভিড় ছিলনা। ইন-ফ্লাইট সার্ভিস বলতে এক কাপ কফি অথবা এক গ্লাস সফট ড্রিংক। তা নিয়েই ইদানীং সন্তুষ্ট থাকতে হয়।
এই স্বল্পতার হেতু জানতে চাইলে ওরা বলে টিকেটের দাম কম, তাই সার্ভিসও কম। অথচ সময় ছিল যখন তিন ঘণ্টার জার্নিতেও গরম খাবারের ব্যবস্থা থাকতো। অবশ্য ফ্লাইটে উঠলেই ক্ষুধা চাপতে হবে, এমন বাধ্যবাধকতা আমার কোন কালেই ছিলনা। জানালার সীটটায় বসে বাইরের পৃথিবী দেখতে দেখতে কখন পৌঁছে গেছি টের পাইনি।
loading...
loading...
মুগ্ধকাড়া বর্ণনা আপনার লিখাটিকে অনেক বেশী সৌকর্য্যময় করে তুলেছে স্যার।
loading...