সজল চোখের হাম্বারব (দুুই)

Photo_1626

সকাল দরজা খোলার পর থেকে তারাদের রান্নাবাটি শুরু হওয়া পর্যন্ত। সদর দরজায় মাটির রোয়াকে বসে থাকে তো বসেই থাকে। আনা। সারাদিনে ওর সঙ্গে একবার দেখা হবেই। সবার সঙ্গে তার কথা, অবিরত মুখ দিয়ে লালের সঙ্গে ঝরে। ওর কথা না বুঝলেও হৃদয় বুঝি, তাই কিছুক্ষণ বলাটা অভ্যাস।

ঠোঁট ঠেলে বেরিয়ে পড়া উঁচু অপরিচ্ছন্ন দাঁতে অনাবিল হাসি। সদ্য গাইএর বাৎসল্যে চোখ হাম্বা ডাকে। সামনে দিয়ে যে কেউ যাক, তাকেই সে উপহার দেয় ওই হাসি আর কথা।

অন্যথা শুধু দেবুর বেলা। ওই রাস্তা তার নয়। ও রাস্তায় সে গরল ছড়ায়। ওই রাস্তায় দেবু জীয়ন্ত মানুষকে মরণ দিয়ে গাঁথে।
দেবু নিষ্ঠুরতা করে আনার সঙ্গে। – “আনু, ও আনু! তোমার বৌদির সঙ্গে একবার দেখা করে এসো। তোমাকে সে যেতে বলেছে।”

আনুর নরম চোখে কঠিন আগুন জ্বলে ওঠে। কুঁজো পিঠ তুলে বাঁকা বাঁকা হাতে ঢিল কুড়িয়ে আক্ষেপ আর অপমান ছুঁড়ে মারে। অবিশ্রান্ত চিৎকারে আর কান্নায় ছটফট করে।
দেবতার পিঁড়ি নড়ে যায়, দেবু না! সে তখন হাসির ব্যাপারি।

দেবু যেদিন বিয়ে করে ঠাকুরতলায় জোড়ে প্রণাম করতে এলো, সেদিন আনার অন্ধ নৌকো ঝড়ের রাতে। কেঁদে, হিজিবিজি বকে ইশারায় বলেছিলো ও দেবুর বিয়ে মানতে পারছে না। দেবুর বৌ ও-ই হবে! অবাক না হবার মতো লোকের অভাব ছিলো। দুঃখবোধ ব্যাকরণ খুলেছিলো কেউ কেউ। কেউ শুধু সাদা চোখে আকাশ দেখেছে। কিন্তু কেউ তার দুঃখ সারিয়ে নৌকো তীরে আনেনি।

.
“বাইফোকালিজম্ এ প্রথম প্রকাশিত”

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

১টি মন্তব্য (লেখকের ০টি) | ১ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ২৪-০৭-২০২১ | ১১:৫৯ |

    যাপিত জীবনের অনবদ্য অনুভূতি। খুব চেনা চেনা আপন আপন অনুভব।
    একরাশ শুভমিতি প্রিয় কবি বন্ধু কৃষ্ণা মালিক। নিরাপদে থাকবেন। শুভেচ্ছা। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

    GD Star Rating
    loading...