শুধু রান্নাবাটি। আর ছুটন্ত ঘোড়া ,কিংবা ফুল- প্রজাপতি ঘরের এখানে ওখানে যেখানে যেমন মানায় ঘড়ির সঙ্গে টিক্ টিক্ করতে করতে। কঠিনপাচ্যের ইংরাজী ফেল। তার বদলে আসান বোনা, রিফু করা, কাঁথা সেলাই। কুরুশ কাঁটায় পুজোর থালার খুঞ্চিপোষও। … কাঁটায় কাঁটায় ঘনিয়ে আসে ঝড়ঝঞ্ঝা – চারপাশে জেগে থাকা বাঁকা নখ। উগলে আসা কালচে রঙা ডলি সুতোর কঠিন পাক – বাদলা দিনের আগুন – আর একলা হলে জ্যোৎস্নায় পোড়া তরকারির গন্ধ।-বুনতে বুনতে নিজেকে ছাড়িয়ে যায় নিজে।
থতমত সর্বদা। যেন শুকনো পাতা হাওয়ার টানে গড়িয়ে গড়িয়ে কোথায় যে যাবে বোঝে না! মন – একটা ঝুপসিকোণা দোনামোনা মেঘ।ঝরবে, না কি ঢোঁক গিলে নেবে? কেউ যখন বকে দেয়, টেনে হাওয়ায় একটাও কথা ছুঁড়ে দিতে পারে না। তখনই কথা বলতে গেলে চোখ থেকে ঝরে পড়ে।
কেউ এগিয়ে দেয় নি যত্নের থালা। বরং সবার গ্রীষ্মদিন নিভিয়ে দিয়েছে তেলহলুদ লাগা আঁচলে। এই আর কি! দুঃখসুখের পাঁচমিশেলি গেরস্তবাড়ির বড় বৌ। তবু গৃহিণীরা কিছু বেশি খোঁজে। শুধু চেনে না ‘বেশি’টা কী?
অথচ তারও তো কিশোরীবেলা – ? রাস্তার মোড়ে মোড়ে ছুটন্ত ধুলো, আর ফ্রকের কুঁচি খেলেছে হাওয়ার সঙ্গে? এখন পানের তবক মোড়া দুপুরে খোলা চুলে পিঠ ঝাঁপানো রোদ। তবু নিজস্ব আছে কিছু গোপন বাক্সবন্দী।
একদিন মরচে রঙা সুর ভাসানো তোরঙ্গ খুলে পুরোনোর গন্ধ নিলো। বাক্স ভর্তি জল। জলের শয়ানে এক বুড়োর ছবি আর একটা পাথরের হার। ছবি তার বাবার। বুড়ো কোথায় নাকি খাঁচার দাঁড় কেটে চোখ ছানতে গিয়ে এনে দিয়েছিলো তাকে। পাথর থেকে গোলাপি রঙ ঠিকরোচ্ছে। তার আভা যত তার গালে লাগে ততই চোখ থেকে গঙ্গোত্রী গলতে থাকে।
ছবি হাতে নিয়ে সাত চড়ে রা না কাড়া ঠোঁট কুরুশ কাঁটায় কথা বুনতে থাকে একা একা।
.
“বাইফোকালিজম্ এ প্রথম প্রকাশিত”
loading...
loading...
যাপিত জীবনের কথা কাব্য অসামান্য হয়ে উঠে এসেছে।
অভিনন্দন এবং শুভ কামনা প্রিয় কবি প্রিয় জন কৃষ্ণা মালিক। ঈদ মোবারক।
loading...
অনবদ্য সৃজন । ঈদ মোবারক
loading...
সারা দুনিয়ায় গৃহিণীদের শ্রম ও গুণের কথা আপনার লেখায় চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। সুন্দর পোস্টের জন্য অজস্র ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
loading...