আত্মকথা-৪

একটা কথা আছে বাংলায় আছে কি বলুন তো! পাপ তাঁর বাপকেও ছাড়ে না! আমি নিজে অসুস্থ, জ্বর ! বরের ও অপারেশন এইমাত্র দেখে টেখে এলাম ! আমার জীবনের বাস্তব কথা শেয়ার করছি–

আমি যখন বিয়ে করি তখন আর একটি স্থানীয় মেয়ে ও বাংলাদেশী ছ’মাস আগে পরে, মেয়েটি গ্র্যাজুয়েট আর খুব অহংকারী হিংসুক স্বার্থপর লোভী কাজের ভয়ে শাশুড়ির অত্যাচারটা বেশী একটা সহ্য করতে হয়নি যতটা আমাকে করতে হয়েছে— ওই কথায় আছে পাপ বাপকেও ছাড়ে না– আমি আমার ভাসুর, জা কে নিজের দাদা দিদি র মতোই ভালোবাসতাম, কিন্তু ওই মহিলা বরাবর ই আমাকে হিংসা আর অত্যাচার করে গেছেন, আমার মনে আছে আমার একশো জ্বর ওই অবস্থায় ওদের বাড়ী গিয়ে খাওয়ার মাছ দিয়ে এসেছি! ওই মহিলা আমাকে সবসময় ছোট করে গেছেন উনার বাবা মা দাদা ছিল এটা ওটা দিত, তা নিয়ে আমার বর শাশুড়ি অত্যাচার করত, আমাকে বছরের বছর ওই মহিলার সামনে আন্ডার এস্টিমেট করা হত শুধুমাত্র আমার বাবা মা নেই বলে, জীবনে সবথেকে বেশী কষ্ট পেয়েছিলাম ওই দিনটায় — আমার বাচ্চা জন্ম হওয়ার দিন !

ওইদিন আমার বরের ও ডেঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি, আমি দশ মাসের প্রেগনেন্ট, শ্বশুড় শাশুড়ি ননদ সবাই বাংলাদেশে থাকেন। সংসারটা আমি ই দেখি উনারা সুবিধামতো এসে আখের গুছিয়ে ঘুরে টুরে চলে যান। আমার শাশুড়ি কোন কিছু করার ক্রেডিট নিতে ভালোবাসেন। শাশুড়ি ছিলেন সেইসময়। প্রতিটা মূহূর্তে আমাকে গালিগালাজ করে গেছেন। একশো বছরের বুড়োর সংগে থাকতাম ওই প্রেগনেন্ট অবস্থায়, শাশুড়ি র দেওয়া ওই নরকযন্ত্রণা আমি মরা অবধি ভুলতে পারব না।

আমার মনে হচ্ছিল বাচ্চা পেটে ধরে অনেক বড় অন্যয় করে ফেলেছি! আমার মা নেই বাপের বাড়ি থেকে কেউ আসেনি এটা নাকি সবথেকে বড় অপরাধ, এমনকি শাশুড়ির কথায় শাশুড়ি সহ শাশুড়ির যত আত্মীয় সবাই মিলে গালিগালাজ বাজে ব্যবহার করছে, আমার জীবনে ভয়ংকর শাশুড়ি জীবনে দেখিনি, তারপরে শুনুন আমি সিজারের পর ওদের আচরণে প্রায় কেঁদে দিয়েছিলাম। শাশুড়ি কাছে থাকতে আমাকে ধরতেও চায়নি, এত জঘন্য বংশ আর শাশুড়ি আর কারো যেন না হয়।

আরো শুনুন তাঁর ছেলের জন্য বাড়ির ভালো ভালো খাওয়ার আসত আর আমার জন্য হাসপাতালের খাওয়ার ! বাচ্চা জন্মের পর মেয়েদের অনেক ইচ্ছা থাকে!

আমার বেলায় শুনুন যে মহিলার কথা বললাম ও প্রেগন্যান্ট। ওকে স্বাদ দিল আমার বেলা মাছের কাঁটা খাইয়ে রাখল। এতো মাছ আনত কোথায় যেত জানি না আমি পেতাম মাছের কাঁটা আর আলুসিদ্ধ, আমার যেদিন সিজার সেইদিন তাঁর স্বাদ অথচ আমার বরের মামার ছেলের বৌ — কত আপন— আমাকে এতটাই হিংসা করত যে যেদিন আমরা কষ্ট পাচ্ছি সেদিন তাঁরা — আনন্দ করছে— শুনে আমার চোখ ঠসঠস করে জল পড়ে গেছে— তাঁর নাকি ছেলে হবে আমি যদি নজর দিয়ে দি, অথচ ইশ্বরের এমন কৃপা দেখুন ওর মেয়ে হয়েছে আমার ছেলে–

ভগবানের দোয়াতে এরকম সংসার আর আত্মীয় স্বজন কারো না হয় — আরো শুনুন ওর বাবা মা আছে বলে খুব অহংকার করত আমার সংগে সম্পর্ক ছিন্নের ছমাসের মধ্যে ওই মহিলার বাবা মা র বাবা মা মারা যায় — তাঁর যা অহংকার ফুটানি দেখলে আপনিও হয়রান হবেন— ওইজন্য কথায় আছে না পাপ বাপকেও ছাড়ে না—ছোটোখাটো একটা কাজ করে তাঁর জন্য এতো অহংকার ভাবা যায় না?

দাদা একটা আছে আগে দিতো এখন বিয়ে করেছে — তাই ঝাড়ার চান্স পাচ্ছে না এইসকল মেয়ে ঝাড়া পার্টি কষ্ট করে সংসার করার বেলা নেই— যে দিতে পারবে সেই ভালো–?

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৪ টি মন্তব্য (লেখকের ০টি) | ৪ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ২৭-০৯-২০২০ | ১৯:৩৯ |

    আপনার জীবনের কথা গুলো পড়ে ভীষণ ভাবে মন খারাপ হলো। দুঃখিত। Frown

    GD Star Rating
    loading...
  2. রিয়া রিয়া : ২৭-০৯-২০২০ | ২১:৩৮ |

    কথা গুলো পড়ে কষ্ট পেলাম দিদি। ভাগ্য।

    GD Star Rating
    loading...
  3. ফয়জুল মহী : ২৭-০৯-২০২০ | ২২:২৭ |

    100% right

    GD Star Rating
    loading...
  4. নিতাই বাবু : ২৮-০৯-২০২০ | ০:০৪ |

    আপনার লেখা পড়ে নিজের মনটাই খারাপ হয়ে গেলো। কষ্টও পেয়েছি খুব। আপনার জন্য শুভকামনা থাকলো। আশা করি ভালো থাকবেন।

    GD Star Rating
    loading...