আর মাত্র দুইদিন পর বাংলাদেশে যাচ্ছি। কয়েকদিন যাবৎ মনটা অনেক ভাল। যা করছি সব কিছুতে মজা খুঁজে পাচ্ছি। পাশের বাসার কুত্তাটা ঘেউ ঘেউ করলে মনে হয় কেউ সঙ্গীত চর্চা করছে। ছোট ভাই রাফির অ-খাদ্য, কু-খাদ্য রান্না অমৃত মনে হচ্ছে। ইদানিং জ্যাকলিন গাঁঢ লিপস্টিক দিয়ে অফিসে আসতে শুরু করেছে। আমাদের বস আবার গাঁঢ লিপস্টিক পছন্দ করেন। গত রাতে ফোনে জানতে পারলাম বসের নাকি ডায়রিয়া হয়েছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক তাই হাসপাতালে ভর্তি। তাকে দেখতে হাসপাতালে গেলাম। ফেরার সময় বসকে কানে কানে বললাম- লিপস্টিক খাওয়া বন্ধ করুন, না হলে ডায়রিয়া পিছু ছাড়বে না। বেচারা আমার কথায় কিছুটা লজ্জা পেলেন। রাতে প্রচন্ড ঘুম চোখ নিয়ে বাসায় ফিরে দেখি রাফি আন্ডারওয়ার পরে আমার বিছানায় ঘুমাচ্ছে। কোন কিছু চিন্তা না করে ওর পাশে আমিও শুয়ে পড়লাম। তিন বছর পর দেশে যাচ্ছি, মনের আনন্দে ঠিক মত ঘুম আসে না, কিন্তু চোখের পাতা ভারী হয়ে আসছে, সাঁপুড়ে বীণ বাজাচ্ছে, রাফি নাক ডাকছে, ফোনটা বেজে চলছে, মা ফোন করেছে।
-হ্যালো মা!! কক্ কক্!!
-কিরে বাবা কেমন আছিস? তোর ফ্লাইট কখন?
-এইতে মা ভাল। ফ্লাইট সকাল ৭ টায়। কক্ কক্!!
-কিরে মুরগীর মত কক্ কক্ করছিস কেন? তোর শরীর ভালতো?
-খিদে পেয়েছে মা। কক্ কক্!!
-আহারে, আমার বাবাটার খিদে পেয়েছে। কি খাবি বল ? আমি রেঁধে রাখি।
-পাঁচ মিশালি ছোট মাছের ঝোল সাথে আমন চালের লাল ভাত। কক্ কক্!!
-ঠিক আছে বাবা, তাড়াতাড়ি চলে আয়, আর কিছু খাবি?
-হ্যালো মা! হ্যালো!! কক্ কক্!!! যাহ্!!! ফোনের লাইনটা কেটে গেল মনে হয়!!
শশ্ আওয়াজে প্লেন চলছে। আমি এবং জ্যাকলিন পাইলট। পিছনে বসে আমাদের বস কক্ কক্ করছে। জ্যাকলিন আজ গাঁঢ লিপস্টিক দেয়নি। বসের দেখাদেখি জ্যাকলিনও কক্ কক্ ডাকা শুরু করল। হঠ্যাৎ করে প্লেনে আগুন লেগে গেল। আমি একটা প্যারাসুট নিয়ে লাফ দিলাম। অনেক চেষ্টা করেও প্যারাসুট খুলতে পারছি না। একি! এতো প্যারাসুট না! রাফির আন্ডারওয়ার! হায় আল্লাহ !!! প্যারাসুট ভেবে রাফির আন্ডারওয়ার নিয়ে লাফ দিলাম?
আমি পড়ে যাচ্ছি গভীর অতলে। বাঁচাও আমাকে! কক্ কক্! বাঁচাও!!!
তীব্র ব্যথার যন্ত্রনা নিয়ে ঘুম ভেঙে গেল। গাল ঘষতে ঘষতে উঠে দেখি রাফি ভীত চোখে আমার সামনে বসা।
-কিরে রাফি, তুই ছোট হয়ে আমাকে থাপ্পড় মারলি? তোর এত বড় সাহস?
-কি করব ভাই, আপনি যেভাবে কক্ কক্ করে আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন!
-তাই বলে থাপ্পড় মারবি? ঘুম ভাঙ্গানোর আর কোন উপায় নেই? বেয়াদব কোথাকার!! বিদায়-হ চোখের সামনে থেকে।
-যাচ্ছি ভাই, তার আগে আমার আন্ডারওয়ারটা দেন।
-আবার ফাজলামি করিস। তোর আন্ডারওয়ার আমি কই পাবো?
রাফি সবিনয় ভাবে আমার দিকে ইশারা করতেই আমি আঁতকে উঠলাম।
আমার হাতে রাফির আন্ডারওয়ার!
হায়রে অবস্থা…..
loading...
loading...
loading...
খুব ভাল লেখেছেন দাদা
loading...
ভিন্নধর্মী উপস্থাপনা পড়লাম। আমার কাছে বেশ লেগেছে মিম. পবিত্র হোসাইন।
loading...
খুব ভালো লাগলো দাদা। পড়ে মজাও পেলাম।
loading...