ছোট গল্পঃ অসম প্রেম

প্রতি দিনই স্বপ্ন দেখি। মাঝে মাঝে স্বপ্ন দেখে ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠি। আজো লাফিয়ে ঘুম থেকে উঠলাম। কিন্তু অন্য দিন এই ভাবে লাফিয়ে ঘুম থেকে উঠলে শরীরটা হালকা কেপেঁ উঠে। আজ তেমন কিছু হয়নি। কেমন যেন একটা ভাল লাগার মোহ কাজ করছে। অদ্ভুত রকমের ভাল লাগা। যেই বিষয়টায় ভাল লাগার কথা নয়, তাতেই ভাল লাগছে। মনে মনে ভাবতে লাগলাম আমার কি তাহলে মানসিক কোন সমস্যা হচ্ছে!!! না। তা নয়।

ছোট বেলা থেকেই ভাবতাম যদি প্রেম করি তাহলে আমার থেকে দশ বা পনের বছরের বড় কোন মেয়ের সাথে প্রেম করব। কিন্তু তাদের কাছে ভিড়তে সাহস হত না।
তারপর অনেক বসন্ত কেটে গেছে। এই চিন্তা আর মাথায় আসেনি। কিন্তু জীবনের একটা সময় সাংসারিক জীবনের কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতার পর আবার মাথা উকি দেয় সেই অদ্ভুত আকাংখা। বিষয়টা উকি দেওয়া পর্যন্তই ছিল। কিন্তু আজ হটাৎ করেই আমার দেহ মনে সেই চিন্তার প্রতিফলন।

আজ স্বপ্নে আমি একজনকে প্রপোজ করেছি। সে আমার থেকে দশ বা পনের বছরের বড় হবে। হুম, তাকে আমি চিনি। সরাসরি চিনি না। ফেসবুকের কল্যানে আমাদের পরিচয়। সে লেখালিখি করে, আমিও অল্প বিস্তর করি। সেই সুবাদে যোগাযোগ, কথাবার্তা চলতে থাকে। এইটা কোন ব্যাপার ছিলনা। মূল কারণ হল তার কয়েকটা ছবি। যার কারণে ফ্রেন্ডরিকুয়েষ্ট পাঠিয়েছি আমি নিজেই। তার ছবি দেখে আমি কেমন যেন গভীর রকমের স্মোহিত হয়েছি। তার চোখে কামনা, নানা শুধু কামনা নয়; একটা মায়াও আছে। যেন কিছু একটা বলতে চায়। ঠোট গুলি বেশ আবেগী। স্থির ঠোট দেখেও মনে হয় আবেগে ঠোট জোড়া কাপঁছে।

চেহারায় যথেষ্ট রকমের বয়সের ছাপ আছে। বলা যায় সে একজন বয়ঃষ্কা যুবতী। যুবতী বলার যথেষ্ট কারণ আছে। এই পয়ঁতাল্লিশ পঞ্চাশে এসেও যার চোখে মুখে যুবতীর মতএত কামনা, মায়া, আবেগ প্রতিফলিত হয় তাকে যুবতী না বলে কোন উপায় আছে!!

আমি তাকে প্রপোজ করার পর তার হ্যাঁ বোদক উত্তর পেয়ে নিজেকে আর আটকে রাখতে পারিনি। জড়িয়ে ধরে তার চুম্বন্দানীতে চুম্বন করেছি। শিহরীত হয়েছি। এই অসম প্রেমের চুম্বনে আমার সারা শরীর কাপঁছে। এই অবস্থাতেই আমি তার চোখের দিকে তাকিয়ে থেকে সমুদ্রের হিমেল হাওয়ার আনন্দ অনুভব করতে থাকি। অনুভব করেছি প্রাপ্তির বিশালতা। মনে হতে থাকে আমার শীর ধারায় একটা শীতল হিমবাহ বয়ে চলেছে।
কি ভাল লাগা। কি রকমের আনন্দ তা বলে বুঝানো সম্ভব নয়। কারণ কিছু কিছু বিষয় আছে শুধু অনুভবেই উপলব্দি হয়। অংগ বা বাক্য প্রয়োগে নয়।

সকাল দশটা বাজে। আজ অফিস নেই। রুমের বাহিরে একটা ভাংগা বেঞ্চে বসে সিগারেট টানছি। মনের মধ্য একটা ইচ্ছা প্রবল। এখন যদি তার সাথে একটু দেখা করতে পারতাম; খুব ভাল হত। কিন্তু কিছুই করার নাই। আমি এখন তার থেকে পাচঁ হাজার আটশত সাতাশ কিলোমিটার দূরে বসে আছি।
তার চিন্তায় ঢুবে থেকে একের পর এক সিগারেট টানছি আর ভাবছি। হঠাত মনে হল- দেখা করতে পারছি না ত কি হয়েছে। তার মোবাইল নাম্বারে ত একটা কল দেওয়া যায়। যেই চিন্তা সেই কাজ। মোবাইলটা এনে নাম্বারটা ডায়াল করলাম। আমার হাত এখন অল্প বিস্তর কাপঁছে।
ফোনটা কানে ধরতেই বুঝতে পারলাম, তার মোবাইলে রিং বাজছে। নাহ কলটা ধরেনি। আবার কল দিব কি দিবনা এই ভাবতে ভাবতে মোবাইলের ইয়েস বাটনে চাপ দিয়েই দিলাম। আবার ফোন কানে ধরলাম। হুম এবার রিং বাজছে। রিং বাজছে ত বাজছেই…হ্যা এবার ধরেছে। অপর পাশ থেকে–
– হ্যালো…
– হ্যালো
– কেআপনি?
– আমি অরণ্য, কেমন আছেন?
– জি……টু-ট টু-ট টু-ট ……লাইনটা কেটে গেল।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৭ টি মন্তব্য (লেখকের ৩টি) | ৩ জন মন্তব্যকারী

  1. ফয়জুল মহী : ২৩-০১-২০২০ | ১৬:০৬ |

     মননশীল ভাবনা 

    GD Star Rating
    loading...
    • ফেনা : ২৩-০১-২০২০ | ২১:১০ |

      অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

      GD Star Rating
      loading...
  2. মুরুব্বী : ২৩-০১-২০২০ | ১৭:২৮ |

    ছোট গল্পটিকে বেশ ধীরে সুস্থে আত্মস্থ করার চেষ্টা করলাম। বেশ লিখেছেন মি. ফেনা।

    GD Star Rating
    loading...
    • ফেনা : ২৩-০১-২০২০ | ২১:১২ |

      প্রিয় মানুষের এমন মন্তব্যে বেশ অনুপ্রানীত হলাম। 

      কেমন আছেন আপনি?? 

      GD Star Rating
      loading...
      • মুরুব্বী : ২৬-০১-২০২০ | ১০:২৬ |

        আল্লাহর রহমতে এখন অনেকটা আগের চেয়ে ভালো। ধন্যবাদ।

        GD Star Rating
        loading...
  3. ইসিয়াক : ২৫-০১-২০২০ | ১০:৩৭ |

    ভালো লাগলো।https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    GD Star Rating
    loading...
    • ফেনা : ২৬-০১-২০২০ | ১৪:৪৪ |

      ধন্যবাদ।

      GD Star Rating
      loading...