-হারিকেনের সলতে কমাইয়া দিলি ক্যান?
রাশেদ কিছুটা রাগান্বিত স্বরে মাজহারকে বললো।
-নদির পাড় থেইক্যা যারা দেখবে তাদের কাছে এইটাই ভালো লাগবে; তাই কমাইয়া দিলাম।
-মানে?
-ঐ দেখ, মশালের মতো কিছু একটা জ্বালাইয়া মানুষ জন যাইতাছে। ওরা হয়ত অনেক দূর পথ এইভাবে আলো জ্বালাইয়া যাবে। হাতের ঐ মশালটা নিভবার আগেই পথের আশপাশ থেইকা পাটের খড়ির মতো কিছু জোগাড় কইরা ওরা আরেকটা মশাল বানাবে। কাছে গেলে বুঝতি, ওরা পথের দিকে একমনে তাকাইয়া তাকাইয়া যাইতাছে। ওদের কেউ যদি এদিকে একবার তাকায় তাইলে কী হবে জানিস?
-কি?
-ওরা সবাই দেখবে, মাঝ নদিতে একটা নৌকা হারিকেনের অল্প আলোয় জাইগা আছে। তখন ওরা ক্ষণিক থামবে এবং ভাববে, “জেগে থাকাই সবচে বেশী জরুরি”।
-কেমনে বুঝলি?
-আমি জানি। যারা রাতের পথিক তারা সাধারণত দার্শনিক হয়। ওরাও তাই।
-আর?
-আর নদির কাছে এলে সকল পুরুষ প্রেমিক হয়! আমি কুড়ি রাত জাইগা জাইগা সিদ্ধান্তে পৌঁছাইছি যে, চন্ডিদাসের কোনই দোষ ছিলনা।
হঠাৎ শিয়ালের ডাকে মাজহার ওর কথা থামালো। পরপর আরও কয়েকটা শিয়াল ডেকে ওঠলো। প্রথম ডাকটার ক্যাসকেইড ইফেক্টের মতো অন্য ডাকগুলি যেনো।
-এখন কী মাঝরাত?
-হুম। গাও গেরামে মাঝরাতের ঘণ্টি ওই হুক্কা-হুয়া ডাক।
মাজহার বিজ্ঞের মত করে রাশেদের প্রশ্নের জবাব দিল।
-কিন্তু আমরা তো সবেমাত্র একটা মাছ ধরছি ! ছোট্ট একটা ইছা মাছ। আমাদের মধ্যরাতের নদি-ডিনারের কী হবে?
রাশেদ গলায়, চোখে-মুখে বেশ হতাশা!
-ঐ যে আলো মিটমিট করতাছে ওটা জেলে পাড়া। তোরা যাবি?
জাহানগীর প্রস্তাব করলো। সে নৌকার অন্য গলুইয়ে চুপচাপ বড়শির ছিপ ধরে বসে ছিল।
-ক্যান যামু সেইটা আগে ক;
রাশেদ জানতে চাইলো।
-ঐ পাড়ায় জাবু নামে একজন জেলে আছে। আমার বাবার আমলের লোক। তার ভারী সুন্দর একজন মেয়ে আছে।
-তাকে তোর পছন্দ?
-না। তারে আমি একবারই দেখছি। মাধুরী দীক্ষিতের চেয়েও সুন্দরী। ওখানে গেলে আমরা মাছ পাইতে পারি।
কারো সম্মতির অপেক্ষা না করে মাজহার জোরসে বৈঠা ধরলো। পাড়াটাতে যেনো তাকে যেতেই হবে। জাহানগীর আর রাশেদও জলে পা নামায়ে দিলো বৈঠার বিকল্প হিসেবে।
হেঁইয়ো হেঁইয়ো আওয়াজ তুলে ওরা জেলে পাড়ার দিকে যাচ্ছে। এনাটমির ডিসেকসন হল পালিয়ে মধ্যরাতের ঝিনাই নদিতে তখন তিন যুবক; জাবু কন্যার তিন চন্ডিদাস !
loading...
loading...
দারুণ ইন্টারেস্টিং তো!! আপনার উপস্থিতি দেখি সত্য কিন্তু আপনার লিখা মিস্ করি। হঠাৎ পেলে এ রকম চণ্ডীদাসও ভালো লাগে। হালকা লিখা মন ভালো করে দেয়। আরও লিখুন, হোক না খেরোপাতার ক্ষতি কি। শব্দনীড়ে নিয়মিত চাই ভাই। মূদ্রণ বিভ্রাট লক্ষ্য করলাম মনে হয়।
loading...
নিয়মিত হবার মত অবস্থায় ছিলাম না। আপনার মন্তব্য মন ছুঁয়ে যায়।
পোষ্ট করেই পড়েছি এবং দুটি টাইপো ঠিক করেছি। "নদি" বানানটা ইচ্ছে করেই।
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ !
loading...
ওরা সবাই দেখবে, মাঝ নদিতে একটা নৌকা হারিকেনের অল্প আলোয় জাইগা আছে। তখন ওরা ক্ষণিক থামবে এবং ভাববে, “জেগে থাকাই সবচে বেশী জরুরি”।
এই জায়গাটি আমার কাছে অসামান্য লেগেছে ডেজারট ভাই।
loading...
অশেষ ধন্যবাদ দাদা। মন ভরে গেল।
loading...
বানানো ঘটনা … এই কথাটি হচ্ছে সরল স্বীকারোক্তি।
চণ্ডীদাসত্রয়ের মহা কর্মযজ্ঞ পড়তে গিয়ে যে সময়টুকু লেগেছে তাতে মনে হলো সময়টা বেশ উপভোগ্য হলো। আলাপে আলাপে আলাপছত্র তৈরী তার হাতে সম্ভব; যিনি ব্যক্তি জীবনে আলাপী। অভিনন্দন মি. মিড ডে ডেজারট।
[email protected]
শব্দনীড় : 01743 918 919
loading...
আপনার মন্তব্যে ভীষণ মুগ্ধ হয়েছি মিঃ মরুব্বী।
(ব্যাক্তি জীবনে আলাপে আমি খুব কৃপণ।
আমার হয়ে কেউ একজন কয়েকদিনের মধ্যে রেস্পন্ড করবে)।
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ !
loading...
আমাদের প্রত্যাশা থাকবে আপনি নিয়মিত লিখবেন। মিড ডে ডেজারট। ধন্যবাদ।
loading...
শব্দনীড় আপনার সাড়া পেয়েছে স্যার মি. মিড ডে ডেজারট। কৃতজ্ঞতা।
loading...
ক'দিন আপনার মন্তব্যের প্রতি-মন্তব্য করলাম। মনে মনে হিসাব কষছিলাম কবে আপনার অক্ষরের দেখা পাবো। আজ পেলাম। অফুরান শুভেচ্ছা প্রিয় মিড দা।
loading...
আহা, আপনার কথায় মন ভরে গেলো দিদি।
ভালো থাকবেন!
loading...
ঠিকই! গাঁয়ের মাঝরাত এমনই। আমি একবার শেয়ালের ফাঁদে পড়েছিলাম দাদা। আজ আপনার চন্ডিদাসত্রয় গল্প পড়ে মনে পড়ে গেল। আর আপনার লেখা পড়ে মনটাও ভালো হয়ে গেল। তয়, অনেকদিন পর ব্লগে আসলেন কিন্তু!
loading...
"আমি একবার শেয়ালের ফাঁদে পড়েছিলাম দাদা।" —অপেক্ষায় থাকলাম সেই গল্পটা শোনার জন্য।
আপনার মন্তব্যে ভীষণ খুশি হয়েছি দাদা।
loading...
নদির কাছে এলে সকল পুরুষ প্রেমিক হয়! আমি কুড়ি রাত জাইগা জাইগা সিদ্ধান্তে পৌঁছাইছি যে, চন্ডিদাসের কোনই দোষ ছিলনা। Darun.
loading...
আপনার মন্তব্যে ভীষণ খুশি হয়েছি ।
অশেষ ধন্যবাদ !
loading...
রোমাঞ্চকর। শেষ মিলিয়ে অদ্ভুত ডিসেকসন হয়েছে। যদিও চণ্ডীদাস চরিত্র-বিশেষে বাঙ্গালীর আগ্রহ যথেষ্ঠ। তারপরও সব মিলিয়ে আপনি নিরাশ করেননি। শুভেচ্ছা ভাই।
loading...
ছাত্রজীবনে তিন বন্ধুর অনুরুপ ঘটনার পরিবর্তিত রুপ এটা। দুদিন আগে আমার ওয়ালে লিখেছিলাম সেই বন্ধুদেরকে খোঁচা দিতে। সেটাই এখানে দিয়েছি।
আপনার মন্তব্য ভীষণ ভালো লেগেছে কবি !
loading...
অণুগল্পটি খুব সিরিয়াস টাইপের বলা যাবে না। কিন্তু আপনার উপস্থাপনায় বেশী সুন্দর হয়েছে ভাই।
loading...
বন্ধুদের নিয়ে একটা ঘটনার পরিবর্তিত রুপ এটা
আপনার মন্তব্য ভীষণ ভালো লেগেছে !
loading...
* অসাধারণ উপস্থাপনা সুপ্রিয়….


loading...
মন্তব্যে খুবই খুশি হয়েছি কবি !
loading...