তিন বছর আগের কথা। ফেসবুকে ঢুকে দেখলাম এক ছেলে বন্ধু ছবি পোষ্ট করেছে, তাতে ক্যাপশন লিখেছে – “একদা লিওনার্দো দা ভিঞ্চি দ্বারা ছবিটি আঁকিয়ে নিয়েছিলাম” তার এই ক্যাপশন দেখে দুই মিনিট মুখ হা করে বসে ছিলাম। কি বলবো বুঝতে পারিনি। পরে তাকে কমেন্ট করলাম “তোমাকে মোনালিসা আপুর মত লাগছে”।
তার দুই-তিন দিন পরে জানতে পারলাম প্রিজমা নামের একটি অ্যাপ বাজারে এসেছে। অ্যাপটির বিশেষ্যত হল সদ্য তোলা ছবি বা ইমেজ লাইব্রেরি থেকে নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন ৩৩টি ফিল্টার ব্যবহার করে বিখ্যাত শিল্পী লিওনার্দো দা ভিঞ্চি, পিকাসো, মনেট, ভ্যান গগ, মাঞ্চ, লেভিটান, ক্যানডিনস্কি’র শিল্প ভঙ্গির আদলে ছবির রূপ দিতে পারে। তাছাড়া ডিসি কমিক বুকের জনপ্রিয় ডিজাইনগুলোর আলোকেও ছবি ফিল্টার করতে পারে। সেই সময়ে বাংলাদেশে কি যে হুলুস্থূল অবস্থা হয়েছিল! ছেলে, বুড়ো থেকে শুরু করে সবাই প্রিজমা অ্যাপ খেতে শুরু করলো। বেশ কিছুদিন চলেছিল অ্যাপটি তারপর শেষ। মূলত পাবলিক এক জিনিষ বেশীদিন খায় না।
প্রিজমা শেষ হবার পর ভালই চলছিল দিনগুলো কিন্তু এর পরবর্তী ঘটনা আরো ভয়াবহ!
ঈদের দিন বন্ধু বাসায় বেড়াতে গেলাম। আমাকে দেখে তার ৪ বছর বয়সী ছেলে মোবাইল নিয়ে ছুটে এল। কাছে এসে বলতে শুরু করল:
-আঙ্কেল, আঙ্কেল! চল আমরা ডগি সেলফি তুলি।
আমিতো রিতিমত অবাক, বলে কি এই বাচ্চা? ডগি সেলফি?
-ডগি সেলফি কিভাবে তোলে আমি জানিনা বাবা।
-আঙ্কেল তুমি না অনেক বোকা, চল আমি তোমাকে শিখিয়ে দেই।
মোবাইলের ক্যামেরা তুলে ধরতেই আমার চোখ ছানাবড়া! আমি কুত্তা হয়ে গেছি, কু্ত্তার মত নাক, কান আমার!
পরে বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করে জানলাম এটা এক ধরনের অ্যাপ যা ছবি তোলার সময় মানুষের মুখের আকৃতি কুকুর বা বিড়ালের মত করে দেয়। তাহলে ভাবুন একবার কি ভয়াবহ অবস্থা? কবে যেন দেখবো অ্যাপগুলো কুত্তার মত লেজও বানিয়ে দিয়েছে।
সম্প্রতি শুরু হয়েছে আরেক ছাগুমি, ফেস অ্যাপ! ভাইরাল এই অ্যাপটি জোয়ান মানুষকে বুড়ো বানিয়ে দিচ্ছে। হাজার হাজার মানুষ নিজের বুড়ো ছবি আপলোড দিচ্ছে। কিন্তু আরেক জাতীয় মানুষ এতে খুশি না, কারন এই ট্রেন্ডে মেয়েদের অংশগ্রহন নাকি অনেক কম, তারা নাকি বুড়ি হতে পছন্দ করছে না।
যাইহোক এখন ভাবছি আমার কথা আমি তো এমনিতে বুড়ো তাহলে আমার জন্য কোনো ব্যবস্থা করা যায়না যদি একটু জোয়ান টোয়ান হতে পারতাম।
loading...
loading...
ভাল লিখেছেন। পাব্লিক কি খাবে আর কি খাবে না সেটা বুঝা খুব কঠিন। তবে একটা সত্য কথা হলো আমরা বাংলাদেশিরা খুবই হুজুগপ্রিয় জাতি।
ডগসেলফির কন্সেপ্ট শুনে বেশ মজা লাগল।
আপনি আছেন কেমন? আমার ইমেইল পেয়েছেন?
শুভ কামনা রইল!
loading...
সত্য একটা কথা বলেছেন-আমরা বাংলাদেশিরা খুবই হুজুগপ্রিয় জাতি।
ডগসেলফির কন্সেপ্ট ভালো লেগেছে জেনে শান্তি পেলাম
সকালে আপনার মেইল পেয়েছি। সময় করে রিপ্লাই করব ,ইনশাআল্লাহ দ্রুত কথা হবে
loading...
সত্য কথা বলতে কিছু কিছু মানুষ আছে তারা কি করছে আর করবে তারা নিজেরাও জানেনা। এমন একটি কাজ করলে আমাকে কেমন দেখাবে,মানুষ কি ভাববে সে দিকে তাদের মনযোগ নেই। মন যা চাচ্ছে তায়ি করে বেরাচ্ছে। পৃথিবীতে মানুষ হচ্ছে আল্লাহর বানানো সবচেয়ে সুন্দর সৃষ্টি। এটা তারা ভুলে গেছে। এসব এ্যাপস দিয়ে নিজের চেহারার বিকৃতি ঘটানো বোকামী।
loading...
দিন দিন মানুষ বুদ্ধিহীন হয়ে যাচ্ছে, ভালো মন্দ বিচক্ষণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে
loading...
ঠিকই বলেছেন মি. পবিত্র হোসাইন।
এই ট্রেন্ডে মেয়েদের অংশগ্রহন আমার চোখে পড়েনি। প্রবাসী একজন মহিলা কবি'র একটি ছবি দেখেছিলাম। ছেলেরা সৌখিনতায় বুড়ো প্রক্সি দিতে পারে, মেয়েরা না।
loading...
কি দরকার? যেমন আছে সুন্দর আছেন।
যারা নিজের সৌন্দর্যে অসুখী এরাই বিফলকামী।
loading...
সময় অসময়ের অবমোচন। কিছুদিন থাকে তারপর আর নাই।
loading...