আজ অনেকদিন পর চারুবাবুর মোড় পেরিয়ে পুবে যেতে যেতে উত্তরে দৃষ্টি গেল। হায় সেই পুরোনো দালানগুলো নেই। দূরে কালি মন্দির একাকী দাঁড়িয়ে আছে শুধু। রতন দাশ’এর কথা মনে পড়ে গেল। তখন স্কুলের শেষের দিক, মাথায় বেঞ্জু বাজানোর ঝোঁক চেপে বসেছে। রেলবাজার-বড়বন্দর থেকে ভারতের ম্যামোলা কোম্পানি’র একটি বেঞ্জু কিনেছি। ডানহাতে টিংটিং শব্দ হলে বাঁ-হাতের রীড থেমে যায়। সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে সেই সমস্যা দূর হলো বটে, কিন্তু পরিচিত গানের সুর তুলতে পারি না। একদিন চকবাজারে বসবাসকারি সহপাঠি বীরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলল, –
‘রতন দাশ’এর সঙ্গে তোর পরিচয় করিয়ে দেব, ও কিন্তু যে-কোনো গান শুনেই সুর তুলতে পারে।’
একদিন সত্যি সত্যি রতন দাশ’এর কাছে থেকে স্বরলিপি লিখে নিতে শুরু করলাম। ডায়রির পাতা স্বরলিপিতে ভরে উঠল। তারপর একদিন রতন দাশ আমার কাছে শেখা শুরু করল। সেই রতন দাশ নেই। কোথায় গেছে জানি না। তবু তার কথা মনে পড়ল। কেননা রতন দাশ শেষে আমার সিনিয়র বন্ধু হয়ে গিয়েছিল। উনিশ শ পচাত্তর’এর কোনো এক সময়ে জেলা অডিটরিয়ামে প্রোগ্রাম শেষে রতন দাশ বলল, –
‘যে গান বাজালি তার স্বরলিপি লিখে দিস্ তো।‘
লিখে দিয়েছিলাম খুব যত্ন করে। তারপর জীবন আর পৃথিবীর বুকে খুদ কুড়োতে কুড়োতে কোথায় হারিয়ে গেছে আমার সাধের সুর আর স্বরলিপি মনে নেই। আজ দুচোখ ভিজে উঠল। হায় কি আনন্দের ছিল দিনগুলো! আর আজ…? রতন দাশ’কে একবার পেলে বলতাম, আমার গানের স্বরলিপি অচেনা হয়ে গেছে বন্ধু।
(১৩.৪.১৫)
loading...
loading...
যে বয়স এবং সময় আমরা পেরিয়ে চলেছি … সেখানে সব স্মৃতির উপর কেবল ধুলো আর ধুলো। মনে হবে 'কত কথাই না বলা হলো না !!' জীবনকে যদি রিউইন্ড করা যেতো !!
loading...
ঠিক মুরুব্বী ভাই। ওয়ান টাইম বলপয়েন্ট জীবন। ভালো থাকুন সারাদিন।
loading...
আপনিও ভালো থাকবেন প্রিয় মাহবুব আলী ভাই।
loading...
অনেক কৃতজ্ঞতা।
loading...
আমার গানের স্বরলিপি অচেনা হয়ে গেছে বন্ধু।
পেছনে তাকালেই মন আনমনা হয়ে যায়।
loading...
ঠিক। স্মৃতি সবসময় বেদনার। শুভকামনা।
loading...
এমন কত শত স্মৃতি আমাদের ঘিরে থাকে আজীবন।
loading...