শেষপর্যন্ত পরওয়ারদিগারের সাথে হোসেন মোহম্মদ এরশাদের দেখা হইল। কুশল বিনিময়ের পর সৃষ্টিকর্তা বলিলেন…..
– রে এরশাদ, তোর খেরো খাতা খুলিয়া আমি একটা সত্য আবিস্কার করিতে সক্ষম হইইয়াছি। মনে হইতেসে তোর প্রতি আমি অবিচারই করিয়াছি।
– উহা কি, সর্বশক্তিমান?
– তোর পাওনা ১০০ ইচ্ছার মধ্যে ইতিমধ্যে ৯৯টা ইচ্ছা আমি পূরণ করিয়াছি। ১টা ইচ্ছা এখনো বাকি। রে নাদান, ইচ্ছা প্রকাশ কর। আমি নিশ্চয় পূরণ করিব। বান্দার সুখই যে আমার সুখ।
– হে পরওয়ারদিগার, খুবই পুলকিত বোধ করিতেছি। মনে হইতেছে আবেদন জানাইয়া ফিরিয়া যাই প্রেসিডেন্ট টাওয়ারের সেই বাসাটায়। তবে এমন আবেদন আমি পেশ করিতে চাহিনা। কারণ এইখানেই অনেক হুরপরীর সাথে আমার কথা হইয়াছে। বিশেষ বুঝাপরা হইয়াছে। তাই ঐপারে ফিরিয়া যাওয়ার আর কোন ইচ্ছা নাই। আপনি সর্বশক্তিমান, চাইলে সবই পারেন। শেষ ইচ্ছাটা আমি জগত ভ্রমণ শেষে তিনি যখন এইপারে আসিবেন তখনই পেশ করিব।
– ইহার হেতু কিরে ফকিরের বাদশা?
– আছে রাব্বুল আলামিন, আছে।
হঠাৎ করিয়া ফেরেশতাদের একজন আগাইয়া আসিয়া সৃষ্টিকর্তার কানে কি যেন একটা বলিলেন। সর্বশক্তিমান রাগান্বিত হইলেন। উনাকে চিন্তিত দেখাইল। অবশেষে তিনি আবার মুখ খুলিলেন।
– এইমাত্র আমার ইনফরমেশন মন্ত্রী মারফত জানিতে পারিলাম তোর শেষ খায়েশ। তুই অপেক্ষায় আছস মিডনাইট ড্রামাকুইনের। এইখানে এই অনন্তকালেও তুই আশায় আছস তিনি আসিয়া মিডনাইট ক্যু করিয়া আমাকে সরাইয়া দিবেন। এবং তুই তেনার ক্ষমতার রুটি-হালুয়া খাবি।
– আপনি সর্বজান্তা পরওয়ারদিগার। কি করিব বলেন, রুটি-হালুয়া একবার খাইলে বার বার খাইতে ইচ্ছা করে যে! আর আমি জানি এই অবিনশ্বর দুনিয়ায় আসিয়া তিনি নিশ্চয় আপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করিবেন। তেনার পিতাকে মুক্ত করিবেন। এবং তেনাকে যাহারা দোজখে হাবিয়ায় পাঠাইছেন তাহাদের সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করিবেন।
– রে পাপিষ্ঠ, তেনারও একটা খায়েশ বাকি আছিল। সেইটা আজ পেশ হইয়াছে এবং আমি তা পূরণ করিয়া দিয়াছি।
– সুবহানাল্লাহ! কি সেই খায়েস রাব্বুল আলামিন?
– এইপারে তিনি আমার প্রতিবেশির রাজ্যে অনন্তকাল কাটাইবার খায়েশ করিয়াছেন। নরেন না খগেন মোদি, তিনিই হইবেন তেনার রুম-মেট। আমারে ক্ষমতাচ্যুত করার আর কোন রাস্তা খোলা নাই।
এরশাদকে চিন্তিত দেখাইল। মনোবাসনা ব্যর্থ হইবে এই ভাবিয়া তিনি হতাশ হইলেন।
– সে সর্বশক্তিমান, আপনার ইচ্ছাই আমার ইচ্ছা। আর আপনি যদি তেনার গায়েবি বিচার করিতে চাহেন আমি হইব বিচারের রাজস্বাক্ষী। অনেক কিছু বলিবার আছে। ক্ষমতার আশা যখন তিরোহিত হইয়াছে তখন ভেতরের কথা ভেতরে রাখিয়া লাভ নাই।
তবে যাইবার আগে একটা কারণে আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা না জানাইলেই নহে।
– সেইটা কি-রে নাদান?
– ছাত্রলীগের মতিগতি সময়মত ঠাণ্ডা করিয়ে দিবার জন্যে ১৬ কুটি মানুষের পক্ষ হইতে আপনাকে মোবারকবাদ জানাই। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত লইয়াছেন।
– রে এরশাদ, তোর অবগতির জন্য জানাইতেছি। ছাত্রলীগ এখন আর ছাত্রলীগ না। তাহাদের আমি এডিস মশায় রূপান্তরিত করিয়াছি। ডেঙ্গুর সিরোমে শক্তিশালী করিয়া রোহিঙ্গাদের চাইতেও দ্রুত প্রজননের ক্ষমতা দিয়াছি। তোর কৃতজ্ঞতা গ্রহন করিতে আমি অক্ষম!
এরশাদ ভাবনায় পরিয়া গেল। এডিস কাহাকে আগে কামড়াইবে, রওশন না বিদিশাকে, এই ভাবিয়া চিন্তিত হইয়া পরিল।
loading...
loading...
হাহাহাহা। বেচারা এরশাদ স্বর্গে গিয়াও শান্তি পাইলো না। দুই কালেই বিড়ম্বনা।
loading...
রে এরশাদ, তোর খেরো খাতা খুলিয়া আমি একটা সত্য আবিস্কার করিতে সক্ষম হইইয়াছি। মনে হইতেসে তোর প্রতি আমি অবিচারই করিয়াছি।
– উহা কি, সর্বশক্তিমান?
– তোর পাওনা ১০০ ইচ্ছার মধ্যে ইতিমধ্যে ৯৯টা ইচ্ছা আমি পূরণ করিয়াছি। ১টা ইচ্ছা এখনো বাকি। রে নাদান, ইচ্ছা প্রকাশ কর। আমি নিশ্চয় পূরণ করিব। বান্দার সুখই যে আমার সুখ।
loading...
পড়লাম।
loading...
এরশাদ সাহেব বরাবরই নিরাপদে থাকেন দেখছি।
loading...
বেচারা !!!
loading...
দারুণ একটি রম্য পড়লাম। অভিনন্দন দাদা।
loading...
loading...