নির্বিরোধী পরহেজগার ও আপসকামী ক্রিমিনাল

16473063_1233011506733966_3740051370736959372_n

যারা সমাজের অন্যায়, অবিচার দেখেও তা বন্ধ করার জন্য সংগ্রাম না করে নীরবতা পালন করে, সে আস্তিক বা নাস্তিক, আলেম বা মূর্খ, মুত্তাকী বা বেপরোয়া, নামাযী বা বে-নামাযী যা-ই হোক না কেন, সে আল্লাহর দৃষ্টিতে অপরাধী, ক্রিমিনাল, মুজরিম।
আল্লাহ মো’মেনদের রিপুজনিত দোষ- ত্রুটি গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়ার প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন অসংখ্যবার। এই মো’মেন হচ্ছে তারা, যারা সমাজে যারা অন্যায় হতে দেন নি, অন্যায় প্রতিরোধ করছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন।
.
বর্তমানে আমাদের সমাজের পরহেজগার ব্যক্তিরা নামাজ, রোযা ইত্যাদির দ্বারা পুণ্য সংগ্রহ করে তা নিয়ে হাশরের দিন পার পেতে চায়, কারণ এগুলোকেই তারা আমল মনে করেন। কিন্তু সমাজে বিরাজিত অন্যায়কে প্রতিহত করার কোনো গুরুত্ব তাদের কাছে নেই।
.
তাই সুদখোর মহাজন বা কোনো রাজনীতিক দলের সন্ত্রাসী হয় মসজিদ কমিটির পরিচালক। অনাহারী, নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষের আর্ত চিৎকারে বাতাস ভারি হয়ে উঠলেও কথিত ধার্মিকেরা মাথা নিচু করে পাঁচ ওয়াক্ত মসজিদে ছোটেন, রোযা রাখেন, হজ্ব করেন।
.
আল্লাহ বলছেন, “আমি কি তোমাদের এমন লোকদের কথা বলব, যারা আমলের দিক থেকে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত? (এরা হচ্ছে) সেসব লোক যাদের সকল প্রচেষ্টা এ দুনিয়ায় বিনষ্ট হয়ে গেছে, অথচ তারা মনে মনে ভাবছে, তারা (বুঝি) ভালো কাজই করে যাচ্ছে (সুরা কাহাফ: ১০৩-১০৪)।”
.
আদ-সামুদ ইত্যাদি জাতিগুলোকে আল্লাহ যখন ধ্বংস করলেন তখন তাদের মধ্যে কি পরহেজগার লোক ছিলেন না? অবশ্যই ছিলেন। কিন্তু তাদের পরহেজগারির তোয়াক্কা আল্লাহ করেন নি।
.
তিনি বলেন, “তোমাদের পূর্ববতী জাতিগুলোর মধ্যে এমন সৎকর্মশীল কেন রইল না, যারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে বাধা দিত; তবে মুষ্টিমেয় লোক ছিল যাদেরকে আমি তাদের মধ্য হতে রক্ষা করেছি। আর পাপিষ্ঠরা তো ভোগ বিলাসে মত্ত ছিল যার সামগ্রী তাদেরকে যথেষ্ট দেয়া হয়েছিল। আসলে তারা ছিল মহা অপরাধী।” (সুরা হুদ ১১৬)
.
এখনো এ জাতির মধ্যে অধিকাংশ মানুষই ভোগ বিলাসে মত্ত হতেই উদগ্রীব। আর যারা আলেম, জ্ঞানী তারা বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের ব্যাপারে মৌন। তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে চান না। এগুলোকে তারা দুনিয়াবী কাজ বলে এড়িয়ে চলেন। কিন্তু এভাবে তারা প্রলয় এড়াতে পারবেন না। তারা প্রাকৃতিক বিধান যদি নাও বোঝেন রসুলাল্লাহর সাবধানবাণী অবশ্যই বুঝবেন।
.
তিনি বলে গেছেন, কোন সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে কিছু লোক যদি অন্যায় কাজ সংঘটিত করে এবং সেটা পরিবর্তন করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও অন্যরা যদি সেটা না করে তাহলে আল্লাহ্ তাদের সবার উপরে আযাব নাযিল করেন [হাইসাম (রা.) থেকে আহমদ]।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৪ টি মন্তব্য (লেখকের ০টি) | ৪ জন মন্তব্যকারী

  1. আলমগীর সরকার লিটন : ০৮-০২-২০১৭ | ১৫:১৭ |

    https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_flowers.gif

    GD Star Rating
    loading...
  2. মুরুব্বী : ০৮-০২-২০১৭ | ১৫:২৪ |

    ‘অনাহারী, নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষের আর্ত চিৎকারে বাতাস ভারি হয়ে উঠলেও কথিত ধার্মিকেরা মাথা নিচু করে পাঁচ ওয়াক্ত মসজিদে ছোটেন, রোযা রাখেন, হজ্ব করেন।’

    ___ মানুষের পাশে মানুষ হয়ে মানবতার মতো ঔদার্য নিয়ে দাঁড়ায় না। দুঃখজনক।

    GD Star Rating
    loading...
  3. দাউদুল ইসলাম : ০৮-০২-২০১৭ | ১৯:৪৪ |

    আল্লাহ বলছেন, “আমি কি তোমাদের এমন লোকদের কথা বলব, যারা আমলের দিক থেকে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত? (এরা হচ্ছে) সেসব লোক যাদের সকল প্রচেষ্টা এ দুনিয়ায় বিনষ্ট হয়ে গেছে, অথচ তারা মনে মনে ভাবছে, তারা (বুঝি) ভালো কাজই করে যাচ্ছে (সুরা কাহাফ: ১০৩-১০৪)।”

    GD Star Rating
    loading...
  4. মামুন : ০৮-০২-২০১৭ | ২০:০০ |

    কোন সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে কিছু লোক যদি অন্যায় কাজ সংঘটিত করে এবং সেটা পরিবর্তন করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও অন্যরা যদি সেটা না করে তাহলে আল্লাহ্ তাদের সবার উপরে আযাব নাযিল করেন [হাইসাম (রা.) থেকে আহমদ]- আমরা কি এমনটি করছি? আমিতো করছি না।
    সুন্দর পোষ্ট।https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gifhttps://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_flowers.gif

    GD Star Rating
    loading...