বাদল। আট বছরের বালক। বাড়ি সিরাজগঞ্জ। বাবা-মার সাথে টংগীতে এসেছে। বাবা ভ্যান চালায়, মা আর বাদল কার্টন বক্স বানানোর কারখানায় চাকুরী পায়। শুরু হয় নতুন জীবন, সুদিনের সংগ্রাম।
হরতাল চলছে। ভ্যান চালানো বন্ধ। কার্টনের কারখানায় কাজের চাপ। রাত ১১টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। একরাতে
হনুমান ল্যাজে আগুন জ্বালিয়ে বসে আছেন। টিকেট কনফার্ম করা হয় নাই। অনেক আগেই লংকার ফ্লাইট চলে গেছে। আগুনের আঁচ গায়ে লাগতেই স্টেশন ম্যানেজার বললেন ‘কতদিন আলুপোড়া খাই না! এই আগুনে বার-বি-কিউ বেশ হত। অকাল কুষ্মান্ড দিয়ে অমাবস্যার চাঁদের চচ্চরি খেতে খেতে জিহ্বায় নির্ঘাত
লম্বা বেঞ্চে বসে আছে ফয়সাল। নিজের সংগে কথা বলছে। খারাপ লাগছে না। মনে মনে চলছে নিবিড় কথোপকথন।
: তারপর?
: মেসের দুই মাসের ভাড়া বাকী। এক লাখ টাকা থেকে ভাড়া দিব। তিনমাসের ভাড়া অগ্রীম দিব। মাসে মাসে ভাড়ার চিন্তা ভাল লাগেনা। দিন যে কিভাবে যায়!
: ইন দ্য ইয়ার অফ ১৯৪২, আমাদের এই মিরপুরের শ্যাওড়া পাড়ার ঘটনা। অণুগল্পকার মোখলেস খন্দকার গভীর রাতে অণুগল্প লিখছিলেন।
: শফিক চাচা, তারপরে কি হলো?
: তিনি গল্প লিখে শেষ করার আগেই স্ট্রোকে মারা যান। তার সাথে অসমাপ্ত গল্পটারও অপমৃত্যু ঘটে।
: গল্পও মারা যায়!
: মারা
শেফা ফার্মেসী। প্রতিদিন সন্ধ্যায় আড্ডা জমে। এলাকার বিভিন্ন বয়সী কয়েকজন নিয়মিত আড্ডা মারতে আসেন। ফার্মেসীর মালিক মজনুও যোগ দেয়। ফার্মেসী সামলায় রনি। রনির বয়স কম। ভীষণ করিতকর্মা। প্রাণবন্ত রসিক।
আড্ডার সদস্যরা ছোটখাটো স্বাস্থ্য সমস্যায় রনির শরণাপন্ন হন। রনির দেয়া ওষুধ খান। এক সকালে বিধ্বস্ত
রাতের খোলস থেকে কিভাবে বের হয় একটা সতেজ ভোর! জানালা দিয়ে ঝিরিঝিরি বাতাস। ফজরের আজানে মোয়াজ্জিনের কণ্ঠে এত সুর কোথা থেকে আসে! ডাক্তার কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ দিয়েছেন। খেলে কিছুটা সময়ের জন্য ঘুম আসে, তারপর কেমন এক অস্বস্তি আকড়ে ধরে। না ঘুম, না
: ফজু, একটা নমিনেশিন পেপার যে কিনতি হয়!
: বড় ভাই কি ইলাকশন করিবেন!
: না রে ফজু, বাণিজ্যি করিবো।
: নমিনেশিন পেপার কিনিবেন ক্যানে!
: বাণিজ্যি করিবো, নমিনেশিন পেপার লাগিবে না! নমিনেশিন পেপার কিনিবার পরে বড় বড় কইরে দুইটা মিছিল করিবো, পুস্টার
সময় তুই আমারে আবার সেই জীবনে নিয়া চল-
যেই জীবনে সব চাইতে বড় পাওয়া আছিল আটআনা দামের লেবেনচুষ, মালাই আইসক্রীম আর একটাকা দামের কুলফি বরফ
যেই জীবনে আস্ত একটা ছুটির দুপুরে মহল্লার অন্য পোলাপাইনের লগে গিয়া ফুটবল খেলা মানেই আছিল স্বাধীনতা
যেই জীবনে গুড্ডি উড়াইতে গিয়া
: বুঝলি নগেন, মায়া সব মায়া। দারা পুত্র পরিবার, তুমি কার? কে তোমার?
: গুরুজী, মায়ার ছোট বোন ছায়াকে ছাড়া বাচপো নানে।
: ছায়ার কথা কচ্ছিস! সে যে আরো বড় মায়া রে কঠিন মায়া
: গুরুজী ছায়া ছাড়া বাঁচি থাকি কি হপে! আমি মরি যাপো।
: ধুর!
খুরশীদা আর মিজান রিকশা দিয়ে যাচ্ছে। সাথে তাদের প্রথম সন্তান। মিজান বাম হাতে খুরশীদার ডান হাত ধরে রেখেছে। ঢাকা শহরের জামে হোঁচট খেতে খেতে এগুচ্ছে রিকশা।
: আপনে বাবুরে একটা দোলনা কিন্যা দিবাইন?
: কিন্যা দিবাম, বুঝছুইন।
: বাবুরে একদিন চিড়িয়াখানায় লয়া যাইবাইন?
: হ, যাইবাইম, তুমারেও
বিজ্ঞজন কহিলেন পার’তো গূঢ়গম্ভীর বিষয়ে একখানা মোটাসোটা গ্রন্থ রচনা কর। এলেবেলে যাহা লিখিবার হুমায়ুন আহমেদ দুই হাতে লিখিয়া গিয়াছেন। তোমার না লিখিলেও চলিবে।
বলিলাম, “স্পনসর পাইলে সাড়ে চারিশত পাতার একখানা গূঢ়গম্ভীর গ্রন্থ লিখিয়া দিতে পারি। এই গ্রন্থ বিক্রয় করিয়া স্পনসরের অর্থ মুনাফা সমেত ফিরত আসিবে-
রজবের চায়ের দোকান। সকাল সাতটা থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত জমজমাট। কত কিসিমের লোক আসে। বসে। আড্ডা দেয়। ঝামেলা পাকায়, ঝামেলা সারায়।
মফিজ পুলিশের ইনফর্মার। চায়ে চুমুক দেয় আর ধূর্ত চোখে ধান্ধা তালাশ করে। মোবাইল ফোনে ইয়ারদোস্তের মত থানার সেকেন্ড অফিসারের সাথে কথা বলে।
তিন নম্বর