রোজায় ধূমপান ছাড়ার সহজ উপায়
অধ্যাপক ডা. মো. রাশিদুল হাসান।
নিয়মিত যারা ধূমপান করেছন তারা অজান্তেই নিজের ভয়াবহ ক্ষতি করছেন। অনেকে মনে করেন সিওপিডি, ফুসফুসের ক্যান্সার, হার্টের সমস্যা তো হয়েই গেছে তাহলে ধূমপান ছেড়ে কী লাভ। এ ধারণা একদম ঠিক নয়। মনে রাখবেন ধূমপান বন্ধ করার প্রধান কারণ হল যেটুকু ফুসফুস বা হার্ট ভালো আছে সেটুকুকে আর নষ্ট না করা।
ধূমপান বর্জন করা সহজ নয়, তবে দুনিয়াতে লাখ লাখ মানুষ ধূমপান বর্জন করেছেন এবং তা আপনিও পারবেন। তবে ধূমপান বর্জনের ক্ষেত্রে একটি সেরা মাস হচ্ছে রমজান মাস। এ জন্য আপনি যদি প্রতিদিন রোজা রাখেন তবে আপনার খাদ্যাভাসে ও খাওয়ার সময়ের পরিবর্তন হয়। তাই এ মাস ধূমপান বর্জনের উত্তম মাস। আসুন জেনে নেই রমজান মাস থেকে কীভাবে ধূমপান বর্জন করবেন? ধূমপান ছাড়ার কারণ খুঁজে বের করুন।
ধূমপান বর্জন করা আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে যখন আপনি মনে রাখবেন যে কী কী কারণে আপনি ধূমপান ছাড়ছেন।
১. আপনি আরও ভালোভাবে শ্বাস নিতে পারবেন, ফুসফুসের ক্যান্সার, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যাবে। ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী রোগটি ক্রমশ খারাপ হতে থাকা বন্ধ হবে।
২. অর্থ অপচয় বন্ধ হবে।
৩. আপনার কাপড়-চোপড়, গাড়ি এবং ঘরে আর আগের মতো দুর্গন্ধ হবে না। ধূমপান বন্ধ হলে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব আর ধোঁয়া পান করতে হবে না।
৪. ধীরে ধীরে আপনার শ্বাসকষ্ট, কফ তৈরি হওয়া এবং বুকের ভেতর বাঁশির মতো শব্দ হওয়া আগের তুলনায় কমে যাবে।
ধূমপান বর্জন কীভাবে করবেন?
যখন আপনি সম্পূর্ণ প্রস্তুত ধূমপান বর্জনের জন্য তখন ধূমপান বর্জনের চুক্তিনামা আপনাকে সাহায্য করবে। চুক্তিনামা প্রমাণ করে যে আপনার ধূমপান ত্যাগের ইচ্ছা খুবই প্রবল। এই চুক্তিনামায় আপনার পরিবারের সদস্য ও বন্ধু-বান্ধবদের স্বাক্ষর করতে বলুন। সবসময় নিশ্চিত হোন যে ‘কেউ একজন বিশ্বাস করছে আপনাকে’ যে আপনি ধূমপান ছাড়তে পারেন।
কাজের মধ্যদিয়ে ধূমপান বর্জন
এটা আশ্চর্যের কিছুই নয়, ধূমপান ছাড়ার পর কারও কারও কাশি বেশি হয় এবং কফ তৈরি বাড়ে। তার কারণ ধূমপান বন্ধ করার পর ফুসফুস চেষ্টা করে তাদেরকে পরিষ্কার করতে। আপনার বেশ কদিন খারাপ লাগবে ধূমপান ছাড়ার কারণে। হয়তো মাথাব্যথা করবে, ঘুম আসবে না, মেজাজ খিটখিট করবে, পায়খানাতে অনিয়ম হবে।
মনে রাখতে হবে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আপনার ধূমপান না করা আপনার শরীরের সঙ্গে মানিয়ে যাবে, তখন আর খারাপ লাগবে না। বিভিন্ন কাজের মধ্য দিয়ে এ ধূমপান বর্জনের কষ্টটাকে ভুলে থাকতে হবে। যেমন- হাঁটা, বাগানে কাজ করা, নিয়মিত দৈনিক কয়েকবার গোসল করা, উৎকণ্ঠা বা হতাশার কোনো ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শে সেবন করা, বেড়াতে যাওয়া, অধূমপায়ী বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করা, ধূমপায়ী বন্ধুদের সঙ্গে গল্প বা আড্ডা দেয়া পরিহার করা ইত্যাদি।
প্রস্তুতি নিন
মনে রাখবেন তামাকের নিকোটিন খুব শক্তিশালী নেশার বস্তু। এতদিন পর্যন্ত আপনার শরীর নিকোটিন দ্বারা অভ্যস্ত হয়ে গেছে। নিকোটিনের অভাবে যে সমস্যাগুলো দেখা দেয় তাকে ‘ধূমপান পরিহারের উপসর্গ’ বলে।
এই ধূমপান পরিহারের উপসর্গ হিসেবে আপনার চিন্তাশক্তি সাময়িকভাবে কমে যেতে পারে অথবা খুব অবসাদ লাগতে পারে। কখনও দুঃশ্চিন্তা আবার কখনও হতাশা লাগতে পারে। কখনও দুঃশ্চিন্তা করবেন না। এটা একটি সাময়িক ঘটনা। ধৈর্যের সঙ্গে এ কষ্ট থেকে পরিত্রাণ পেতেই হবে।
লেখক : মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, ইনজিনিয়াস পালমোফিট, মোহাম্মদপুর, ঢাকা। সূত্র: যুগান্তর
loading...
loading...
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
loading...
ধূমপান বর্জন করা সহজ নয়, তবে দুনিয়াতে লাখ লাখ মানুষ ধূমপান বর্জন করেছেন এবং তা আপনিও পারবেন। না বোন সুরাইয়া নাজনীন। এক লক্ষবার চেষ্টা করেছি পারি নাই।
loading...
ধূমপান মুক্ত সমাজ গড়ে উঠুক।
loading...
মার্ক টোয়েনের একটা বিখ্যাত উক্তি আছে, 'ধূমপান ছেড়ে দেয়া খুবই সহজ, আমি নিজেই অনেকবার ছেড়ে দিয়েছি।'
সত্যি বলতে সিগারেট ছেড়ে দেয়া ইচ্ছের উপরে অনেকটাই নির্ভর করে। আমি নিজেই ছয় বছর সিগারেট খেয়েছি টানা। তারপর ছেড়ে দিয়েছি। আমি ছেড়ে দিতে পেরেছি কারন একটা পর্যায়ে গিয়ে সিগারেট আমার উপরে কোনো একশন ফেলতে পারত না। আমি সিগারেটে রেজিস্ট্রিভ হয়ে গিয়েছিলাম।
loading...
রোজায় ধূমপান ছেড়ে দেয়া অনেকটাই সহজ এবং সম্ভব।
loading...
ধূমপান ছেড়ে দেয়া অনেকটাই নির্ভর করে নিজের সিদ্ধান্তের উপর। ধন্যবাদ।
loading...