শরৎ শুভ্রতায় ফুলেল সাজ
হিমেল হাওয়া। নদীর আঁকাবাকা স্রোতের গন্তব্য এক অজানা পথে। মাঝির পালের হাওয়ায় বকসাদা কাশফুলগুলো দুলছে মনের আনন্দে। অবারিত কাঁশফুলের স্নিগ্ধ উপস্থিতিই জানান দিল শরতের আগমন বার্তা। এই বুঝি শরৎ এসেছে। নীল-সাদা আকাশ। এই রোদ এই বৃষ্টি। দুরন্ত কিশোরী ছুটে চলছে ধুলো মাখা পথে। তার যেন সময় এসেছে ভোরের সুবাসিত শিউলি কুড়ানোর। জোছনা রাতে বাড়ি মুখোরিত হয় শিউলির পাগল করা সুবাসে। সেই সুবাসে পুজোর দিন প্রতিমার চোখে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয় দেবীর।
শুভ্রতাকে আরও বেশি শুভ্র করে রাখতে ফুলের সাজিতে ভরে ওঠে নানা রং এর ফুলেরা। সাদা আর দুধ সাদার মিলনমেলায় একাকার হয় দোলনচাঁপা, বেলী, শিউলি, শাপলা। রংধনু রং এর ফুলেরও কমতি নেই এই ঋতুতে। নানা রং এর ফুলেরা যেন সুর তুলেছে একই সুরে। জারুল, রঙ্গন, টগর, রাধাচূড়া, মধুমঞ্জুরি, শ্বেতকাঞ্চন, কামিনী, নয়নতারা, ধুতরা, কল্কে, জল পদ্ম, সন্ধামনি, বোগেনভেলিয়া, জয়ন্তিসহ আরও কত কী! পুজার থালা রাঙাতেই বুঝি থরে থরে ফোটে ঝুমকো জবা, লটকন জবা, লঙ্কা জবা। স্বর্ণচাঁপা আর কাঁঠালচাঁপার লাজুক হাসিতে উদাসী হয়ে যায় পাখিরা। ফুলেই শুধু থেমে নেই শরতের ফুলেরা তারা জলেও খেলা করছে আপন মনের মাধুরিতে। অজস্র ঢেউয়ের মত ফুটে চলেছে শাপলা, শালুক, রক্তকমল আর জলপদ্ম। টবেও ফুটতে দেখা যায় কঙ্কনা, নীলচিতা আর রেইনলিলি।
শরতে বাঙালি মেয়েদের সাজেও যেন ফুটে ওঠে অপরুপ শুভ্রতা। ফুলের আভাতে নিজেকে করে তোলা যায় একেবারেই স্বতন্ত্র। আটপৌরে শাড়ি, কপালে সিঁদুর রং এর টিপ, চোখে কাজল, চুলে কয়েক গাছি শিউলির মালা। কনের হলুদ সন্ধাটাও সুরভিত করা যায় শিউলির মিলনমেলায়। চুলের এলোখোপাতে বেছে নেওয়া যায় কাশডাটা, পদ্ম কিংবা আধফোটা শাপলা। আর অবাধ্য চুলেরা যদি বাধা মানতে নাই চায় তাহলে চুলগুলোকে হালকা ফুলিয়ে টার্সেলে বেঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া যায় বিনুনির বাঁধনে। বিপরীত পাশে গুজে দেওয়া যায় শাপলা বা পদ্ম। পুঁতিতে গেঁথে নেওয়া যায় রঙ্গনের মালা, তবে জড়িয়ে নিতে হবে বিনুনি অথবা খোঁপায়। জবা পরতে চাইলে খোলা চুলে ব্লো ডাই করে এক পাশে গুঁজে নিতে হবে কয়েকটি জবা। সাজে আরও বৈচিত্র আনতে চুল মুড়িয়ে ফেঞ্চেরোল করে এক পাশে আনতে হবে। অন্যপাশে আটকে নিতে হবে রক্তজবা অথবা হলুদ এলামেন্ডা। যদি ক্লিপ দিয়ে গাঁথা যায় সোনালি চাঁপা তাহলে সৌন্দর্যে-সুগন্ধে নিজেকে করে তুলবে অন্যতমা।
শুধু সাজ নয়, ঘরের সজ্জায়ও নিয়ে আসতে পারেন শরতের নান্দনিকতা। মাটির চাড়িতে স্বচ্ছ জলে ভাসিয়ে দিন চাঁপা, টগর। অথবা রঙিন পদ্ম ও শাপলা। সঙ্গে থাকুক মোম কিংবা প্রদীপের আলো। শরতের প্রকৃতি টুপ করে ঝরে পড়বে আপনার ঘরে। কাঁসার থালায় নিন উপচে পড়া শিউলি। এক পাশে রাখুন শুভ্র শঙ্খ, উঁচু কাঁসার প্রদীপ জ্বলবে তারই পাশে। দেখুন না, কীভাবে বদলে যায় ঘরের কোণটি। যদি চান ঘরের কোণে আলো ছড়াতে, তাহলে কোনায় বসান বড় টব। তাতে রাখুন বড় থালা। থালায় সাজান প্রদীপ, সঙ্গে সবুজ পাতায় মেশানো সাদা শরতের ফুল।
শুধু আকাশ নয়, শরতের প্রকৃতিও যেন সেজেছে নির্মল এক মায়াবী শুভ্রতায়। ফুলেরা ছড়াচ্ছে সুনীল সজীবতা সারাবেলা!
loading...
loading...
ফুলেল শব্দের অর্থ খুব বেশীসম্ভব – "ফুলের সংস্পর্শে সুরভিত বা পুষ্পগন্ধী। এই হিসেবে শিরনামটা অসাধারণ।
অবশ্য ফুলেল শব্দের আরেকটি অর্থ পুষ্পময়।
loading...
ফুলেল মন্তব্য। ধন্যবাদ
loading...
সুন্দর———–
loading...
ধন্যবাদ
loading...
শুধু আকাশ নয়, শরতের প্রকৃতিও যেন সেজেছে নির্মল এক মায়াবী শুভ্রতায়। ফুলেরা ছড়াচ্ছে সুনীল সজীবতা সারাবেলা!
loading...
থালায় সাজান প্রদীপ, সঙ্গে সবুজ পাতায় মেশানো সাদা শরতের ফুল।
loading...
অসাধারণ পোস্ট।
loading...
ধন্যবাদ
loading...
শুধু আকাশ নয়, শরতের প্রকৃতিও যেন সেজেছে নির্মল এক মায়াবী শুভ্রতায়। ফুলেরা ছড়াচ্ছে সুনীল সজীবতা সারাবেলা!
* সুন্দর…


loading...
ধন্যবাদ
loading...
শরতের সাজ বাঙ্গালী নারীদের মানায় বেশী।
loading...
একদম ঠিক,, ধন্যবাদ
loading...