মাঝে মাঝে কথা বলতে হয়। এমনিতে আমি খুব বেশী কথা বলতে পারি না। কেউ ফোন করলে তিনিই কথা বলেন, আমি সঙ্গত করে যাই। কথা বলার ভয়ে খুব ঘনিষ্ঠ কেউ না ডাকলে কবি সাহিত্যিকদের সম্মেলনে যাই না। ফেনিয়ে ফেনিয়ে প্রচুর কথা বলা তো দূরের কথা, দু একটা কথার পরে কী বলব খুঁজে পাই না। বন্ধুদের আড্ডায় হাসি আর একটু আধটু ফোড়ন দিয়ে চালিয়ে নিই।
কিন্তু কথা বলতে হয় মাঝেমধ্যে। নিজের সঙ্গে, সঙ্গোপনে, মাঝ রাত্তিরে কথার খই ফোটে। সবটুকুই মনে মনে। একটা শব্দও বাইরে আওয়াজ হয়ে বেরিয়ে আসে না। নিজের মনে, নিজের সঙ্গে কথা বলায় আমি খুব স্বতঃস্ফূর্ত। কিন্তু আশ্চর্য জানালার বাইরে কালোর নানারকম প্রজাতির রাত্রি আমার সব কথা বোঝে। হঠাৎ হাওয়ায় ঝোঁক বুঝতে পারে কী বলছি। ওরাও উত্তর দেয়, আমি শুনি। আমি বলি, ওরা শোনে। গাছের ঘুমন্ত ডালে, কোটরে মাঝঘুমে ডুবে থাকা পাখিরা, ছোট ছোট আনুবীক্ষণিক পোকামাকড়ের দল, গাছের পাতা, শেকড়ের দল ঘুমের মধ্যেই এক কান খাড়া করে শুনে নেয় আমার কথা। ওরা বলে না কিছু, তরঙ্গ পাঠায় আমার ষষ্ঠেন্দ্রিয়ে।
সেইসব কথা চলতে চলতে কখনো বিষাদমালা, কখনো উদ্দাম রক। কথারা কথা থাকে কথার দাগে। আমি শুনতে পাই আগাছার প্রশ্বাস। কুঁড়িদের কচি গলা। আগামীকাল ঝরে পড়ার জন্য তৈরী হতে থাকা হলুদ পাতার শেষ ইচ্ছা। কথা চলে, রাত বৃদ্ধ হয়। মনে মনে আমি লিখতে থাকি আমার শেষ ইচ্ছার উইল।
loading...
loading...
ঝরে পড়ার জন্য তৈরী হতে থাকা হলুদ পাতার শেষ ইচ্ছা। কথা চলে, রাত বৃদ্ধ হয়। মনে মনে আমি লিখতে থাকি আমার শেষ ইচ্ছার উইল। ___ শুভকামনা প্রিয় সৌমিত্র।
loading...