বাবাজী ভারী অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালেন।
বীভৎস গরম। গাড়ীর ভেতরে এসি চলা সত্বেও গিয়ার বক্সের পেছনে রাখা বোতলের জল পানের অযোগ্য। রাস্তার ধারে একটাও ঠিকঠাক দোকান চোখে পড়ছে না যেখান থেকে জল কিনে আপাততঃ বাঁচার মত অবস্থায় ফিরি। হঠাৎই বাঁ দিকে চোখ চলে গেল।
বেশ চমৎকার একটা সবুজ ঘেরা আশ্রম। ছিটে বেড়ায় ঘেরা দুপাশে বাগানের শেষে একতলা একটা বাড়ী। গাড়ীর গতি কম ছিল। পরিষ্কার দেখতে পেলাম ছিটে বেড়ার গেটে বড় বড় হরফে আলকাতরায় লেখা আছে গুরু সম্মোহনানন্দজীর যোগাশ্রম। আর দেখলাম বাড়ীর পাশেই আহা মরুভূমির মরুদ্যান একটা টিউবওয়েল।
একটুও চিন্তা না করে রাস্তা থেকে গাড়ী নামিয়ে গেটের ধারে পার্ক করে সোজা গেট ঠেলে ভেতরে। ওইটুকু ক্যাঁচ শব্দ শুনেই খোলা বারান্দায় বেরিয়ে এলেন ছবিতে দেখা বেশ ভারিক্কি জটাজুট ওয়ালা এক সাধু। খালি গা, নীচে একটা ধুতি গেরুয়া রাঙিয়ে লুঙ্গির মত করে পরা।
কোনো প্রশ্ন করার আগেই বললাম, “জল!”
হাত নেড়ে ইশারা করে বারান্দায় বসতে বলে ভেতর থেকে ঝকঝকে এক পেতলের ঘটি তে জল আনতেই আমি ঢকঢক করে আস্ত ঘটি শেষ করে থামলাম। এতক্ষণে নিজে একটু ধাতস্থ হলাম বলে মনে হল। আর ঠিক তক্ষুনি নাকে এল মাংস রান্নার আহ্লাদিত গন্ধ।
থতমত খেয়ে মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল, “আপনি সাধুসন্ত হয়ে মাংস খান?”
ভীষণ অবাক হয়ে আমাকে দেখলেন সেই সাধু। ঠিক যেন দেখছেন চোখের সামনে এক নধর বোকাসোকা ছাগল ম্যাঅ্যাঅ্যা করে ডাকলো।
-“আমি খাই কি রে! এ তো তাঁর প্রসাদ!”
-“কার? ভগবানের? তিনি মাংস খান!”
আমি আরও ভোম্বল হয়ে তাকালাম।
-“তিনি সর্বভূক। তাঁর কি কোনো বিচার আছে রে পাগলা!”
-“কিন্তু ভগবান আমিষ খান জানতাম না।”
-“আমিষ! জয় রাম! জয় রাম! কি সব অলুক্ষুণে কথা বলিস! তোরা সাহেবই হয়েছিস। শাস্ত্র একেবারেই পড়িস নি। তাঁর ভোগের মাংস পেঁয়াজ ছাড়া প্রস্তুত করতে হয়। তাহলে আমিষ কোথায় হল? একেবারে শুদ্ধ নিরামিষ মাংসভোগ।”
সম্মোহনানন্দজীর সম্মোহনে আমি কাত।
loading...
loading...
জীবন বাস্তবতার লিখা। দারুণ তোমার অণুগল্পের ধরণ। অভিনন্দন প্রিয় কবি।
loading...
আনন্দিত হলাম প্রিয় ভাই। ভালো থেকে অনেক ভালো থেকো।
loading...
* অনেক সুন্দর পরিচ্ছন্ন লেখা।
শুভ কামনা কবি দাদা…
loading...
ধন্যবাদ আপনাকে কবি হুসাইন ভাই।
loading...
আমিষেরও নতুন তত্ব আর ব্যবহার নতুন তথ্য পাওয়া গেলো সৌমিত্র দা।
loading...
হাহাহা সুমন আহমেদ ভাই। সত্য বলেছেন।
loading...
ইন্টারেস্টিং সৌমিত্র দা।
loading...
ঠিক তাই কবি বোন সাজিয়া আফরিন।
loading...
পিঁয়াজ ছাড়া রান্না করা মাংস নিরামিষসহ তা আগে জানা ছিল না দাদা। তবে যুক্ত তর্কে তো ঠিকই দেখা যাচ্ছে। তাই মনেও হচ্ছে যে, হলেও হতে পারে "পূজোর প্রসাদ!"
আপনার লেখা অনুগল্প বেশ ভালো লেগেছে শ্রদ্ধেয় দাদা। ভালো থাকবেন নিশ্চয়!
loading...
হতে পারে "পূজোর প্রসাদ!" আমিও ঠিক সেসময় বুঝিনি নিতাই দা।
loading...
সম্মোহনানন্দজীর সম্মোহন।
loading...
loading...
বিবরণগুলো ছিল জীবন্ত। সবচেয়ে ভোগবাদী লোভী শ্রেণীর মানুষের একটা বড় অংশ ধর্মের ছাউনির নিচে অনুপ্রবেশ করে সাধু সাজতে এবং নির্বিঘ্ন ভোগ অব্যাহত রাখতে। দরকার সমন্বিত সচেতনতা সৃষ্টি এবং সমন্বিত প্রতিরোধ। বাংলার কবি সাহিত্যকেরাও গর্জে উঠুক।
সৌমিত্রদার জয় হোক
loading...
দরকার সমন্বিত সচেতনতা সৃষ্টি এবং সমন্বিত প্রতিরোধ। ভালোবাসা ভাই।
loading...
পড়লাম বেশ ভালো লাগলো … অভিনন্দন ।
loading...
ধন্যবাদ সালজার সাবু ভাই।
loading...
আগে ভোগ পরে ত্যাগ- এর মন্ত্রে জীবনকে চালনা করতে হয়।
মাংস না খেলে মানুষের আশা পূরণ হয় না।
তাই আগে খেয়ে পরে ছাড়তে হয়।
আজকের তথাকথিত ভণ্ড সাধুদের পাল্লায় পড়ে দেশটা উচ্ছন্নে যেতে বসেছে।
প্রসাদের নাম করে ওরা চোলাই মদের ব্যবসা করে।
ওদের চিনে রাখুন। দিন আগত। সেদিন এসে গেছে।
দেশের মানুষকে বোকা বানানো অত সহজ নয়।
সুন্দর উপস্থাপনা। প্রিয়কবিকে শুভেচ্ছা জানাই।
সাথে থাকুন, পাশে রাখুন।
জয়গুরু!
loading...
এই তো সত্য উঠে এসেছে আপনার মন্তব্যে। এমন অভিজ্ঞতাই খুঁজছিলাম।
loading...
ভাল লেগেছে সকাল সকাল একটা অণুগল্প পড়ে সকাল টা মিষ্টি করে ফেললা।। শুভ কামনা রইলো কবি।
loading...
বাহ্। শুভকামনা কবি আদেল পারভেজ ভাই।
loading...
বেশ লাগল কবি দা
loading...
ধন্যবাদ কবি আলমগীর লিটন ভাই।
loading...
কি সব অলুক্ষুণে কথা বলিস! তোরা সাহেবই হয়েছিস। শাস্ত্র একেবারেই পড়িস নি। তাঁর ভোগের মাংস পেঁয়াজ ছাড়া প্রস্তুত করতে হয়। তাহলে আমিষ কোথায় হল? একেবারে শুদ্ধ নিরামিষ মাংসভোগ।
সুন্দর লিখা দাদা, ভগবান প্রতিটি মানুষের মাঝেই বিরাজমান ।
শুভ কামনা সতত ।
loading...
ভালোবাসা কবি শান্ত চৌধুরী।
loading...