রবীন্দ্রনাথ নিয়ে আমার কথা


রবীন্দ্রনাথের কোন এক জন্ম বার্ষিকীতে আমার এক বন্ধুকে বলেছিলামঃ দোস্ত, আমার তো টু-জি নেটওয়ার্ক আর তোর তো থ্রি-জি নেটওয়ার্ক আছে, কয়েকটা রবীন্দ্র সঙ্গীত ডাউনলোড করতো শুনবো।
বন্ধুটি বলেছিলোঃ কিরে হঠাৎ ঠাকুরের গান কেন ?
আমি বলেছিলামঃ আরে হঠাৎ না, আমি মাঝে মাঝেই রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনি। তাছাড়া আজ তাঁর জন্মদিন তাই কিছু নতুন কালেকশন শোনতাম আরকি। আর উনি সম্মানিত মানুষ নামটা ভালোভাবে নিতে পারিস না ?
আমার বন্ধু উত্তরে বলেছিলোঃ রাখ তোর নাম, তুইও কি বাংলা সাহিত্য পড়ে পড়ে ঠাকুরের মুরিদ হয়ে গেলি নাকি ? আর শালায় বছরে কয়বার জন্ম নিছে ? কয়দিন আগেও না টিভিতে শোনলাম ভ্যাঁ ভ্যাঁ করতেছে। (জানিনা ও টিভিতে কী দেখেছিলো, সম্ভবত রবীন্দ্র সঙ্গীতের অনুষ্ঠান দেখেছিলো।)
তারপর আমি আর ওর সাথে এই বিষয়ে কোন কথাই বলিনি কারণ ওকে রবীন্দ্রনাথ বুঝানো আমার কাজ না আর ও জানেও না যে, এক রবীন্দ্রনাথ ছাড়া শুধু বাংলা সাহিত্য পুরোটা অপূর্ণই থাকেনা বরং বিশ্বসাহিত্যও ষোল কলায় পূর্ণ হয়না।
.
এরপর একদিন রবীন্দ্রনাথের জন্ম বার্ষিকী আসলো (২০২০ এ), দেখি আমার ওই বন্ধু রবীন্দ্রনাথের “অনন্ত প্রেম” কবিতাটি পোস্ট করে তার বিশেষ কাউকে ট্যাগও করেছে। (গভীর ভালোবাসা বুঝানোর জন্য অথবা তাকে মুগ্ধ করবার জন্য।)
আসলে রবীন্দ্রনাথের প্রতি এমন লোক দেখানো প্রেমিক/প্রেমিকা হাজারো আছে। সমান্য স্বার্থের জন্য এরা রবীন্দ্রনাথের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে পারে আবার ধর্মান্ধতার বসে তাঁকে গালিগালাজও করতে পারে। এদের আমি এড়িয়ে চলি কারণ যারা রবীন্দ্রনাথের মতো মহান ব্যক্তিত্বের ভালোবাসা নিঃস্বার্থভাবে বুকে ধারণ করতে পারেনা তারা কখনোই নিঃস্বার্থ প্রেমিক/প্রেমিকা হতে পারেনা।
.
অনেক আগে রবীন্দ্রনাথকে উৎসর্গ করে একটি কবিতা লিখেছিলামঃ
.
তোমার সৃষ্টি ধারায় খুঁজে পাই প্রেমের ঐকতান,
তুমি প্রেমে বেঁচে আছো, প্রেমেই হয়েছ মহান।
দিয়েছ তুমি ব্যথিত হিয়ায় প্রেমের চির সুর,
করেছ তুমি শানিত প্রাণ করে হিংসা দূর।।
.
আজও তুমি আছ সবার স্মরণে একই নামে,
চলে যাওনি রয়েছ মিশে ‘অনন্ত প্রেম’ শিরোনামে।
যেখানে ভুলের সয়লাব, আপন হতে চায় পর বারেবার,
সেথায় জাগাও উদার মানস আনন্দ সুখাধার।।
.
তোমাকে তাই রেখেছি মনের গহীন অন্দরে,
তুমি রবীন্দ্র, প্রেমের গান গেয়েছ ভুবন জুড়ে।
এ আমার যত প্রেমের সুর, দিলাম তোমার তরে,
‘সোনার তরী’তে মহাকাল পরে তুলে দিও থরে থরে।।
.
প্রেমে রবীন্দ্র রবীন্দ্রে প্রেম
০৬/০৮/২০১৬
.
আসলে রবীন্দ্রনাথের অংকিত নায়িকা চরিত্রের মতো শাড়ি পড়ে, কপালে ইয়া বড় টিপ পড়ে অথবা পাঞ্জাবি আর ধুতি পড়ে রবীন্দ্রনাথের নায়ক সাজলেই রবীন্দ্রনাথের প্রতি প্রকৃত সম্মান বা ভালোবাসা প্রমাণ হয়না বরং হঠকারিতারই প্রমাণ হয়। রবীন্দ্রকে ভালোবাসতে হলে রবীন্দ্র পড়তে হবে, জানতে হবে এবং বুঝতে হবে। আর তার পৃথিবীময় প্রেমের দর্শণকে অন্তরে ধারণ করতে ও তার প্রতিফলন ঘটাতে হবে।
.
বিঃদ্রঃ রবীন্দ্রনাথের জন্ম বার্ষিকীতে পোস্টটি লেখা…
০৭/০৫/২০২০

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৬ টি মন্তব্য (লেখকের ৩টি) | ৩ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ০৭-০৮-২০২০ | ৯:০৯ |

    youtu.be/h9c5pxGK3ow

    'বাসনা বিসর্জন
    মাঝে মাঝে তব দেখা পাই চিরদিন কেন পাইনা।।' https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    GD Star Rating
    loading...
  2. ফয়জুল মহী : ০৭-০৮-২০২০ | ১২:৪৭ |

    অনন্য ভাবে অনুপম লেখা I 

     

    GD Star Rating
    loading...
  3. আলমগীর সরকার লিটন : ০৮-০৮-২০২০ | ১০:৫০ |

    বিনম্র শ্রদ্ধা রইল

    GD Star Rating
    loading...