টুনটুনি আর বিড়ালের কথা
শংকর দেবনাথ
গেরস্তের এক ঘরের পাশের ছোট্ট বেগুনগাছে-
পাতায় পাতায়
জড়িয়ে আশা,
ছড়িয়ে প্রাণের
ভালোবাসা-
টুনটুনি বউ বানিয়ে বাসা খুব আয়েসে আছে।
সদ্য ফোটা পদ্য যেন তিনটে ছোট ছানা-
বাসার ভিতর
চিঁ চিঁ স্বরে,
খাবার আশায়
কেবল করে-
দু’ঠোট ফাঁক আর মা তার খাওয়ায় বেড়ে ওঠার দানা।
চোখ ফোটেনি, লোম ওঠেনি, বোল ফুটেছে খালি,
মায়ের বুকের
নরম লোমে,
ভালই কাটে
স্নেহের ওমে।
টুনির চোখে কেবল ঢোকে ভয়ের গাঢ় কালি।
দুষ্টু ভারি বাবুর বাড়ির বিড়াল মহারানি,
জিভ চাটে আর
কেবল ভাবে,
কেমন করে
কখন খাবে-
আচ্ছা মজায় টুনির বাচ্চা ভেঙেই বাসাখানি।
একদিন সেই বিড়াল এসেই বেগুনগাছের কাছে,
দাঁড়িয়ে ডাকে
বাড়িয়ে গলা-
একটু করে
ছলাকলা-
টুনটুনি লা, করিস কী অ্যাঁ? একলা বসে গাছে?
টুনটুনি তার স্বর শুনিয়া ভীষণরকম ত্রাসে,
কাঁপতে থাকে,
ভাবতে থাকে-
কেমনে বাঁচায়
তার ছানাকে?
বুদ্ধি ভেজে তাই তো সে যে – মিষ্টি করে হাসে।
তারপরে সে নরম স্বরে বললো ধীরে ধীরে-
পেন্নাম হই
মহারানি,
আপনি মহান
আমরা মানি।
শুনেই বিড়াল ফুলিয়ে গাল খোশ্ মনে যায় ফিরে।
খাবার লোভে আবার আসে বিড়াল বেগুন- তলে,
মিষ্টি কথায়
বারেবারে,
টুনটুনি মা
ফিরায় তারে
হয় না খাওয়া, আসা যাওয়া নিত্যদিনই চলে।
কথার পাঁকে বিড়ালটাকে আটকে রেখে রেখে,
টুনটুনিটার
ছোট্ট ছানা,
বাড়তে থাকে
তাইরে না না।
গজায় পাখা স্বপ্নমাখা উড়ানখুশি এঁকে।
টুনটুনি মা তার ছানাদের বলল ডেকে- তোরা
এখন হ’লি
অনেক বড়ো,
বাসার কোণে
জড়োসড়ো-
আর না থেকে বার হয়ে শেখ ইচ্ছেমতন ওড়া।
ছানারা কয় – নেই ভয় আর, উড়বো ডানা মেলে।
মা হেসে কয়-
ওই যে দূরে,
তালের গাছে
যা তো উড়ে।
ঝাঁপটে ডানা যায় ছানারা পৌঁছে অবহেলে।
তাই দেখে মা টুনটুনিটা ভীষণ খুশি মনে,
সাহস বুকে
বললো হেসে,
করবে কী আর
বিড়াল এসে?
তোয়াজ তো আজ করবো না আর, পালিয়ে যাবো বনে।
একটু পরেই বিড়াল এসে লোভের স্বরেই ডাকে-
করিস কী লা
টুনটুনি বউ?
নেই মুখে আর
আগের সে মউ-
দেখিয়ে লাথি খেঁকিয়ে উঠে টুনটুনি কয় তাকে-
দুষ্টু পাজি বিড়াল আজি দূর হ’ লক্ষ্মীছাড়ী,
মন ভরা তোর
হিংসা খালি,
দিলাম তোর ওই
গুঁড়েই বালি।
বলেই ওড়ে ফুড়ুৎ করে গুঁটিয়ে পাততাড়ি।
দুঃখ ক্ষোভে রুক্ষ মেজাজ দাঁত খিঁচিয়ে এসে-
বিড়াল ওঠে
লাফিয়ে গাছে।
কাঁটার খোঁচায়
নাকাল, পাছে-
থোঁতা মুখটা ভোঁতা করেই ফিরলো ঘরে শেষে।
★উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর গল্প অবলম্বনে ছড়াক্কা।
loading...
loading...
লিখার ধাঁচটি চেনা চেনা লাগছিলো।
ছড়াক্কার অভিনন্দন মি. শংকর দেবনাথ। 
loading...
ধন্যবাদ।
loading...
চমৎকার কবি শংকর দা।
loading...
ধন্যবাদ দাদা
loading...
আপনার পদ্যটি আমার মেয়েকে পড়ে শোনালাম। খুব মজা পেয়েছে মনে হলো।
loading...
আপা, আমার লেখা সার্থক। ভাল থাকুন। আপনার মেয়ের জন্য শুভাশিস।
loading...
* সুন্দর….
loading...
ধন্যবাদ
loading...
দারুণ কবি শংকর দা।
loading...
ধন্যবাদ
loading...
মুগ্ধতা কবি দা।
loading...
ধন্যবাদ
loading...