মানুষ আপনাকে
আপনার পাশে দীর্ঘ পথ চলতে প্রতিশ্রুতি দেবে
দরজার প্রথম পদক্ষেপ থেকে
অজস্র মানুষের ভিড় ঠেলে,
স্বতঃসিদ্ধ নির্জনতা পেরিয়ে অদৃষ্টের গন্তব্য পর্যন্ত।
কেউ কথা রাখে আবার কেউ রাখে না
আপনি কি পেয়েছেন
আপনি কি পাননি তা আপনার হৃদয় জানে।
মানুষ তার এক জীবনে ভেতরের কষ্ট
পরিচিত মানুষের ভিড় ঠেলে
গোপন করতে পারলেও একদিন জনসম্মুখে আসবে
আপনার প্রতি কেউ সহানুভূতি দেখাবে
আপনার প্রতি কেউ ভালবাসার হাত বাড়িয়ে দেবে
আসলে তারাই প্রকৃত মানুষ
যারা কথা রেখেছে কথা রাখে কথা রাখবে।
তারা যদি কথা রাখতো তাহলে
তাদের জীবনী অন্য ভাবে লেখা হতো
আজ হয়তো বিদ্রোহ হতো না
হৃদয়ের ভেতরে কান্নার আওয়াজ শুনতে পেতনা
তাইতো কারও স্মৃতি লেখা হয়
কষ্টের দাবানলে জ্বলতে জ্বলতে
কারও জীবন পেয়ে হয়তো ঘরেই কেটে যায়।
দয়া মায়া স্নেহ ভালবাসার বিপরীতে
কারও জীবন হয়তো এভাবেই কেটে যায়
কারও জীবন হয়তো প্রকাশ হয়
প্রকাশিত সেই জীবনের গল্প মানুষের সামনে আসে
হয়তো তখনই কেবল জানা যায়
সেই জীবনের গল্প।
আমাকে কেউ একজন
জীবনের দীর্ঘ পথে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো
বলেছিলো আমাদের শরীর ফুটে বেরিয়ে আসবে অন্য শরীর।
প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ক্ষণস্থায়ী এই জীবনে
হাতে হাত ধরে পৃথিবীর শেষ গন্তব্যে পৌছাবে
এই ঘর থেকে এ রাস্তা থেকে
মাতৃভূমির এক পথ থেকে আরেক পথে
মানুষের জনসমাগম থেকে নির্জনতা পর্যন্ত।
আমি বিশ্বাস করেছিলাম তাকে
আমি কথা দিয়েছিলাম তার সময়ের সঙ্গী হবো
অসময়ের সঙ্গী হব জীবন থেকে পর জীবনের সঙ্গী হব।
এই সংক্ষিপ্ত জীবন আজ বড্ড একা
এই একাকী জীবন নিয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর শেষ উপত্যকায়।
এই দীর্ঘ পথের পরে জীবনের কোন বিশ্রাম ছিল না
পায়ের নরম কোমল পৃষ্ঠদেশ ফোস্কা পড়েছে
কিন্তু অন্তহীন পথ একাই চলেছি কিন্তু গন্তব্য জানা নেই।
আমি হয়তো ঈশ্বরকে দেখিনি
শুনেছি ঈশ্বর মানুষের হৃদয়ে বাস করে
মন্দিরে মসজিদে ঘোরাঘুরি করে
কিন্তু যে মানুষ ভালোবাসায় বিশ্বাসী
তার হৃদয়ে বাস করে কি?
আমার কাছে ঈশ্বর নামের অস্তিত্ব যেভাবে
এখন ধোঁকা বলে মনে হয়
পথ চলা পায়ের মতোই হৃদয়টা পাথর হয়েছে
চোখ হয়েছে ঝাপসা, ক্ষুধা দারিদ্রতা
এসব আমার কাছে উপভোগের ব্যাপার নয়
অনুন্নত পৃথিবীর দেশে দেশে মানুষ মরতো না অন্নহীন।
যদি প্রশ্নই করতে হয় প্রকৃতিকে কর
মিথ ঈশ্বরকে নয়
যদি প্রশ্ন করি শয়তান যখন শয়তান হয়নি তবে তাকে কোন শয়তান প্ররোচনা দিয়েছিল?
আমি জানি সময় ঈশ্বর সম্পর্কে ধারণা রাখেনা
আর ঈশ্বর সময় সম্পর্কে
দীর্ঘ পথ দীর্ঘ জীবন আর সংক্ষিপ্ত সময়
আমাদের ভেতরের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি
ঈশ্বরের অস্তিত্ব না হলেও বাস্তবতায়
সেই প্রিয় মানুষটিকে যতই ভুলে যেতে চেয়েছি
ততই ভালোবেসে ফেলেছি;
ঈশ্বর চাইলে সেই জায়গাটা দখল করতে পারত
সেই অভাবটা পূরণ করতে পারত
তার কারিশ্মাটিক ক্ষমতা বলে
ঈশ্বর হয়তো জানান দিতে পারতো
হে আমার বান্দা আমি আছি এমনটা কিছুই হয়নি সেখানেও ঈশ্বর ব্যর্থ
নাকি ঈশ্বর এসব কোন কিছুই চান না?
নাকি ঈশ্বর সৃষ্টির পরে সবকিছু ত্যাগ করেছেন? আমার কি প্রয়োজন ছিল এই পৃথিবীতে আসার?
আমার কি প্রয়োজন ছিল এত কষ্ট
এত দুঃখ এত জ্বালা এত যন্ত্রণা সহ্য করার?
প্রকৃতি যদি নিয়ন্ত্রণ করতে হয়
তাহলে আমি বলব ঈশ্বর নয়
প্রকৃতি আমাকে নিয়ন্ত্রণ করছে
এই মহাবিশ্ব প্রকৃতির অবয়ব
প্রকৃতি এই মহাবিশ্বের আশ্রয়দাতা
এখানে যা কিছুই ঘটে তাতে কারো হাত নেই।
আমি চলছি একা
পৃথিবীর এই পথে পথে
দীর্ঘ পথ
অনন্ত পথ
এক আলোকবর্ষ থেকে অন্য আলোকবর্ষের অভিমুখে
এক গন্তব্য থেকে অন্য গন্তব্যের অভিমুখে
এক জীবন থেকে অন্য জীবনের পথে।
দীর্ঘদিন
দীর্ঘ সময়
আর দীর্ঘ ক্লান্তি শেষে
আমি হয়তো এভাবেই হারিয়ে যাব
পৃথিবী আমায় স্মরণ রাখবে অন্য নামে অন্যভাবে।
আমি এতটা ভালো না যে
খারাপ থাকলেও বলবো ভালো আছি
প্রকৃতি মানুষকে ভালো রাখতে জানে
কিন্তু মানুষ মানুষকে তার ভালো থাকার জায়গাগুলোকে নষ্ট করে দেয়
দীর্ঘ পথ
দীর্ঘ সময়
আর দীর্ঘ জীবন জুড়ে আমি সেই
আমি হয়তো সেই প্রিয় মানুষের দ্বারা নষ্টের শিকার।
loading...
loading...
যাপিত জীবনের কবিতায় শুধু একটি কথাই বলবো … ভালো থাকুন কবি।
loading...
আমি এখানে থাকি!
ভালো লিখেছেন, কবি। শুভকামনা থাকলো।
loading...