শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে নিজ পরিবারের দুর্নীতি ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ। ১৯৭২ সালে মুজিব ক্ষমতায় যাওয়ার পর মুজিব পরিবারের প্রত্যেক সদস্য ঘুষ-দুর্নীতির চুরি ডাকাতি রাহাজানি ছিনতাই হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে বেগম মুজিব বাড়িতে বসে ঘুষ নিয়ে সবার কাজ করে দেন লাইসেন্স পারমিট ডিলারশিপ প্রভৃতি কাজের জন্য বেগম মুজিব এই ঘুষ গ্রহণ করতেন।
বেগম মুজিব মন্ত্রণালয়ে নির্দেশ দিতেন এই কাজের জন্য পাঠালাম কাজটা ঠিক মত করে দিও। শেখ মুজিবের ছেলে শেখ কামাল ছিল বখাটে যুবক। তার ছিল এক বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী। শেখ কামাল শত্রুদের হত্যা করতো, সুন্দরী যুবতী ধর্ষণ করতো, দিনে-দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডাকাতি করে আসার পথে পুলিশের গুলিতে আহত হন। শেখ কামাল এক সুন্দরী যুবতীকে জোরপূর্বক তুলে এনে বিবাহ করে।
বিদেশ থেকে আসা ত্রাণ সামগ্রী ভারতের ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে রাতারাতি ধনী হয়ে যান এবং একমাত্র ক্ষমতার মোহে ধরাকে সরা জ্ঞান ভাবতে শুরু করেন। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে পরেরদিন এই পৃথিবী থেকে তাকে বিদায় নিতে হতো। এভাবে তার ত্রাসের রাজত্ব শুরু। সে একজন সেনা কর্মকর্তার সুন্দরী স্ত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করতে একটুও বিচলিত হননি। সেই সেনা কর্মকর্তা শেখ মুজিবের কাছে নালিশ নিয়ে গেলে উল্টো চাকরি হারান। “”সম্ভবত এটাই সেই মেজর ডালিমের কথা বলা হচ্ছে”।
শেখ মুজিবের ছোট ভাই শেখ নাসের সুন্দরবনের কাঠ চুরি করে বাজারে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করতো। ঠিকাদাররা কাজ পেতে হলে শেখ নাসের’কে কমিশন দিতে হতো। অন্যথায় কাজ পেতনা। অথবা কাজ শেষে বিল পেতনা। শেখ নাসের, বিদেশ থেকে আসা ত্রাণ সামগ্রী ভারতে পাচার করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে রাতারাতি বিশাল ধনী হিসেবে পরিচিত লাভ করে। যশোহর থানার ওসি একবার না জেনে শেখ নাসেরের ১২ ট্রাক চাউল আটক করায় ওসিকে থানার ভিতরে থাপ্পর মেরে তার ইউনিফর্ম খুলতে বাধ্য করে, পরে সে চলে যায়।
ফজলুল হক মনি শেখ মুজিবের ভাগ্নে। ফজলুল হক মনির বাড়ি বরিশাল। বংশ পদবী মোল্লা। কিন্তু তার বাবা ঘরজামাই থাকতেন। টুঙ্গিপাড়ায় স্ত্রীর ভাগের জমিতে ঘর তুলে বসবাস করতেন। মনির বাবা কোনদিনও বংশ পদবী বলেননি সকলে তাকে ইন্দু মিয়া বলতো। শেখ মুজিবের ভায়রা শেখ মুসা মনির বাবাকে ইন্দুনিয়া বলতো শেখ মনি ছিল দুর্ধর্ষ প্রকৃতির। শেখ মুজিবকে কোন মূল্য দিতেন না।
রাজধানী ঢাকায় জমি জালিয়াতি করে দখল করা, ব্যাংক ডাকাতি, দৈনিক বাংলার বাণী পত্রিকা অফিস, জায়গা বাড়িসহ দখল করা, এসবই ছিল শেখ মনির কাজ। শেখ মনির নিজস্ব একটি বাহিনী ছিল। রাজনীতিতে শেখ মনি ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মনি, শেখ মনি, শেখ মুজিবকে সবসময় প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে চলতেন।
টুঙ্গিপাড়া থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ মুজিবের সম্মুখে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি হতে ঘাড় ধরে বের করে দেয় ফজলুল হক মনি। শেখ মুজিব নিজের জীবন বাঁচাবার জন্য নিজ কন্যা শেখ হাসিনাকে বিবাহ দিতে চেয়েছিলেন মনির সঙ্গে আর বেগম মুজিব চেয়েছিলেন তার ভাগ্নে শেখ শহীদের সঙ্গে কন্যা হাসিনাকে বিবাহ দিতে। পারিবারিক দ্বন্দ্বে ফজলুল হক মনি শেখ শহীদকে শেখ মুজিবের সামনে ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়ি হতে চরম অপমান করে বের করে দেন। শেখ মুজিব ভয়ে কোন প্রতিবাদ করেননি। শেখ মুজিব মনিকে খুব ভয় পেতেন। শেখ মুজিব ভাবতেন। মনি’ শেখ মুজিবের চরম ক্ষতি করবে, অন্য কেউ সাহস পাবে না। কথাটি বাস্তবে ঘটেছিল যার প্রমাণ পরবর্তীতে জানতে পারবেন।
শেখ মো: মুসা শেখ মুজিবের ভায়রা। একই বাড়ি একই ভিটা একই উঠান। শেখ মো: মুসা শিক্ষকতা করতেন। বঙ্গবন্ধু তার আপন ভায়রা হওয়ার কারণে বহু লোককে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা পয়সা আত্মসাৎ করেছে। বহুদিন ঘুরাঘুরি করে চাকরি না পেয়ে চাকরিপ্রার্থীরা যখন টাকা ফেরত চাইলেন তখন পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে বিভিন্ন মামলায় জরাবার ভয় দেখাতেন। মামলায় যাবার ভয়ে পরে কেউ আর টাকা ফেরত চাইতো না।
শেখ মো: মুসা একবার গোপালগঞ্জ হতে টুঙ্গিপাড়ার বাড়িতে যাচ্ছিলেন স্পিডবোটে বর্ণী গ্রামের বাওর পার হয়ে যখন খালে প্রবেশ করে তখন সাত বছরের একটি অবুঝ ছেলে বরই গাছে ঢিল মেরে বরই পারবার চেষ্টা করছিল। সাত বৎসরের অবুঝ বাচ্চার একটা ঢিল স্পিডবোটে গিয়ে পড়ে। স্পিড বোর্ড এর কোনো ক্ষতি হয়নি এমনকি কারো গায়ে লাগেনি অথচ শেখ মো: মুসা স্পিডবোর্ড তীরে ভিড়িয়ে সেই সাত বছরের অবুঝ বাচ্চাকে প্রকাশ্য দিবালোকে অসংখ্য মানুষের সামনে পায়ের তলায় পিষে হত্যা করে। সাত বৎসরের অবুঝ শিশু বাঁচার জন্য অনেক কাকুতি-মিনতি করেছিল। বাচ্চার মা বাবাও পা ধরে সন্তানের প্রাণভিক্ষা চেয়েছিল কিন্তু পাষাণ হৃদয় গলায় কে?
৭ বছরের অবুঝ শিশু ঘটনাস্থলেই প্রচুর রক্তক্ষরণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। ভয়ে কেউ ঠেকাতে আসেনি। কারণ তিনি শেখ মুজিবের ভায়রা। শেখ মোঃ মুসার সঙ্গে রক্ষীবাহিনী ছিল। এই নির্মম হত্যার বিচার চাইতে গিয়েছিল থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে। আর সেই বিচারের উত্তরে সেদিন পেয়েছিল থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সামনে চরম লাঞ্ছনা।
সেদিন শেখ মুজিবের সম্মুখে তারই ভাগ্নে ফজলুল হক মনি থানা কমান্ডারকে রাজধানীর ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়ি থেকে গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছিল এবং বলেছিলো “শেখ পরিবারের লোকেরা এরকম দু’চারটা পায়ের তলায় পিষে ফেললে কিছুই যায় আসে না”। শেখ মুজিব পরে থানা কমান্ডার এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ডেকে নিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন অথচ মনিকে টু শব্দও করতে সাহস পাননি।
শেখ মুজিবের ভায়রা শেখ মুসার আরো একটি ঘটনা এলাকায় সবাই জানেন। টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিব তার মায়ের নামে শেখ সাহেরা খাতুন রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতাল তৈরি করেন। হাসপাতালের এক হিন্দু সুন্দরী যুবতী নার্স ছিল সুন্দরী নার্সকে শেখ মো: মুসা বাড়িতে ডেকে পাঠান হাসপাতালের ডাক্তার নার্সকে নির্দেশ দেন মুসা সাহেবের বাড়ি গিয়ে সেবা-যত্ন করার জন্য। শেখ মো: মুসা সুন্দরী নার্সকে রুমের ভেতর জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
নার্স আত্মহত্যা করার হুমকি দেয়। অবশেষে মান-সম্মানের চিন্তা করে সে ডাক্তারের সহযোগিতায় বুঝাতে চেষ্টা করেন যে সে যদি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে তবে তাকে বিবাহ করবে। যদি সে অন্য কোন চিন্তা করেন বা ব্যাপারটা প্রকাশ করে তবে তার বাবা মা ভাই বোনদের হত্যা করা হবে। এই হুমকির ভয়ে বাবা মা ভাই বোনদের কথা চিন্তা করে নার্স শেখ মো: মুসার প্রস্তাবে রাজি হয়।
শেখ মো: মুসা পরবর্তীতে এই কিছুদিন পর তোমাকে বিবাহ করব, কিছুদিন পর ঢাকায় নিয়ে বিবাহ করব ইত্যাদি বলতে বলতে বছর গড়িয়ে যায়। এর মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। শেখ মো: মুসা তখন বিবাহের দিন ধার্য করে কথা মতো নির্দিষ্ট তারিখে মুসা সাহেব’কে বিবাহ করার জন্য তার সঙ্গেই স্পিডবোটে ঢাকার উদ্দেশ্যে টুংগীপাড়া ত্যাগ করে কিন্তু দুঃখের বিষয় যে, সে নার্স আর কোনদিন ফিরে আসেনি। মধুমতি নদীতে তার লাশ পাওয়া যায়।
এলাকাবাসীর নদীতে লাশ পেয়ে শেখ মুজিবের নিকট ঘটনাটি জানায় কিন্তু শেখ মুজিব ভায়রার অপরাধ চাপা দেয়। এই ঘটনা যারা শেখ মুজিবকে জানিয়েছিলেন তাদের শেখ মুজিব এবং বেগম মুজিব অর্থ দ্বারা মুখ বন্ধ করে দেন। ঘটনা ওই পর্যন্ত চাপা পড়ে যায়।
শেখ মুজিবের শ্যালক শেখ আকরাম শেখ আকরাম টুংগীপাড়া থানার ওসিকে থানায় ঢুকে স্যান্ডেল দিয়ে পেটান ওসি মান-সম্মানের ভয়ে কাউকে কিছু না বলে বদলি হয়ে যায়। গোপালগঞ্জ মহকুমার এসডিও সাহেবকে বহু লোকের সামনে তারই সরকারি অফিসে ঢুকে চুলের মুঠি ধরে থাপ্পড় মারেন। মান-সম্মানের ভয়ে এসডিও সাহেব কোন উচ্চবাচ্য করেননি। প্রশাসনের লোক আলোচনা সমালোচনা করেন। ঘটনাটি শেখ মুজিবের কাছে পৌঁছে যায়। অথচ শেখ মুজিব এরও কোন বিচার করেন নি।
অবশেষে লজ্জায় এসডিও সাহেব চাকরি থেকে পদত্যাগ করে বিদেশ চলে যান। এরূপ অসংখ্য অন্যায় কাজ করে গেছেন শেখ পরিবারের লোকেরা। আর পার পেয়ে গেছেন শুধুমাত্র শেখ মুজিবের কারণে। অথচ একটি অন্যায়ের বিচার ও শেখ মুজিব করেননি। মানুষের অভিশাপ শেখ পরিবার এবং তাদের আত্মীয়-স্বজন পাপের পালা, ক্রমে ক্রমে ভারী করে তুলেছিল। পাপ কোনদিন ক্ষমা করেনি, করেও না। সত্য প্রকাশ পাবেই, তবে সত্যের জয় দেরিতে হলেও হবে। এটাই নিয়ম এটাই সত্য।
এ. আর. ভূঁইয়া
গণতন্ত্রের কবর
বইটির স্বত্বাধিকারী নিজ। বইটি বিক্রির জন্য নহে।
বইটির প্রথম প্রকাশ আজ থেকে ৩৩ বছর আগে।
Translate by Shamim Bakhtiar.
loading...
loading...
যে ইতিহাস পড়লাম কতটুকু সত্য আল্লাহ জানে
loading...
যদি সত্যও হয়, তাহলে কি এখনও বলতে পারবো … অবস্থার কোন উন্নতি হয়েছে !!
loading...
Be careful because 57 rules
loading...