জীবন আমাকে যত সুখ দিচ্ছে ততই সুখ অনুভব করার ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছে। যত প্রভাব দিচ্ছে তত অসহায়বোধ বাড়ছে। যত জনপ্রিয়তা দিচ্ছে তত নিঃসঙ্গতা বাড়ছে। যত দামী গাড়ি দিচ্ছে তত বসে থাকার ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছে।
একজন অপারেশনের রুগীকে যে পরিমাণ বেদনানাশক দেয়া হয় তার বহুগুণ Crystal Ice (মাদক) আমাকে নিতে হয় “স্বাভাবিক থাকতে”। আমি যে পরিমাণ মাদক নিয়ে স্বাভাবিক হই সেটা কোন সাধারণ মানুষ কে দেয়া হলে সে নির্ঘাত মারা যাবে। যে পরিমান মাদক একবারে নিলে একজন মানুষের মৃত্যু ডেকে আনবে সেই Lethal Dose এর চেয়েও অনেক বেশি মাদক নিতে হয় প্রতিবার, দিনে একাধিকবার।
আমার শরীরের সব অঙ্গ ধীরে ধীরে অনুভূতিহীন অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে। ব্রেন সেলগুলো মরে যাচ্ছে, ফুসফুসে পানি জমে গেছে, হার্ট অকেজোর শেষ ধাপে। পাকস্থলী, লিভার, কিডনি কোনটাই ৪০% এর বেশি কার্যকর নাই। আরো আগেই মারা যাবার কথা আমার, এখনো বেঁচে আছি এটাই বিস্ময়। তবে দুই-এক মাসের বেশি সময় বাঁচার কোনই সম্ভাবনা নাই সেটা পরিষ্কার। আমি সেটা চাইও না, জীবন এখনই বিভিষীকা হয়ে উঠেছে আমার কাছে। মাথায় যন্ত্রণা, শ্বাসকষ্ট, খিঁচুনি, রক্তবমি, কিডনির মারাত্মক ব্যাথায় সত্যিই দুঃস্বপ্ন হয়ে গেছে জীবনটা। এর সাথে আছে হেলুসিনেশন। কখন নিজেকে অজেয় দেখি, মাঝেমাঝে দেখি নরকে। দ্বিধা-দন্দে পড়ে যাই, ঠিক দেখছিতো না হেলুসিনেশনে আছি।
আমার গাড়িটা এই মুহূর্তে বনানীর জ্যামে আটকে আছে, কবরস্থানের কাছে। এই রাস্তাটা সব সময়ই জ্যামে আটকা থাকে মহাখালী পর্যন্ত। আমি প্রায়ই রাস্তার আশেপাশের মানুষগুলোকে দেখি। জ্যামের মধ্যে অনেকে নিরুপায় হয়ে, ফুটপাতের উপর দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যায়। কেউ কেউ অতিষ্ঠ হয়ে বাস থেকে নেমে হাঁটা দেয়। রাস্তার পাশের নোংরা চা স্টলে বসে চা-সিগারেট খায় কত মানুষ।
মধ্যবিত্ত, দরিদ্র, টোকাই কি অবিশ্বাস্য জীবনীশক্তি এদের। খেয়ে না-খেয়ে সারাদিন রোদবৃষ্টি মাথায় করে কাজ করতে পারে এরা। অসহ্য গরম, ভিড়ের মধ্যেও গাদাগাদি করে নোংরা বাসে আসা-যাওয়া করতে পারে সারাবছর। এরপরেও কদাচিৎ অসুস্থ হয়, অসুস্থতা নিয়েও অফিস বা ভারি কাজ করতে পারে মানুষগুলো। নামমাত্র চিকিৎসায় বা চিকিৎসা ছাড়াই সুস্থ হয়ে আবার ফিরে আসে।
এরা কোন কিছুর সাহায্য ছাড়াই আনন্দিত হয়, ভালবাসে, ভালবাসা অনুভব করে। এদের মধ্যে এমন লোকও আছে সিগেরেট এমনকি চা পর্যন্ত খায়না অথচ কি তীক্ষ্ণ স্মৃতি, অনুভুতি। বহুবছর আগের শতশত পরিচিত, বন্ধু, আত্মীয়ের সব ঘটনা, সব কথা মনে রাখে। মানুষের চেহারা, কথাবলা, হাঁটার ধরন দেখেই অনেক কিছু বুঝে নিতে পারে। কি আশ্চর্য ক্ষমতা এদের।
একসময় ডাক্তার আমাকে ছাড়তে বলতো এসব। বলতো কয়েক সপ্তাহ চিকিৎসায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবো। এখন আর বলেনা, মানেটা আমি বুঝি। এই শেষ বেলায় মৃত্যুর দিকে দ্রুত এগিয়ে যাবার জন্য যে স্বপ্নবিলাসে ডুবে থাকি সেটা মোটেই ধনী বা সফল হবার কোন স্বপ্ন না। কল্পনা করি সাধারণ মানুষে “উত্থান” ঘটেছে আমার। রিকশাওয়ালা, সুইপার, বাসের হেল্পার, কুলি মজুর যেকোন একটা জীবন। অনেক ভাল, অনেক সুন্দর, অনেক সন্মানের সেটা।
জীবনের বিনিময়ে আমি উপলব্ধি করেছি শৈশবের সেই প্রথম শিক্ষা, শরীর বা “স্বাস্থ্যই সম্পদ”। কোন পণ্ডিত বা সাধু জীবনের শেষ বেলায় কথাটক মনে হয় লিখেছিলেন। একটা শক্তিশালী পরিশ্রমক্ষম সুস্থ শরীরের বিনিময়ে আমি সব সম্পদ দিতে রাজি। বিনিময়ে নিপীড়িত কৃতদাস বা শ্রমিক জীবন পেলেও আমার স্বপ্ন, পরম মনোবাসনা পুর্ন হবে।
আসিফ আহমেদ
২৮ জানুয়ারি, ২০১৭
loading...
loading...
আত্মসমালোচনা এবং জীবন নির্ভর মূলক লিখা আপনার হাতে চমৎকার ফোটে। আমার কাছে আপনার এই লিখা ভীষণ গঠনমূলক মনে হয়েছে। শুভেচ্ছা মি. আসিফ আহমেদ।
loading...
এটা কাল্পনিক, আমার জীবনের সম্পূর্ণ বিপরীত ধর্মী অবস্থানে নিজেকে কল্পনা করে লেখা। আমি সব সময়ই বিশ্বাস করেছি অর্থই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ না জীবনে। সেটা এভাবে বুঝাতে চেয়েছি। তবে লেখালেখির প্রতি আমার আকর্ষণ কম, কমি সাজিয়ে গুছিয়ে কিছুই করতে পারিনা। অনেক অস্থিরতা কাজ করে। লেখায়ও হয় তো বুঝেছেন অস্থিরতার ছাপ। আরো ধৈর্য, সময়, এনার্জি দিলে লেখায় যে দূর্বলতা আছে সেগুলো দূর হলে মানসম্মত একটা লেখা হতো। আপনি ধৈর্য ধরে পড়েছেন, আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে নিজের কাছে ভালো লাগছে।
কবিতার প্রতিবাদ প্রতিধ্বনিত হোক, বাংলাদেশের কবিরাও গর্জে উঠুক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।
loading...
loading...
শব্দ গাম্ভীর্য আর ভাব শৈলীর মনন শক্তি আপনার অসাধারণ। লেখাটি পড়ে ভীষণ ভাল লাগলো। জীবনবোধ আমাদের অনেককেই হয়তো সতর্ক করবে। শুভেচ্ছা দাদা।
loading...
রিয়া দেবীর জয় হোক, যিনি কিনা বলে আমার লেখাও তার কাছে ভালো লাগে। লাল সালাম।
এটা কাল্পনিক, আমার জীবনের সম্পূর্ণ বিপরীত ধর্মী অবস্থানে নিজেকে কল্পনা করে লেখা। আমি সব সময়ই বিশ্বাস করেছি অর্থই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ না জীবনে। সেটা এভাবে বুঝাতে চেয়েছি। তবে লেখালেখির প্রতি আমার আকর্ষণ কম, কমি সাজিয়ে গুছিয়ে কিছুই করতে পারিনা। অনেক অস্থিরতা কাজ করে। লেখায়ও হয় তো বুঝেছেন অস্থিরতার ছাপ। আরো ধৈর্য, সময়, এনার্জি দিলে লেখায় যে দূর্বলতা আছে সেগুলো দূর হলে মানসম্মত একটা লেখা হতো। আপনি ধৈর্য ধরে পড়েছেন, আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে নিজের কাছে ভালো লাগছে।
কবিতার প্রতিবাদ প্রতিধ্বনিত হোক, বাংলাদেশের কবিরাও গর্জে উঠুক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।
loading...
স্বনামে দেখে ভালো লাগছে আসিফ আহমেদ ভাই। এড্রেস বারে যদিও দেখতে পাচ্ছি সাজ্জাদ সাইফ। এনিওয়ে এই লিখাটিকে অসম্ভব রকমের সুন্দর হয়েছে। পছন্দ করলাম।
loading...
মহাহাহা সুমন ভাই, স্বনামে ফিরেছি? কয়দিন পরে আবার নাম চেঞ্জ দেখলে অবাক হবেন নাতো? আসলে প্রকৃত লেখকদের মাঝে আমার লেখা পোষ্ট করার সাহস ছিলনা। আগে ফেসবুকেও লজ্জায় পোস্ট করতাম না। কয়েকজন বড় আপা আমাকে ধমকে পোস্ট দিতে বাধ্য করেছিলেন। আপনার নামটা খুব ভালো, নামের প্রভাব পড়ে নাকি। সু-মন, ভালো মনেরই মানুষ আপনি। যিনি নামটা রেখেছিলেন, একদিন তাঁকে প্রণাম করে আসবো
এটা কাল্পনিক, আমার জীবনের সম্পূর্ণ বিপরীত ধর্মী অবস্থানে নিজেকে কল্পনা করে লেখা। আমি সব সময়ই বিশ্বাস করেছি অর্থই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ না জীবনে। সেটা এভাবে বুঝাতে চেয়েছি। তবে লেখালেখির প্রতি আমার আকর্ষণ কম, কমি সাজিয়ে গুছিয়ে কিছুই করতে পারিনা। অনেক অস্থিরতা কাজ করে। লেখায়ও হয় তো বুঝেছেন অস্থিরতার ছাপ। আরো ধৈর্য, সময়, এনার্জি দিলে লেখায় যে দূর্বলতা আছে সেগুলো দূর হলে মানসম্মত একটা লেখা হতো। আপনি ধৈর্য ধরে পড়েছেন, আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে নিজের কাছে ভালো লাগছে।
কবিতার প্রতিবাদ প্রতিধ্বনিত হোক, বাংলাদেশের কবিরাও গর্জে উঠুক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।
loading...
একটা শক্তিশালী পরিশ্রমক্ষম সুস্থ শরীরের বিনিময়ে আমি সব সম্পদ দিতে রাজি। বিনিময়ে নিপীড়িত কৃতদাস বা শ্রমিক জীবন পেলেও আমার স্বপ্ন, পরম মনোবাসনা পুর্ণ হবে। “স্বাস্থ্যই সম্পদ”।
loading...
সৌমিত্র দার জয় হোক।
এটা কাল্পনিক, আমার জীবনের সম্পূর্ণ বিপরীত ধর্মী অবস্থানে নিজেকে কল্পনা করে লেখা। আমি সব সময়ই বিশ্বাস করেছি অর্থই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ না জীবনে। সেটা এভাবে বুঝাতে চেয়েছি। তবে লেখালেখির প্রতি আমার আকর্ষণ কম, কমি সাজিয়ে গুছিয়ে কিছুই করতে পারিনা। অনেক অস্থিরতা কাজ করে। লেখায়ও হয় তো বুঝেছেন অস্থিরতার ছাপ। আরো ধৈর্য, সময়, এনার্জি দিলে লেখায় যে দূর্বলতা আছে সেগুলো দূর হলে মানসম্মত একটা লেখা হতো। আপনি ধৈর্য ধরে পড়েছেন, আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে নিজের কাছে ভালো লাগছে।
কবিতার প্রতিবাদ প্রতিধ্বনিত হোক, বাংলাদেশের কবিরাও গর্জে উঠুক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।
loading...
যে নামেরই হোন না কেন লেখা ভালো হয়েছে ভাইজান।
loading...
অসংখ্য ধন্যবাদ আবু সাঈদ ভাই, কয়দিন পরে দেখবেন আবারো নাম চেঞ্জ
এটা কাল্পনিক, আমার জীবনের সম্পূর্ণ বিপরীত ধর্মী অবস্থানে নিজেকে কল্পনা করে লেখা। আমি সব সময়ই বিশ্বাস করেছি অর্থই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ না জীবনে। সেটা এভাবে বুঝাতে চেয়েছি। তবে লেখালেখির প্রতি আমার আকর্ষণ কম, কমি সাজিয়ে গুছিয়ে কিছুই করতে পারিনা। অনেক অস্থিরতা কাজ করে। লেখায়ও হয় তো বুঝেছেন অস্থিরতার ছাপ। আরো ধৈর্য, সময়, এনার্জি দিলে লেখায় যে দূর্বলতা আছে সেগুলো দূর হলে মানসম্মত একটা লেখা হতো। আপনি ধৈর্য ধরে পড়েছেন, আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে নিজের কাছে ভালো লাগছে।
কবিতার প্রতিবাদ প্রতিধ্বনিত হোক, বাংলাদেশের কবিরাও গর্জে উঠুক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।
loading...
সুগঠিত লিখা ভাই।
loading...
এইযে বইন, এমুন ভাবে ভাই ভাই করেন। মনে হয় আমি আপনার ১০ বছরের বড়। যাউজ্ঞা, আপনাকে স্বাস্থ্যই সম্পদ বুঝাতে বুঝাতে বুড়ো হয়ে গেলাম আমি।সিংহল সমুদ্র থেকে হিমালয় পর্যন্ত অশান্ত মনে হেঁটে বেড়ালাম জীবনানন্দের মত।
এটা কাল্পনিক, আমার জীবনের সম্পূর্ণ বিপরীত ধর্মী অবস্থানে নিজেকে কল্পনা করে লেখা। আমি সব সময়ই বিশ্বাস করেছি অর্থই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ না জীবনে। সেটা এভাবে বুঝাতে চেয়েছি। তবে লেখালেখির প্রতি আমার আকর্ষণ কম, কমি সাজিয়ে গুছিয়ে কিছুই করতে পারিনা। অনেক অস্থিরতা কাজ করে। লেখায়ও হয় তো বুঝেছেন অস্থিরতার ছাপ। আরো ধৈর্য, সময়, এনার্জি দিলে লেখায় যে দূর্বলতা আছে সেগুলো দূর হলে মানসম্মত একটা লেখা হতো। আপনি ধৈর্য ধরে পড়েছেন, আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে নিজের কাছে ভালো লাগছে।
কবিতার প্রতিবাদ প্রতিধ্বনিত হোক, বাংলাদেশের কবিরাও গর্জে উঠুক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।
loading...
জীবনের প্রয়োজনে বেঁচে থাকাই জীবন । অবিনশ্বর চিরস্থায়ী বলে কিছু নেই। মানবিক থেকেই জীবনের জয়যাত্রা আথবা নি:শেষ ।
loading...
অসংখ্য ধন্যবাদ
loading...