সাহিত্য অপার মিলনের সমার্থক

মানুষের শরীরের প্রতি অঙ্গ, আত্নিক বিষয়, আধ্যাতিক ভাবনা, মন্স্তাত্বিক চিন্তা ও চেতনার প্রয়াশ, সাংসারিক ও সামাজিক পটভূমিগুলোই হচ্ছে আমাদের বর্তমানে পঠিত বিষয়গুলো । আমরা স্কুল কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে যা পড়ি তা সবই আসলে এমন বিষয় যা আমাদের শরীরের সম্পদ, ভাবনা অথবা পারিপার্শিক কোন কারণ বা কারণের নিমিত্তে কোন ঘটনা ।
এখন যখন কোন সাহিত্য হয় তখন আমরা শেষে গিয়ে দেখি কোন না কোন নিজস্ব উপাদান সেখানে থেকেই যায় । যে সাহিত্যে অনেক মানুষের চেনা জানা উপাদান বেশী থাকে সে সাহিত্যগুলো পৌছে যায় মানুষের কাছে দ্রুত ।
একজন একটি বই লিখেছেন । সেখানে অনেক কবিতা ও রস দিয়েছেন তিনি । বইটি আশানুরুপের চেয়ে বেশী বিক্রি হয়েছে কিন্তু যেটা হয়নি তা হল সে বইটিতে মনে রাখার মত কোন কথা বা কোন লাইন লেখক লিখতে পারেনি । তাই বলে কি বইটি ফেলনা হয়ে যাবে ?
এখানেই মূল বিষয় । আমরা যেমন আমাদের শরীরের একটি অঙ্গ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আলাদা রেখে চলতে পারিনা তেমনি সাহিত্যও পৃথিবীর সব কাগজ এবং মনের ভাবনার মূল্য দিয়ে ধারণ করে রাখে সব লেখকের লেখা ।
লেখা ধারণ মানেই লেখক বড় মাপের লেখক হয়ে যাবেন তা নয় তবে যেটা সত্য সেটা হল কেউ কেউ নিজের কথাগুলো বলে যেতে চেয়েছে । পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশী বার উচ্চারিত নামের বইটি কি আমরা পড়েছি ? হয়ত পড়েছি নতুবা পড়িনি কিন্তু তা লিপিবদ্ধ তেমনি লিপিবদ্ধ অবিখ্যাত কোন বইও !
আমাদের প্রতিদিনের হাজারো কাজগুলোই একদিন সাহিত্য হয়ে ওঠে, একসময় আমরা একটা সভ্যতা নামে পরিচিত হবো আগামী প্রজন্মে কিন্তু যেটা দেয়ার বাকী তা হল আমাদেরকে আরও শক্তভাবে ধারণ করার মত কিছু উপাদান সংগ্রহ করে দিয়ে যাওয়া ।
সাহিত্যে এখন সাহিত্যিকদের বড় বেশী হানাহানি চলে !অন্যকে পেছনে ফেলার মানসিকতা নিয়ে সাহিত্য রচনা হয়না তার প্রমাণও আমাদের শরীরে আছে । আমি যদি ডান হাতের চেয়ে বা হাতকে বেশী সাপোর্ট দিতে চেষ্টা করে তবেই দেখা যাবে শরীর বেঁকে বসেছে, আমি যদি প্রকৃতিতে জলাশয় রেখে সব গাছ কেটে ফেলি তবে আমরাই শেষ হয়ে যাবো । ঠিক এভাবেই সাহিত্য, সাহিত্যিক একে অপরের খুব প্রয়োজনীয় উপাদান ।
সাহিত্য ঘরে আটকে থাকার বিষয় নয় । যে যাই লিখছে তাই আমাদের উপাদান হয়ে উঠছে । এই উপাদানগুলো একসময় আমাদেরকে অন্য প্রজন্মের কাছে তুলে ধরবে ।
তাই সাহিত্যকে আলোচনার সময় সাহিত্য নিয়ে কথা বলার সময় ও সাহিত্যিক হয়ে ওঠার সময় যত পারুন মানুষকে, মানুষদেরকে একত্রিত করুন । মানুষ যখন খুব বেশী রুঢ় হয়ে যায় তখন মানুষগুলো ভুলে যায় তার পেছনের সব কথা ।
একটি ফুল শোভিত মিলনের মত সাহিত্য দিয়ে যাদের জন্ম তারা হয়ে ওঠে অকবিতার নগরের বাসিন্দা । তারা ভুলে যায় বীর্য্য স্থলনের আনন্দে যেভাবে ফুলেল সংবর্ধনা তারা ভূমিতে আসার জন্য পেয়েছিলো সেখানে শুধু মমতা থাকা প্রয়োজন ।
সাহিত্য অঙ্গে থেকে জীবনের রং পর্য ন্ত ঘেরা থাকে । অথচ আমরা আমাদের ভ্রুকুটি শিখি সামাজিক বৈপরিত্ব থেকে দোষারোপ করি প্রতিদিনের কাজগুলোকে ।
মানুষকে পড়ার মধ্যে ফেরাতে হবে । পাঠশালায় পড়ে কখনও এই আন্তরিক ভালোবাসা শেখানো সম্ভব নয় । প্রতিটি মানুষকে ভালোবাসার জয়গান শেখানোর জন্য হলেও আপনাকে ফিরতে হবে সাহিত্যে । ছড়িয়ে পড়ুক সাহিত্য, ছড়িয়ে পড়ুক ভালোবাসার গান, প্রজন্ম প্রজন্ম চিনুক আমাদের আন্তরিক সভ্যতার মানুষ হিসেবে ।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৪ টি মন্তব্য (লেখকের ০টি) | ৪ জন মন্তব্যকারী

  1. ইসিয়াক : ১২-০১-২০২০ | ১০:৫০ |

    শুভকামনা।

    GD Star Rating
    loading...
  2. ফয়জুল মহী : ১২-০১-২০২০ | ১৫:৫১ |

     মননশীল ভাবনা । ভালো থাকুন। 

    GD Star Rating
    loading...
  3. এইচ এম শরীফ : ১২-০১-২০২০ | ১৬:১৫ |

    একটি সমৃদ্ধশালী জাতি গঠনে সাহিত্যের বিকল্প নেই। এরকম লেখা আরোও চাই, কেমন!

    শুভেচ্ছা জানবেন।  

    GD Star Rating
    loading...
  4. শেখ সাদী মারজান : ১৬-০১-২০২০ | ১৯:৫৫ |

    সাহিত্যিকদের মন শুদ্ধ হোক। ভালো লিখেছেন ভাই। শুভ কামন। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_flowers.gif

    GD Star Rating
    loading...