প্রত্যেক সাফল্যের একটা লক্ষ্য থাকে। আমারও ছিল। তবে কখনোই সংবাদমাধ্যমে কাজের লক্ষ্য ছিল না তখন। ২০০৪ সালে দৈনিক ভোরের কাগজ (পাঠক ফোরাম) ও যুগান্তরের স্বজন সমাবেশে লিখি। স্বপ্ন ছিল লেখক হওয়ার। এ সময় হতেই নিয়মিত পত্রিকায় লিখতে থাকি।
২০০৪ সাল হতেই বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ছাড়াও সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক পত্রিকায় সাহিত্য নিয়ে লেখালিখি করি। কলাম ও চিঠিপত্র বিভাগেও লিখি। যদিও লেখালেখি শুরু হয় আরো পাঁচ বছর আগে। সে সময় অনেকেই বলতেন, পত্রিকায় লিখি, সাংবাদিকতায় আসি না কেন, সাংবাদিক হতে চাই না কেন। কেন যেন একটা অনীহা ছিল এ পেশায়। বলতাম, আমার দ্বারা সম্ভব নয়।
তাই জাতীয় পত্রিকাগুলোতে সাহিত্য নিয়ে লিখলেও ৮ বছর পর সংবাদমাধ্যমে আসি। আসার কথাও ছিল না। ২০১১ সালে ব্লগিং লেখা শুরু করি। এর ফাঁকে দু’তিনটা ম্যাগাজিনও বের করি। ব্লগ ও ফেসবুকে প্রথম আইডি খুলে দেন সীমান্ত পথিক। তাকে আমরা ঢাকা হুজুর বলে জানি। সর্বপ্রথম শব্দনীড়, পরে প্রথম আলো ব্লগ, বদলে যাও বদলে দাও আইডি খুলে লিখতে শুরু করে। পরে আরো এক ডজন ব্লগে লিখি। চলতে থাকে ব্লগিং। বাড়তে থাকে ভার্চুয়াল পরিচিতি। এসময় অনেক নামি-দামী লেখকের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে। পরে না হয় আরেকটি পর্বে তাদের নামসহ আপডেট করবো।
এরই মধ্যে খাদেমুল ভাই (সাংবাদিক) আমার কম্পিউটার ব্যবহার করে নিয়মিত পত্রিকায় নিউজ পাঠান। বাংলাবাজার পত্রিকায় লিখেন ওই সময়। সাংবাদিকতা পেশায় আসবো না ভেবেই নিউজ লেখা তেমন ভালো লাগতো না আমার। সে সময় তেঁতুলিয়ার অনেকেই আমার এখান থেকে পত্রিকায় নিউজ পাঠান। সাহিত্যে অত্যাধিক ঝোঁক থাকায় সাংবাদিকতা পেশাটাকে সেভাবে পছন্দ হয়নি। পছন্দ না হওয়ারও অনেক কারণ ছিল। সেটা না বলি। কিন্তু খাদেমুল ভাই নাছোর বান্দা। আমাকে শেষ পর্যন্ নিউজ লেখানো ও শেখানোর উঠে পড়ে গেলেন। সৃজনশীল হওয়াতে বেশি দিন লাগলো না নিউজ লিখতে।
আর যখনই সাংবাদিকতার পেশায় পা বাড়ালাম, তখন দেখি প্রতিদ্বন্ধী ভেবে অনেকেই হিংসায় জ্বলতে শুরু করলেন। সামান্য ভুল করলেই তীব্র অপমান করতে শুরু করলেন। চলতে ফিরতে যেন কেটে ফেলবেন। নয়তো ল্যাং মেরে ফেলে আহত করবেন। যেখানে সেখানে তাও। যেকোন অনুষ্ঠানে গেলে তিরস্কার স্বরে বলতেন, ও তো ফেসবুকে লিখে। ব্লগার। কিসের সাংবাদিক? কোন কাগজ আছে? ভাবলাম, এজন্য কী এ পেশা আমার পছন্দ ছিল না। এতে আমার মনে একটা ক্ষোভ তৈরি হলো। প্রতিদ্বন্ধীর সাথে লড়তে হলে তো লড়াই করার সাহসও লাগে। হাল ছাড়লাম না। ধীরে ধীরে লেখার হাত শক্ত হতে লাগলো। চর্চা বাড়াতে লাগলাম।
পরিশ্রম কখনো বৃথা যায় না। হয়তো বড় কিছু হওয়া সম্ভব হয়নি। সামান্য একটি বালুকণা হয়ে সমুদ্রে প্রবেশ করেছি মাত্র। সমুদ্রে কতো রাশি রাশি বালুকণা। হতে পারি আমি তার চেয়েও নগণ্য। তবুও তো চেষ্টা করতে পেরেছি। ইচ্ছার প্রতি ফলন ঘটাতে পেরেছি।
আজ খাদেমুল ভাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। যার হাত ধরে সাংবাদিকতা শেখা। আর প্রিয় বন্ধুবর সীমান্ত পথিকের প্রতি ভালোবাসার মাত্রা তো সীমাহীন। আর যারা সেদিন আর আজও আমাকে সহ্য করতে পারেন না তাদের প্রতিও সম্মান ও ভালোবাসা দুটোই। কারণ নেতিবাচক ব্যক্তি ছাড়া পজিটিভের গুরুত্ব বুঝা যায় না।
loading...
loading...
অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর লেখা
loading...
অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা কবি, সাংবাদিক এবং সফল গদ্যকার মি. এস কে দোয়েল। জীবন থেকে দেখতে দেখতে কত গুলো বছর পেরিয়ে গেলো। আরও সফল হোন।
loading...