রোখশানা’স লাইফস্টাইল ৬ষ্ঠ পর্বে আজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপনের খুব সামান্য কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে কথা বলবো। সেটি হচ্ছে আমাদের দেশের নকল প্রসাধনী উৎপাদন বন্ধে তথা ব্র্যান্ডেড আইটেমের খালি কন্টেইনার ব্যবহার করে মেইড ইন জিঞ্জিরা টাইপ যেসব পণ্য বেশী দাম দিয়ে কিনে, আমরা ক্রেতারা প্রায়শই ঠকে যাবার প্রবণতা বা চর্চা এদেশে চলছে; তা রোধে কিভাবে আমরা খুব ছোট্ট কিন্তু দরকারি একটি পদক্ষেপ অনুসরন করতে পারি।
অধিকাংশ বাসাবাড়িতে আমরা যেসব ভালো কোম্পানীর প্রসাধনী বা অন্যান্য দ্রব্য ব্যবহার করে থাকি, সেগুলোর ব্যবহার শেষ হয়ে গেলে, খালি কন্টেইনারগুলো সচরাচর আমরা দুইটি উপায়ে ফেলে দিই। আমাদের কেউ কেউ সেগুলোকে সরাসরি আমাদের ময়লা ফেলার ঝুড়িতে অন্যান্য আবর্জনার সাথে ফেলে দিই। আবার কেউ কেউ যেসব ফেরিওয়ালা খালি কন্টেইনার কিছু অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করে থাকে তাদের কাছে বিক্রি করে দিয়ে থাকি। দু’টি ক্ষেত্রেই আমরা মূলতঃ নকল পণ্য প্রস্তুতকারীদেরকে এসব কন্টেইনার ব্যবহারের সুযোগ করে দিচ্ছি।
প্রথমতঃ যখন আমরা এসব খালি কন্টেইনার ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিচ্ছি, তখন আমাদের বুঝতে হবে, আমরা নিজেরা এসব জিনিস সরাসরি ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করছি না বটে, কিন্তু টোকাই বা ময়লার ঝুড়ি থেকে খালি বোতল সংগ্রহ করে এই জাতীয় মানুষেরা কিন্তু ঠিকই এসব বোতল পরে যে কোনো একটা সময়ে এসব কুড়িয়ে নিয়ে ফেরিওয়ালার কাছে বা ভাঙ্গারী দোকানে বিক্রি করবে এবং সেগুলো চলে যাবে নকল প্রসাধনী প্রস্তুতকারীদের হাতে। সুতরাং পরোক্ষভাবে আমরাও এই প্রক্রিয়া চলমান থাকতে সহায়তা করলাম। আর সরাসরি বিক্রি করে দিলে তো বটেই।
এক্ষেত্রে নকল পণ্য উৎপাদনে যাতে আমাদেরই সামান্য অবহেলায় আমাদেরই ব্যবহৃত এসব খালি কন্টেইনার ব্যবহৃত হতে না পারে, সেই লক্ষ্যে আমরা যে উপায় অবলম্বন করতে পারি তা হলো, প্রথমে এসব কন্টেইনার গুলো শুধু পানি দিয়ে ধুয়ে নিয়ে ভেতরে যাতে ব্যবহৃত প্রসাধনী বা অন্যান্য দ্রব্যের কোন অবশিষ্টাংশ না থাকে সেটি নিশ্চিত করে নিতে হবে। ( উন্নত দেশগুলোতে কিন্তু ময়লার বাস্কেটে করে সিটি কর্পোরেশনের গাড়ীতে এসব খালি কন্টেইনার দেওয়ার সময় বাসা থেকে পানি দিয়ে ধুয়ে দেওয়ার নিয়ম, আর সেটি না করলে জরিমানা করবে সিটি কর্পোরেশন আপনাকে।) কন্টেইনারগুলো ধুয়ে নেওয়ার পরে আমরা আমাদের গ্যাসের চুলায় অথবা মোমবাতি দিয়ে খুব সাবধানে কন্টেইনার মুখ/নীচের অংশ অথবা মাঝামাঝি কোন অংশ পুড়িয়ে ফেলে বা কেটে ফেলে ( মানে নষ্ট করে) তারপর সেটাকে ময়লার ঝুড়িতে বা ফেরিওয়ালার কাছে দিতে পারি।
এক্ষেত্রে কষ্ট করে হলেও কন্টেইনার ধুয়ে নেয়া উত্তম, কারন এগুলোর মধ্যে কোন বিস্ফোরণ প্রবণ অবশিষ্টাংশ থেকে গেলে, আগুনে পোড়ালে তা বার্ষ্ট করে আমাদের শারিরীক ক্ষতি করতে পারে। তাই নিরাপত্তার খাতিরে ধুয়ে নিতে হবে সেগুলো। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই পারফিউম বা বডি স্প্রের কোন কন্টেইনার আগুনের সংস্পর্শে আনা যাবে না কোনো মতেই। কারণ এগুলোর অবশিষ্টাংশ অত্যন্ত দাহ্য বা বিস্ফোরণোন্মুখ।
যদি ফেলে দেওয়ার এই প্রক্রিয়াকে আমাদের কাছে বাড়তি ঝামেলা বলেও মনে হয়, তবুও এই পদ্ধতি আমাদের অনুসরন করা উচিত নকল প্রসাধনী কিনে আমরা যাতে ঠকে না যাই তা এড়ানোর কাজে কিছুটা সহায়ক ভূমিকা নিতে চাইলে। আমাদের ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি খালি কন্টেইনার জমিয়ে রেখে কোন এক অবসরে আমরা এই কাজটি করতে পারি, যা খুব একটা কষ্টসাধ্য নয়।
দেশটা শুধু প্রশাসন বা সরকারের নয়, দেশটা আমাদের জনগনেরও। তাই সব ক্ষেত্রেই সচেতনতা গড়ে তুলতে আমাদের ব্যক্তিগত পর্যায় থেকেও সচেতনতার অভ্যাস করতে হবে, তবেই হয়তো ভালো থাকার মতো একটি স্বদেশ পাবো আমরা পৃথিবীর বুকে।
loading...
loading...
ঘর গৃহস্থালী বা সৌখিন প্রসাধনী ব্যবহার শেষে কন্টেইনারের ব্যবস্থাপনায় আমরা অনেকেই ভীষণ অবহেলা করি। সামান্য বেশী পয়সায় ভাঙ্গারীর কাছে বিক্রী করে দেই। এই কন্টেইনারি যে রিসাইকেল হয়ে ঘরে ফিরবে না তার কোন গ্যারান্টি নেই। নকল পণ্যে দেশ সয়লাব। বড় শপিংমলে কেনাকাটা করেও স্বস্তি পাই না।
__ আলোচনার জন্য ধন্যবাদ আপা। শুভ সকাল।
loading...
ভালো উপদেশ! সময় সময় বাসাবাড়িতে ফেরিওয়াদের হাকডাক শুনি। এঁরা ঘরের ফেলনা জিনিশপত্র ক্রয় করে। সাথে থাকে দামী কমদামী প্রসাধনী কন্টেইনার বা খালী কৌটা। এগুলো ওঁদের কাছ থেকে কোথায় যে যায়, তা ছিল অজানা। আপনার পোস্ট পড়ে এবিষয়ে অনেককিছু জানা হলো । সত্যি অবাক হবার মতো।।
loading...
জন সচেতনতায় আপনার পোস্ট কাজে আসুক এটাই প্রত্যাশা করি আপু।
loading...
এই যুগে সচেতন না হলে, সচেতন কবে হবো আমরা ?
loading...
খুবই প্রয়োজনীয় বিষয়ের আলোকপাত করেছেন। ডাস্টবিন প্রকরণের কথা মনে আছে বোন।
loading...
আমরাই নকল পণ্য প্রস্তুতকারীদেরকে এসব কন্টেইনার ব্যবহারের সুযোগ করে দিচ্ছি।
loading...
ভালো পরামর্শ আপা।
loading...