অবয়ব (পর্ব-৫)
সাব্বির হোটেলে বন্ধুদের রেখেই একা একা বাসায় রওনা হলো, কলিং বেল চাপতেই সাব্বিরের মা দরজা খুলে দিলেন, ছেলের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলেন..
বাবা তোকে আজ এতো ক্লান্ত দেখাচ্ছে ক্যানো? তোর কি কিছু হয়েছে?
– না, মা; তেমন কিছুই নয়, একটু ঘুরাঘুরি বেশি হয়ে গেছে আজ তাই, বন্ধুরা জোর করলো খুব তাই ওদের কথা অমান্য করতে পারিনি। বাবা কি ঘুমে?
হু, ঘুমিয়ে পড়েছে
– আমি গোসল করে খাবার টেবিলে আসছি, তুমি ভাত টেবিলে রাখো।
গোসল শেষে পোষাক আষাক পরিবর্তন করে খাবার টেবিলে এসেছে সাব্বির, চেয়ার টেনে বসে প্লেট টানছে এমন সময় তার মা বলে উঠলো..
বাবা, ভালো একটা সংবাদ আছে, এক মেয়ের সন্ধান পেয়েছি, ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া, মেয়ের বাবা মায়ের সাথে কথা হয়েছে, আগামীকাল তাদের বাসায় যেতে বলেছে, আমরাও বলেছি যাবো। কালকে তোকে বাসায় থাকতে হবে কিন্তু, তোকে সাথে করে মেয়ে দেখতে যাবো,
– ঠিক আছে মা, কখন রওনা হবে?
ওখানে গিয়ে দুপুরের খাবার খাওয়ার কথা বলেছে মেয়ের বাবা, খুব জোর করেছে, আমাদের পাশের বাসায় তোর যে কানিজ আন্টি থাকে তার খালাতো বোন, তিনিও আমাদের সাথে যাবেন।
– কি বলো মা, কানিজ আন্টির যে ফ্যাশন, আল্লায় জানে তুমি কোথায় নিয়ে যাবে…
তোর এতো শত কথা বলার প্রয়োজন নেই, তুই রেডি থাকবি, যেখানে নিয়ে যাই সেখানে যাবি
– ঠিক আছে মা, তোমরা যা ভালো মনে করো তাই করো, আমি দ্বিমত করছি না
পরেরদিন যথা সময়ে সাব্বির ও তার পরিবার এবং কানিজ আন্টিকে সাথে নিয়ে মেয়ে দেখতে মেয়েদের বাড়িতে পৌছেছে, কানিজ আন্টি সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে, ড্রয়িং রুমে নিয়ে বসতে দিলেন, জোর করে আগে খাবার খাওয়ার বন্দোবস্ত করলেন, খাওয়া-দাওয়া শেষ হলেই নাকি মেয়ে দেখার পর্ব শুরু করবেন, সাব্বির এদিক ওদিক তাকাচ্ছে দেখে কানিজ আন্টি সাব্বির কাছে এসে বললেন,
বাবা (সাব্বির) খাওয়া-দাওয়া শেষ করো, তারপর মন ভরে দেখে নিও, এখন কারো দ্যাখা হবে না
খাওয়ার পর্ব শেষ এবার মেয়ে দেখার পালা, মেয়ে ডাকা হলো, মেয়ের মা মেয়েকে সাথে করে নিয়ে আসলেন, সবার সামনে বসলেন, মেয়ের মুখ দেখে সাব্বিরের শরীর ঘেমে যাচ্ছে, মনে মনে বলতে লাগলো
– এ আমি কি দেখলাম, কাকে দেখছি, এতো সেই মেয়েটি যাকে আমি হোটেল আমারি-তে দেখেছি, সাব্বিরের পিতা-মাতা গল্পে মশগুল, মেয়েকে দেখে তাদের বেশ পছন্দ হয়েছে বুঝতে পারছে সাব্বির, সাব্বিরের মা ডাকতেই সাব্বির যেন আকাশ থেকে পড়ছে, ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বললো– কি কি কি…
আরে তুই কি কি করছিস ক্যানো, মেয়েকে কি তোর পছন্দ হয়েছে? আমাদের তো পছন্দ হয়েছে..
খুব কষ্ট করে সাব্বির তার মাকে বললো মা, আমি মেয়ের সাথে একটু একা কথা বলতে চাই, এমন কথা শুনে মেয়ের মা বললেন
– হ্যাঁ বাবা অবশ্যই তুমি কথা বলতে পারো, জুই মা সাব্বিরকে সাথে করে তোমার ঘরে নিয়ে যাও, দুজনে কথা বলে নাও, তোমাদেরও তো পছন্দ অপছন্দের ব্যাপার আছে..
সাব্বির জুঁইয়ের সাথে তার ঘরে প্রবেশ করলো,
যাক তাহলে তোমার নাম জুই, সেদিন জানা হয়নি আজ জানতে পারলাম, দ্যাখো ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, সেই তুমি আর আমি, যাই হোক এখন তুমিই বলো আমি কি করতে পারি? তোমাকে কি আমার বিয়ে করা উচিত হবে? সেদিনও বলেছি আমার পিতা-মাতার কথায় আমি অবাধ্য হয়নি কখনো তাই তোমাকেই বলছি, তুমিই বলো তোমাকে বিয়ে করা কি আমার উচিত হবে? যদি না হয়ে থাকে তাহলে তুমি বলে দিও, ক্যানো না আমি তোমাকে সবার সম্মুখ এনে বাকি জীবনটা নষ্ট করে দিতে চাই না।
রনি, বন্ধু তুই আমাকে কি বুঝাতে চাইছিস…
বন্ধু এমন ঘটনায় আমি ফেসে গেছি, যা তোর জীবনে ঝড় বয়ে নিয়ে আসতে
কি বলিস?
হ্যাঁ,
কি হয়েছে, কিভাবে হয়েছে, বলবি তো…
দোস্ত রাত হয়েছে, ক্ষুধা লেগেছে, সকালে বলবো.. আমি আজ ক্লান্ত…সকাল পর্যন্ত একটু অপেক্ষা কর…
–চলবে–
loading...
loading...
লিখাটিকে এই পর্যায়ে এনে এক ধরণের ক্লাইমেক্স তৈরী করে ফেলেছেন।
আশা করবে লিখাটি না থামিয়ে ধারাবাহিকতা ধরে রাখবেন মি. রুদ্র আমিন।
loading...