২৫শে মার্চের কাল রাত্রির কথা বাঙালীরা ভুলতে পারবে না কোন দিনই। ১৯৭১ সালের মার্চের সেই অগ্নিঝরা দিনগুলিতে চলছিল অসহযোগ আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে সারা বাংলাদেশে যে বেসামরিক প্রশাসন আওয়ামী লীগ হাতে তুলে নিয়েছিল তার নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদ। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধান মন্ত্রীর দায়িত্ব যেন ৭ই মার্চের পর থেকে তাঁর কাঁধেই অর্পিত হয়েছিল…..
মায়েরা হাসতে হাসতে তাঁদের ছেলেমেয়েদের উৎসর্গ করে ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য। বাবারা তাঁদের ছেলেমেয়েদের উৎসর্গ করে ছিলেন আমাদের এই স্বাধীনতার জন্য। ভাই ও বোনেরা নিজেদের জীবন এই মুক্তির জন্য উৎসর্গ করে রেখে গিয়েছেন। ত্রিশ লক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে বিনিময়ে পাওয়া এই স্বাধীনতা…..
আমি একজন নারীর কথা জানি –
যিনি একটা পুকুরের পাশে কাপড় কাচছিলেন,
সেই পুকুরে পানার নিচে কোনো রকমে নাক ভাসিয়ে লুকিয়ে ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। মিলিটারি বলল, মুক্তি কিধার হ্যায়, নারীটি বললেন, দেখিনি,
মিলিটারি চলে যাচ্ছিল, হঠাৎ নড়ে উঠল পানা,
মিলিটারি গুলি করে মেরে ফেলল সেই নারীটিকে…..
এক নারী ভোরবেলা গ্রাম্য কুটিরের দুয়ারে বসে কোরআন শরিফ পড়ছিলেন, ভেতরে ছিল মুক্তিযোদ্ধারা, পাকিস্তানি মিলিটারি ওই ঘরের দুয়ার থেকে ফিরে গেল, মুক্তিযোদ্ধা নিরাপদে সরে গিয়ে আক্রমণ করল পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর,
ফেরার পথে মিলিটারিরা জ্বালিয়ে দিল ওই বাড়ি,
শহীদ হলেন সেই নারী…..
আমি একজন বাবার কথা জানি –
তাঁর একমাত্র ছেলে নারায়ণগঞ্জে অপারেশনে এসে শহীদ হলো। মুক্তিযোদ্ধারা তাঁকে সেই খবর দিল, কাকা, আপনার ছেলে শহীদ হয়েছে।
তিনি কাঁদতে লাগলেন। বললেন, আমি এ জন্য কাঁদছি না যে আমার একমাত্র ছেলে শহীদ কেন হলো ?
আমি কাঁদছি এই জন্য যে আমার কেন একটা মাত্র ছেলে। আজ আরেকজন ছেলে থাকলে তো আমি তাকে যুদ্ধে পাঠাতে পারতাম।
আমি একজন বোনের কথা জানি –
একাত্তরে তার পেটে গুলি লেগেছিল। তাকে নেয়া হয়েছিল আগরতলার হাসপাতালে।
রক্ত দরকার। রক্ত জোগাড় করা যায়নি,
ডাক্তারের হাত ধরে সেই বোন বলেছিলেন, দাদা, আমি তো মারা যাচ্ছি,
আপনি কথা দেন যে দেশটাকে স্বাধীন করে যাবেন।
আমি একজন মায়ের কথা জানি –
তাঁর একমাত্র ছেলে আজাদ যুদ্ধে ধরা পড়ার পর তাঁর কাছে ভাত খেতে চেয়েছিল। মা বলেছিলেন, শক্ত হয়ে থেকো বাবা, কোনো কিছু স্বীকার করবে না।
মা ভাত নিয়ে গিয়েছিলেন রমনা থানায়।
ছেলের দেখা পাননি। এই মা আরও ১৪ বছর বেঁচে ছিলেন। আর কোনো দিনও ভাত খাননি…..
আসলে স্বাধীনতার ইতিহাস লিখে শেষ করা যাবেনা। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, এই রেসকোর্স ময়দানে রক্তের ঋণ আমি রক্ত দিয়ে শোধ করব। তিনি তাঁর কথা রেখেছেন…..
আমরা পেয়েছি দেশ পেয়েছি ভাষা আমরা পেয়েছি লাল সবুজের পতাকা পেয়েছি স্বাধীনতা।
আমাদের তাই করতে হবে যা আমাদের সবার ভেতরে আছে দেশের জন্য ভালোবাসা। নিজেকে আলোকিত করতে হবে ১৬ কোটি প্রাণে যদি আলো জ্বলে ওঠে
আলোয় আলোয় ভরে উঠবে এই দেশ। নিজেদের গড়ব আমরা ন্যায়ের পথে চলব অন্যায়ের প্রতিবাদ করব, সত্যের জন্য লড়বো। আমাদের কষ্টের অর্জিত এই স্বাধীনতা আমরা রক্ষা করবো………..!!
লেখা : ফারজানা শারমিন
loading...
loading...
কষ্টার্জিত এই প্রাপ্তির স্বাধীনতায় নিজেকে আলোকিত করতে হবে। ১৬ কোটি প্রাণে যদি আলো জ্বলে ওঠে আলোয় আলোয় ভরে উঠবে এই দেশ। জয় হবে মেহনতি মানুষের।
loading...
স্বাধীনতা অর্জন এবং তাকে ধরে রাখা সহ অবমূল্যায়িত হতে না দেয়া প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব।
loading...
শুভেচ্ছা কবি বোন ফারজানা মৌসুমী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিনে আমার ভালোবাসা।
loading...
দারুন লেখা। থ্যাংকস।
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে,
বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা
আমরা তোমাদের ভুলব না…
loading...
আমরা পেয়েছি দেশ পেয়েছি ভাষা আমরা পেয়েছি লাল সবুজের পতাকা পেয়েছি স্বাধীনতা।




loading...
স্বাধীনতা আমাদের অর্জন।
loading...
শত শহীদের রক্তের বিনিমনে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা।
সুন্দর উপস্থাপনা করেছেন। প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
জয়গুরু!জয়গুরু!জয়গুরু!
loading...