বঙ্গবন্ধু বাঙ্গালীর হৃদয়ে চির অমলিন...

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
যার রাজনীতি ছিল বহুল বর্ণিল, তাঁর কণ্ঠে ছিল ইন্দ্রজাল, সেই ইন্দ্রজালিক শক্তিতেই তিনি ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালিকে দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার স্বপ্ন জাগিয়ে এক কাতারে সামিল করতে পেরেছিলেন। নির্ভীক ও স্বপ্নের কারিগর বঙ্গবন্ধু নিজ হাতে নির্মাণ করেছিলেন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ ও এর গৌরবদীপ্ত সাফল্যের ইতিহাস……
.
তিনি ছিলেন এক রাজনীতির মহান কবি, যার ভাষণের পঙ্ক্তিতে পঙ্ক্তিতে ছিল কাব্যিক ব্যঞ্জনা, অনুপ্রাস ও মাত্রাবোধের এক অপূর্ব সম্মিলন। দেশের সর্বস্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন বঙ্গবন্ধু।
তিনি ঘুমন্ত বাঙালিকে জাগিয়ে তোলে ঐক্যবদ্ধ ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধেও মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। বাঙালি জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তিনি যেমন বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা তেমনি বাঙালির জাতির জনক জাতির পিতা। যে ডাকে জেগেছিল সাড়ে সাত কোটি প্রাণ রণাঙ্গনে, সেই কণ্ঠকে স্তব্ধ করা শুধু নয়, জাতির বিকাশকে স্থিমিত করার ঘৃণ্য চেষ্টাকে অবলোকন করেছে বিশ্ববাসী। কিন্তু তারা শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি। যেকোনো বিচারেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন এক অনন্য নেতা। সহজ সরল, সাদামাটা অথচ দৃঢ়চেতা এক মানুষ। বজ্রকণ্ঠের বিস্ময়কর শক্তি এ মানুষটিকে সহজেই আলাদাভাবে চেনা যায়। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির জন্মের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে তার নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান…..
.
বঙ্গবন্ধুকে দৈহিকভাবে হত্যা করা হলেও তিনি বেঁচে আছেন কোটি মানুষের হৃদয়ে। কেননা একটি জাতিরাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা ও স্থপতি তিনিই। তিনি গড়েছিলেন স্বাধীন সোনার বাংলা। যতদিন এ রাষ্ট্র থাকবে ততদিন অমর তিনি। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর স্থান ছিল কোটি কোটি মানুষের অন্তরে। তখন বাংলাদেশে একটি নামই উচ্চারিত হতো শেখ মুজিব তার নাম স্বগর্বে উচ্চারিত হবে ততদিন যতদিন পদ্মা, মেঘনা, যমুনা প্রবাহিত হবে, যতদিন বাংলার মাটি আর মানুষ থাকবে। হাজার বছর পরেও যদি একটি নাম উচ্চারিত হয়, তবে সে নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান…..
.
আরব্য সাহিত্যের কবি আব্দুল হাফিজ লিখেছেন – আমি তার মধ্যে তিনটি মহৎ গুণ পেয়েছি – সেগুলো হলো দয়া, ক্ষমা ও দানশীলতা। তিনি যেমন ছিলেন বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্ট্রা, বাঙালি জাতিরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা তেমনি ছিলেন বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের চেতনার মূর্ত প্রতীক। আর চিরদিনের শোষিত-বঞ্চিত বাঙালিদের সম্রাট।
বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান সবসময়ই বলতেন —
বাংলাদেশ এসেছে, বাংলাদেশ থাকবে, কেউ তাকে ধ্বংস করতে পারবে না, নিশ্চিতভাবেই জানি, পারবে না। কারণ ৩০ লাখ মানুষের তাজা রক্ত বৃথা যেতে পারে না, লাখো নারীর সম্ভ্রম বৃথা যেতে পারে না, লাখো মুক্তিযোদ্ধার আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারে না। এখন বঙ্গবন্ধু রাজপথের জয়বাংলা স্লোগান। বঙ্গবন্ধু এখন চেতনার নাম, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু মানেই সবুজের বুকে লালের সমাহার। বঙ্গবন্ধু মানেই রবিঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ এ জয়গান……
.
বঙ্গবন্ধু বাঙালির হৃদয় প্রদীপ। বাঙালির নিবিড় মায়ায়, ধ্রুবতারা, কবির কবিতায় অলঙ্কৃত হয়েছে মহাকাব্যের নায়ক বঙ্গবন্ধু।
তাঁর সকল ভাবনাই ছিল দেশের মানুষকে নিয়ে তিনি মানুষকে যেমন বিশ্বাস করতেন তেমনি প্রাণ দিয়ে ভালবাসতেন। তাঁর নেতৃত্বেও এমনই একটি জাদুকরি শক্তি ছিল যে, দেশের সব শ্রেণী-পেশার মানুষ তাঁর নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে এবং অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে দিতে কুন্ঠাবোধ করেনি। কেননা, প্রতিটি বাঙালি জানতো ও বিশ্বাস করতো বঙ্গবন্ধু এমনই এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যার নিজের কোনো চাওয়া পাওয়া নেই। তাঁর একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল চিরনিপীড়িত মানুষের মুখে হাসি ফোটানো, তিনি মানুষের ভালবাসা ছাড়া আর কিছুই চান না। না প্রধানমন্ত্রীত্ব না প্রভুত্ব। তাঁর কাছে, অর্থ, সম্পদ, আড়ম্বরপূর্ণ জীবন ও ঐশ্বর্য সবই ছিল তুচ্ছ। মানুষকে ভালবাসতেন বলেই জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু থেকে গেছেন মানুষের কাতারেই,
এই ভালবাসা মানুষের প্রতি বিশ্বাসই একদিন কাল হলো……
.
মানবিকতা ও মনুষ্যত্বেও ধারক বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাস ছিল কোনো বাঙালি কোন দিন তাকে হত্যা করতে পারে না। তিনি সবার কাছে বলতেন সবাই আমার সন্তান তাই কে আমাতে মারতে আসবে। মানুষের প্রতি এই অবিচল বিশ্বাসই তাঁর মধ্যে মানবতাবাদের উৎকৃষ্ট গুণাবলীর উন্বেষ ঘটেছিল, তিনি শুধু বাঙালি বাংলাদেশের মানুষের প্রিয় নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন বিশ্বের সব মানবতাবাদী ও শান্তিকামী মানুষের আদর্শ ও চেতনার মূর্তপ্রতীক। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙ্গালীর হৃদয়ে চির অমলিন…………

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৮ টি মন্তব্য (লেখকের ৩টি) | ৪ জন মন্তব্যকারী

  1. সৌমিত্র চক্রবর্তী : ১৯-০২-২০১৯ | ২২:২৮ |

    যে ডাকে জেগেছিল সাড়ে সাত কোটি প্রাণ রণাঙ্গনে, সেই কণ্ঠকে স্তব্ধ করা শুধু নয়, জাতির বিকাশকে স্থিমিত করার ঘৃণ্য চেষ্টাকে অবলোকন করেছে বিশ্ববাসী। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    GD Star Rating
    loading...
  2. রিয়া রিয়া : ১৯-০২-২০১৯ | ২২:৪২ |

    তিনি ছিলেন এক রাজনীতির মহান কবি, যার ভাষণের পঙ্ক্তিতে পঙ্ক্তিতে ছিল কাব্যিক ব্যঞ্জনা, অনুপ্রাস ও মাত্রাবোধের এক অপূর্ব সম্মিলন। শ্রদ্ধা। 

    GD Star Rating
    loading...
  3. মুরুব্বী : ১৯-০২-২০১৯ | ২২:৪৫ |

    বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
    যার রাজনীতি ছিল বহুল বর্ণিল, তাঁর কণ্ঠে ছিল ইন্দ্রজাল, সেই ইন্দ্রজালিক শক্তিতেই তিনি ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালিকে দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার স্বপ্ন জাগিয়ে এক কাতারে সামিল করতে পেরেছিলেন। নির্ভীক ও স্বপ্নের কারিগর বঙ্গবন্ধু নিজ হাতে নির্মাণ করেছিলেন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ ও এর গৌরবদীপ্ত সাফল্যের ইতিহাস।

    __ সতত শুভেচ্ছা রাখি মহান এই সত্য পুরুষের প্রতি।

    GD Star Rating
    loading...
  4. নিতাই বাবু : ২০-০২-২০১৯ | ১৪:১৩ |

    জাতির পিতার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা সবসময় । লেখককে ধন্যবাদ ।

    GD Star Rating
    loading...