কৃতজ্ঞতা
প্রতিনিয়ত আমরা কারো না কারো কাছ থেকে উপকৃত হয়ে থাকি। কেউ আমাদের উপকার করেছে, সেই উপকার সম্পর্কে যে আমরা সচেতন তা ওই ব্যক্তিকে অবহিত করার এবং তাতে আনন্দ প্রকাশ করার একটি উপায় হলো শুকরিয়া আদায় বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ। উপকারের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য আমরা আমাদের ভাষায় ‘ধন্যবাদ’ বলে থাকি। যে কোনো ব্যক্তি যে কোনো সময় নিজ নিজ ভাষায় উপকারী লোককে ধন্যবাদ বলে।
কৃতজ্ঞ হলো বিশেষণ পদ- যে উপকারীর উপকার মনে রাখে ও স্বীকার করে। বিশেষ্য পদ- কৃতজ্ঞতা।
কৃতজ্ঞতা হিন্দু শাস্ত্রের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। একে আমরা দুই ভাগে ভাগ করতে পারি। আমাদের সবসময় সব কিছুর জন্যে কৃতজ্ঞ থাকা উচিৎ, কিন্তু কখনই অন্যের কাছ থেকে কৃতজ্ঞতা আশা করা উচিৎ না। নিঃস্বার্থ সেবাই আমাদের মূল ধর্ম।”
ইসলাম যা বলে : আল্লাহ্ আমাদের প্রতি যে নেয়ামত ও কল্যাণ দান করেছেন, তার জন্য শুধু তাঁর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের তারিফ করেই ক্ষান্ত হননি, বরং তিনি আমাদেরকে আদেশ করেছেন ওই সমস্ত লোকের কৃতজ্ঞ হতে যারা আমাদের উপকার ও কল্যাণ করবে। একজন বান্দার নিকট যেমন ‘হামদ’ (প্রশংসা) একটি কাম্য, অনুরূপ তার নিকট কাম্য ‘তাশাক্কুর’ (কৃতজ্ঞতা)। ইসলাম ধর্মের নির্দেশ : মানুষ আল্লাহর প্রশংসা (হামদ) করবে এবং মানুষের কৃতজ্ঞ হবে যারা আমাদের কল্যাণ করে।
বাইবেল যা বলে:
বাইবেল আমাদের কৃতজ্ঞতার মনোভাব গড়ে তোলার জন্য সাহায্য করে। প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন, “কৃতজ্ঞ হও” আর এই ব্যাপারে তিনি নিজে এক উত্তম উদাহরণ স্থাপন করেছিলেন। উদাহরণ স্বরূপ, অন্যদের রাজ্যের বার্তা জানানোর পর তারা যখন ইতিবাচকভাবে সাড়া দিত, তখন তিনি ‘অবিরত ঈশ্বরের ধন্যবাদ করিতেন।’ (কলসীয় ৩:১৫; ১ থিষলনীকীয় ২:১৩) স্থায়ী সুখ লাভ করার জন্য কেবল মাঝে মাঝে ধন্যবাদ বলাই যথেষ্ট নয়। এর জন্য কৃতজ্ঞতার মনোভাব বজায় রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। আর এই মনোভাব আমাদেরকে স্বেচ্ছাচারিতা, ঈর্ষা ও অসন্তোষ থেকে রক্ষা করবে, যে-বিষয়গুলো লোকেদেরকে আমাদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিতে ও সেইসঙ্গে আমাদের জীবন থেকে আনন্দ কেড়ে নিতে পারে।
কৃতজ্ঞতার মনোভাব আমাদের শরীর ও মনের জন্য উত্তম কিভাবে?
চিকিৎসাবিজ্ঞান যা বলে হার্ভার্ড মেন্টাল হেল্থ লেটার-এর একটা প্রবন্ধ অনুযায়ী “কৃতজ্ঞতার মনোভাব এবং প্রচুর সুখ লাভ করা পরস্পরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কৃতজ্ঞতার মনোভাব লোকেদেরকে আরও ইতিবাচক হতে, উত্তম অভিজ্ঞতা থেকে আনন্দ লাভ করতে, স্বাস্থ্যকে আরও উন্নত করতে, দুর্দশার সঙ্গে মোকাবিলা করতে এবং দৃঢ়বন্ধন গড়ে তুলতে সাহায্য করে।”
তামিল ভাষায় লেখা “কুরাল”-এ এক কবি ও দার্শনিক আজ থেকে ১,২০০ বছর আগে দৈনন্দিন জীবনে কৃতজ্ঞতাবোধের গুরুত্ব নিয়ে উল্লেখ করেছেন। সেখান থেকেই একটা অংশ, “একজন মানুষ চেষ্টা করলে তাঁর সমস্ত পাপ ধুয়ে ফেলতে পারে। কিন্তু অকৃতজ্ঞতা মহাপাপ, যার থেকে আজ অবধি কেউ মুক্তি পায়নি।” (রিডিংস ফ্রম তিরুক্কুরাল, জি এন দাস, পৃঃ ৩২)
পরের পর্বে মনোবিজ্ঞান কি বলছে কৃতজ্ঞতা নিয়ে সেটা আলোচনার চেষ্টা করবো।
loading...
loading...
কৃতজ্ঞ হলো বিশেষণ পদ- যে উপকারীর উপকার মনে রাখে ও স্বীকার করে। বিশেষ্য পদ- কৃতজ্ঞতা। বিষয়টি জানা ছিলো না। আজই জানলাম।
উল্লেখিত লাইনটির পর ইতিহাস ঐতিহ্যের বিষয় গুলোনও তেমন ওয়াবিহাল ছিলাম না। পরিষ্কার হলো। 
loading...
অনুপ্রাণিত হলাম আপনার কথায় প্রিয় বন্ধু। ধন্যবাদ।
loading...
“কৃতজ্ঞতার মনোভাব এবং প্রচুর সুখ লাভ করা পরস্পরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কৃতজ্ঞতার মনোভাব লোকেদেরকে আরও ইতিবাচক হতে, উত্তম অভিজ্ঞতা থেকে আনন্দ লাভ করতে, স্বাস্থ্যকে আরও উন্নত করতে, দুর্দশার সঙ্গে মোকাবিলা করতে এবং দৃঢ়বন্ধন গড়ে তুলতে সাহায্য করে।”
*




loading...
ধন্যবাদ প্রিয় কবি দা।
loading...
চমৎকার উপস্থাপনা।
বিশেষকরে চুম্বকঅংশগুলি।
loading...
অসংখ্য কৃতজ্ঞতা ছবি দা।
loading...
আমার মনের কথা দিদি জানলো কেমনে?
আমিও এই ধরনের একটা পোস্ট মনে মনে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম!
loading...
loading...
এখনও ঢাকার বাইরে আছি। আগামীকাল ফিরে এসে সচিত্র প্রতিবেদন দিতে পারব আশা করছি।
loading...
আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হোক।
loading...
রিয়াদি,
অনেক ভালো লাগলো এই লেখাটা ।ছোট ছোট ব্যাপার যে আমাদের জীবন কত সুন্দর করতে পারে তার একটা বড় প্রমান হলো এই কৃতজ্ঞতা স্বীকার করার ব্যাপারটা । এখানে আমেরিকায় আরেকটা জিনিস আমার খুব ভালো লাগে । পরিচিত অপরিচিত সবাই সবাইকে সামনে সামনি হলেই হাই বলছে হেসে ! ছোট একটা ব্যাপার কিন্তু মাঝে ভোর সকালে পার্কিঙে বা অথবা ক্লান্ত বিকেলে বাসায় ফিরতে ফিরতে যখন এই ছোট হাইটা শুনি তখন কি যে ভালো লাগে ।পরের যে পর্বটা লিখার কথা বলেছেন সেটা তাড়াতাড়ি চাই কিন্তু । অনেক ভালোলাগা লেখায় ।
loading...
সময় করে উঠতে পারছি না কবি দা। দেখা যাক। আপনার জন্য শুভকামনা।
ধন্যবাদ।
loading...