রাত্রি এবং আমি
রাত হলেই ঘুমেরা লুকোচুরি খেলছে আমার সাথে। আমিও আর তাদের খুঁজতে যাচ্ছি না। তারা তাদের মতো থাকছে, আমি আমার মতো।
চারপাশে সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। গভীর রাত। এমনকি বাড়িগুলোও একে অপরের সাথে কথা বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে ঘুমোচ্ছে। আর আমি? আমি দাঁড়িয়ে আছি জানলায়। তবে আমি একা জেগে নই জানলা দিয়ে দেখতে পাচ্ছি ওই দূরে তিনটে নারকেল গাছও জেগে আছে। ওরা তিনজনে নিজেদের মধ্যে কত কথা বলছে, সুখ- দুঃখের কত গল্প করছে। আর এদিকে আমি একা। আমি এবং একা আমি। আজ তো আকাশেরও মুখ ভার। তারাদের আনাগোনাও নেই। কি ভীষণ অন্ধকার চারিদিকে। হয়তো অমাবস্যা। হঠাৎ মনে হল ঠিক এই সময়, এই অন্ধকারেই যদি আমি হারাই? হারিয়ে যাই দূরে, অনেক দূরে কোথাও। ঠিক ওই তারাদের মতো দূরে, তাদের দেশে।
কেউ খুঁজে পাবে না আমায়। ওই তারাদের মাঝে চুপটি করে বসে থাকবো আর মিটি মিটি করে দেখবো। আচ্ছা কেউ কি জিজ্ঞেস করবে কোথায় আমি? কেউ কি আগ্রহ ভরে জানতে চাইবে ওই দূরের আকাশের হাজার টা জানলার মধ্যে ঠিক কোন জানলায় আমি থাকবো? গাসেলা কি নেবো সাথে করে? চারিদিকে কেমন যেন শ্মশানের শান্তি। এই সব ভাবতে ভাবতে চলে গেছিলাম বহুদূর আমার আমিকে ছেড়ে। চমকে ফিরলাম খুব চেনা একটা ডাকে।
“মা কোথায় তুমি”- ঘুমের মধ্যেই মেয়ে বলছে। জানলা থেকে আমার আমিকে নিয়ে ফিরলাম মেয়ের কাছে। মেয়ের পাশে। সবাই তো একই আছে। তবুও স্বচ্ছ কাচের মতো এতো বিষণ্ণ কেন লাগছে নিজেকে? কেন এতো একা লাগছে আজ? জানি সবকিছুই অনিত্য। সৃষ্টিকর্তার খেয়াল মাত্র। এই বাড়িটাকে ঘিরে এখন এখানেই নামে আদি সন্ধ্যা, বর্তমান ও অনাগত রাত। সবই তো আছে এখানে আকাশ ,আয়না, ভোর, পাখি সব। আছে সেই সব আদি রূপ যা আমাদের প্লোতিনো শিখিয়েছেন।
মেয়ের পাশেই ঘুমের দেশে চলে যাচ্ছি। ধীরে ধীরে আমি যেন ঘুমের মধ্যেই ভেসে চলেছি একটা পাল তোলা নৌকো করে দূরে বহুদূরে। খুব আবছা একটা কণ্ঠ কানে আসছে। কে যেন অনেক দূর থেকে তার ‘ইউলিসিস’ কে ডেকে চলেছে করুণ ভাবে। সেই শব্দের প্রতিধ্বনি মিশে যাচ্ছে আমার গভীর নিঃশ্বাসের সাথে। আর আমি ডুবে যাচ্ছি ক্রমশ গভীর থেকে গভীরে।
loading...
loading...
সুন্দর গদ্য। মুক্তগদ্য।
loading...
ধন্যবাদ দাদা।
loading...
শব্দকে শব্দের বেড়াজালে বেঁধে রেখে কি আসে যায় …শব্দানুভূতির মোহজাল ভেঙ্গে সব মূক নির্বাকে কথা কয়। আনন্দ হাসি রোদন; চাপা উচ্ছাস যেখানে বিপত্তি নয়। যন্ত্র যন্ত্রণার স্বল্পতে যদি জীবন বাঁধা রয়;. ক্ষতি কী !!
জীবন যেখানে এক; না থাক জ্যামিতিক সমীকরণ। শুভেচ্ছা শব্দ বন্ধু রিয়া।
loading...
অপরূপ মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম প্রিয় বন্ধু।
loading...
সুন্দর লেখেছেন দিদি
loading...
শুভেচ্ছা ধন্যবাদ প্রিয় কবিবাবু।
loading...
“কেউ কি আগ্রহ ভরে জানতে চাইবে ওই দূরের আকাশের হাজার টা জানলার মধ্যে ঠিক কোন জানলায় আমি থাকবো?”
কেউ কেউ হয়তো এটা নিয়ে ভাববে; হয়তো দিন চারেক। পঞ্চম দিন থেকে সেই ভাবনাটা ফেইড হতে হতে হারিয়ে যাবে। তখন তাদের সাথেও ঘুমেরা লুকোচুরি করবে, পড়শি ঘরগুলি গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে যাবে এবং “দূরে তিনটে নারকেল গাছ” কিছু বিষন্নতা নিয়ে জেগে থাকবে।
loading...
হুম। এমন করে ভাবলে মন উদাস হয়ে যায় মিড দা।
loading...
ঝিল্লী ডাকা জোনাক জ্বলা নিশি রাতে
জোছনা চাদর গায়ে পৃথিবী ঘুমায়,
শিশির কণা মুক্তা হয়ে ঝরে মেঠো পথে
তমাল তরু শুধু ঘুম পারানি গান গায়।
দূর আকাশের তারাগুলি মিটিমিটি হাসে
সুরেলা বাঁশরি এলোমেলো বাতাসে ভাসে।
সুদূর নীহারিকা চেয়ে দেখে সুপ্ত মশাল জ্বেলে
কাজল কলঙ্কে নিশীথিনী মনের ছবি আঁকায়।
শিশির বিছানো আঁচলে হেমন্ত গায় নিশি রাগিণী
নিঝুম স্বপনে মগ্ন মোহনীয় মধু যামিনী।
তিমির কুহেলিকা বসে থাকে বসন্তের পথ চেয়ে
নীরবে কে যেন মনে সুর ঝড়িয়ে শিহরণ জাগায়।
ঝিল্লী ডাকা জোনাক জ্বলা নিশি রাতে
জোছনা চাদর গায়ে পৃথিবী ঘুমায়,
শিশির কণা মুক্তা হয়ে ঝরে মেঠো পথে
তমাল তরু শুধু ঘুম পারানি গান গায়।
দূর আকাশের তারাগুলি মিটিমিটি হাসে
সুরেলা বাঁশরি এলোমেলো বাতাসে ভাসে।
সুদূর নীহারিকা চেয়ে দেখে সুপ্ত মশাল জ্বেলে
কাজল কলঙ্কে নিশীথিনী মনের ছবি আঁকায়।
শিশির বিছানো আঁচলে হেমন্ত গায় নিশি রাগিণী
নিঝুম স্বপনে মগ্ন মোহনীয় মধু যামিনী।
তিমির কুহেলিকা বসে থাকে বসন্তের পথ চেয়ে
নীরবে কে যেন মনে সুর ঝড়িয়ে শিহরণ জাগায়।।
loading...
বিশেষ কৃতজ্ঞতা খালিদ উমর দা।
loading...
জোছনা করেছে আড়ি- আসেনা আমার বাড়ি, এই নজরুলগীতিটা মনে পড়লো দিদিভাই আপনার লেখা পড়ে
আপনার লেখা সবসময়েই গোছানো সুন্দর পরিপাটি
loading...
ধন্যবাদ জাহিদ দা।
loading...
অন্ধকারে হারাবেন না…
loading...
নিশ্চয়ই না কবি দা।
loading...
রাত হলেই ঘুমেরা লুকোচুরি খেলছে আমার সাথে। আমিও আর তাদের খুঁজতে যাচ্ছি না। তারা তাদের মতো থাকছে, আমি আমার মতো।
* বাহ! কী অসাধারণ বাণীচিত্র। মুগ্ধতা না রেখে পারি…
loading...
ধন্যবাদ কবি দা।
loading...