২৫ তারিখ রাতে ঢাকা থেকে ““খাগড়াছড়ির পথে…”” রওনা হয়ে ২৬ তারিখ সকালে পৌছাই খাগড়াছড়িতে। দুপুরের খাওয়া দাওয়া সেরে রেস্ট নিয়ে আমাদের “খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – শুরু” হয় “আলুটিলা গুহা” দিয়ে। আলুটিলা গুহা দেখে আমরা চলে যাই “রিছাং ঝর্ণা“ দেখতে। ঝর্ণা দেখা শেষে আমরা যাই প্রাচীন শতবর্ষী বটবৃক্ষ দেখতে। বিশাল বটবৃক্ষতলে কিছুটা সময় কাটিয়ে আমরা রওনা হয়ে যাই “ঝুলন্ত সেতু” দেখতে।
শতবর্ষী বটবৃক্ষের ছায়াতল হতে বিদায় নিয়ে আমাদের এবারের গন্তব্য খাগড়াছড়ি শহরের কাছেই “হর্টি কালচার পার্ক” এর ঝুলন্ত সেতু। বিকেল গড়িয়ে যাচ্ছে খুব দ্রুত, সূর্যি মামা পাটে বসবেন কিচ্ছুক্ষণ পরেই। হাতে সময় খুব অল্প। সন্ধ্যার আগে আগে এসে পৌঁছই পার্কের কাছে। রাস্তা থেকে কিছুটা কাঁচা মাটির পথ ধরে হেঁটে যেতে হয় পার্কের গেইট পর্যন্ত, ঢুকতে হয় টিকেট কেটে। আমরা যখন ভেতরে ঢুকছি তখন সেখান থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে সামান্য যে ক’জন বেড়াতে গিয়েছিলো (জোড়ায় জোড়ায়) তাঁরাও।
গেট পেরিয়েই সামনে উঁচু টিলা কেটে তৈরি ইট বিছান রাস্তা, রাস্তার দুই ধারে সারি সারি গাছ। একটু সামনেই চমৎকার বাগান। এখান থেকে দূরে তাকালে দেখা যায় ঢেউ খেলান পাহাড় সারি।
বাগান পেরিয়ে কিছুদূর গিয়ে শেষ হয়ে গেছে টিলাটি, আর এই টিলা থেকে সামনের আরেকটি টিলা পর্যন্ত সুন্দর একটি সেতু, ঝুলন্ত সেতু।
ঝুলন্ত সেতুতে দস্যু পত্নী ও কন্যা
সেতুর নিচে জলাধার, তার চারপাশে প্রচুর নারকেল গাছ, সুন্দর করে সাজানো। টিলা থেকে টিলার গা কেটে কেটে তৈরি করা হয়েছে নিচে নামার সিঁড়ি।
শীতকাল বলে জলাধারে পানি কম, বর্ষায় নিশ্চয়ই আর পানি বাড়ে, তখন দেখতে নিশ্চয়ই আর সুন্দর হবে।
ঝুলন্ত সেতু পেরিয়ে উল্টোদিকের অংশে গেলে সেখানে আছে বাচ্চাদের খেলার যায়গা। রয়েছে দোলনা, স্লিপার।
অলরেডি সন্ধ্যে ঘনিয়ে এসেছে, পাহাড়ের আড়ালে মুখ লুকিয়েছে সূর্য, পাহাড়ি আঁধার তার অন্ধকার চাদর মেলে ধরতে শুরু করেছে।
সারাদিনে ভ্রমণ শেষে এবার হোটেলে ফিরে রেস্ট নেয়ার পালা……
পরিশিষ্ট:
হোটেলে ফিরে ফ্রেস হয়ে রেস্ট নিয়ে আমরা প্রস্তুত হই রাতের খাবারের খোঁজে। এখানেই কে যেন বলেছিল সিস্টেম হোটেলের (রেস্টুরেন্ট) কথা। ভাবলাম সেখানেই যাব খেতে। গিয়ে দেখি এটি একটি পাহাড়ি রেস্টুরেন্ট, চমৎকার করে সাজানো, সুন্দর পরিবেশ। খাবারের মানও ভালো। ওদের কাছে হরিণের মাংস থেকে শুরু করে ঘুঘুর মাংস, চিংড়ি থেকে শুরু করে বড় মাছের কাঠি কাবাব, সবই পাওয়া যায়, তবে প্রতি দিন না। একেক দিন একেক ধরনের রেসিপি হয়। আগামীকাল হবে হরিণ, কিন্তু আমরা থাকব না তখন খাগড়াছড়িতে।
এই ছবিটি মাসুদ ভাই (অচেনা কেউ) এর একটি পোস্ট থেকে নেয়া।
পথের হদিস : ঢাকা টু খাগড়াছড়ি বাস ভাড়া ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা নন এসি।
ভ্রমণ : আলুটিলা গুহা > রিছং ঝর্ণা > শতবর্ষী বটগাছ > ঝুলন্ত সেতু, এগুলি ঘুরিয়ে দেখিয়ে আনবে চাঁন্দের গাড়ী ৩,০০০ – ৩,৫০০ টাকা, আর মাহেন্দার ১,৫০০ – ১,৮০০ টাকা।
থাকা : হোটেল ভাড়া ৪০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্য।
loading...
loading...
পরিবার এবং শিশুদের নিয়ে বেড়ানোর অসাধারণ জায়গা। শুভেচ্ছা প্রিয় দস্যু ভাই।
loading...
ঠিক কথা। বিকেলটা অনায়েসেই এখানে কাটিয়ে দেয়া যায় আনন্দে।
loading...
ভালো লাগে আপনার ভ্রমণ খুঁটিনাটি। অভিনন্দন মরুভূমি ভাই। বলতে ইচ্ছে করে বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ।
loading...
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
নিজেদের কিছু মিল-অমিল নিয়েই আমাদের ভাললাগা ভালবাসা একে অপরের প্রতি। এভাবেই আমরা, আমরাই।
loading...
আমিও যেন এনজয় করলাম ছবি দা। দারুণ।
loading...
আমারও ইচ্ছে ছবির মধ্য দিয়ে প্রায় সবটাই দেখিয়ে দেয়ার।
loading...
প্রিয় দস্যু ভাই,
ভাগ্যিস খাগড়াছড়ির চমৎকার প্রকৃতি থেকে দস্যুতা করে ফটোগুলো নিয়েছিলেন ! দেখে খুব ভালো লাগলো । আপনার ভ্রমণ বর্ণনা আর ফটোগুলো দেখে অনেক অনেক বছর আগে আমার খাগড়াছড়ি যাবার অনেক কথা মনে পড়লো । আলোটিলাতেও সেবার গিয়েছিল । আমরা মাটিরাংগাতে পাহাড়ের ওপর ছিলাম একরাতে । শেষ রাতের দিকে ঘূর্ণি ঝরে আমাদের টিনের ঘরের চাল উড়ে গিয়েছিলো । ভোরের প্রথম আলোতে কম্বল গায়ে দিয়ে পাহাড়ের ওপর থেকে হাজার ফিট নিচে ঝরে পড়া ঝুম ঝম বৃষিট আজ এতো বছর পরেও আমার জীবনের সেরা একটা দৃশ্য বলে মনে হয় । দস্যু কন্যার গাল টিপে আদর করে দেওয়া যাবে আমার হয়ে ?
loading...
ভ্রমণ স্মৃতি নিয়ে কথা বলা হচ্ছে, অতি প্রিয় আনন্দ দায়ক কাজ গুলির একটা। ঠিক বললাম তো?
loading...