শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজা ও আমাদের কামনা-বাসনা

images-3

শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উৎসব। এটিকে আবার বিদ্যাদেবী ও বসন্তপঞ্চমী পূজাও বলা হয়ে থাকে। প্রতিবছর বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে পালিত হয় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা। কিন্তু এবার সরস্বতী পূজা মাঘমাস পেরিয়ে ফাল্গুনী ঋতুরাজ বসন্তের বসন্তপঞ্চমীতে হচ্ছে।

এর কারণ হলো এ-বছর বাংলা আশ্বিন মাস ‘মলমাস’ ছিলো। হিন্দু শাস্ত্রমতে মলমাসে কোনো দেব-দেবীর পূজার্চনা হয় না। যে-কারণে এবার দুর্গাপূজাও কিন্তু গতবারের চেয়ে অন্তত ২০-২৫ দিন পরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আর শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল, ৩০ জানুয়ারি ২০২০, রোজ বৃহস্পতিবার (১৭ মাঘ ১৪২৬ বাংলা)। ওই কারণেই এবার সরস্বতী পূজাও মাঘ পেরিয়ে ঋতুরাজ বসন্তের শুরুতেই হচ্ছে। এমনিতেই সরস্বতী পূজার এই বিশেষ দিনটি বসন্ত পঞ্চমী ছাড়াও শ্রী পঞ্চমী এবং সরস্বতী পঞ্চমী নামেও সুপরিচিত। হিন্দু পুরাণ অনুসারে সরস্বতী হলো জ্ঞান, বিদ্যা, সঙ্গীত ও শিল্পকলার অধিষ্ঠাত্রী দেবী।

প্রতিবছরের মতো এবারও নারায়ণগঞ্জ-সহ সারাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিদ্যাদেবী শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজা। এই বছর ১৬ ফেব্র‌ুয়ারি পালিত হবে সরস্বতী পূজা। সরস্বতী পূজার সময় পড়েছে ১৬ ফেব্র‌ুয়ারি সকাল ৬টা ৫৯ মিনিট থেকে শুরু হয়ে বেলা ১২টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত। পূজার সময় হাতে থাকবে মোট ৫ ঘণ্টা ৩৭ মিনিট। এই সময়ের মধ্যেই বিদ্যাদেবী শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজার কাজ সম্পন্ন করতে হবে।

কথায় আছে, “হিন্দুদের বারোমেসে তেরো পার্বণ।” এই তেরো পার্বণ বা পূজার মধ্যে শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজা হলো একটি। এটিকে বিদ্যাদেবীর পূজাও বলে থাকে। সরস্বতী পূজা হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বিদ্যা লাভের আশায় সরস্বতী পূজা করে থাকে। দেবীর এক হাতে বীণা থাকার কারণে, এটিকে সংগীত দেবী বা বীণাপাণিও বলে থাকে। শাস্ত্রমতে সরস্বতী শব্দটির অর্থ, ‘সতত রসে সমৃদ্ধা’। তিনি শুক্লবর্ণা, শুভ্র হংস বাহনা। ‘বীণা-রঞ্জিত পুস্তক হস্তে।’ অর্থাৎ এক হাতে বীণা ও অন্য হাতে পুস্তক।

সেগুলোর রহস্য তথা যথার্থ তাৎপর্য হৃদয়ে ধারণ করেই, সরস্বতী দেবীকে পূজা করা হয়। নয়তো পূজার্চনা যতই হোক না কেন, তা অর্থহীন হয়েই থেকে যায়। শিক্ষার্থীরা বিদ্যাদেবী সরস্বতীর পূজা বেশি করে থেকে এবং প্রায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই সরস্বতী দেবীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই সরস্বতী পূজার দিনেই অনেক হিন্দু ধর্মাবলম্বী পরিবারের শিশুদের হাতেখড়ি দেওয়া হয়। এই নিয়মটি প্রাচীন আমলেও ছিল, এখনো কিছু কিছু অঞ্চলে এই নিয়ম আছে বলে মনে করা হয়।

তবে সরস্বতী পূজা শুধু শিক্ষার্থী আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই সীমাবদ্ধ থাকে না। এই সরস্বতী দেবী বা বিদ্যাদেবীর পূজা, প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি মহল্লায়, প্রতিটি শহরের আনাচে-কানাচেই হয়ে থাকে। কারণ, সরস্বতী দেবী বা বিদ্যাদেবী হলেন, জ্ঞানদায়িনী দেবী সরস্বতী। তিনি বিদ্যা জ্ঞান দানকারী দেবী। তিনি মর্তলোকে সকলকে বিদ্যা আর জ্ঞান দান করেন। তাই মানুষ বিদ্বান আর জ্ঞান লাভের আশায় সরস্বতী দেবী বা বিদ্যাদেবীর পূজা করে থাকেন। মানুষ কালেকালে, যুগেযুগেই জ্ঞান পিপাসু। মানুষ জ্ঞানের সন্ধানে সর্বদাই ব্যস্ত থাকে। জ্ঞান লাভের জন্য মানুষ পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে, এরেক প্রান্তে ঘুরে বেড়ায়। তারজন্য হওয়া চাই শ্রদ্ধাবান, নিষ্ঠাবান ও সৎ চরিত্রের অধিকারী।

শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় বর্ণিত আছে, ‘শ্রদ্ধাবান লভতে জ্ঞানং তৎপরঃ সংযতেন্দ্রিয়’। (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা-৪/৩৯)।

অর্থাৎ শ্রদ্ধাবান ব্যক্তিই জ্ঞান লাভ করে থাকেন। শ্রদ্ধা ছাড়া ভক্তি, জ্ঞান, শিক্ষা সবই মিছে।

যার জ্ঞান নেই, তার ভক্তি-শ্রদ্ধাও নেই। তাই শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তোলার জন্য পারিবারিক শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি মানুষের জন্মের পর থেকেই শুরু হয় শিক্ষা-দীক্ষার কলাকৌশল। সেজন্য ছোটবেলা থেকেই পিতামাতা সহ বড় ভাই-বোনরা ছোটদের ধর্মীয় আচার-আচরণের শিক্ষা দিয়ে থাকে। আর এই কলাকৌশলগুলো পরিবারের বড়দের কাছ থেকেই প্রতিটি শিশু শিখে থাকে। তা সে যেই ধর্মের অনুসারীই হোক। তাই প্রতিদিন সকালবেলা দেখা যায়, ছোটছোট ছেলে-মেয়েরা ধর্মীয় বই নিয়ে চলে যায় মক্তবে। কেউ যায় মন্দিরে। কেউ যায় গির্জায়। কেউ আবার চলে যায় বৌদ্ধ মন্দিরে। কেউ চলে যায় স্কুলে বা পাঠশালায়। এই চলা শুধু ধর্মীয় শিক্ষা আর জ্ঞান অর্জনের জন্যই ছুটে চলা।

হিন্দু ধর্মের ছোটদের ধর্মীয় শিক্ষা লাভের পাশা-পাশি সু-শিক্ষায় শিক্ষিত হবার জন্যই শ্রীশ্রী সরস্বতী দেবীর পূজা। পূজার আগের দিন সংযম পালন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম একটি শিক্ষা। তা কিন্তু এই ডিজিটাল যুগে অনেকেই মেনে চলে না। আর বড়রাও এ বিষয়ে শিশুদের শেখায় না। শত ব্যস্ততার মাঝে ধর্মীয় আচার-আচরণ, নিয়ম-কানুন শেখানোর সময়ও পান না। সবাই নিজেদের সুখ-শান্তি লাভের আশায়ই সদা ব্যস্ত থাকে। এটা খুবই দুখের বিষয়।

ছোটবেলা দেখতাম, মা এবং বড়দি’রা সরস্বতী পূজার তিন-চারদিন আগে থেকেই বলতো, ‘অমুক তারিখে সরস্বতী পূজা। পূজার আগের দিন রাতে খাবে, পরদিন পূজায় অঞ্জলি দেওয়ার আগ পর্যন্ত কিছুই খেতে পারবে না।’
বড়দি’রা পূজার দিন ভোরবেলা কলাপাতা, তালপাতা, আর বাঁশের কঞ্চির কলম বানিয়ে রাখতো। সাথে তুলে রাখতো ফুল, তুলসী পাতা, দুর্বা। তৈরি করে রাখতে শ্বেত চন্দন বাটা। সরস্বতী পূজার একটি বিশেষ অর্য্য হল পলাশ ফুল। দেবীর অঞ্জলির জন্য এটি একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। পুরো গ্রামে ঘুরে ঘুরে এই ফুলটিও সংগ্রহ করে রাখতো। কালির দোয়াতে ভরে রাখতো গঙ্গাজল মিশ্রিত দুধ। দুধ মানে, লেখবার কালি। লিখে দিবেন পূজা মণ্ডপের পুরোহিত। পূজামণ্ডপে সরস্বতী দেবীর চরণতলে দিয়ে রাখতেন পড়বার বই। গ্রামের সব শিক্ষার্থীদের কারিকারি বইয়ে ছেয়ে যেত সরস্বতী দেবীর পূজামণ্ডপ। সেই বইগুলোতে পুরোহিত ফুলচন্দন দুর্বা ছিটিয়ে দিতেন। এটাই হলো শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যাদেবী বা সরস্বতী দেবীর আশীর্বাদ। অঞ্জলির সেই ফুল দুর্বা আর তুলসীপাতা বইয়ের ভেতরে রেখে দিতো। তা একবছর পর্যন্ত প্রতিটি পাঠ্যবইয়ের ভেতরেই থাকতো। পূজায় অঞ্জলি অর্পণের আগপর্যন্ত ছেলে-বুড়ো সবাইকে উপবাসই থাকতে হতো।

এখন আর সেসব নিয়ম, আচার-আচরণ চোখে পড়ে না। অনেকেই সেসব নিয়ম পালন করে না। অনেক শিক্ষার্থী নিয়ম করে সরস্বতী দেবীর পুজায় অঞ্জলিও অর্পণ করে না বা দেয় না। শুধু পূজার দিন দেবী মূর্তি বা প্রতিমার সামনে গিয়ে দু’হাত জোড় করে প্রণাম করে। আর পূজা শেষে সন্ধ্যার পর পূজামণ্ডপে আধুনিক সাজে সজ্জিত হয়ে নৃত্য করে, নাচে। ভক্তি যদি না থাকে নেচে সিদ্ধি লাভ হবে না। বরং পাপের ভাগই বেশি হতে হবে।

তাই বলছি, প্রতিটি শিশুকে বাল্যকাল থেকেই ধর্মীয় আচার-আচরণের শিক্ষা দেয়া প্রয়োজন। সনাতন ধর্মাবলম্বী ছোটদেরকে ধর্মীয় চেতনা দান করার জন্য শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজা অন্যতম একটি ধর্মীয় উৎসব। কেননা, পূজার আগের দিন সংযম পালন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের গভীর শিক্ষা দেয়। শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজায় সংযমের দিন মাছ-মাংস পরিহার, নিরামিষ আহার, আতপ চালের ভাত খাওয়া, আর উপোস থাকতে হয়। খুব সকালবেলা স্নান করে নতুন জামাকাপড় পরিধান করতে হয়। সরস্বতী দেবীর পূজা শুরুতে অঞ্জলি অর্পণের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। পুরোহিত সরস্বতী দেবীর ঢাকা মুখখানি উম্মুক্ত করেন। অঞ্জলি দেওয়ার জন্য সারিবদ্ধভাবে বসতে বলেন। তারপর সবাইকে সরস্বতী দেবী পূজায় পুষ্পাঞ্জলি দিতে হয়। পুষ্পাঞ্জলি অর্পণে হয় আনন্দঘন এক আয়োজন! সবাই সরস্বতী দেবী বা বিদ্যা দেবীর প্রতিমার সামনে লাইন ধরে বসে অঞ্জলি অর্পণ করে। আর এ সময়ই একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী তথা কোমলমতি শিক্ষার্থীও ধর্মীয় চেতনা পেয়ে থাকে।

লক্ষ্য করা যায় আমরা বড়রা ছোটরা সবাই প্রতিমায় ভক্তি নিবেদন করি। কিন্তু প্রতিমা প্রণাম করার মন্ত্রটুকুও আমরা অনেকে জানি না! প্রণাম নিবেদনেও যে কত আধুনিকতা যুক্ত হয়েছে, তা ভাবলে অবাক হতে হয়! কোনোকোনো সময় দেখা যায় জুতা পায়ে রেখেই, প্রতিমা প্রণাম করছে। পূজামণ্ডপের মূল বেদিতেও জুতা পায়ে অনেকেই প্রবেশ করছে। এটা একেবারেই উচিৎ নয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীসহ সবাই যেন পূজার তাৎপর্য ও মূল আচরণে পূজিত হন সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

সে কথা বিবেচনায় রেখে সরস্বতী দেবীর বর্ণনায় লক্ষ্য করা যাক:

শ্রীশ্রী সরস্বতী দেবী শুক্লবর্ণা। শুক্লবর্ণ মানে সাদা রং। সত্ত্বগুণের প্রতীকও হলো সাদা। পবিত্র গীতার চতুর্দশ অধ্যায়ের ৬নং শ্লোকে আছে, ‘তত্র সত্ত্বং নির্মলত্বাৎ’ অর্থাৎ সত্ত্ব, রজঃ ও তমোগুণের মধ্যে সত্ত্বগুণ অতি পবিত্র গুণ, স্বচ্ছতার প্রতীক, নির্মলতার প্রতীক। আবার ওই অধ্যায়েরই ১৭নং শ্লোকে আছে, ‘সত্ত্বাৎ সংজায়তে জ্ঞানং’ অর্থাৎ সত্ত্বগুণে জ্ঞান লাভ হয়। তাই জ্ঞানময়ী সর্বশুক্লা দেবী শ্রীশ্রী সরস্বতী জ্ঞানে গুণান্বিত বলে তার গায়ের রং শুক্লবর্ণা অর্থাৎ দোষহীনা ও পবিত্রতার মূর্তি। তাই পূজার জন্য দেবী সরস্বতীর মূর্তি শ্বেত বস্ত্র পরিধান করে থাকে। যা পবিত্রতারই নিদর্শন।

আর জ্ঞানদান করেন বলে তিনি জ্ঞানদায়িনী। ‘নহি জ্ঞানেন সদৃশং পবিত্রমিহ বিদ্যতে’ (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা-৪/৩৯)

অর্থাৎ ‘জ্ঞানের মতো পবিত্র আর কিছু নেই’। আমরাও যেন সে গুণের অধিকারী হতে পারি এ আমাদের প্রার্থনা।

হংসঃ জ্ঞানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর বাহন শ্বেতহংস। হাঁস অসারকে ফেলে সার গ্রহণ করে। দুধ ও জল মিশ্রণ করে দিলে হাঁস জল ফেলে শুধু দুধটুকু গ্রহণ করে নেয়। কিংবা কাদায় মিশ্রিত স্থান থেকেও তার খাদ্য খুঁজে নিতে পারে। মায়ের সঙ্গে পূজিত হয়ে আমাদের শিক্ষা দিচ্ছে- সবাই যেন সবার অসার বা ভেজাল/অকল্যাণকর পরিহার করে সার বা ভালো কিছু অর্থাৎ নিত্য পরমাত্মাকে গ্রহণ করেন এবং পারমার্থিক জ্ঞান অর্জন করে সুন্দর পথে চলতে পারি।

সরস্বতী দেবীর এক হাতে বীণা। জীবন ছন্দময়। বীণার ঝংকারে উঠে আসে ধ্বনি বা নাদ। বিদ্যাদেবী সরস্বতীর ভক্তরা সাধনার দ্বারা সিদ্ধি লাভ করলে বীণার ধ্বনি শুনতে পান। বীণার সুর মধুর। পূজার্থী বা বিদ্যার্থী বা শিক্ষার্থীর মুখ নিঃসৃত বাক্যও যেন মধুর হয় এবং জীবনও মধুর সংগীতময় হয় এ কারণেই মায়ের হাতে বীণা। হাতে বীণা ধারণ করেছেন বলেই, তার অপর নাম বীণাপাণি।

সরস্বতী দেবীর একের হাতে পুস্তক। বিদ্যার্থীর লক্ষ্য জ্ঞান অর্জন। আর সে জ্ঞান ও বিদ্যা অর্জনের জন্য জ্ঞানের ভাণ্ডার ‘বেদ’ তার হাতে রয়েছে। ‘বেদই বিদ্যা’। তিনি আমাদের আশীর্বাদ করছেন- ‘জীবনকে শুভ্র ও পবিত্র রাখ। সত্যকে আঁকড়ে রাখ। মূল গ্রন্থের বাণী পালন কর। জীবন ছন্দময় কর। স্বচ্ছন্দে থাক।’

উল্লেখ্য, প্রতিটি দেব-দেবীর প্রণাম-মন্ত্র ও পুষ্পাঞ্জলি প্রদান মন্ত্র আমাদের সবার জানা উচিত। আর তাই নিম্নোক্ত মন্ত্রগুলি বিদ্যার্থী, শিক্ষার্থী সহ সবাইর অবশ্যই জানা থাকা দরকার।

পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র (৩ বার পাঠসহ)

ওঁ জয় জয় দেবী চরাচর সারে, কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে।
বীনারঞ্জিত পুস্তক হস্তে, ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্তুতে।।
নমঃভদ্রকাল্যৈ নমো নিত্যং সরস্বত্যৈ নমো নমঃ।
বেদ-বেদাঙ্গ-বেদান্ত-বিদ্যা-স্থানেভ্য এব চ।।
এস স-চন্দন পুষ্পবিল্ব পত্রাঞ্জলি সরস্বতৈ নমঃ।।

প্রণাম মন্ত্রঃ
নমো সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে।
বিশ্বরূপে বিশালাক্ষ্মী বিদ্যাংদেহি নমোহস্তুতে।।
জয় জয় দেবী চরাচর সারে, কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে।
বীনারঞ্জিত পুস্তক হস্তে, ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্তুতে।।

সরস্বতীর স্তবঃ
শ্বেতপদ্মাসনা দেবী শ্বেত পুষ্পোপশোভিতা।
শ্বেতাম্ভরধরা নিত্যা শ্বেতাগন্ধানুলেপনা।।
শ্বেতাক্ষসূত্রহস্তা চ শ্বেতচন্দনচর্চ্চিতা।
শ্বেতবীণাধরা শুভ্রা শ্বেতালঙ্কারব‌ভূষিতা
বন্দিতা সিদ্ধগন্ধর্ব্বৈর্চ্চিতা দেবদানবৈঃ।
পূঝিতা মুনিভি: সর্ব্বৈঋষিভিঃ স্তূয়তে সদা।।
স্তোত্রেণানেন তাং দেবীং জগদ্ধাত্রীং সরস্বতীম্।
যে স্মরতি ত্রিসন্ধ্যায়ং সর্ব্বাং বিদ্যাং লভন্তি তে।।

জ্ঞানদায়িনী সরস্বতী মায়ের পূজাতে ফাঁকি না দিয়ে, আমরা যেন সবাই সঠিকভাবে তার পূজা করি। তার পূজার শিক্ষায় আমরা সর্বদা সবাই শুদ্ধ জ্ঞানচর্চায় যেন রত থাকি।

পরিশেষে প্রার্থনা করি-
ওঁ অসতো মা সদ্গময়
তমসো মা জ্যোতির্গময়
মৃত্যুর্মা অমৃতংগময়
আবিরাবির্ম এধি।
অর্থাৎ- হে ঈশ্বর, আমাকে অসৎ থেকে সৎ লোকে, অন্ধকার থেকে আলোতে এবং মৃত্যু থেকে অমৃতে নিয়ে যাও। সবাইকে আলোর পথ দেখাও।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৪ টি মন্তব্য (লেখকের ২টি) | ২ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ১৫-০২-২০২১ | ২১:২২ |

    হে ঈশ্বর, আমাকে অসৎ থেকে সৎ লোকে, অন্ধকার থেকে আলোতে এবং মৃত্যু থেকে অমৃতে নিয়ে যাও। সবাইকে আলোর পথ দেখাও। ___ শুভেচ্ছা প্রিয় কবি। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

    GD Star Rating
    loading...
    • নিতাই বাবু : ১৬-০২-২০২১ | ১৮:২৯ |

      প্রত্যেকটি মানুষের প্রার্থনা এমনই হোক, এই কামনা করি। 

      শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজার শুভেচ্ছা জানবেন। 

      GD Star Rating
      loading...
  2. ফয়জুল মহী : ১৬-০২-২০২১ | ০:৪২ |

    সরস্বতী দেবীর একের হাতে পুস্তক। বিদ্যার্থীর লক্ষ্য জ্ঞান অর্জন। আর সে জ্ঞান ও বিদ্যা অর্জনের জন্য জ্ঞানের ভাণ্ডার ‘বেদ’ তার হাতে রয়েছে। ‘বেদই বিদ্যা’। তিনি আমাদের আশীর্বাদ করছেন- ‘জীবনকে শুভ্র ও পবিত্র রাখ। সত্যকে আঁকড়ে রাখ। মূল গ্রন্থের বাণী পালন কর। জীবন ছন্দময় কর। স্বচ্ছন্দে থাক।’

    GD Star Rating
    loading...
    • নিতাই বাবু : ১৬-০২-২০২১ | ১৮:৩০ |

      অসাধারণ মন্তব্য! শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজার শুভেচ্ছা জানবেন, দাদা। 

      GD Star Rating
      loading...