একসময় যখন এদেশে মোবাইল ফোনের আগমণ ঘটে, আমি তখন টেক্সটাইল মিলে কাজ করি। মিলটা ছিলো গোদনাইল পানির কল এলাকায়। মিলের নাম গাজী টেক্সটাইল মিলস্। মিল মালিকের নাম ছিলো, সামছুল হক গাজী। উনাকে এলাকার সবাই গাজী সাহেব বলে ডাকতো। সময়টা তখন ২০০৬ সাল। তবে এর আগে থেকেই মনে হয় এদেশে মোবাইল ফোন এসেছিল। কিন্তু আমার দেখা ২০০৬ সালে গাজী টেক্সটাইল মিলের মালিক গাজী সাহেবের হতে। তাই আমি এদেশে মোবাইল ফোনের আগমণ ২০০৬ সালই উল্লেখ করেছি।
সে-সময় মিলের মালিক ঢাকা থেকে একটা নতুন মোবাইল ফোন কিনে আনে। মোবাইলটা প্রায় এক মুঠুম হাত লম্বা ছিল। মোবাইলটার কালার ছিলো কালো। উনি সময় সময় বাসা থেকে বের হয়ে মিলের গেইটের সামনে এসে মোবাইল ফোনটা কানে চেপে ধরে কথা বলতো। ঘরের বাইরে এসে কথা বলার কারণও ছিলো! কারণ হলো, তখনকার সময়ে নেটওয়ার্ক সমস্যা বেশি ছিলো। যদিও উনার মোবাইলের সিমকার্ড গ্রামীণ ফোন ছিলো, তবুও তখন ঘরের ভেতরে বসে নেটওয়ার্ক পাওয়া যেতো না। তাই তিনি মোবাইল ফোন কানে চেপে ঘরের বাইরে এসে বকবক করতো। আর মিলেই সব শ্রমিকরা হা করে তাকিয়ে থাকতো! অবাক হয়ে দেখতো! কান পেতে উনার কথা শুনতো। সবার সাথে আমিও মিল মালিকের সামনে গিয়ে উঁকি মেরে দেখতাম। আর ভাবতাম! মনে মনে আক্ষেপ করে বলতাম, ‘ঈশ! যদি আমি একটা কিনতে পারতাম!’
আমার মনের সেই আক্ষেপ মনে হয় মহান সৃষ্টিকর্তা সেসময়ই শুনে ফেলেছিল। তাই মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় মাসেক দুইমাস পর পরিচিত এই দোকান থেকে ২০০৬ ইংরেজি সালেই Nokia-1110 মডেলের একটা মোবাইল কিনতে সক্ষম হই। তাও অর্ধেক নগদ, অর্ধেক বাকিতে। সেইসাথে একটা বাংলালিংক সিমকার্ডও কিনলাম। মোট দাম হলো, ৩,৬০০+৫০০= ৪,১০০/=টাকা। দোকানদারকে নগদ দিলাম ২,০০০/=টাকা। আর বাদবাকি টাকা মাস শেষে বেতন পেলে পরিশোধ করবো বলে কথা দিলাম। এরপর থেকে শুরু করলাম, নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকা অপরের সাথে কথা বলা এবং মেসেজের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিকে বার্তা পাঠানো। পরের মাসে মিলে বেতন পেয়ে মোবাইলের বাকি টাকা পরিশোধ করলাম।
ওই মোবাইলটা বেশকিছু দিন ব্যাবহার করার পর আর ভালো লাগছিলো না। কারণ, Nokia-1110 মডেল মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যেতো না, তাই। তারপর ২০০৭ ইংরেজি সালে Nokia N-73 মডেলের পুরাতন একটা মোবাইল কিনলাম। সেই মোবাইল দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে থাকি, মনের আনন্দে! কিন্তু তখনকার সময়ে মোবাইল ইন্টারনেট ছিলো স্লো-মোশনে। মানে ধীরগতিসম্পন্ন 2G স্প্রিরিট। মানে, “গাড়ি চলে না চলে না, চলে না রে– গাড়ি চলে না” এমন অবস্থা!
সে-সময়ে নেটওয়ার্ক ভিত্তিক ইন্টারনেটের সুবিধা ছিল GPRS সার্ভিস। GPRS এর পূর্ণরূপ হলো, General Packet Radio Service. সে-সময় নোকিয়া বাটন মোবাইলের সেটিং থেকে কনফিগারেশন সেটিং করে ইন্টারনেট ব্যবহার করা হতো। নিজেও সে-ভাবেই সেটিং করে ইন্টারনেট ব্যহার করতাম। অনেক সময় নিজে নিজে কনফিগারেশন সেটিং করেও ইন্টারনেট সংযোগ পেতাম না, তখন সরাসরি ব্যবহার করা নেটওয়ার্ক কোম্পানির হেল্পলাইন 121- এ কল করে কনফিগারেশন সেটিং পাঠাতে বলতাম। তখন তাঁরা অটোমেটিক কনফিগারেশন সেটিং পাঠালে, তা মোবাইলে সেভ করে নিতাম। এরপর বুকেরপাটা টান করে অনলাইনে থাকা বিভিন্ন সাইটে প্রবেশ করতাম। এটাই ছিলো আমার তখনকার সময়ে নিয়মিত অভ্যাস।
কিন্তু দীর্ঘদিন Nokia-N-73 ব্যবহার করার পর মোবাইলটি আর ভালো লাগছিল না। ভালো না লাগার করণ ছিলো শুধু একটাই। তাহলে Nokia N-73 মডেল মোবাইলে বাংলা লেখা যেতো না। আবার মোবাইল স্ক্রিনেও বাংলা লেখা প্রদর্শিত হতো না। এটাই ছিল ভালো না লাগার কারণ!
এরপর ২০১১ সালে আমার একমাত্র ছেলে খুব শখ করে Nokia c-3 একটা মোবাইল কিনে। তখনকার সময়ে Nokia মোবাইলের ছিলো, মোবাইল জগতে সেরা মোবাইল। মানে Nokia’র জয়জয়কার সময়। তারপর আবার নতুন মডেল Nokia c-3। সেই মোবাইলটা আমার ছেলে বেশিদিন ব্যাবহার করে যেতে পারেনি। বিধাতার ডাকে সাড়া দিয়ে ছেলেটা ২০১১ সালের ২০ জুলাই পরপারে চলে যায়। রেখে যায়, ওর শখের Nokia c-3 মোবাইলটি।
ছেলের রেখে যাওয়া মোবাইলটা আমি বেশকিছু দিন ঘরে রেখে দিয়েছিলাম। একদিন দেখি মোবাইলের ব্যাটারি ফুলে গেছে। তখন মোবাইলটা মেকারের কাছে নিয়ে গেলাম। মোবাইল মেকার বললো, ‘এতো দামী মোবাইল ব্যবহার না করে ঘরে ফেলে রাখলে একসময় মোবাইলটাও নষ্ট হয়ে যাবে।’ মোবাইল মেকারের কথা শুনে নতুন ব্যাটারি সংগ্রহ করে আমি নিজেই ব্যাবহার করতে থাকলাম। যাতে ছেলের রেখে যাওয়া মোবাইলটা সবসময় ভালো থাকে। (তা এখনো ভালো আছে।)
এরপর থেকে Nokia C-3 মোবাইল দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করা শুরু করি। কিন্তু Nokia c-3 মোবাইলেও বাংলা লেখা যেতো না। মনের আক্ষেপ আর আফসোস শুধু মনেই থেকেই যেতো। তারপরও বিশ্ববিখ্যাত সার্চ ইঞ্জিন গুগলে সার্চ করা ছিল আমার প্রতিদিনের রুটিন মাফিক কাজ। সে-সব কাজের মধ্যে ছিল বিভিন্ন ব্লগে উঁকি মারা। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া-সহ আরও অনেককিছু। তবে বেশকিছু অনলাইনভিত্তিক দিনলিপি বা ব্লগে সময়টা বেশি ব্যয় করতাম। বিভিন্ন ব্লগ সাইটে ব্লগারদের লেখাগুলো পড়তে খুবই ভালো লাগতো। এই ভালো লাগা থেকে নিজেরও লিখতে ইচ্ছে করতো। কিন্তু সমস্যা ছিলো, একমাত্র মোবাইল।
তারপরও একসময় Nokia c-3 মোবাইল দিয়ে অনলাইনে থাকা একটা ব্লগে রেজিস্ট্রেশন করে ফেললাম। কিন্তু Nokia C-3 মোবাইলে তো বাংলা লেখা যায় না! তবুও খামোখেয়ালিভাবে কোনরকম ইংরেজি বর্ণ দিয়ে স্বল্পসংখ্যক শব্দের একটা লেখা জমা দিলাম। ব্লগে লেখা জমা দিয়ে বেশকিছুদিন আর ব্লগে লগইন করিনি, লজ্জায়! লজ্জার কারণ হলো, আমার লেখা পড়ে ব্লগের সবাই যদি হাসাহাসি করে, তাই। সেই লজ্জা মনে রেখেই বেশকিছু দিনের জন্য ব্লগ থেকে লাপাত্তা ছিলাম।
এর কয়েক মাস পর অনেক কষ্ট করে মনের স্বাদ মেটানোর জন্য Symphony W-82 মডেল-এর একটা নতুন মোবাইল কিনলাম। মোবাইলটা কিনেই, সেইদিনই ঐ ব্লগে লগইন করলাম। উদ্দেশ্য হলো, আমার জমা দেওয়া লেখাটার অবস্থা দেখা। লগইন করে দেখি সম্মানিত ব্লগ মডারেটর লেখার শিরোনাম বাংলায় লেখার জন্য বলছে। Symphony W-82 এন্ড্রোয়েড মোবাইলে বাংলা লেখা যেতো। তারপরও গুগল প্লে স্টোর থেকে একটা বাংলা Keyboard অ্যাপ ডাউনলোড করে লেখার শিরোনাম লিখলাম, “আমিও মানুষ”। লেখার শিরোনাম বাংলায় লিখে, ব্লগে জমা দিয়ে আবার কিছুদিনের জন্য ব্লগ থেকে গা-ঢাকা দিলাম। গা-ঢাকা দেওয়ার প্রায় কয়েকমাস পর আবার ব্লগে লগইন করলাম। লগইন করে দেখি আমার লেখা প্রকাশ হয়েছে। লেখার নিচে মন্তব্যের বক্সে কয়েকজন সম্মানিত লেখক মূল্যবান মন্তব্যও করেছে। সেসব মন্তব্যের উত্তর দিতে গেয়েই, আজ অবধি ব্লগ আর ব্লগিংয়ের মাঝেই আটকা পড়ে আছি। ব্লগে লিখছি, পড়ছি, দেখেও যাচ্ছি।
এরপর থেকে অনেক সম্মানিত লেখক/লেখিকাদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও গড়েছি। অনেক লেখক/কবিদের বাড়িতে গিয়েছি। সেই থেকে এপর্যন্ত ব্লগ, ব্লগিং এবং ব্লগের পোস্টের মন্তব্য বিষয়ে সামান্যতম ধ্যানধারণাও মোটামুটি অর্জন করতে পেরেছি। একসময় ঐ ব্লগের সবার মন জয় করে একটা সম্মাননাও পেয়েছি। তা থাকুক ছোট সম্মাননা, হোক বড় কোনও সম্মাননা। কিন্তু সম্মাননা পেয়েছি। পেয়েছি ব্লগে নিয়মিত লেখালেখি করে। আর নিয়মিত সবার পোস্টে মন্তব্যের বিনিময়ে। আর আমাদের নারায়ণগঞ্জ শহরবাসীর সমস্যা নিয়ে লেখার কারণে।
যাক সে কথা, আসল কথায় আসা যাক! আসল কথা হলো, স্বনামধন্য শব্দনীড় ব্লগের ব্লগারদের উদ্দেশ্যে কিছু বলা।
প্রিয় সম্মানিত শব্দনীড় ব্লগের ব্লগারবৃন্দ, একটু লক্ষ্য করুন! আপনারা যারা আমার আগে থেকে এই শব্দনীড় ব্লগে লিখেন, তাঁরা অবশ্যই ব্লগ বিষয়ে আমার চেয়ে ভালোই জানেন। তা আর নতুন করে নতুন কিছু উপস্থাপন করার কোনও দরকার আছে বলে আমি মনে করি না। তবে আমরা যারা এই স্বনামধন্য শব্দনীড় ব্লগে লেখালেখি করছি, সবাই জানি যিনি ব্লগে লিখেন; তাকে “ব্লগার” বলে। তবে সহ-ব্লগারগণ একে অপরকে লেখক/লেখিকা/কবি বলেই বেশি সম্বোধন করে থাকে। যা আমি নিজেও করে থাকি। যেহেতু একই প্লাটফর্মে একে অপরের সাথে লেখা শেয়ার করছি, তাই। তারপর পছন্দ অপছন্দের মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেও যাঁর যাঁর মনের ভাব জানান দিচ্ছি।
কেউ আবার কারোর লেখায় কোনও বানান ভুল হলে তাও মন্তব্যের ছোট বক্সে লিখে জানাচ্ছি। লেখা কেমন হয়েছে, তাও অনেকে মন্তব্যের মাঝে জানিয়ে দিচ্ছে। এসব কিন্তু একজন ব্লগারের প্রতি সহ-ব্লগারের দায়িত্ব কর্তব্যের খাতিরেই হচ্ছে। আর ব্লগে খাতির বা সুসম্পর্কটা কিন্তু একে অপরের পোস্টের মন্তব্যের খাতিরেই তৈরি হয়েছে বলে আমি মনে করি। কারণ ব্লগে ব্লগিংয়ের মানেই হচ্ছে, নিজের লেখার পাশাপাশি সহ-ব্লগারদের লেখা বা পোস্ট পড়ে লেখার বিষয়ে গঠনমূলক মন্তব্যের মাধ্যমে আলোচনা করা। সহ-ব্লগারকে আরও সুন্দর করে লেখার উৎসাহ দেওয়া।
এভাবেই আস্তে আস্তে একে অপরের লেখা পড়তে আগ্রহ বাড়ে। লেখা পড়ে লেখার ভালো মন্দ বিস্তারিত আলোচনা মন্তব্যের মাঝে প্রকাশ করে। এতে একজন সহ-ব্লগারের লেখার যেমন পরিবর্তন ঘটে, তেমনি মন্তব্যকারীদের লেখা পড়ে মন্তব্যও করতে আগ্রহ বেড়ে যায়।
আমি মনে করি, যেকোনও ব্লগের ব্লগার অথবা লেখক/লেখিকার লেখায় মন্তব্য হলো একরকম চুম্বকের আকর্ষণের মতন। চুম্বক যেমন লোহাকে কাছে টানে, তেমনিভাবে মন্তব্যকারীকে পোস্টদাতা বা লেখক/লেখিকা ভালোবেসে ফেলে, একমাত্র মন্তব্যের বিনিময়ে। সেই ভালোবাসা দিনে দিনে এতোই গভীরে চলে যায় যে, উদাউট কয়েকটা লেখায় একজন প্রিয় মন্তব্যকারীর মন্তব্য না দেখলে আর ভালো লাগে না। এমনকি ব্লগেও লিখতে মন চায় না। কারণ অনলাইন ভিত্তিক ব্লগ, বা দিনলিপিতে যে যেভাবেই লিখুক-না-কেন, লেখা প্রকাশের পর যদি কেউ লেখার নিচে মন্তব্য না করে, তাহলে ব্লগার বা লেখক/লেখিকাদের লেখাই যেন মাটি হয়ে যায়।
তাই একজন ব্লগার খুব পরিশ্রম করে লিখে লেখা ব্লগে প্রকাশ করে এবং গুটিকয়েক মন্তব্যের আশায় বার বার ব্লগে লগইন করে দৈনিক মন্তব্যের তালিকায় চোখ রাখে। নিজের লেখায় কেউ মন্তব্য করেছে কিনা তা খুব মনোযোগ সহকারে দেখে। যদি একজন সহ ব্লগারদের সুন্দর একটা মন্তব্য দেখে, তাহলে লেখক/লেখিকা বা ব্লগার ব পোস্টদাতার মনটা আনন্দে ভরে উঠে। তারপর নিজের পোস্ট বা লেখায় যিনি মন্তব্য করেছে, তার লেখা পড়ে সেও একটা মন্তব্য জুড়ে দেয়।
এভাবেই তৈরি হয় একজন ব্লগারের প্রতি আরেকজন ব্লগারের ভালোবাসা বা আন্তরিকতা। তারপর একে অপরের সাথে গড়ে উঠে সুন্দর সুসম্পর্ক। এটা আমরা অনেকেই বুঝি! আবার অনেকে বুঝেও সহ-ব্লগারের লেখা বা পোস্ট তো পড়েই না, বরং সহ- ব্লগারের পোষ্ট করা লেখা দুরছাই বলে উপেক্ষা করে মন্তব্যও আর করে না।
এতে কি হয় জানেন? এতে নিজের লেখায়ও কেউ মন্তব্য করতে চায় না, করেও না। আমি মনে করি এটা একরকম হিংসা, কৃপণতা, আর নিজেকে অহংকারী হিসেবে পরিচয় দেওয়া। এতে ক্ষতিটা অহংকারী ব্যাক্তিরই বেশি হচ্ছে বলে আমি মনে করি। কারণ নিজে যেমন অহংকারী হিসেবে নিজেকে খ্যাতিমান মনে করছেন, তেমনই নিজের পোস্টের পাঠক সংখ্যা-সহ মন্তব্যের ছোট বাক্সটাও পড়ে থাকছে খালি।
ব্লগপোস্টের মন্তব্যের বাক্স তো খালি থাকবেই! এর কারণ হলো, শুধু নিজের পোস্টে অন্যের করা মন্তব্যেগুলোর কোনরকম দায়সারা মন্তব্য “ধন্যবাদ, শুভকামনা, সাধুবাদ, ভালো থাকবেন” ইত্যাদি লিখেই সরে যাচ্ছেন। কিন্তু অন্যের পোস্টে একটিবারও চুপি দিয়ে দেখছেন না। আর মন্তব্য তো দূরেরই কথা! কারণ, আপনি একজন অহংকারী ব্লগার বা লেখক/লেখিকা, তাই।
ইদানিং দেখতে পাচ্ছি স্বনামধন্য শব্দনীড় ব্লগে মন্তব্যে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। আজ থেকে কয়েক দিন যাবত লক্ষ্য করছি, যদি কোনও ব্লগারের পোস্টে মন্তব্য করে, সেই মন্তব্যেরও সময়মত জবাব দেওয়া হয় না। অনেকে তো মন্তব্যের জবাব দেয়ই না। তা কি ঠিক?
শব্দনীড় ব্লগের সম্মানিত প্রিয় ব্লগারবৃন্দ,
আমি একজন সময়হীনা। মনে খেটে খাওয়া মানুষ। তাই হাতে অজস্র সময় থাকে না। তারপরও আমি নিজের পোস্টের মন্তব্যের জবাব একটু দেরি করে দিলেও, আপনাদের সকলের পোস্ট পড়ি। পারলে অল্পসংখ্যক শব্দে ছোট একটা মন্তব্যও করে থাকি।
কিন্তু দুঃখের কথা দুঃখের সাথে বলতে হয়, অন্যের পোস্টে করা মন্তব্যগুলোর জবাব বা রিপ্লাইও কেউ যথাশীঘ্র দেয় না। এটা কি ঠিক? এটা কি ব্লগিং করার নিয়ম? এটা কি সহ-ব্লগারদের নীতি?
জেনে রাখুন শব্দনীড় ব্লগের ব্লগারবৃন্দ,
আপনি নিজের পোস্ট ছাড়া সহ-ব্লগারদের পোস্টে যাচ্ছেন না। সহ-ব্লগারদের লেখা পড়ে মন্তব্য করছেন না। এতে কিন্তু আপনার নিজেরই ক্ষতিটা বেশি হচ্ছে। মানে আপনার লেখা বা পোস্ট সহ-ব্লগাররাও পড়বে না, মন্তব্যও করবে না। আমি মনে করি একটা মন্তব্য মানে একরকম দেনা বা ঋণের মতো। এই ঋণ শুধাতে হয়। সহ-ব্লগারদের পোস্ট বা লেখা পড়ে একটা মন্তব্য করে সহ-ব্লগারকে ঋণী করতে হয়। তবেই যার লেখা পড়ে মন্তব্য করে ঋণী করলেন, তিনি আপনার ঋণ পরিশোধে বাধ্য হয়ে আপনার লেখা পড়ে একটা সুন্দর মন্তব্য লিখে সেই ঋণ পরিশোধ করবেই করবে। তাই আমি নিজেই মনে মনে বলে থাকি, ‘কেউ যখন আমার পোস্ট বা লেখা পড়ে মন্তব্য করে না, তাহলে আমি কেন সময় নষ্ট করে অন্যের লেখা পড়ে মন্তব্য করবো?’ এটা অনেকের মতো আমারও ব্যক্তিগত ভাবনা!
পরিশেষে:
শব্দনীড় ব্লগের প্রিয় সম্মানিত ব্লগার/লেখক ও লেখিকাবৃন্দ, আমি আগেও বলেছি, এখনো বলি, ‘আমি এক সময়হীনা অধম ব্যক্তি। নিয়মিত ব্লগে সময় দিতে পারি না। তাই যথাসময়ে আপনাদের মূল্যবান লেখায় বা পোস্টে আমি মন্তব্য করতে পারি না। এজন্য আমি নিজে থেকে আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আপনারা যারা শব্দনীড় ব্লগে নিয়মিত আছেন, তাঁদের আমি ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করবো, সহ-ব্লগারদের লেখা পড়ুন! সুন্দর একটা গঠণমূলক মন্তব্য করুন। মনে রাখবেন, সহ-ব্লগারদের পোস্টে আপনার করা একটা মন্তব্য মানে, আপনার নিজের লেখা বা পোস্টে দশটা মন্তব্য পাওয়া। শব্দনীড় ব্লগের সবাইকে ধন্যবাদ!
ভুল হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। সবার জন্য অফুরন্ত শুভকামনা থাকলো।
loading...
loading...
দাদা অত্যন্ত সম্মানের সাথে আপনার কাছে জানতে চাই আপনি সকাল হতে এই পর্যন্ত কয়টা পোষ্টে মন্তব্য করেছেন। এই ব্লগে একমাত্র মুরুব্বী ছাড়া আর কেউ যথাযথ ভাবে মন্তব্য করে না। এমনকি অনেকে প্রতিউত্তরও দেয় না। আপনিসহ অন্যরা সপ্তাহে দুই তিন দিন ব্লগে আসেন তবে।
loading...
একদম ঠিক বলেছেন, দাদা। আমিতো আমার লেখায় প্রকাশ করেছি যে, আমি এক সময়হীনা ব্যক্তি। সকাল থেকে রাত দশটা পর্যন্ত আমি আমার চাকরি ডিউটিতেই থাকি, দাদা। তারপরও আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন যে, আমি প্রায় সময় অনেকের পোস্টেই মন্তব্য করছি। তবে সময়ের অভাবে সবার পোস্টে মন্তব্য করা হয় না। আবার এখানে এই লেখায় আমি একটা ব্যক্তিগত ভাবও উল্লেখ করেছি। তা হলো, "কেউ যদি আমার লেখায় মন্তব্য না করে, তাহলে বারবার সময় নষ্ট করে আমি কেন শুধুশুধু মন্তব্য করবো?" আবার মন্তব্য করলেও, সেই মন্তব্যের জবাবও পাওয়া যায় না। সেটাও হয়তো লক্ষ্য করেছেন, নিশ্চয়ই। আবার কোনরকম দায়সারা মন্তব্যও করতে খারাপ লাগে, শ্রদ্ধেয় দাদা আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
শুভকামনা থাকলো শ্রদ্ধেয় দাদা।
loading...
আমার মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার সুন্দর মন্তব্য আশা করছি, শ্রদ্ধেয় ফয়জুল মহী দাদা।
loading...
শ্রদ্ধেয় ফয়জুল মহী দাদা। আপনার সুন্দর একটা মন্তব্যের আশায় ছিলাম। এখনো আশায় আছি।
loading...
দাদা আমি আপনার ছোট ভাই। ভালোবাসার অধিকার নিয়ে এইসব বলা।
আসুন সবাই মিলে শব্দনীড়কে ধনী করে তুলি।
loading...
সত্যি আমাকে আপনি ধন্য করলেন, শ্রদ্ধেয় দাদা। নিরন্তর শুভকামনা থাকলো।
loading...
ধন্যবাদ কবি নিতাই বাবু। মোবাইল সংগ্রহ অংশটি ভীষণ আকারে চুম্বকীয় তবে পোস্টের আকর্ষণ আরো বেড়ে গেছে যখন পোস্টটিকে সহ-ব্লগারদেরকেও মেনশন করেছেন।
ব্লগ পড়ার নেশায়, আমি আমার ব্লগীয় জীবন সমাহিত করেছি। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লিখার অভীপ্সা মন থেকে সরিয়ে দিয়েছি। আমিও মনে প্রাণে চাই ব্লগ থাকুক মুখরিত। পরস্পরের সাথে পারস্পরিক সম্পর্ক হোক এবং থাক মজবুত। শব্দনীড়ের একটি বয়সে এমনটিই দেখতাম। ব্লগ জীবন থেকে ব্যক্তি জীবনেও অনেকের সম্পর্ক গড়ানো দেখতে ভালো লাগতো। অনেকে ঘরে বাইরে ব্লগ-মিটআপ আয়োজন করতেন। হাসি আনন্দে মেতে উঠতেন। ফটো ব্লগ হতো। অনেক অনেক মন্তব্যে ব্লগ ভরে উঠতো। অসাধারণ উপলব্ধি।
সময় যতো গড়িয়েছে, আমি দেখেছি মানুষ যেন সময়-সমন্বয়হীনতায় ভুগছে। ফেসবুকের শর্টকাট প্লাটফরম বেছে নিয়েছে। যেখানে মন্তব্যের চাইতে লাইকটাই বেশী জরুরী।
'সহ-ব্লগারদের পোস্টে আপনার করা একটা মন্তব্য মানে, আপনার নিজের লেখা বা পোস্টে দশটা মন্তব্য পাওয়া … এই সত্যটিকে যিনি অন্তরে ধারণ করেন না;
তিনি ব্লগার হওয়া থেকে বেশ দূরে।
loading...
হ্যাঁ শ্রদ্ধেয় দাদা, এটা আমার নিজের ব্লগীয় জিবনে বাস্তব উদাহরণ!
আমি চাই সবাই সবার পোস্ট পড়ুক, মন্তব্য দিক। লেখার আলোচনা করুক। এভাবে শব্দনীড় ব্লগটা জমে উঠুক! সবার জন্য শুভকামনা থাকলো শ্রদ্ধেয় দাদা।
loading...
আপনার জন্যও শুভ কামনা প্রিয় লিখক মি. নিতাই বাবু। শুভ ব্লগিং।
loading...
মনমাতানো মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি শ্রদ্ধেয় দাদা।
loading...
মোবাইল ফোন থেকে শব্দনীড় চমৎকার লেখা।
আমি দিনে কমপক্ষে তিনবার শব্দনীড় এ আসি। সমস্যা হচ্ছে মন্তব্য লেখার ব্যাপারে খুব কাঁচা। বানানের ব্যাপারে মুরুব্বীর সাহায্য লাগে আমার। মুরুব্বীকে সব সময় পাওয়া যায় না। আমি জাগলে মুরুব্বী ঘুমাতে চলে যান। তিনি যখন জেগে উঠেন তখন আমিই ঘুমে…
loading...
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি, শ্রদ্ধেয়।
আমি চাই, সবাই সবার পোস্ট পড়ুক, মন্তব্য দিক। লেখার আলোচনা করুক। এভাবে শব্দনীড় ব্লগটা জমে উঠুক! সবার জন্য শুভকামনা থাকলো শ্রদ্ধেয়।
loading...
হায় হায় আপনি দাদা লেখেনও বটে————-
loading...
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি শ্রদ্ধেয় দাদা। আশা করি ভালো থাকবেন।
loading...
হায় হায় দাদা করেছে কি, স্বাধীন মানুষের উপর অবাঁধ চলাচলে হুমকি? খাপ ছাড়া স্বাধীনতায় মানুষ বেশী আনন্দ পায়; যদ্ওি এমন স্বাধীনতা পৃথিবীতে নাই,,,,,,,,, হা হা,,,
loading...
একদম খাঁটি কথাই বলেছেন, শ্রদ্ধেয় কবি দাদা। তাই আমিও শব্দনীড়ে পোস্টখানা করে ভাবতেছিলাম, "পোস্টখানা কি ঠিক হয়েছে?"
তো যাক, অন্তত মনের কথাটা তো প্রকাশ করতে পেরেছি! এতেই আমি খুশ!
শুভকামনা থাকলো শ্রদ্ধেয় কবি দাদা।
loading...