ফেসবুকের একটা লাইকের মূল্য কত?

ফেসবুক হলো বর্তমান বিশ্ব-সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট। নির্মাতা হলেন, মার্ক জাকারবার্গ। যার পথচলা শুরু হয় ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে। শুরু থেকে অদ্যবধি ফেসবুক ব্যবহারকারী শুধু লাইক নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকে। যা এখন সারাবিশ্বে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে অনেক ব্যবহারকারী লাইক ভিক্ষুক সেজেছে। তা দেখে মনে হয় ফেসবুক নির্মাতা মার্ক জাকারবার্গ শুধু স্বাদের লাইক সিস্টেমটাকে কেন্দ্র করেই, ফেসবুক তৈরি করেছেন। কারণ, লাইক ছাড়া তো ফেসবুকের মজাই থাকে না, তাই।

আমি ফেসবুকে সদস্য হয়েছি ফেব্রুয়ারি ২০১২ সালের মাঝামাঝি সময়ে। তখন ফেসবুকের ধরণ ধারণই ছিল ভিন্ন। তার মানে হলো সোজা সাপটা যাকে বলে! তখন ফেসবুকে হরেকরম লাইক ছিল না, গ্রুপও ছিল না। আর এই বিশ্ব-যোগাযোগ সাইট ফেসবুকে দেশ-বিদেশের কবি, সাহিত্যিক, লেখক, লেখিকা, রাষ্ট্রপ্রধান, মন্ত্রী, মিনিস্টার, ডাক্তার, উকিক, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ, নেতা, নেত্রীদের দেখা যেত না। একসময় তাঁরা ফেসবুকের সুনাম তো মুখে আনতেন-ই-না, বরং এর সমালোচনাই বেশি করতো।

আর এখন সব দেশের সব রাষ্ট্রপ্রধান, মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কবি, সাহিত্যক, লেখক/ লেখিকা, সিনেমার নায়ক, নায়িকারাও দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা ফেসবুকে যারযার পেইজ বা গ্রুপ নিয়ে ব্যস্ত থাকে, সবর থাকে, নজরও রাখে। লেখকগ্ণ লেখে। কবিগণ কবিতা লেখে। সাহিত্যিকরা সাহিত্য নিয়ে লেখে। তাঁরা পেইজ বা গ্রুপ তৈরি করে সেখানে অন্য লেখক/লেখিকাদের আমন্ত্রণ জানায়, “আসুন, এখানে লিখুন! আপনার আলোকিত প্রতিভা প্রচার করুন!” অনেকে তা করেও।

ওইসব পেইজ বা গ্রুপে সদস্য হতে হলে আগে গ্রুপের পিন পোস্ট (শর্তাবলী) পড়তে হবে। তারপর গ্রুপের শর্ত মেনে নিয়ে গ্রুপে অ্যাক্টিভ হতে হবে। শর্ত থাকে গ্রুপে অন্যদের পোস্টে পড়তে হবে, লাইক/ কমেন্ট করতে হবে। একজন সদস্য যদি কারোর পোস্টে লাইক/কমেন্ট না করে, তাহলে কয়েকদিন পর ঐ সদস্যকে গ্রুপ থেকে বহিষ্কার করা হয়। আবার অনেক গ্রুপের একটা ভালো দিকও চোখে পড়ে। ওইসব পেইজ বা গ্রুপের অ্যাডমিনরা বা গ্রুপ পরিচালকগণ গ্রুপে অ্যাক্টিভ থাকা সদস্যদের নিয়ে বিভিন্নরকম আয়োজনেও করে থাকে। যেমন–পিকনিক, আড্ডা, সভা, সেমিনার সহ নানারকমের আয়োজন করে। আবার গ্রুপে লেখা বা পোস্টের উপর ভিত্তি করে পুরস্কৃতও করা হয়। যা অনলাইনের থাকা লিখিবার পড়িবার কোনও স্বনামধন্য ব্লগ কর্তৃপক্ষও করতে পারে না বা করেও না। তা করে থাকে ফেসবুকে থাকা পেইজ বা গ্রুপ পরিচারকগণ। এসব করার একমাত্র উদ্দেশ্য হলো, লাইক আর গ্রুপের কর্মকাণ্ড প্রচার কার।

আর রাষ্ট্রপ্রধানরা তো এখন একরকম ফেসবুক নির্ভর হয়ে গেছে। রাষ্ট্রপ্রধানরা তাঁদের সুকৃতি নিয়ে ফেসবুকে তাঁদের নিজস্ব পেইজ বা গ্রুপে প্রচার করে। যাতে তাঁদের জনপ্রিয়তা আরও বাড়ে। বর্তমানে ফেসবুকে সারাবিশ্বের বেশির ভাগ রাষ্টপ্রধানদেরও পেইজ বা গ্রুপ আছে। তবে এসব ভিআইপি ব্যক্তিদের নামে পেইজ বা গ্রুপ কতটা সত্যিকারের তা অনেকেরই জানা নেই। তবু অনেকেই সত্যি সত্যি মনে করে লাইক দিচ্ছে, মন্তব্যও দিচ্ছে। আর ভিআইপি ব্যক্তিরাও তাঁদের পেইজ বা গ্রুপে তাঁদের গুণগান যেমন প্রচার করছে, তেমন আবার ফেসবুকের দিকে খেয়ালও রাখছে।

খেয়াল রাখছে এই কারণে যে, যদি তাঁদের কোনও অপকর্ম আর অসৎকর্মের খবর ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়? তাই বর্তমানে রাষ্ট্রপ্রধানরা ফেসবুকের দিকে বেশি খেয়ালি। তবে এসব ভিআইপি ব্যক্তিদের পোস্টে অন্যদের করা মন্তব্যের কোনও রিপ্লাই করা হয় না। মেসেজ পাঠানোর সিস্টেম থাকলেও কারোর মেসেজের উত্তর দেওয়া হয় না বলেই মনে হয়। তাঁরা শুধু লাইকের দিকে আর বাজে মন্তব্যের দিকেই বেশি খেয়াল রাখে। যদি কেউ ভুলবশত মনের ক্ষোভে কোনও বাজে মন্তব্য করে, তাহলে কয়েকদিনের মাথায়ই খবর হয়ে যায়। মামলা হয়, কারাদণ্ডে দণ্ডিতও হয়। তাই বর্তমানে রাষ্ট্রপ্রধান, মন্ত্রী, নেতা, নেত্রীদের নিয়ে ফেসবুকে কেউ বেশি মাথা ঘামায় না। যার যার পোস্টের লাইকের ধান্ধায়ই বেশি থাকে।

এবার আলোচনায় আসা যাক ফেসবুকে থাকা লাল লাইক, সবুজ লাইক, আঙুল মার্কা লাইক, ইমেজি লাইক আর ট্যাগ নিয়ে। আগে এতো হরেকরকমের লাইক ছিল না। বেশিরভাগ ব্যবহারকারী ট্যাগ করাও বুঝতো না। ছিল না মেসেঞ্জার, ফ্রি ফোন কল, ভিডিও কল, ভিডিও শেয়ারিং-এর ব্যবস্থাও। শুধু নিজ টাইমলাইনে ছবি আর কয়েক লাইন লেখা সহ স্ট্যাটাস দেওয়ার সিস্টেমেই ছিল। মানুষের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বর্তমানে অনেক শর্টকাট সুবিধা ফেসবুকে যুক্ত করে ফেলেছেন।

বর্তমানে শুধু লাইকের জন্য নিউজফিডে থাকে, খবর বিনোদন সহ দেশবিদেশে ঘটে যাওয়া নগদ খবর। আছে দেশের বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকার খবর। সেসব পত্রিকার পেইজ থেকে প্রতি মিনিটে মিনিটে খবর আপডেট করা হচ্ছে। ফেসবুক ব্যবহারকারী নিউজফিডে তা দেখতে পারছে, পড়তেও পারছে। লাইক দিচ্ছে। মন্তব্যও করছে। কিন্তু কোনও মন্তব্যকারীর মন্তব্যের উত্তর দেওয়া হয় না। আগে ফেসবুকে পত্রপত্রিকার খবরাখবর ছিল না, যা বর্তমান সময়ে দেখা যায়। এটা বিশ্ববিখ্যাত সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুকের একরকম সফলতাও বলা চলে।

আগেই বলেছি ফেসবুকে সর্বপ্রথমও ট্যাগ ছিল। যা ব্যবহারকারী বুঝেশুঝে ট্যাগ করতো। এখনো ট্যাগ সিস্টেম ফেসবুকে আছে। ট্যাগ হলো, শিকল। নিজের করা পোস্ট অন্যের ঘাড় চাপানোই হলো ট্যাগের কাজ। তবে আগে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা সহসা কেউ কাউকে ট্যাগ করতো না। এখন একটা লাইকের আশায় একটি ছবি আপলোড করে তা ৪০ থেকে ৫০ জন বন্ধুকে ট্যাগ করে বসে থাকে। যা একধরণের যন্ত্রণা। যন্ত্রণা হলো এই কারণে যে, এক বন্ধুর একটা বল্টু মার্কা ছবি ফেসবুকে আপলোড করে তা আমাকে কেন ট্যাগ করা হবে? এটা তো একরকম অন্যায়। কিন্তু ন্যয় অন্যায়ের দিকে আর কেউ বিচার বিবেচনা না করে শুধু একটা লাইকের জন্যই; সিরিয়াল ৪০ থেকে ৫০ জনকে একই শিকলে বেধে ফেলে। একবার শোনা গিয়েছিল ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আনলাইক সিস্টেম চালু করবে। কিন্তু না, তা আর হয়নি। শুধু আলোচনার মাঝেই তা থেকে গেল।

তবে আমার মতে ফেসবুকে আনলাইক সিস্টেম চালু করার খুবই দরকার ছিল। দরকার ছিল এই কারণে যে, বর্তমানে শুধু আমাদের দেশের ফেসবুকাররা হচ্ছে লাইক পাগল। ফেসবুকে একটা লাইকের জন্য নিজের প্রেমিকার বিকিনি ছবিও ফেসবুকে সবার মাঝে শেয়ার করছে। আরও কত যে অভিনব কায়দা কৌশল অবলম্বন করে থাকে, তা আর লিখে শেষ করা যায় না। যদি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আনলাইক সিস্টেম চালু করতে, তাহলে দেখা যেত কত ছবিতে কত লাইক, আর কত আনলাইক!

লাইক পাগল ফেসবুকারা এখন সেলফি মোবাইল ব্যবহার করে। যেমন–OPPO মোবাইল। যা কিনা ছবি আর সেলফির জন্য বিখ্যাত। সেলফি যে কী, তা আমি নিজেও আগে জানতাম না। এখন জানি সেলফি কী? সেলফি হলো, নিজের মোবাইল ফোন দিয়ে নিজের ছবি নিজে তোলা। এর নাম হলো সেলফি। ফেসবুকেও চলছে সেলফি ছবির রমরমা পোস্ট। আর লাইকের জন্য ভিক্ষা আর ফরিয়াদ।

লাইক পাগল ফেসবুকাররা তাঁদের ছবি পোস্টে লিখে থাকে, “ভাইয়া একটা লাইক দিবা?” কিছু লাইক পাগল মেয়ে ফেসবুকার আছে। ওরা নিজের ছবি আপলোড করে ছবির উপরে লিখে থাকে, “ভাইয়া আমার ভাই কোনও নেই! ফেসবুকের সকল বন্ধুরাই আমার ভাই। ভাইয়া আমাকে দেখতে কেমন লাগছে? যদি ভালো লাগে তো একখান লাইক দিতে ভুলবেন না!” আবার দেখি লেখা থাকে, “কেউ এড়িয়ে যাবেন না!” আরও লেখা দেখি, “একটা লাইক বা একটা কমেন্ট করুন! আজ আপনার ভাল কিছু একটা হবে।” কেউ আবার সরাসরি সাক্ষাতে বলে ফেলে, “ছবি ছাড়ছি, লাইক দিয়েন ভাই!” কেউ লাইকের জন্য ধর্মের বানীও পোস্ট করে থাকে।

এমন আরও শতরকমের অভিনব কায়দায় অনেক ফেসবুকারকে লাইক ভিক্ষা করতে দেখা যায়। সেসব লাইক ভিক্ষুক ফেসবুকে এখনো আছে। ওরা পোস্টে মন্তব্যের জন্য পোস্ট করে না। আর মন্তব্য যে কী, সেদিকে ওরা গুরুত্বও দেয় না। কেউ পোস্টে মন্তব্য করলে, সেই মন্তব্যের রিপ্লাইও করে না। ওরা শুধু লাইকের জন্যই ফেসবুকে ছবির পর ছবি আপলোড করতেই থাকে, আর ট্যাগ করতে থাকে।

এখন আসল কথায় আসি। কথা হলো, ফেসবুকে ওইসব লাইক পাগলদের কাছে একটা লাইকের মূল্য কত হতে পারে? আমরা মনে হয় ফেসবুকার লাইক পাগলদের কাছে একটা লাইক মানে, দিল্লিকালাড্ডু আর পোড়াবাড়ির চমচমের মতো। ওরা লাইক পাগল ফেসবুকাররা মনে করে থাকে, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ হয়তো কোনও একদিন ফেসবুক ব্যবহারকারীদের পোস্টের লাইক হিসেব করে মিলিয়ন বিলিয়ন ডলারে পুরস্কৃত করবে। আসলে তাঁদের ধারণা কি ঠিক? তা টিক হোক আর না হোক, তাতে কারোর কিছুই যায় আসে বলে মনে করি না।

তবে ফেসবুক লাইক পাগলদের পোস্টে লাইক/কমেন্টও আমাদের কিন্তু দেখেশুনে করতে হবে। কারণ, কোনও বন্ধুর অপছন্দের পোস্টে যদি আমি লাইক করে ফেলি তো, সেই বন্ধু আমার পর খুব রাগ করতে পারে। আর না বুঝে মন্তব্য তো করাই যাবে না। কারণ, সময়সময় একটা মন্তব্যের সাংঘাতিক বিপদ টেনে আনতে পারে। আবার ঝগড়াও হতে পারে। সময়সময় ঝগড়া বেধেও যায়।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

১৯ টি মন্তব্য (লেখকের ৯টি) | ৯ জন মন্তব্যকারী

  1. নিজু মন্ডল : ২৭-০৩-২০১৯ | ১৭:০২ |

    পোস্টে সহমত।

    ইদানিং ইউটিউবেও দেখি বলে, লাইক দিন, কমেন্ট করুন, সাবস্ক্রাইব করুন…

    GD Star Rating
    loading...
    • নিতাই বাবু : ২৭-০৩-২০১৯ | ২১:৩৭ |

      ইউটিউবেও লাইক, সাবস্ক্রাইবের সিস্টেম আছে। তবে আনলাইকও আছে। ইউটিউবে আমার নিজেও একটা চ্যানেল আছে। সেখানে নারায়ণগঞ্জ শ্মশানঘাট থেকে দাহ করা একটি ভিডিও আপলোড করেছিলাম। যার লাইক সংখ্যা থেকে আনলাইক সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। আর অকথ্যভাষায় গালাগালির তো অভাবই ছিল না। শেষতক নিজ ইচ্ছায় ভিডিওটা ডিলিট করতে বাধ্য হয়েছিলাম। এরপর গুগল আমাকে তিনমাস অবরোধ করে রেখেছিলেন। এই তিনমাস আমি ইউটিউবে কোনও ভিডিও আপলোড করতে তো পারি-ই-নি, ইউটিউবে কোনও ভিডিও দেখতেও পারিনি। এই অবরোধ ছিল গুগলের অনুমিত ছাড়া ভিডিও ডিলিট করার শাস্তি। 

      GD Star Rating
      loading...
  2. ফারুক মোহাম্মদ ওমর : ২৭-০৩-২০১৯ | ১৭:১৬ |

    দাদা সব সস্তা হয়ে গেছে ।

    GD Star Rating
    loading...
    • নিতাই বাবু : ২৭-০৩-২০১৯ | ২১:৪১ |

      ফেসবুকের লাইক তো এখন আলু পটলের মতো বাজারেও বিক্রি হতে দেখা যায়। কাঁচা বাজারে তরকারি কিনতে গেলে, দোকানদার বলে, "লাইক দিয়েন দাদা। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে, ফেসবুকের লাইকের খবর এখন কোথায় গিয়ে ঠেকেছে!

      আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি ভালো থাকবেন সবসময় ।

      GD Star Rating
      loading...
  3. একজন নিশাদ : ২৭-০৩-২০১৯ | ১৭:১৮ |

    এই ব্যাপারগুলোতে সচেতনতা এখন সময়ের দাবী

     

    GD Star Rating
    loading...
    • নিতাই বাবু : ২৭-০৩-২০১৯ | ২১:৪৪ |

      সচেতনতা আর কী-ই-বা হবে শ্রদ্ধেয় দাদা। ফেসবুক ছাড়া এখন রাষ্ট্রও চলে না বলে মনে হয়। কোনও কারণবশত যদি ফেসবুক বন্ধ থাকে, তাহলে দেখা যায় রাষ্ট্রের অবস্থা । এই হলো আনাদের সচেতনতা দাদা।

      GD Star Rating
      loading...
  4. মুরুব্বী : ২৭-০৩-২০১৯ | ১৯:৫২ |

    ফেসবুকের একটা লাইকের মূল্য নিয়ে আমার মাথাব্যাথা নেই। কেননা, ফেসবুকে আমার থাকাটা ব্লগের সমগোত্রীয়দের সাথে যোগাযোগ পথটি সুগম রাখা। এনিওয়ে আপনার পোস্ট পড়ে রীতিমত আনন্দিত হয়েছি মি. নিতাই বাবু।

    লিখার শুরুতে আলোচনাটি এগিয়েছে বেশ ভারিক্কি চালে। মধ্যখানে মজা আর মজা। লাইক আশাবাদীদের ফরিয়াদ। আমি আছি ২০০৭ সাল থেকে। ফেসবুক স্মৃতির ঝুলি পুটলি মোটামুটি ভর্তি হয়েছে প্রায়। প্রথম প্রথম লগিন করে দেখে বুঝে ঘুপুত করে লগআউট হয়ে যেতাম। কারণ মনে ভয় ছিলো, বেশীক্ষণ থাকলে আবার ব্যান না হয়ে যেতে হয়। ২০১০/১১ সালে এসে কিছুটা পোক্ত হয়েছি। ততোদিনে বুঝে গেছি এখানে লগিন করে থাকলে সাজাভোগ করতে হয় না।

    লেগে রইলাম ফেভিকলের মতো। দুই একটা ছবি পোস্ট ছাড়া ভিন্ন কোন কীর্তি অর্জন করার সুযোগ আমার হয়নি। আদ্দিকালেও কখনও আমি ট্যাগ করিনি। কিন্তু শেয়ার করেছি। তবে আমার ফেসবুক ড্রাইভিং ঐ লাইক পর্যন্তই। কারো পোস্টে ভালো লাগার সুমধুর দুটি শব্দ লাগালে নোটিফিকেশনের যে জ্বালা, তাতে আমি দুর্বিপাকে পড়ি। অতএব ঝামেলা এড়াতে কোথাও কথা না বলার যুগপূর্তিতে আমি বিশেষ করে সার্থক হয়েছি। জয় হোক ফেসবুকের। জয় হোক ফেসবুকারদের।

    GD Star Rating
    loading...
    • নিতাই বাবু : ২৮-০৩-২০১৯ | ০:১৬ |

      শ্রদ্ধেয় কবি দাদা,  ফেসবুকে আপনার একযুগ পূর্তিতে অভিনন্দন। সাথে জানবেন শুভেচ্ছা । কবি দাদা আমি মনে করি ফেসবুকে আপনাদের করা পোস্ট আর লেখা আমাদের নজরে পড়াও একটা সৌভাগ্যের ব্যাপারস্যাপার । আপনাতে কখনওই লাইক আর মন্তব্যের আশা নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন না। পোস্ট করেন ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা বন্ধুদের কিছু দেওয়ার জন্য। কিছু শেখার জন্য। আর অনেক ফেসবুকার আছে শুধু লেইক পাবার জন্যই পোস্ট করে থাকে। আমি বলছিলাম তাঁদের কথা। তাঁদের কাছে একটা লাইকের অনেক মূল্য! আর বর্তমানে ফেসবুক সারাবিশ্বের সবার জন্য। বিশ্ববিখ্যাত সার্চ ইঞ্জিন গুগলের মতো ফেসবুকেও এই দুনিয়ায় চিরস্থায়ী হয়ে গেছে বলে আমি মনে করি। ফেসবুকের যতরকমের পাগলই থাক-না-কেন, ফেসবুক বর্তমানে সবার জন্য প্রযোজ্য হয়ে গেছে। তাই আপনার সাথে সুর মিলিয়ে আমিও সময়সময় বলে থাকি জয়তু ফেসবুক।

      GD Star Rating
      loading...
  5. রিয়া রিয়া : ২৭-০৩-২০১৯ | ২০:৪৬ |

    ফেসবুকের চরিত চরণ দারুণ তুলে এনেছেন প্রিয় কবি দা। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

    GD Star Rating
    loading...
    • নিতাই বাবু : ২৮-০৩-২০১৯ | ০:২২ |

      ২০১৫ সালে ব্লগ ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে লিখেছিলাম, "আমাদের স্বাদের ফেসবুক"। আজ ফেসবুকের লাইক পাগল নিয়ে স্বনামধন্য শব্দনীড় বাংলা ব্লগে আবার লিখলাম, শ্রদ্ধেয় রিয়া দিদি। সময়সময় ফেসবুক ডি-অ্যাক্টিভ করে রাখি। আবার মনের তাড়নায় লগইন করে দেখি, ফেসবুকের অবস্থা কী? তারপর আবার নিজেই হয়ে যাই ফেসবুকার। ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় রিয়া দিদি।

      GD Star Rating
      loading...
  6. সৌমিত্র চক্রবর্তী : ২৭-০৩-২০১৯ | ২১:১৪ |

    ফেসবুকের ইতিহাস। সারাদিনে আমার নিজ পোস্টের চাইতে শেয়ার বেশী করি।
    লাইক তো গুণে দেখিনি !! https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Shy.gif.gif

    GD Star Rating
    loading...
    • নিতাই বাবু : ২৮-০৩-২০১৯ | ০:২৯ |

      গুনবেন কেন দাদা? আপনি তো আর ফেসবুকার নন! আপনাদের পোস্ট থেকে মানুষ অনেককিছু শিখতে পারে, বুঝতে পারে। যেমন আমিও আপনাদের মতন মানুষের অনুসারী দাদা। তাই লাইকের দিকে বিন্দুমাত্র খেয়াল করি না। শুধু মন্তব্যের রিপ্লাই দেই। অপরের পোস্টও খুব ঘটা করে দেখি, লাইক দেই, মন্তব্য করি। উৎসাহ দেই। বানান ভুল দেখলে মেসেঞ্জারে জানিয়ে দেই। নিজের লেখায় ভুল হলে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। কেউ মেসেজ দিলে উত্তর দেই। এই হলো আমার ফেসবুকে কর্মকাণ্ড শ্রদ্ধেয় দাদা।

      GD Star Rating
      loading...
  7. শাকিলা তুবা : ২৭-০৩-২০১৯ | ২১:৪৭ |

    ফেসবুকের একটা লাইকের মূল্য শূন্য। যাপিত জীবনে ক্ষণিক উল্লাস উচ্ছাস আনন্দ বৈ ভারী কিছু নয়। নেশা হলে নেশাও কাটানো সম্ভব। নেট নাই ফেসবুক নাই হয়তো দুদিনের শোক। এরপর নিজেকে নির্ভার মনে হয়। দিনগুলো অনেক বড় হয়ে যায়। Smile 

    GD Star Rating
    loading...
    • নিতাই বাবু : ২৮-০৩-২০১৯ | ০:৩৮ |

      আমিও তা-ই ভাবি শ্রদ্ধেয় শাকিলা দিদি। আজকে হয়ত টাকা দিয়ে ডাটা নামের মেগাবাইট কিনে স্বাদের ফেসবুক ব্যবহার করতে পারছি। আগামীকাল হয়ত নিজের পকেটের টাকা থাকবে না। সময়তে মোবাইলও থাকবে না, ঘরে ল্যাপটপও থাকবে না। তখন শুধু মানুষের মুখেই শুনবো ফেসবুক ফেসবুক। নিজে দেখার আর সুযোগ হবে না। তবে ইন্টারনেটেে একটা 

      নেশা হয়ে গেছে শ্রদ্ধেয় দিদি। তাই ব্লগে আর ফেসবুকে অবসর সময়টুকু কাটাতে পারছি। এসব না থাকলেও হতো। হয়ত ভালো হতো। আছে বলেই মনের তাড়নায় দেখাদেখি ।

      GD Star Rating
      loading...
  8. সুমন আহমেদ : ২৭-০৩-২০১৯ | ২২:৩৩ |

    ফেসবুকের আসক্তি ছেড়ে দিয়েছি অনেককাল আগে। দিতে পেরেছি। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_cool.gif

    GD Star Rating
    loading...
    • নিতাই বাবু : ২৮-০৩-২০১৯ | ০:৪২ |

      আমি শত চেষ্টা করেও পারছি না শ্রদ্ধেয় সুমন দাদা। মাঝেমাঝে নিজেই ডি-অ্যাক্টিভ করে বিরতি নেই। আবার  ক"দিন পর শুরু করে দেই। কিন্তুু দাদা, আমি আজ এপর্যন্ত  নিজের একটা প্রোফাইল ছবি ছাড়া নিজ পরিবারের কারোর ছবি ফেসবুকে শেয়ার করিনি। হয়ত আর কখনো করবোও না। 

      GD Star Rating
      loading...
  9. আলমগীর সরকার লিটন : ২৮-০৩-২০১৯ | ১০:২৬ |

    বেশ তো 

    GD Star Rating
    loading...
    • নিতাই বাবু : ২৮-০৩-২০১৯ | ১২:৪৪ |

      সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় কবি দাদা।

      GD Star Rating
      loading...