সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন গোদনাইল চিত্তরঞ্জন কটন মিলস্-এর পুকুরপাড়ে পাগলা সাধুর সমাধি স্থানে নির্মিত মঠ।
একটি বটগাছ পরম মমতায় আঁকড়ে ধরে রেখেছে পাগলা সাধুর সমাধি স্থানে নির্মিত একটি মঠকে। মঠটি ঘিরে কথিত আছে অনেক জানা অজানা কথা। সেসব কথা নাহয় লেখার শেষাংশে প্রকাশ করবো। শুরুতে সুশীতল ছায়াসুনিবিড় দেববৃক্ষ বটগাছের জন্ম কথা নিয়ে কিছু লিখতে চাই।
বটগাছ একটি বৃহদাকার বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। আমাদের দেশের গ্রাম ও শহরে বট গাছ সাধারণত দুই প্রকারই বেশি দেখা যায়, কাঁঠালিবট ও জিরাবট৷ কাঁঠালি বটের পাতা ঠিক কাঁঠাল পাতার মতো। আর জিরাবটের পাতা পানপাতার মতো দেখা যায়। তাই দুই রকমের বটগাছের দুইটি নাম হয়েছে জিরাবট, আর কাঁঠালি বটগাছ। এই দুই প্রকারের বটগাছ আমাদের দেশের শহর-বন্দর, গ্রাম-গঞ্জের আনাচে-কানাচে অনেক দেখা যায়। সবচেয়ে বেশি দেখা যায় পুরানো বাড়ির দেয়ালের কার্নিশে, প্রাচীর ঘেরা দেয়ালের ফাটলে।
এর কারণ হচ্ছে, আমাদের দেশে বিভাগীয় শহরগুলোতে এখনো অনেক পুরানো স্থাপনা আছে। খোদ ঢাকা শহরেও অনেক পুরানো স্থাপনা দেখা যায়। ঢাকা শহরের নিকটবর্তী শহর নারায়ণগঞ্জেও অনেক পুরানো স্থাপনা চোখে পড়ে। আগে সিমেন্টের খুবই দাম ছিল। দাম ছিল এই কারণে যে, তখনকার সময়ে আমাদের দেশে কোথাও কোনও সিমেন্ট ফ্যাক্টরি ছিল না। কোনও জমিদার বংশের কারোর সিমেন্টের দরকার হলে, বিদেশের কথা স্মরণ করতে হতো। তাই সিমেন্ট ছিল বিদেশি এক দুর্লভ পণ্য। যেই পণ্য তখনকার দিনে যেকেউ কিনতে সক্ষম হতো না বা পারতো না। আগের দিনে যার কাছে এক হাজার টাকা থাকতো তাকে বলতো হাজার টাকার মালিক। আর যিনি থাকতো কয়েক হাজার টাকার মালিক, তাকে লোকে বলতো হাজারী।
পাগলা সাধুর সমাধি স্থানে নির্মিত মঠ। মঠটাকে একটি বটগাছে পরম মমতায় আঁকড়ে ধরে রেখেছে। এখন আর এই মঠ থেকে একটি ইটাও খসে পড়বে না, কেউ আর ভেঙেচুড়ে তচনচও করতে পারবে না।
এসব হাজারীদের হাজার হাজার টাকা থাকতেও, তাঁরা বিদেশ থেকে সিমেন্ট এনে তাদের বসতবাড়ি, দালান-কোঠা রড-সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করতে পারেনি। তৈরি করতে হয়েছে মোটা মোটা এঙ্গেলের সাহায্যে। আর সিমেন্টের পরিবর্তে সুরকির (ইটের ফাঁকি) সাথে চুনা মিশিয়ে পেঁকমাটির মতন করে ছোট ছোট ইটের সাথে লেপে তাদের স্থাপনাগুলো তৈরি করেছে। কেউ কেউ চুনের খরচের টাকা বাঁচাতে সুরকির পরিবর্তে আঠালো মাটি সাথে ইট গেঁথে বড়সড় দালানকোঠা তৈরি করছে। ওইসব দালান-কোঠা মাটি আর ইটের সুরকি দিয়ে তৈরি বলেই, এসব দালান-কোঠার দালানে, বাড়ির বাউন্ডারি ওয়ালে শেওলা পড়তে দেখা যায়।
দালান-কোঠা বা বাউন্ডারির (প্রাচীর) শেওলায় জন্মায় এক ধরণের উদ্ভিদ। একসময় দেয়ালে জমে থাকা শেওলা থেকে জঙ্গলে পরিণত হয়। এসব জঙ্গলের সাথে জন্মে থাকে কাঁঠালি বটগাছ, জিরা বটগাছ। বটগাছের কোনও বীজ রোপণ করা যায় না। আর বটের বীজ রোপণ করলে বীজ থেকে গাছ জন্মায়ও না। তাহলে পুরানো দেয়াল, আর পুরানো দালান-কোঠা, পুরানো প্রাচীরে বটগাছ জন্মালো কীভাবে?
বটগাছের শিকড়ে ঘেরা পাগলা সাধুর সমাধি স্থানে নির্মিত মঠ।
যেভাবে বটগাছ জন্মায়:
বসন্ত ও শরৎকালে বটগাছে নতুন পাতা গজানোর সময় হয়। একসময় বটগাছের ঢালার মঞ্জরিতে ফুলের কলি বের হতে থাকে। ফুল ফোটে। মঞ্জরির গর্ভে ফুলগুলো লুকানো থাকে। ফুলগুলো খুবই ছোট এবং ফলের মতোই গোলাকার৷ ফলগুলো হুবহু আঙুর ফলের মতো। দেখতে লাল রঙের। এই ফলগুলো পাখিরা মহানন্দে ফল খেয়ে ওদের পেটের ক্ষুধা নিবারণ করে। একসময় পাখিরা মলত্যাগ করে এই বীজ ছড়িয়ে দেয়। পাখিবাহিত এই বীজ দালানের কার্নিশ, পুরানো দালানের ফাটল ও অন্য কোন গাছের কোটরে জমা থাকে। সেই বীজ থেকে আস্তে আস্তে গাছ জন্মাতে থাকে। একারণে উপগাছা বা পরগাছা হিসেবেও বটগাছের বেশ খ্যাতিও আছে। এই বটগাছ এমনই একটা গাছ, তার ফল হইতে বীজ সংগ্রহ করে বপন করলে গাছ জন্মায় না। আবার কোন দালানের কার্নিশ হইতে তৈরি গাছ উঠিয়ে এনে রোপণ করলে হয়। উপযুক্ত পরিবেশে একটি গাছ পাঁচ(৫) থেকে ছয়(৬) শত বছর বেঁচে থাকতে পারে৷ বট বাংলা অঞ্চলের আদিমতম বৃক্ষ। অনেক হিন্দু ধর্মাবলম্বী বটগাছকে দেববৃক্ষও বলে।
বটগাছের এসব ঝুরি বা লত বা শিকড়গুলো একদিন বটগাছে পরিণত হবে।
বটের বর্ণনা:
বটের পাতা একান্ত, ডিম্বাকৃতি, মসৃণ ও উজ্জল সবুজ৷ কচি পাতা তামাটে। স্থান-কাল পাত্রভেদে পাতার আয়তনের বিভিন্নতা একাধারে বটের বৈশিষ্ট্য তথা প্রজাতি শনাক্তকরণের পক্ষে জটিলতার কারণও। পরিণত গাছের পাতা আকারে কিছুটা ছোট হয়ে আসে। বটের কুঁড়ি পাংশুটে হলুদ এবং এর দুটি স্বল্পায়ু উপপত্র পাতা গজানোর পরই ঝরে পড়ে। খুব অল্প বয়স থেকেই বট গাছের ঝুরি বা লত নামতে শুরু করে। তবে কাঁঠালি বটের ঝুরি বা লত বেশি নামে। এসব ঝুরি বা লত মাটির সংস্পর্শ পেলেই বাড়তে থাকে। ডালপালার ঝুরিগুলো একসময় মাটিতে গেঁথে গিয়ে নিজেরাই একেকটা কাণ্ডে পরিণত হয়। এভাবেই বট গাছ ধীরে ধীরে চারপাশে বাড়তে থাকে এবং একসময় মহীরুহে পরিণত হয়। তখন সর্বপ্রথম জন্মানো গাছটিকে আর চেনা যায় না। সবই ঝুরি বা লত গাছের মতনই দেখা যায়।
একসময় এই সমাধি স্থানের মঠটির সামনে গড়ে উঠেছিল তুলার গোডাউন। সেই তুলার গোডাউন একসময় আগুন ধরে যায়। সেই আগুনে মঠের উপর বটগাছের একটা ঢালা পুড়ে যায়। পুড়ে যাওয়া সেই ঢালা থেকে এখন নতুন নতুন পাতা বের হচ্ছে।
বট গাছকে ঘিরে বাংলা অঞ্চলে রয়েছে শত সহস্র বছরের ইতিহাস ঐতিহ্য। (আর এই ঐতিহ্য বহনকারী একটি বট গাছ রয়েছে আমাদের বাংলাদেশেও। জানা যায়, ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামে। এ বট গাছের যে বিশাল ব্যাপ্তি তা ডিজিটাল যুগের উন্নত ক্যামেরার ফ্রেমে ধরা সম্ভব নয়। এই গাছটা আঠার(১৮) বিঘা জমির উপর বিস্তৃত। বনবিভাগের উদ্যোগে এর চারপাশ বাঁশ-মূলি দিয়ে ঘেরা হয়েছে গাছটি সুরক্ষিত রাখার জন্য। এই বটগাছটার জন্ম কথা জানে এমন লোক বর্তমানকালে কালিগঞ্জ উপজেলায় নেই। যাকেই জিজ্ঞাসা করা হয়, সে-ই বলে আমার দাদাও বলতে পারেনা, আর আমি বলবো কীভাবে?
জানা যায় এই গাছ হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বটগাছ। উষ্ণ আবহাওয়ায় বিশাল আয়তনের এই ছায়াবৃক্ষটি মানুষের অনেক উপকারে আসে। প্রাচীনকাল থেকেই বটবৃক্ষের ছায়ায় হাট-বাজার বসে, মেলা হয়, লোকগানের আসর বসে। জনসভারও আয়োজন হতো। কারণ হিসেবে বলা যায়, বাংলার গ্রামাঞ্চলে বড় বড় সুশীতল হলরুম ছিল না। আর তাই বড় বড় অনুষ্ঠান ও জনসভাগুলো ছায়াসুনিবিড় বটতলায় অনুষ্ঠিত হতো। এখনো গ্রামাঞ্চলে সেই দৃশ্য অনেকসময় চোখে পড়ে। বটগাছকে ভারত ও বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বী লোকেরা শিবের (মহাদেব) ছায়াবৃক্ষ হিসেবে মান্য করে থাকে।
মঠের ভেতরে খালি জায়গা আছে। খালি জায়গায় আগে অনেক মানুষ ঘৃতপ্রদীপ জ্বালাতো। দিতো ধূপের ধোঁয়া।
যার কারণে এই বটগাছ ভারত ও বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষেরা কাটেও না,বটগাছের লাকড়ি পোড়ায়ও না। এখনো হিন্দু ঘনবসতি এলাকায় এই বটগাছের নিকটে মন্দির স্থাপন করে পূজা অর্চনা দিতে দেখা যায়। আর বটগাছের নিচে শিবের (মহাদেব) হাতের একটা অস্ত্র(ত্রিশুল) গাড়া থাকতে দেখা যায়। যার কারণে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলসহ দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে ধর্মীয় কারণে বটগাছ কাটা নিষিদ্ধ।
সমাধি স্থানে নির্মিত মঠে বটগাছ:
উল্লেখ করা যায়, এমন আরেকটি বটগাছ আছে নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন গোদনাইল এলাকায়। এই বটগাছটির অবস্থান চিত্তরঞ্জন কটন মিলের পুকুর পাড়ে। বটগাছটি একটি সমাধি স্থানকে অতি আদরে ঘিরে রেখেছে। সমাধি স্থানটি হলো একটি মঠ, (মন্দিরের মত) সমাধি স্থান।
আগেকার সময় কোন সরকারি বা পৌরসভার অধীনে হিন্দুদের জন্য খুব কম সংখ্যক শ্মশানঘাট ছিল। যা চোখে না পড়ার মতো। কাজেই কোন হিন্দু লোক মৃত্যুবরণ করলে তাঁর শবদাহ বা (অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া) করা হতো তার নিজস্ব জায়গাতে। যার জায়গার অভাব ছিলো, তার মরদেহ দাহ (অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া) করা হতো, কোনও এক জলাশয়ের ধারে, না-হয় নদীর পাড়ে। (অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অর্থ হলো: অন্ত:অর্থ=শেষ, ইষ্টি:অর্থ=যজ্ঞ, ক্রিয়া: অর্থ=কার্যসম্পাদন। সুতরাং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শব্দের অর্থ শেষ যজ্ঞ সম্পাদন। এই শেষযজ্ঞ বলতে বোঝায় অগ্নিতে মৃতদেহ অহুতি দেওয়া)৷
১৯৪০ সালের দিকে পাগলা সাধু নামে একজন সাধু ছিলো। তাদের নিজস্ব বাড়ি ছিল নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন গোদনাইল এলাকায়। বর্তমান চিত্তরঞ্জন কটন মিলস্ পুকুরপাড় সংলগ্ন। এই পাগলা সাধুর মরদেহ বসত বাড়ির পাশে চিত্তরঞ্জন পুকুরপাড় দাহ করা হয়। এরপর তাঁর পুত্র মধু ঘোষ সেখানে একটি মঠ নির্মাণ করে রাখে। একসময় তারা সপরিবারে হিন্দু মুসলিল রায়টের সময় ঘর-বাড়ি ছেড়ে ভারত চলে যায়। রায়টের পর তাদের ঘরবাড়ি সবই বেদখল হয়ে যায় ঠিকই, কিন্তু পাগলা সাধুর সমাধির মট খানা সেভাবেই থেকে যায়। আর সেই মঠ হতে একটি বটগাছ জন্মে বড় হতে থাকে।
বর্তমানে মঠ থেকে গজে ওঠা বটগাছটি মঠটাকে এমন ভাবে জরিয়ে রেখেছে, এখন আর মঠ(মন্দির) দেখা যায় না। শুধু বট গাছের শিখর আর শিখর। দূর থেকে কেউ বুঝবেও না যে, এখানে একটি মঠ(মন্দির) আছে। আগে এখানে অনেকেই সকাল-সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালাত। দিতো সকাল-সন্ধ্যা ধূপের ধোঁয়া। বর্তমানে এখানে আর কেউ সকাল-সন্ধ্যা ধূপের ধোঁয়া আর মোমবাতি জ্বালায় না। হয় না কোনও বাৎসরিক মেলা বা কোন হরিনাম সংকীর্তন। অনেকের মুখে শুনা যায় যে, আগে এই মঠ বা মন্দিরে মনোবাসনা পূর্ণের আশায় এখানে অনেকেই মানত/নিয়ত বাঁধত। শোনা যায় নিয়ত বা মনের আশা পূর্ণও হয়েছে অনেকের। সমাধিস্থান মঠ থেকে গজে ওঠা বটগাছটি দেখে বুঝা যায় যে, পাগলা সাধুর সব জায়গা বেদখল হলেও এই মঠ বেদখল হতে দিবো না।
এই পবিত্র সমাধি স্থানের মঠটির বটগাছের শিকড়ের ভেতরে আছে বিশালাকার দু’টি সাপ। এই সাপ দু’টি সময় সময় অনেকেরই চোখে পড়ে। কিন্তু কাউকে ক্ষতি করে না। ধরে নেওয়া যায়, এরা পাগলা সাধুর পবিত্র সমাধি স্থানের মঠটির পাহারাদার। তাই দিনের বেলায়ও সমাধিস্থান মঠের সামনে গেলে কেমন যেন শরীরে কাঁপন ধরে। যাই হোক মঠের সামনে গেলে সবচেয়ে অবাক লাগে মঠটিকে আদর করে আঁকড়ে ধরে রাখা বটগাছটি দেখলে। যেন মায়ের আঁচল দিয়ে মঠটিকে ঢেকে রেখেছে। এখন আর কেউ মঠের একটা ইটাও খুলে নিতে পারবে না। প্রতিটি ইটের ভেতরে ভেতরে বটের শিকড় পেছানো আছে।
অনেকে বলে, “এই বটগাছটির জন্যই পাগলা সাধুর সমাধি স্থানের মঠটি রক্ষা পেলো। বটগাছটি না থাকলে তাদের ফেলে যাওয়া জায়গা সম্পত্তির সাথে এই সমাধি স্থানের মঠটিরও অস্তিত্ব হারাতে হতো।” যে যা-ই বলার বলুক! দুঃখের বিষয় হলো, এমন একটি পবিত্র স্থানের দিকে স্থানীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বী কেউ ফিরে তাকাচ্ছে না। যদি নিকটবর্তী এলাকার হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকলে এই পবিত্র সমাধি স্থানটির দিকে একটু খেয়াল রাখতো, তাহলে এখানেও অন্যান্য মন্দিরের মতন বাৎসরিক মেলা, হরিনাম সংকীর্তন, একনাম অনুষ্ঠিত হতো। পাগলা সাধুর সমাধি স্থানটিও থাকতো সবার মুখে মুখে, আর জায়গাটিও থাকতো আলোতে ঝলমল। কিন্তু না, কেউ আর এরকম উদ্যোগ নিচ্ছে না। অযত্নে আর অবহেলায় পড়ে আছে পাগলা সাধুর পবিত্র সমাধি স্থানের মঠটি।
জয়তু পাগলা সাধু, জয়তু বটগাছ।
loading...
loading...
নিতাই দা,
লেখাটি পরে ভালো লাগলো। বট গাছও যে বিভিন্ন ধরণের হয় সেটা জানতাম না। নারায়ণগঞ্জে আমাদের বাসার পাশেই বিরাট বড় একটা বট গাছ ছিল। আপনার লেখা পড়ে এখনতো আমার জানতে ইচ্ছে করছে ওটা কি ধরণের বট গাছ ছিল। চিত্তরঞ্জন কটন মিলটা কি এখনো চালু আছে ? আদর্শ কটন মিল? অনেক আগে একসময় নারায়ণগঞ্জের প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগে এই দুটো মিলের দল বেশ নামি দামি দল হিসেবে খেলতো। ঢাকার নামিদামি দলের প্লেয়াররা যেত এই দলগুলোতে খেলতে। এখনো ফুটবল লীগ হয় নারায়ণগঞ্জে ?এই মিলগুলোর দল খেলে লিগে ? অফটপিক হয়ে গেলো তবুও জানতে ইচ্ছে করলো হঠাৎ।
loading...
শ্রদ্ধেয় খন্দকার ইসলাম দাদা,কেমন আছেন? দাদা আমি ছোটবেলা থেকে আদর্শ কটন মিলের অভ্যন্তরে বড় হয়েছি। লেখাপড়া ১নং ঢাকেশ্বরী কটন মিলস্ দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে। বাবা চাকরি করতেন চিত্তরঞ্জন কটন মিলে। ছোটবেলায় আমি দেখেছি, আদর্শ কটন মিলস্, চিত্তরঞ্জন কটন মিলস্ আর লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলের ফুটবল টিম। ওইসব ফুটবল টিমের অনেক খেলাও উপভোগ করেছি। বর্তমানে ওইসব মিলের কোনও অস্তিত্ব নেই। তবে দাদা মিল আছে, মিলের জায়গাও আছে। মিলের ভেতরে কোনও মেশিনপত্র নেই। দেখতে মরুভূমির মতন খাঁ খাঁ করে। নিজের মনটাও খাঁ খাঁ করে ওঠে। আমি দাদা বর্তমানে লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলস্ সংলগ্ন আরামবাগ এলাকায় স্থায়িভাবে বসবাস করে আসছি। লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলের ফুটবল টিমের দু'একজন প্লেয়ারের সাথে বর্তমানে আমার খুবই ঘনিষ্ঠতা আছে। কিন্তু তাদের তো সেই আগের মতন চাকরি নেই। তাঁরা এখন কেউ ব্যবসা, কেউ গার্মেন্টসে চাকরি করে দিনাতিপাত করছে। ওইসব ঘটনা রটনা সবই স্মৃতি হয়ে থাকবে দাদা।
পরিশেষে জানতে ইচ্ছে করছে, আপনি এখন কোথায় থাকেন? আমাদের এলাকায় মাঝেমধ্যে আসেন কি? যদি আসেন, তো চৌধুরীবাড়ি বাসস্ট্যান্ড নেমে যেকোনো দোকানে এই অধমের কথা জিজ্ঞেস করবেন, এই নামে- নিতাই বাবু, চাকরি, মাল্টিপারপাস (সমিতি)। আমি প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই চৌধুরীবাড়ি বাসস্ট্যান্ড বা বাজারেই অবস্থান করি।
ধন্যবাদানন্তে অধম নিতাই বাবু।
loading...
একটি বটবৃক্ষ আমাদের যেমন ঐতিহ্য অথবা সামাজ বিবর্তনে কালের স্বাক্ষী, তেমনি এই স্বাক্ষী গুলোন আজ হারিয়ে যাচ্ছে আমাদেরই চোখের সামনে। আমি আমার জীবদ্দশায় এখনও এমনটা হতে দেখছি।
তথ্য সমৃদ্ধ পোস্ট উপহার দেবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ মি. নিতাই বাবু।
loading...
পোস্টের শব্দ সংখ্যা বেশি হয়ে গেছে শ্রদ্ধেয় কবি দাদা। ব্লগে পোস্ট জমা এবং প্রকাশ করে ভাবছিলাম, অনলাইন সাইটে বেশি সংখ্যা নিয়ে লেখার পোস্ট কি কেউ পড়বে? এটা ছিল আমার নিজস্ব ধারনা। আমার লেখনীয় পোস্ট পাঠক কতটুকু গ্রহণ করেছে, তা আমার জানা নেই! তবে আপনার সংস্পর্শে আমার পোস্টখানা সার্থক হয়েছে। বর্তমানে পোস্টখানা ব্লগের ফিচার পোস্টে দেখে আমি খুবই আনন্দিত। এজন্য আমি কৃতজ্ঞ । আপনার সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করি। আশা করি ভালো থাকবেন।
loading...
ধন্যবাদ মি. নিতাই বাবু।
loading...
আপনার সাথে প্রিয় ব্লগ শব্দনীড়ের জন্য এবং ব্লগের সকল লেখকবৃন্দের জন্য শুভকামনা সবসময়।
loading...
জয়তু পাগলা সাধু, জয়তু বটগাছ।
এমন কিছু ঐতিহাসিক ঐতিহ্য আমাদের গ্রামেও রয়েছে। কত কথাই না ঘোরে ফিরে মানুষের মুখে। পাঠকের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ নিতাই বাবু।
loading...
আমার লেখনীয় বেশি শব্দ সংখ্যার পোস্টখানা পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদের সাথে এক সাগরসম ভালোবাসা রইল, শ্রদ্ধেয় সৌমিত্র দাদা। আশা করি ভালো থাকবেন ।
loading...
যত্ন নিয়ে তৈরী করা পোস্টটি পড়লাম নিতাই বাবু দা। অসাধারণ।
loading...
আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় রিয়া দিদি। আশা করি ভালো থাকবেন সবসময় ।
loading...
খুব ভালো লাগলো।
অনেক ধন্যবাদ।
loading...
আপনাকেও অশেষ ধন্যবাদ! সাথে এক সাগরসম ভালোবাসাও থাকল শ্রদ্ধেয় নূর ইমাম শেখ বাবু দাদা।
loading...