গত বছর কবি দেলোয়ার হোসেন মঞ্জুর মৃত্যুর পর পর কবি মুনীরা চৌধুরী মারা গেলেন। যদিও মৃত্যুর কারণ রহস্যাবৃত তবু কবির মৃত্যু কাম্য না। ভালোবাসা অধরা। ছাই হয়ে যাবার পরেও জ্বলতে থাকে। বেদনাবোধে আক্রান্ত হয়েছিলাম। কোথা থেকে যেনো এক সুক্ষ্ণ ব্যথা বুকের ভেতর চিন চিন করে।
শাইমা আর ইসরা দুজন জমজ বোন। শাইমা পুলিশ হতে চায় তাই সে ব্যাচেলার অব পোলিসিং এ পড়ছে। ইসরা পড়ছে ফ্যাশন ডিজাইনিং এ সে তার ক্যারিয়ার ফ্যাশন ডিজাইনিং এ গড়তে চায়।
কবি মুনিরা চৌধুরীর মৃত্যুর খবর শুনে মনে হচ্ছিল এমন তীব্র সুন্দরী, যার জীবনে আপাত দৃষ্টিতে দেখলে সফল জীবন বলা যেতেই পারে। তিনি কেন এভাবে মরবেন ! শাইমাকে বললাম জানো সুসাইড করা খুব সাহসের কাজ। সে বলে তুমি কি তাই ভাবো ? আমি বললাম তাই তো হবার কথা। মৃত্যু যন্ত্রনা সইবার ও সাহস লাগে। মরলে তো মরেই গেলাম। শাইমা তখন বললো তার বাঁচতে ইচ্ছে করে না। সে কয়েকবার সুসাইডের এটেম্পট নিয়েছিলো। একবার গাড়ির সামনে দৌড় দিয়েছিলো আর একবার ঘুমের অষুধ খেয়ে – কিন্তু দুবারই বেঁচে গিয়েছে।
শাইমা বেশ সুন্দর। ওরা সিরিয়ান। সিরিয়ানরাও জাতিতে আরব। ওরা আরবী ভাষায় কথা বলে। দুইবোন ক্লাসে আসলেই হা হা হিহি করে অস্থির। সারাক্ষণ মোবাইলে কি সব দেখে আর হাসাহাসি করে। কিন্তু ওদের ভেতরের কষ্টটাকে দেখা যায় না। শাইমা বললো ওরা ৯ ভাইবোন। এক ভাই বিয়ে করে বউ বাচ্চা সহ মা বাবা ভাইবোনের সাথেই থাকে। বললাম শাইমা এত বড় পরিবার তোমাদের। বেশ আনন্দে কাটে সময় তোমাদের তাই না ?
শাইমা বললো না আনন্দে কাটে না। প্রতিদিনই নতুন নতুন ড্রামা। তাছাড়া ওর বাবা ভাই খুব সামান্য কারণে গায়ে হাত তুলে। সে তার স্ত্রীর উপর ও কারণে অকারণে গায়ে হাত তুলে – এসব কারণে সুসাইড করতে গিয়ে বিফল হয়েছিলো। শাইমা হিজাব পড়ে কিন্তু ওর বোন ইসরা এসব পড়ে না। তো আমি বললাম শাইমা তুমি হিজাব পড়ো তোমার বোন পড়ে না। এতে কি তোমার বাবা ভাই রাগ করে না ?
সে বলে যে করে কিন্তু ইসরা কথা শুনেনা কারো। ইসরার বিয়ে হয়েছিলো কিন্তু ওর স্বামী কথায় কথায় ইসরাকে মারে। অনেকদিন সহ্য করেছিলো কিন্ত সহ্যের সীমা অতিক্রান্ত হবার পরে ইসরা চলে এসেছে। ইসরার এক ছেলে আছে। সে আর স্বামীর ঘরে ফিরবে না। ইসরা দেখতে অসামান্যা সুন্দরী। ভাবলেও অবাক লাগে কি করে এমন অদ্ভুত সুন্দর মেয়ের গায়ে হাত তুলতে পারে !!
মজার কথা হলো ইসরা শাইমার বাবাও দুই বিয়ে করেছেন। আগের সংসারেও নয় ছেলেমেয়ে আবার ইসরা শাইমারাও নয় ভাইবোন। শাইমা বললো আগের সংসারের ভাইবোনরা তার মা’কে পছন্দ করে না। আমি বললাম দেখো তোমার বাবা যদি আবার বিয়ে করেন তোমরাও কিন্তু তার পরের স্ত্রী এবং তাদের ছেলেমেয়েদের পছন্দ করবে না। এটাই স্বাভাবিক।
সে মাথা নাড়লো – হুম ঠিক বলেছো –
ভাবছিলাম ওরা অস্ট্রেলিয়ার মত দেশে এসেও কেনো সভ্য হতে পারে না। কিন্তু ভেনেসা আমার অস্ট্রেলিয়ান বন্ধুর স্বামী লেবানিজ আরব। সে জানালো সে বরং পরিবারে আধিপত্য খাটায়। সত্যি হলো মানুষ পরিবেশে এসেও পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু রক্তের যে পূর্বপুরুষের ধারা অব্যাহত আছে তা থেকে মুক্তি পেতে তাদের কত সময় লাগবে ?
অস্ট্রেলিয়ার জারাকান্দা ফুল। নভেম্বরে এই ফুলের সিজন।
loading...
loading...
পড়লাম আপা। শুভ সকাল। আমি ভালো নেই। শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্ট।
loading...
আহা! এখন কেমন আছেন? ডক্টরের কাছে যচ্ছেন?
সুস্থ্য হয়ে উঠুন। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
loading...
ডাক্তার হয়ে ফিরলাম এখন।
loading...
মানুষ সুন্দর পরিবেশের সাথে তাল মিলিয়ে যতই পরিবর্তন হোক-না-কেন, বংশগত স্বভাবটা তাঁদের কিছু-না-কিছু থেকেই যায়। ইসরা শাইমাদের বেলায়ও তা-ই মনে হচ্ছে।
পুরো কাহিনীটা পড়লাম। খুবই ভালো লেগেছে। শুভকামনা থাকলো।
loading...
ধন্যবাদ। এজন্য ভালো পরিবার গঠনে জোর দিতে হবে
loading...
প্রবাসের জার্নাল নিয়মিত হলে আরও ভালো লাগবে বলে মনে হচ্ছে আপা।
loading...
আছি আপনাদের সাথে সুমন ভাই।ভালো থাকবেন।
loading...
দেশ বিদেশের ডায়েরী
loading...
ধন্যবা। ভালো থাকবেন
loading...