বৈষম্যহীন সমাজ কি গড়ে ওঠা সম্ভব বাংলাদেশে ? সম্ভব না। প্রকট একটা ভেদাভেদ এই দেশের মানুষের মধ্যে। এক দলের এতো বেশী অর্থসম্পদ আর এক দলের কিছুই নাই। এর মধ্যে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তের নীচেও যে শ্রেণী সেই দল বঞ্চিতশ্রেণী। তাদের শোষণ করার কি আছে ? তারা বেড়েই ওঠে কুকুর বিড়ালের মতো। বাংলাদেশে কুকুর বেড়াল বেড়ে ওঠে এর তার ঝুটা, উচ্ছিষ্ট খেয়ে। বাংলাদেশের সবচাইতে নীচের যে শ্রেণী সে শ্রেণী কি এই ভাবে বেড়ে উঠছে না ?
ওদের বেড়ে ওঠা রেলস্টেশনে, বস্তিতে, কানাগলিতে, ঘুপচিতে। ঘর নাই, থাকার জায়গা নাই, খাবারের সংস্থান নাই। এক বেলা আছে তো আর এক বেলা খাবার নাই। দিনে আনে দিনে খায়। কখনো দিনেও খাবার থাকে না। তাদের খাবার যোগার করতে হয় কঠিন পরিশ্রম করে। কঠিন পরিশ্রম করতে না চাইলে সহজ উপায় চুরি করা। আরো রিস্কিতে যেতে চাইলে হাইজ্যাক করা, ছিনতাই করা, ডাকাতি করা। ভিক্ষা করাও একটা পেশা হিসেবে নেয় কেউ।
তাদের ছেলেমেয়ে বেড়ে ওঠে বঞ্চনায়, তুচ্ছতায়, মায়ামমতাহীন এক প্রতিবেশে। এর ফলে যে জেনারেশন গড়ে ওঠে সে জেনারেশন হয় হিংসুক, চোর, ডাকাত, বিদ্বেষ-পরায়ণ, প্রতিশোধ-পরায়ণ। কাউকে শ্রদ্ধা করতে শেখে না, ভালোবাসতে শেখে না, যা থাকে তা হলো ঘৃণা ,অবদমন,বিদ্বেষ। উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিন্মবিত্ত শিক্ষিত সমাজের প্রতি ঘৃণা অবদমন নিয়ে তারা বড় হয়। এর ফলে আমরা পাই কালা জাহাঙ্গীর, অমুক মুরগী মিলন বা এসব ছেলেপেলেদের।
এই যে ক্লাস গড়ে উঠছে তাতে কি আমার আপনার কিছু যায় আসে না ? (সবাই যে খারাপ হচ্ছে তা নয় )
যায় আসে। যখন ছিনতাই বাড়ে, হাইজ্যাকিং বাড়ে, চুরি ডাকাতি বাড়ে, রেপিস্ট বাড়ে তখন আমরা গেলো গেলো বলে রব করি। কিন্তু এই যে একটা সমাজ বেড়ে উঠছে এর প্রভাবে সবাই কিন্তু ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। সমাজ অস্থিতিশীল হচ্ছে। আজকে এক নারী রাস্তায় গণপিটুনিতে নিহত হন। রেপিস্ট বাড়ছে। সন্ত্রাস বাড়ছে। আজকে কেউই নিরাপদ না এই দেশে।
যখন এক নারীকে অথবা সমাজের কাউকে গণপিটুনিতে মেরে ফেলা হয় তখন খেয়াল করলে দেখবেন সমাজের এই শ্রেণীর মানুষগুলোই অংশগ্রহণ করছে। তাদের ভেতর থাকে ঘৃণার লেলিহান শিখা। ফাঁক পেলেই সে বেরিয়ে আসে। আমার আপনার ছেলে, স্বামী কিংবা ভাই এতে অংশগ্রহণ করছে না। সাধারণ মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মানুষগুলো হিংস্র হয় না। কেনো না তার জীবন যাপনের জন্য অমানুষের মতো কঠিন পরিশ্রম করতে হয় না। খাবার অভাবে থাকতে হয় না। ঘুমের জায়গার জন্য শীত গ্রীষ্মকে পরোয়া করতে হয় না। অথচ তাদের করতে হয়েছে প্রতিদিন। করতে হয় প্রতিদিন। ঘুমের জন্যও পরিশ্রম। খাবার যোগাড়ের জন্য সংগ্রাম। সেই শিশুটি থাকতেই। ওদের কাছে আমরা আপনারা কি আশা করবো। যাদের দায়িত্ব আমরা কখনোই নেই নাই।
দেশের এক দল মানুষ যখন সবার টাকা নিজেরাই কুক্ষিগত করে তখন এক দল বঞ্চিত হবেই। দুর্নীতি না থাকলে হয়তো এমন চরম বৈষম্য সমাজে থাকতো না। অন্তত সমাজের এই শ্রেণীর অস্তিত্ব থাকতো না। এর সুদূর প্রসারী প্রভাবে সমাজের সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। হতে বাধ্য –
আপনি যিনি সমাজের উপর তলায় বসে আছেন সে আপনিও ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। আপনার নাভিশ্বাস উঠবে। আহা এই দেশে থাকা যায় না। মোটেই যায় না। অথচ এই দেশকে নরক বানানোর জন্য আপনারাই দায়ী।
loading...
loading...
ইগালাটারিয়ান সমাজ ব্যাবস্থা আমার কাছে ইউটোপিয়ার মতো মনে হয় কারন মানবজাতির বিবর্তন ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের পুরোপুরি বিপরীত ও সাংঘর্ষিক একটা কনসেপ্ট এটি। যদিও লকলীয়ান, জন রওলস, কার্ল মার্কস নানা ভাবে চেস্টা করেছেন যার মধ্যে জন রওলসের এফইও অনেকটা যুক্তিযুক্ত কিন্তু কার্ল মার্কসের মত এত জনপ্রিয়তা পায়নি।
একাডেমিকভাবে একসময় বেশ আগ্রহের বিষয় হলেও মানবজাতির মেধা ও স্বভাবগত পুঁজিবাদ অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে এই ইগালিটারিয়ান সমাজ ব্যাবস্থা কখনো সম্ভব হয়নি বলেই ফিদেল ক্যাস্ট্রো বা চীন বা সোভিয়েতদের নিজের অখন্ডতাকে পর্যন্ত বলি দিতে হয়েছে।
আবার এও ঠিক পুঁজিবাদ ও সুশাসনের সঠিক প্রয়োগে কল্যাণমূলক রাস্ট্র সম্ভবপর যার সবচে বড় উদাহরন, নরডিক, জাপানের মতো কিছু দেশ।
সুশাসন সুশিক্ষা এবং সচেতনতার বিকল্প নেই। থিওক্রেসি একটা ল্যামডাঙ্ক, বুজরুকি যার সবচে সস্তা উদাহরন আমরা কেউ থিউক্রেটিক রাস্ট্রে মাইগ্রেট করি না এবং যারা করেন তারা হয় ধর্ষিত হবেন নতুবা নির্যাতিত নতুবা নিঃস্ব।
এটাই সত্য।
loading...
আপনার মূল্যবান মন্তব্যে সমৃদ্ধ হলাম ।ভালো থাকবেন ।
loading...
বৈষম্যহীন সমাজ কি গড়ে ওঠা সম্ভব বাংলাদেশে ? সম্ভব না। প্রকট একটা ভেদাভেদ এই দেশের মানুষের মধ্যে থাকবেই। যেমনটা আলোচনা করেছেন, কেন থাকবে।
loading...
লেখাটা স্টিকি করার জন্য ধন্যবাদ মুরুব্বী । ভালো থাকবেন । ।
loading...
ধনী-গরবি ভেদাভেদ নিয়ে আলোচনা করলেন। সত্য বলতে এদের জন্য আমরাই দায়ী,সরকার তাদের জন্য উন্নত শিক্ষা উন্নত বাসস্হানের ব্যবস্হা করছেনা,গরিবরা গরিব হচ্ছে,ধনীরা আরো ধনী হচ্ছে। আবার এই ধনীরাই গরিবদের রক্ত চুষে ধনী হয়েছে। দুর্নীতি কমছেনা। শেষমেষ এই ভেদাভেদ থেকেই যায়। সমাধান কি? আমার দৃষ্টিকোণ থেকে আমি কখনোই এদেরকে ভেদাভেদ করিনি, তারাও মানুষ। গরিব বলে তাদেরকে হেয় করা আমাদের মোটেও ঠিক না,যারা করে তাদের দৃষ্টিকোণ ভিন্ন। সরকারের আমলা কামলাদের অনেক ব্যর্থতা রয়েছে এদিকে,গরিবদের জন্য প্রতি বছর পার্লামেন্টে বাজেট ঠিকি পাস হয়,তার একভাগও এরা পায়না,সব চলে যায় আমলা কামলা হায়েনাদের দখলে। এ জন্যই বলেছি ধনীরা গরিবদের রক্ত চুষেই ধনী হয়েছে। সঠিক পরিকল্পনা গ্রহন না করলে এই ভেদাভেদ থেকেই যাবে। আর দ্বিতীয় কথা হলো শুধু গরিবরাই এসব অপরাধের সাথে জড়িত না,ধনী ঘরের ছেলেরা নেশার টাকা যোগাতেও ছিনতাই,গুম, হত্যা ইত্যাদি চালায়। একটা কথা সত্য হলো ঐ সব বস্তি আর ঝোপড়া থেকেই আবার জন্ম নেয় শিক্ষক, বিজ্ঞানী,সংসদ সদস্য ইত্যাদি গুনি মানব। কারন তারা সমাজের আসল ও বাস্তব চিত্র দেখেই বড় হয়েছে,তারা তখন চেষ্টা করে সমাজকে পরিবর্তন করার,যতটুকু সম্ভব তারা তা করে নিজের স্বার্থে। তারপরেও আপনার আলোচনা ভালো হয়েছে,
loading...
ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য । ভালো থাকবেন।
loading...
নাগরিক অধিকার ক্ষুন্ন হতে থাকলে সমাজে পচন ধরে। এই পচন বা ক্ষত সারবে না।
loading...
সেই । সমাজের বর্তমান অবস্থা চিন্তিত হবার মতো । আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিরাপদে বেড়ে ওঠা রিস্কি হয়ে উঠছে ।
ভালো থাকবেন সুমন ভাই ।
loading...
বৈষম্যহীন সমাজ কি গড়ে ওঠা সম্ভব বাংলাদেশে ? সম্ভব না।
loading...
আসলেই সম্ভব না । এতো প্রকট বৈষম্য – ঘোচার আশা করাও যেনো বোকামি । ভালো থেকো তুবা ।
loading...
অবহেলিত এই ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থা থেকে আমাদের অন্তত মুক্তি নেই। আপনার আলোচনায় যুক্তি আছে আপা।
loading...
ধন্যবাদ সাজিয়া আপা । ভালো থাকবেন ।
loading...
দেশকে নরক বানানোর জন্য আমরা সকলেই দায়ী। সরকারযন্ত্রও দায়ী। দায়ী সুশাসনের অভাব।
loading...
ধন্যবাদ রিয়া । ভালো থাকবে।
loading...
আমাদেরি গড়া সমাজ ব্যবস্থায় আমাদেরি ক্রমশ এই নরকবাস।
loading...
আমাদের গড়া সমাজ না । একটা শ্রেণী যারা সমস্ত দেশের সম্পদ নিজেদের কাছে কুক্ষিগত করছে । এর দায় সমাজের মানুষগুলাকে জীবন দিয়ে দিতে হচ্ছে ।
loading...
সম্ভবত।
একটা সময় ছিল; খুব খারাপ। তারপর কিছুটা সময় সামান্য সহনীয়। তারপর আবার খুব বেশি অসহনীয়, আবার কিছুটা সহনীয় আবার কালবোশেখির মত–এইভাবে চলছে। এইভাবে বহুদিন যাবে; এক সময় এই ঝড় থেমে যাবে যা সম্ভবত আমরা দেখতে পারবোনা। তখন এই বৈষম্য সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে!
আসবেই!!
loading...
হুম মুক্তির অনন্ত অপেক্ষা । আমাদের আর কি করার আছে ।
loading...
প্রিয় দিদি আপনি অতি নিখুঁতভাবে বর্তমানের সংকট গুলো তুলে ধরেছে।। কিন্তু সংকট সমাধানের উপায় কি?
loading...
উপায় হলো দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়া । দেশের এই নিন্মবিত্ত সমাজের দিকে স্পেশাল নজর দেয়া । তাদের যথাযথ শিক্ষা, কর্মসংস্থান , বাসস্থানের ব্যবস্থা করা । এটা বলা সহজ কিন্তু সর্ষের মধ্যে ভুত থাকলে সে ভুত কিভাবে দূর করা সম্ভব সেটাই প্রশ্ন ।
ভালো থাকবেন ।
loading...
সময়টা বড্ড খারাপ যাচ্ছে আমাদের দেশে
loading...
সেই । ক্রমশ খারাপ হচ্ছে । ভালো থাকবেন।
loading...
নরকের স্বর্গে আছি।
loading...
আসলেই । ভালো থাকবেন।
loading...
বৈষম্যহীন সমাজ বাংলাদেশে গড় উঠবে এবং দ্রুতই। কারণ বৈষম্য এখন চরমে, ভেঙে পড়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। এতোটা বৈষম্য নিয়ে একটা সমাজ চলতে পারেনা। যখন সব বন্ধ হয়ে যাবে, তখনই নতুন পথ বের হবে। ইতিহাসেও এটাই হয়েছে বারবার
loading...
আপনার কথা সত্য হোক । ভালো থাকবেন।
loading...
একদিন আমি সরকার হবো।পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশ দিবো,জনগণ যদি কাউকে হত্যা করে এবং যে হত্যার শিকার হয়েছে সে নিরপরাধ এমনটা যদি প্রমাণিত হয় তাহলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সকল জনতাকে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করবে।
loading...
হুম । ভালো থাকবেন।
loading...
নাগরিক অধিকার বলে কিছু নেই। সমাজ আজ বড় মূল্যহীন, যার যা ইচ্ছে করে যাচ্ছে, মনে হয় যেন অভিভাবক শূন্য জাতী। লেখকের জন্য শুভ কামনা।
loading...