নীরার চোখে জল

নীরার সাথে এভাবে দেখা হয়ে যাবে কল্পনাও করতে পারিনি। যার সঙ্গে একসময় যৌবনের শ্রেষ্ঠ সময়গুলো ব্যয় করেছি তার নাম হলো নীরা। সবাই সবকিছু নিজের মতো করে পায় না। পেলেও সময় ও সুযোগের অভাবে ধরে রাখতে পারে না। আসলে মানুষের জীবনে এমন কিছু সময় আসে যখন সবকিছু তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়। নীরা নামের মেয়েটিও তেমনি একটা মরীচিকাময় সময়। যাকে আমি ধরে রাখতে পারিনি। তখন সবে মাত্র সন্ধ্যা নেমেছে। শাহবাগের ল্যাম্পপোস্টের লাইটগুলো এক এক করে জ্বলে উঠতে শুরু করেছে। জাদুঘরের সামনে থেকে শুরু করে টিএসসি পর্যন্ত গাড়ি আর রিক্সার বিশাল জ্যাম। গাড়ির ভেঁপু আর রিক্সার বেলের টিং টং আওয়াজে এই সন্ধ্যায় একটা অন্যরকম পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। অফিস শেষ করে সারা দিনের ক্লান্তি দূর করতে কেউ কেউ ব্যস্ত হয়ে পড়েছে প্রিয়জনের সানিদ্ধ্য পাওয়ার জন্য। রাস্তার ফুটপাত ঘেঁষেই অনেক দোকান। তাই স্বভাবতই ফুটপাত জুড়ে লোকজনের ভীড় চোখে পড়ার মতো। এই ভীড় ঠেলেই অনেককেই দেখলাম শরীর অদ্ভুত কায়দায় বাঁকিয়ে দ্রæত ছুটে চলেছেন স্বীয় গন্তব্য স্থানে।

নীরার সাথে দেখা হওয়া মাত্রই সেই পুরনো ব্যাথাটি আবারও অনুভূত হলো আমার। বুকের বাঁ পাশটি কেমন যেন একটু মোচড় দিয়ে উঠল। ঠিক বুড়োরা কাজ শেষে যেমন করে আরকি। দীর্ঘ সময় পর ছোট্ট শিশু মাকে দেখলে মায়ের মন অস্থির হয়ে যায় তেমন করে বুকের মধ্যে একটা দুলুনি অনুভূত হলো। শেষ কবে দেখা হয়েছিল সেই স্মৃতিটুকু ভুলে গেছি এতোদিনে। অনেক চেষ্টা করেও আর মনে করতে পারলাম না।

পাবলিক লাইব্রেরী থেকে বের হয়ে ফুটপাত ধরে হাঁটছি। উদ্দেশ্য আজিজ মার্কেট। অনেকদিন ধরে ওদিকে যাওয়া হয়না। লম্বা ব্যাগটা তখনও কাঁধের ওপর ঝুলানো। সেখানে সম্পদ বলতে আছে আমার লেখা একটা কবিতার পাণ্ডুলিপি, তারা শঙ্করের ’কবি’ উপন্যাস, আল মাহমুদের সোনালি কাবিন। আমার কাছে এই দুইটি বইকে চির যৌবনা বলে মনে হয়। যতবার পড়ি ততবার মুগ্ধ হই। ফুটপাত ধরে হাটার একটা বড় সুবিধা হলো মানুষের শরীরের বিচিত্র ঘ্রাণ পাওয়া যায়। আমার এক চাচা ছিল তিনি বলতেন, মানুষের ভীড়ে হাটলে মানুষ খুঁজে পাবি। মানুষকে চিনতে সুবিধা হবে তোর। সেই থেকে আমি মানুষের ভীড়ের মাঝে চলি। মানুষের শরীরের ঘ্রাণ নিই। আবার সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো ঐ মানুষের ঘ্রাণই। কিছু উটকো মানুষের উৎকট গন্ধে ফুটপাতের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে দিনকে দিন। যাক সে কথা। হাটছি একমনে। মানুষের শরীরের গন্ধ নিতে নিতে। জাতীয় জাদুঘরের সামনে আসা মাত্রই হঠাৎ একটা মেয়েলি কণ্ঠের ডাক কানে এলো।
-এই মাহমুদ শোন।
যেহেতু আমার নাম ধরেই ডাকছে তাই দু’কান খাড়া করলাম। ডান পা’টা সামনে রেখে বাঁ পায়ের ওপর ভর দিয়ে দাঁড়িযে থাকলাম কয়েক সেকেন্ড। কিন্তু মেয়ে কণ্ঠ মনে করে ভাবলাম হয়তো ভুল শুনেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন শেষ করে যে ছেলেটি এখনও কাঁধে ব্যাগ আর কবিতার বই নিয়ে ঘোরে তাকে আর যাই হোক কোন মেয়ে ডাকতে পারে না। তাই আবারও মাথাটা নিচু করে বাঁ পা’টা সামনে এগিয়ে হাঁটা শুরু করলাম।
– মাহমুদ, ডাকছি শুনছো না কেন? একদম ঘাড়ের উপর এসে কেউ একজন বলল। চমকে গিয়ে থমকে দাঁড়ালাম আমি। মাথাটি পিছে ঘোরানো মাত্রই থ হয়ে গেলাম। পাওয়ার ওয়ালা চশমাটি খুলে দুই-তিন মিনিট মেয়েটির চোখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। নিজের চোখকেই বিশ্বাস হচ্ছিল না। ভুল দেখছি না তো! চশমাটি হাত বদল করে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আমার মনে হলো, আমি টাইম মেশিনে চেপে ফিরে গেছি সুদূর অতীতে।
– একি! নীরা তুমি? কতোদিন পর ……. আর বলতে পারলাম না। আমার মুখের কথা ও কেড়ে নিয়ে বলল,
-‘কেমন আছো মাহমুদ, কোথায় থাকো, কি করো এখন?’
আমি বললাম, একসাথে তিনটি প্রশ্ন, ভাবছি কোন প্রশ্নের উত্তর আগে দেবো।
– তুমি সেই আগের মতোই আছো, একটু বদলাওনি। বলেই নীরা তার সেই চির পরিচিত হাসিটা হাসলো।
আমি ওর শরীরের দিকে তাকাই। সেই চিকনা মেয়েটি এখন কত মোটা হয়ে গেছে। কাল রংয়ের একটা পাতলা শিপন শাড়ি পড়েছে সাথে ম্যাচিং করে বøাউজ। ফর্সা মেয়ের গায়ে কালো শাড়ি বেশ সুন্দর মানিয়েছে। আগের মতো হলে হয়তো বলতাম, তোমাকে যা সুন্দর লাগছে না নীরা, মনে হচ্ছে এখনই কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করে ফেলি। কিন্তু এই মূহুর্তে সেটা সম্ভব নয়। আগের সেই লম্বা চুলও নেই। কেটে একদম ছোট করেছে। অথচ ক্যাম্পাসে একসময় ওর চুল ছিল বিখ্যাত। চুলের কারণেই কত ছেলে ওর পিছু ঘুরঘুর করতো। আর আমি ওকে দেখা মাত্রই জীবনান্দের বিখ্যাত সেই কবিতার লাইনটি বলতাম. ‘চুল তার কবে কার অন্ধকার বিদিশার নিশা।’

হাতে ঘড়ি পড়া একদম পছন্দ করতো না ও। কিন্তু এখন হাতে শোভা পাচ্ছে একটি দামি ব্রান্ডের ঘড়ি। যে মেয়েটি প্রতিদিন কপালে কালো টিপ পরে আসতো এখন সেখানে কিছুই দেখতে পেলাম না। সবকিছুতে পরিবর্তন আসলেও তার চোখ দুটোতে তেমন কোন পরিবর্তন দেখতে পেলাম না। শুধু চোখের মধ্যে আগে যে সাগর দেখছিলাম সেটা এখন নেই। বড়, গোল ঐ চোখদুটি মাঝে থাকা সাগরে একসময় কতো সাঁতার কেটেছি আমি। এই চোখ এবং চুল দেখেই আমি একদিন নীরার প্রেমে পড়েছিলাম। সে কথা মনে হলে এখনও মাঝে মাঝে বুকের ডান পাশটা চিনচিন করে ব্যাথা করে।

প্রথম দিকে আমার ইচ্ছে হচ্ছিল না ওর সাথে কথা বলতে। কিন্তু সে একরকম প্রায় জোর করেই হাত ধরে আবারও টেনে নিয়ে গেল পাবলিক লাইব্রেরীর ক্যাফেটেরিয়ায়। তখন সন্ধ্যা পেরিয়ে গেছে। ল্যাম্পপোষ্টের লাইটগুলো উজ্জ্বল থেকে আরও উজ্জ্বলতর হচ্ছে। চাঁদের আলোও মাঝে মধ্যে এই যান্ত্রিক শহরে বড়ই বেমানান লাগে। কে বা আছে এমন! যে আজকাল চাঁদের আলোর দিকে তাকিয়ে থাকে।

মুখোমুখি বসে আছি দুজন। কারো মুখে কোন কথা নেই। নীরার হাতদুটি ওর কোলের ওপর রাখা। মেরুন রংয়ের ভ্যানিটি ব্যাগটা পাশের চেয়ারে। আমি টেবিলের ওপর দুই হাত বিছিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছি। এই মুহূর্তে নীরাকে গিলে খাচ্ছি আমি। ওর টলটলে পানির মতো স্বচ্ছ গাল, ঠোঁট, চিবুক বেয়ে নেমে একেবারে বুকের ওপর এসে চোখ দুটো স্থির হয়ে গেলে ও একটু অস্বস্থিতে পড়ে যায়। নড়েচড়ে বসে নীরা। হয়তো বুঝতে পারছে যে, একটা পুরুষ তাকে চোখের ইশারায় ভোগ করতেছে। মেয়েরা এই বিষয়গুলো খুব ভালো ভাবে বুঝতে পারে। আমি আবার ওর চোখের দিকে তাকাই। এই চোখ একটা সময় আমাকে পাগলের মতো ওর কাছে টেনে নিয়ে আসতো। ওর চোখের দিকে তাকিয়ে কতটা বিকেল যে পার করে দিয়েছি তার হিসেব নেই। আমি আজও হাজার মানুষের ভীড়ে এই চোখ দুটোকে খুঁজে ফিরি।

– কিছু খাবে? নীরবতা ভেঙ্গে প্রশ্ন করি। ও নিঃশ্চুপ। হাত দুটো আগের মতোই কোলের ওপর রাখা। তবে আঙুলে আঙুলে ঘষছে এখন। বেশ কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর বলল, তুমি একবারের জন্যেও জিজ্ঞেস করলে না আমি কেমন আছি?
– তোমাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে তুমি বেশ সুখে আছো। আমি ওর চোখের উপর থেকে দৃষ্টি না সরিয়েই বললাম।
– তোমরা ছেলেরা না শুধু নারীদের উপরের সৌন্দর্য দেখেই ভাবো মেয়েরা কত্ত সুখী। অথচ বুকের ভিতরে যে চৈত্রের খরা বইছে সেটা একবারও দেখার চেষ্টা করো না।
– তুমি তো জান, আমি যে শুধু তোমাকে দেখি তাই নয় তোমার ভিতরটা পর্যন্ত আমি পড়তে পারি। কবিতার মতো। তোমাকে অনুবাদ করতে পারি, আবৃত্তিও করতে পারি।
– সেটা হয় তো আগে পারতে কিন্তু এখন পার না।
– এখন আর আগের মতো চেষ্টা করে দেখি না যে। তুমি চলে যাওয়ার পর থেকেই এসব সাধনা বাদ দিয়েছি।
– চেষ্টা করে দেখ মাহমুদ, তোমার কি মনে হয় আমি অনেক সুখে আছি? আকুল হয়ে জানতে চায় নীরা।

আমি আবার নীরার চোখের দিকে ভালো করে তাকাই। তবে চক্ষু ডাক্তারের মতো করে নয়, একজন সত্যিকার প্রেমিক হয়ে যাই যেন আমি। একটা গভীর আত্মবিশ্বাস ফুঁস করে ওঠে বুকের ভেতর। যে চোখ এক সময় প্রতি নিয়ত আমার সাথে কথা বলতো, খেলতো, দুষ্টুমিতে ভরা ছিল যে চোখ সেখানে দেখি রাজ্যের হতাশা। ভরাট, গোল দুটি চোখ না পাওয়ার বেদনায় কেমন যেন শূন্য শূন্য মনে হচ্ছে আমার কাছে। চুপসে গেছে শীতে ঝরে যাওয়া পাতার মতো। আমি জানি আর কিছুক্ষণ ওর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকলে বর্ষার ঢল নামবে দুচোখে। আমি আমার চোখ ওর কোলের কাছে নামিয়ে আনলাম। হাত দুটো আগের মতোই কোলের ওপর রাখা। ভ্যানিটি ব্যাগটা কখন যে কোলের ওপর টেনে নিয়েছে টের পাইনি। আমি কি বলবো ভাষা হারিয়ে ফেললাম।
– তুমি হয়তো সম্পূর্ণ দোষ আমার ওপর চাপিয়েছো। বিশ্বাস করো, আমি তোমার সাথে বিন্দুমাত্র প্রতারণা করিনি। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার পর আমি চলে যাই সাভারে। মামার বাসায়। তুমি তো জান আমার মা-বাবা বেঁচে নেই। খুব ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছি। পরে মা আমাকে নিয়ে যান মামার বাসায়। সেখানেই বড় হতে থাকি। যখন আমার বয়স পাঁচ বছর তখন মা’ও আমাকে ছেড়ে চলে যান। তারপর থেকে মামাই আমাকে মানুষ করেছেন, পড়ালেখার খরচ দিয়েছেন। উনা কে আমি পিতার মতোই সম্মান করতাম। বাবার আদর কি জিনিস আমি জানতাম না। মামা আমাকে এমন আদর, স্নেহ করতেন যে, বাবার কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। জানো, এতোদিন পর বাবাকে খুব বেশি মনে পড়ছে। বাবা বেঁচে থাকলে হয়তো আমার জীবনটা আরও অনেক সুন্দর হতো। আমার নির্ভরতার শেষ ঠিকানা ছিল আমার মামা অথছ সেই মামার বাসায় গিয়ে আমার জীবনে কালো অধ্যায়ের শুরু। বাসায় গিয়ে দেখি মামাতো ভাই আবীর ছাড়া বাসায় কেউ নেই। এই আবীরের সাথে আমি ছোটবেলায় কতো খেলা খেলেছি, দুষ্টমি করেছি। আমি বাসায় ঢোকা মাত্রই তার চেহারায় একটা পরিবর্তনের আভাস পেলাম। কয়েকদিন মামাকে বলতেও গিয়েছি বিষয়টা কিন্তু মামা কানে তোলেননি। মামিকে বলতে গিয়ে একদিন অপমানিত হলাম। শেষ যেদিন আমি চলে আসবো সেদিনই ঘটলো দুর্ঘটনাটি। অনেক চেষ্টা করেও আমি ওর হাত থেকে সেদিন মুক্ত হতে পারিনি। ধর্ষিত হলাম। কিন্তু সব দোষ এসে পড়লো আমার ওপর। যে দিন এ পরিস্থিতির শিকার হলাম তার পরের দিনেই মামা আমার বিয়ের ব্যবস্থা করলেন। ছেলে গুনশানে থাকে। ছেলের বাবার অঢেল ধন-সম্পদ। আমার বিয়ে হয়ে গেল। কান্না জড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলতে থাকে নীরা।
– থাক, আর বলতে হবে না। আমি থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করি।
– শুনতে ভাল লাগছে না বুঝি?
– তুমি এ অবস্থায় বিয়ে করলে কেন? থানায় যেতে পারতে, মামলা করতে পারতে। আমি বেশ উত্তেজিত হয়ে পড়ি।
– এ জন্যই তো বলি, মেয়েদের দুঃখ ছেলেরা কোনদিন বুঝে না।
– এখন তোমার কি অবস্থা? অস্থির হয়ে জানতে চাই আমি।
– এখন আমি অনেক ভাল আছি। বাড়ি-গাড়ি সব হয়েছে। স্বামীর মতো যদিও আমার গুলশানে কোন বাড়ি নেই তবে একটা ডুপ্লেক্স ফ্লাট কিনেছি। লম্পট স্বামীকে ডিভোর্স করেছি। আর নতুন একটা পেশা বেচে নিয়েছি। কলগার্ল! মানুষকে আনন্দ দেয়াই এখন আমার প্রধান কাজ।
ওর মুখ থেকে এমন কথা শুনে আমি পাথর হয়ে গেলাম। হাতে রাখা গ্লাসটি মুখে তুলতেও ভুলে গেলাম। কি বলে মেয়েটা, মাথা ঠিক আছে তো? নিজের মনেই বলি। উদাস হয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি আকাশে মেঘ করেছে। নীরার বেদনায় বুঝি মন খারাপ হয়েছে তারও। কিছুক্ষণ পরেই ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো। থেকে থেকে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে আকাশে। দমকা হাওয়ায় ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে এখন। হঠাৎ আমার হাতের মধ্যে উষ্ণ ছোঁয়া পেলাম। দেখি আমার হাত নীরা হাতের মুঠোয় বন্দি। আগে যেভাবে আমার আঙুলগুলো নিয়ে ওর হাতের মুঠোয় খেলা করতো ঠিক সেভাবে খেলছে। চোখের দিকে তাকিয়ে দেখি অঝোর ধারায় কেঁদে চলছে মেয়েটি। বর্ষার সাথে পাল্লা দিয়ে যেন পানি ঝরছে নীরার চোখ থেকে। আমি উঠে ওর পাশে গিয়ে বসলাম। মাথাটি বুকের কাছে টেনে নিযে বললাম, যে চোখ দেখে আমি তোমাকে ভালোবেসে ছিলাম সে চোখে বর্ষার পানি মানায় না নীরা। ঐ চোখে আমি আবার সমুদ্র দেখতে চাই, আগের মতোই সাঁতার কাটতে চাই তোমার চোখের গভীর সমুদ্রে। আমি তো এখনও বেঁচে আছি তাই না?

নীরা আমাকে আরও জোরে চেপে ধরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে। আমি আর বাঁধা দিই না। কারণ আমি জানি, তার এই কান্না কষ্টের নয় আনন্দের। প্রিয় মানুষ কে কাছে পাওয়ার আনন্দ।
নীরার হাত ধরে ভরা বৃষ্টিতে বাইরে বের হয়ে আসি। ভিজতে থাকি দুই জন। আনন্দে অবগাহন করতে থাকি।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

১টি মন্তব্য (লেখকের ০টি) | ১ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ১০-১২-২০২০ | ২০:০৫ |

    অসামান্য একটি অণুগল্প। অভিনন্দন প্রিয় কবি মি. মোকসেদুল ইসলাম।

    GD Star Rating
    loading...