একঃ
আমি কবিতা ভালোবাসি এবং অণুগল্পের মুগ্ধ পাঠক। তবে ভুল শব্দের কবিতায় আমার মাথা ধরে; গান বা কবিতার চরণেপূর্ণ গল্পে আমি বিরক্ত হই। কারণ জীবনের গল্পে (মানে আধুনিক গল্পে) গান কবিতা অতি বেমানান। বাস্তবে কারো দিন কি গান বা কবিতা দিয়ে শুরু বা শেষ হয়? কথার শুরু বা শেষে কি আমরা গান গাই, কবিতা বলি?
মুক্ত ছন্দে লেখা কবিতা আমার বেশি পছন্দ। অর্ধ ছন্দে লেখা কবিতা পড়তে আগ্রহ পাইনা। ভুল বানান বিরক্তি জাগায়। নিজে ভুল করলে লজ্জিত হই।
যখন কবিতা পড়ি এর ব্যঞ্জনা, বিনির্মাণ, রহস্যময়িতা, বহুমুখিতা, সমসাময়িকতা এবং চিত্রকল্প নিয়ে ভাবি। কবিতা যেভাবে আমার ভিতর ছাপ রেখে যায় সেভাবেই তার একটা ছায়া আমি কবিতায় জমা রাখি।
মুগ্ধতা প্রকাশে আমি অকৃপণ হই যখন মনমতো কবিতা পাই।
দুইঃ
মনলতাকে একদিন সাগর মহাসাগর সৃষ্টির ইতিহাস বলছিলাম। তবে তার আগে এই মহাবিশ্ব যে শিম বিচির মতোন ছিল; বিগব্যাং ওটাকে মহাবিশ্বে রূপান্তর করেছে সেটাও ওকে বলতে ভুলিনি।
অণুগল্প আসলে এই মহাবিশ্বের সমান; তবে বিগব্যাং ঘটার আগের রুপে। মানে শিম বিচির মতোন। এই “অণু” মানে ছোট নয়। তাই যদি হতো তাইলে অণুগল্প ইজ ইকুয়াল্টু ছোটগল্প হয়ে যেতো। এই “অণু” শব্দটা পদার্থের সর্বনিম্ন গাঠনিক একক পরমাণু থেকে নেয়া হয়েছে মনে করলে বেশি অর্থবহ হয়। মহাবিশ্বের সমান একটা গল্পকে ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে যখন আর ছোট করা যায়না তখন সেটা অণুগল্প হয়। সেটা তিনশ শব্দের হতে পারে, পাঁচশ শব্দের হতে পারে, পাঁচ পাতারও হতে পারে। তবে সেটাকে ভেঙ্গে আর কোনভাবেই ছোট করার উপযোগিতা থাকবেনা- এই শর্তটা খুব জরুরি। এর আরেকটা মানে হল খুব ছোট কাহিনি নিয়ে লেখা গল্প অণুগল্প নয়।
লক্ষাধিক সদস্যের একটা গ্রুপে সেদিন এক গল্পকারের অণুগল্পের পাঠক সংখ্যা দুই অথবা চার দেখলাম (লাইক সংখ্যা)। বিন্দুর সমান একটা কাহিনিকে উনি যেন মহাবিশ্ব বানাতে চেয়েছেন। আমার পছন্দ হলোনা। লক্ষাধিক সদস্যের অনেকেই সম্ভবত পছন্দ করেননি। আবার এর বিপরীতে এমন কিছু গল্পকার দেখেছি যারা বিগব্যাং কে ঠেকিয়ে দেয়ার মতো শক্তি নিয়ে অণুগল্প লিখেন। পরম মুগ্ধতা নিয়ে তখন ভাবি, সাহিত্যের অনেক বড় কারিগর সম্ভবত এইসব অণুগল্পকার।
তিনঃ
তবে বিবেক-আন্ধা মানুষ যতো ভালো গল্প বা কবিতাই লিখুক না কেন তাদের লেখাগুলি পড়ার আগ্রহ আমার খুব একটা হয়না। বিশেষ করে রাজনৈতিক লেখাগুলি যথেষ্ট ইতিহাস মীমাংসিত না হলে এবং তাতে লেখকের চোখের দৃষ্টির সাথে তার বিবেকের সংযোগ না পেলে আমি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেই; রাজনৈতিক পত্রিকাগুলির প্রতি যেমন। চোখে দেখা একটা ঘটনা বলি। ক্রিয়েটিভ লেখকদের একটা গ্রুপে এক নতুন এডমিন কয়েকটা ঐরকম (রাজনৈতিক) পোস্ট দিলেন; এতে গ্রুপটার প্রতি আমি আগ্রহ হারিয়ে ফেললাম। কয়েক মাস পরে দেখি গ্রুপ্টা কেমন একলা হয়ে গেছে। আমি জানিনা, আমার মতো করে ঐ গ্রুপের অনেকেই ভেবেছিলেন কিনা।
চারঃ
চোখের সামনে বেশ কিছু কবি আছেন যারা ভীষণ উন্নত মানের। পরম মুগ্ধতা নিয়ে তাদের লেখা পড়ি। আমার অন্তরের সব কথা যেন তাদের কবিতায় থাকে। তাদেরকে আমার অন্তর্যামী মনে হয়। কারণ অন্তরে বিচরণ করে আমার কথাই উনারা লিখেন। এদের কেউ কেউ দুই বাংলার টপ কবিদের মানের অনেক কবিতা লিখেছেন।
আমি যখন অণুগল্প পড়ি গল্পকারের না-লেখা অংশে বেশি গল্প খুঁজি। সত্যিকারের অণুগল্পকারের না-লেখা অংশ পড়ে শেষ করা যায়না। উন্নত অণুগল্প হলো আমার মনের প্রোটিন, জল, ভিটামিন। আর উন্নত কবিতা হল আমার চোখের জলে প্রাণের প্রতিবম্ব। সেই জল আনন্দের জল; বেদনারও। চোখের পলকের নাচনে আমি কবিতার ছন্দ পাই; আর চোখের গহীনে সেই প্রতিবিম্বের স্রষ্টাকে।
loading...
loading...
'মুক্ত ছন্দে লেখা কবিতা আমার বেশি পছন্দ। অর্ধ ছন্দে লেখা কবিতা পড়তে আগ্রহ পাইনা। ভুল বানান বিরক্তি জাগায়। নিজে ভুল করলে লজ্জিত হই।' সহমত।
loading...
অশেষ ধন্যবাদ দিদি!
loading...
কিন্তু ভাইজান, আমি যে অনু বা পরমানু গল্প লিখতেই পারিনা কেমন করে যেন অন্তত ৮/৯ হাজার শব্দ হয়ে যায় বুঝতেও পারিনা! জানি এত বড় গপ্প মানুষের পড়ার সময় নাই তবুও নিজের মনের চিন্তা ভাবনাগুলি গুছিয়ে রেখে দেই। আর একটা কথা, আমি কবিতা লেখার ব্যকরণ মানতে পারিনা। আবোল তাবোল হাট্টিমা টিম যা মনে আসে তাই লেখি।
সুন্দর ব্যবচ্ছেদ এর জন্য অনেক ধন্যবাদ সুপ্রিয়।
loading...
হাহাহাহা , খালিদ ভাই!
আপনার গল্প কেউ পড়তে গেলেই আপনি মন্ত্রযুক্ত চাল ভাজা খাইয়ে দেন শুনেছি। তখন পাঠক মন্ত্রমুগ্ধের মতো পুরোটা গল্প পড়ে তারপর নিঃশ্বাস ছাড়ে!
loading...
আপনার যা একান্ত আমার বেলায় আমার কাছে তা নিজস্ব।
বহুকাল চেষ্টা করেছি এমন ভাবে ভাব প্রকাশের জন্য। শব্দ স্বল্পতার কারণে পারিনি।
loading...
লেখায় কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে । "একান্ত নিজস্ব" বলতে বুঝিয়েছি, পোস্টের কথাগুলি আমার একান্ত নিজের ভাবনা থেকে বলেছি তাই একমত না হলেও অখুশি হবনা
;অথবা ভিন্ন মত থাকলে তা স্বাগত জানাই।
আপনার ভাবনায় খুশি হয়েছি মুরুব্বী !
loading...
লেখাটাকে বিশেষ নির্বাচনে স্থান দেয়ার জন্য শব্দনীড় এবং সঞ্চালককে অশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি !
loading...
ভুল বানান বিরক্তি জাগায়। নিজে ভুল করলে লজ্জিত হই।
* আপনার আত্মকথন আপনার ব্যক্তিত্বেরই পরিচায়ক। আপনাকে সাধুবাদ জানাই। ভালো থাকুন সবসময়…



loading...
মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ প্রিয় কবি !
loading...
নিজের পাঠাভ্যাস বেশ সরল ভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।
loading...
আপনার মন্তব্য আমার ভালো লেগেছে ।ধন্যবাদ !
loading...
মহা সমস্যায় আছি। এই ব্লগে কমেন্ট লিখতে গেলে অক্ষরের মাথায় অক্ষর জমে মহাজট "পাাাাকায়কক( ঠিক এমন)" পাকায়। পরিিিিত্যা গত্ত পরিত্রাণের উপাায় কি? কমেন্ট করতে পারছি না
loading...
কপিপেস্ট ও করা যায় না।
loading...
চমৎকার কিছু অনুভূতির অসাধারণ প্রকাশে মুগ্ধ হলাম । এখানে অনেকগুলো কথা অনেক পাঠকের সাথে মিলে যায় যেগুলো উল্লেখ করতে গেলে কপিপেস্টের প্রয়োজন পড়ে। অনেক কষ্্টে এটুকু লিখলাম। যা লিখতে চাইলাম তার কিছুই পারলাম না।
loading...
মন্তব্যে মুগ্ধ হয়েছি সুকবি। অশেষ ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা !
loading...
যখন কবিতা পড়ি এর ব্যঞ্জনা, বিনির্মাণ, রহস্যময়িতা, বহুমুখিতা, সমসাময়িকতা এবং চিত্রকল্প নিয়ে ভাবি। কবিতা যেভাবে আমার ভিতর ছাপ রেখে যায় সেভাবেই তার একটা ছায়া আমি কবিতায় জমা রাখি।
মুগ্ধতা প্রকাশে আমি অকৃপণ হই যখন মনমতো কবিতা পাই।
অসাধারণ!…
loading...
মন্তব্যে মুগ্ধ হয়েছি।
অনেক ধন্যবাদ !
loading...
আপনার পছন্দের সাথে আমার পছন্দের অনেক মিল রয়েছে। তবে আজকের দিনের লেখক কবিরা কোণ নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা করেন না। তারা মনে করেন তিনি যেটাই বলবেন সেটাই কবিতা, সেটাই গল্প। পাঠক কি মনে করল, কি ভাবল তাতে উনার কিছুই এসে যায় না।
আমাদের কবি সাহিত্যিকরা যদি নিজস্ব গন্ডির বাইরে এসে সঠিক নিয়ম কানুন মেনে তাদের লেখনি গুলো উপস্থাপন করেন, তবে আমার মনে হয় বাংলা সাহিত্য এক নতুন দিগন্তের দিকে এগুবে। আর তা না হলে, পাঠকের চেয়ে লেখকের সংখ্যাই বেশী থেকে যাবে আজিবন।
অনেক ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
loading...
খুব ভালো বলেছেন।
মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ !
loading...