রাত বাড়ছে, বিদঘুটে অন্ধকার, আলোর চুকেছে পাঠ;
মাস্টার, ও মাস্টার—
তোমার উপরে ফিটফাট, ভিতরে সদরঘাট।
হা হা হা …
বাতাসে আসে বিদ্রুপের ধ্বনি,
অন্তরাত্মা কেঁপে উঠে; চারদিকে শব্দের খিল খিলানি।
ভেসে উঠে এক নারীর ছায়া
পিছনে তাড়া করে বেড়ায় অতীত স্মৃতি,
কণ্ঠটি বড়ই চেনা
হাতছানি দেয় নিষ্ঠুর নিয়তি।
সেই যে, পড়ার টেবিলে—
ছাত্রীটি— বীজ গণিত, পাটি গণিতের ফাঁকে,
অংক কষে সংসার জীবনের, রঙিন স্বপ্ন আঁকে।
‘যেখানে শোভা পাবে— একটা ছোট ঘর, সন্তানাদি
বাড়ির আঙিনা জুড়ে শিউলি ফুল আর মেঝেতে শীতল পাটি,
যাতে আসন পেতে মধ্যমণি হবে সামনে বসে থাকা মানুষটি।
হাতে হাত, মননে, প্রণয়ে, সঙ্গমের স্বপ্ন করে যতন,
জ্যামিতির কাটায় দৈর্ঘ্য—প্রস্থে মাপে সংসারের আয়তন।
এটা বয়সের আবেদন, আবেগী মনের বাসনা
নয়ন যুগল হয় স্বপ্নভাসি,
বইয়ের পাতায় বড় বড় অক্ষরে ভাসে
মাষ্টার ‘তোমায় ভালবাসি’।
টেবিলে শব্দ হয় ঠকঠক করে, সম্বিত ফিরে পায়—
‘মনযোগ দাও হে’ বইয়ের পাতায়,
সে যে বুঝে না, যাকে ঘিরে এত সব আয়োজন
সে কি না ব্যস্ত নিয়ে অন্যকিছু; মেকি যা তা’য়।
এত পানসে কেন? রঙ রস কিছুই কি স্পর্শ করে না!
মনে মনে আওড়ায়— ‘বড়ই বেরসিক! কিছুই বুঝে না,’
যাও, যাও আজ ছুটি!
সমাধান করে দিব অন্য কোনদিন, শরীরটা আজ ভাল যাচ্ছে না।
ছাত্রীর মাঝেও যে কিছু চলছে; সেটি বুঝতে হয় না বাকি,
শারীরিক অক্ষমতা; সেটা প্রকাশ করার নয়
ভালভাল কেটে পড়ি; মায়ার বন্ধন দিয়ে ফাঁকি।
কিছুদিন পর খবরে আসে ‘সুইসাইড’
দাগ কেটে যায়; এতসব খবরের ভীড়ে,
চাওয়া ছিল— ‘তাতে কি আসে যায়, সে সুখী হউক
অন্য কোথাও, অন্য কোন নীড়ে।’
এই মৃত্যুর জন্য কি আমি দায়ী? নিছক ছেলে মানুষি বৈকি!
শূন্যতাকে করে আপন,
বুকে খা খা করে একাকিত্ব, বড়ই পীড়া দেয় যাযাবর জীবন যাপন।
হৃদয় পোড়া আঘাত
আজ হয়েছে ভীষন ক্ষত,
কামনা বাসনা ছাড়া নিরাশ এই জীবন সংসার
নিষ্ফলা, অকেজো বৃক্ষের মত।
loading...
loading...
লিখাটি পড়ে বেশ মুগ্ধ হলাম। অনেক সুন্দর লিখেছেন প্রিয় লেখক। সত্য যে, অনেকদিন পর আপনার লেখা পড়লাম। তাইতো প্রত্যাশা থাকবে এভাবেই আরো নিয়মিত হবেন।
একরাশ অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা রইলো। 
loading...
অসাধারণ!
বাস্তবতার যোগসূত্রে বাণীবিন্যাস অতুলনীয়…
loading...
চমৎকার অনেক শুভ কামনা জানাই
loading...