৭১।
নিয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে বিসমিল্লা বলে টাকাটা পকেটে ভরে উপরে উঠে আসলেন। এসেই আবার নিঃসঙ্গ একা। টাকাটা পকেট থেকে বের করে দেখলো। টাকা নয় পাউন্ড, পাউন্ড স্টার্লিং। ব্রিটেনের রানীর মাথার ছবি আঁকা ব্রিটিশ পাউন্ড। বিশ্বের সবচেয়ে দামি নোট। যার এক পাউন্ডের মূল্য বর্তমানে বাংলাদেশের বিরানব্বই

৭০।
মনে আর কত থাকবে? তুমি তো জান না মারুফ আমার মনে কত বোঝা বয়ে বেড়াই। এতো বোঝা মাথায় রেখে আর কত মনে রাখা যায়? এই যে কথায় কথায় ভুলে যাই আমি এমন ছিলাম না। আমার মা বাজার থেকে কখনো কিছু আনার কথা বললে সে

৬৯।
নিচে চেঁচামেচির শব্দ শুনে উঠে দাঁড়ালো। লোকজন উঠছে। বারোটা বাজার দশ মিনিট বাকি। কাজের পোষাক পরে নিচে নেমে এলো। কিচেনের লাইট জ্বালিয়ে গত দুই দিনের অভিজ্ঞতায় যা যা করতে হবে তা করতে করতে কবির নেমে এলো।
-ভাইছাব ঐ মাঝারি ডেকচিটায় চার পট চাউল আনেন।
-আচ্ছা আনছি,

৬৮।
সকালে সাড়ে দশটার দিকে ঘুম ভাংল, তারপরেও কিছুক্ষণ চুপচাপ শুয়ে রইলেন। ভাল ঘুম হয়েছে কিন্তু তবুও কেন যেন মাথা ঝিম ঝিম করছে। উঠে ওযু করে এসে নামাজ পড়ে ভাবছিলেন কি করবেন তারতো কোথাও যাবার জায়গা নেই। সবাই ঘুমে, এক জানালা ছাড়া আর কোথায় যাবেন?

৬৭।
শুয়ে শুয়ে সারাদিনের ছবি ভাবতে চাইলেন। না, ভেবে আর কি হবে? এই ভাবেই যখন চলবে চলুক না! কি আছে ভাবার? তার চেয়ে মেনে নেয়াই ভালো। মেনে নিতে না পারলে কষ্ট আরও বাড়বে। মনের মধ্যে কোথায় যেন এই মেনে নেয়াতে একটু দ্বিধা লাগছে। কিন্তু কেন?

৬৬।
গতরাতের মত আজও প্রায় সাড়ে এগারোটার পরে আনোয়ার এসে হাঁক দিল মারুফ আটাও আটাও শেষ কর। এবার শুরু হলো গুছানোর পালা। ফ্রিজ থেকে যা যা বের করেছিলো সেগুলি যা রয়েছে তা ছোট ছোট আইসক্রিমের বাক্সের মত কন্টেইনারে ঢেলে বড় ট্রেগুলি সব সিংকে জমা হচ্ছে।

৬৫।
এসে কি করতে হবে সব ভুলে গেছেন। মনের যে অবস্থা আর এইমাত্র যে খুকুর দেয়া পেয়ালা রেখে এসেছেন তাতে আর কীইবা মনে থাকবে? সমস্ত কিচেনে ঘুরঘুর করতে লাগলেন কি করি, কি করি? আচ্ছা অন্তত ইফতারের ঝামেলা গুলি ধুয়ে রাখি এর মধ্যে কবির এলে ওর

৬৪।
আবার নিচে এসে চা পর্ব সেরে উপরে এসে এবারে একটা সিগারেট বানিয়ে বিছানায় কাত হলেন।
মেয়েরা কি করছে? নিশ্চয়ই বাবার কথা মনে করছে। মনি আজ কি ইফতার বানিয়েছিলো? নাকি মনিকে আজ মেয়েরা রান্না ঘড়ে ঢুকতে দেয়নি? এতো লম্বা জার্নি করে গেছে। ধকল তো কম না।

৬৩।
রাশেদ সাহেব উপরে এসে যোহর আসর দুই ওয়াক্তের নামাজ পড়েই বিছানায় গড়িয়ে পরলেন। ক্লান্ত লাগছে। বিছানার সামনে দেয়াল ঘড়িতে দেখলেন তিনটা দশ। কখন যে চোখ বন্ধ হয়ে এসেছে, ঘুম ভাঙল নুরুল ইসলামের ডাকে।
-কি ভাই সাহেব ইফতার করবেন না? উঠেন উঠেন সময় নাই।
লাফ দিয়ে উঠে

৬১।
যাক, আল্লাহর রহমতে মনি ঠিকভাবে পৌঁছেছে। আলহামদুলিল্লাহ! এসে জানালার পাশে দাঁড়ালো। কাল রাতে যেখানে এতো হৈ চৈ ছিলো এখন সেখানে নীরব। কেও নেই। রাস্তা দিয়ে দুই একটা গাড়ি যাচ্ছে এই শুধু। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখল আকাশ মেঘে ঢাকা। কিন্তু বৃষ্টি নেই রাস্তায় লোকজন নেই

৬০।
সকালে নয়টার দিকে ঘুম ভাঙলেও উঠি উঠি করে আবার ঘুমিয়ে পরেছেন। প্রায় ঘণ্টা খানিক পর ঘড়ির দিকে তাকিয়েই লাফ দিয়ে উঠে পরলেন ফজরের নামাজ পড়ার জন্য। নামাজ পড়ে মনে হলো এখন দেশে কয়টা বাজে? হ্যাঁ এখন দুপুর একটা। ফোন করা দরকার। কার্ডটা নিয়ে ফোনের

৫৮।
হাতের কাপটা নিয়ে বাইরে থেকে শব্দ আসা জানালার পাশে দাঁড়ালেন। তখন দিনের বেলা যে পাব দেখেছিলেন সেই পাবের সামনে মহিলা পুরুষ মিলে দশ বারোজন। এর মধ্যে আবার কেও ভিতরে যাচ্ছে কেও বাইরে আসছে। এদেরই হৈ চৈ। পাবের ভিতর উচ্চ শব্দের বাজনাও শোনা যাচ্ছে। কাল

৫৭।
রাশেদ সাহেব উপরে এসে নিজের বিছানায় বসলেন সারা দিনে নামাজ পড়া হয়নি। তাড়াতাড়ি বাথরুমে গিয়ে ওজু করে রুমে আসতে আসতে পানি শুকিয়ে গেছে আর তোয়ালে বের করার দরকার নেই। কিন্তু জায়নামাজটা মনে হয় বের করতে হবে। একটু এদিক ওদিক তাকাতেই চেয়ারের উপর দেখলেন জায়নামাজ।

৫৬।
এই হলো অবস্থা। এর পর আর কিছু বলার প্রবৃত্তি হয়নি। দেখা যাক ধীরে ধীরে যদি কিছু বোঝা যায়, যাবেই এক সময়। কাজের যে চাপ, যে অবস্থা তাতে বাংলাদেশ হলে অন্তত আরও চার জন লোক প্রয়োজন হতো। তাছাড়া আজ একেবারে ভিড়ের মধ্যে এসে পরেছে। কেও

৫৫।
সবাই রাশেদ সাহেবকে নিয়ে মোটামুটি হাসি তামাশা হৈ চৈ গালা গালি যার যখন যা ইচ্ছা চালিয়ে যাচ্ছিল কিন্তু রাশেদ সাহেব কোন প্রতিবাদ করছে না। আরে এইটা করতে এতক্ষণ লাগে নাকি, ওইটা কোথায় থাকে জানেন না, একটু দেখে নিলেই তো হয়, হা করে কি দেখেন