৬৮।
সকালে সাড়ে দশটার দিকে ঘুম ভাংল, তারপরেও কিছুক্ষণ চুপচাপ শুয়ে রইলেন। ভাল ঘুম হয়েছে কিন্তু তবুও কেন যেন মাথা ঝিম ঝিম করছে। উঠে ওযু করে এসে নামাজ পড়ে ভাবছিলেন কি করবেন তারতো কোথাও যাবার জায়গা নেই। সবাই ঘুমে, এক জানালা ছাড়া আর কোথায় যাবেন? পিছনে একটু হাঁটা যায় কিন্তু ভীষণ ঠাণ্ডা। জানালার পাশে এসেই দাঁড়ালেন। চেয়ারটা এনে কি বসা যায়? চেয়ার টেনে এনে বসলেন, না দাঁড়ানই ভাল বসলে কিছু দেখা যায়না। কীইবা আর দেখবেন দুই এক জন যাতায়াত করছে মাঝেমাঝে গাড়ি আর খোলা আকাশ আর কিচ্ছু নেই। প্রথম দিনের দেখা দোকান গুলিতে কোন মানুষ ঢুকতে বা বের হতে দেখা গেল না এখনও। এগুলি কি বন্ধ নাকি? মানুষই দেখা যায়না তা আর দোকানে আসবে কে? বাইরে বের হতে পারলে আশে পাশে একটু ঘুরে দেখা যেত, কিন্তু বাইরে বের হলে ঢুকবে কিভাবে? চাবির ব্যাপার আছে, থাক পরে সব কিছু জেনে শুনে তখন বেরুনো যাবে। পাবটার গেটের সামনে তাকাল, বন্ধ। অবশ্য এদেশের সব দরজাই শীতের জন্যে বন্ধ থাকে। দরজার সামনে ওপেন/ক্লোজ সাইন দেখে বুঝতে হয় দোকান খোলা না বন্ধ। এখন বন্ধ তাহলে খুলবে কখন? হয়তো সন্ধ্যায় যখন উল্লাস করার জন্য সবাই ছুটে আসবে। আজ রবিবার, আজতো ছুটির দিন শহর বন্ধ থাকার কথা। হ্যাঁ মনে পরেছে এই জন্যেই রাস্তায় মনুষ্য নেই।
খুকু কি করছে, মাঝু কি কলেজে গিয়েছিলো, আর যূথী? যূথীটা যে কেমন শুধু ক্লাস কামাই করার চিন্তা! কবে যে ও বড় হবে? হোক আস্তে আস্তেই হোক। ওর ছোট চাচাও এই রকম ছিলো। মনি কি করছে এখন? এখন দেশে বিকেল পাঁচটা বাজে, হয়তো বিকেলের চা নাস্তা বানাচ্ছে, নিয়ে ছাদে যাবে নয়তো নামাজ পড়ছে। সামনের দোকানের সারির ছাদের চূড়ার দিকে তাকিয়ে রয়েছে রাশেদ সাহেব। যেন মনিকে, যূথীকে, মাঝুকে, খুকুকে সবাইকেই দেখতে পাচ্ছে ওখানে। নীচে কোথায় যেন টেলিফোনের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। অনেকক্ষণ কান পেতে শোনার চেষ্টা করলেন। হ্যাঁ রেস্টুরেন্টের ভিতরেই বাজছে। ওরা কি রেস্টুরেন্টের সময়সূচী জানে না নাকি মনে করেছে সারা দিন রাত খোলা থাকে? রেস্টুরেন্ট এখন বন্ধ কে ধরবে? কত কি মনে আসছে যাচ্ছে কোনটাই স্থায়ী হচ্ছে না। এলো মেলো হালকা মেঘের মত এখান থেকে ওখানে কোথায় ছুটে বেড়াচ্ছে! আসার আগে ঈদের জন্যে কিছু কেনাকাটা করে দিয়ে আসেনি। মেয়েরা তা মেনে নিয়েছে কিচ্ছু বলেনি। সবারই এক কথা তুমি আগে ঠিক হও তখন দেখা যাবে। ঈদের দিন নতুন কাপর না পরলে কি হয়? যারা সারা বৎসরে একটা কাপর পায়না তাদের দিন যায়না? আমাদের কিছু লাগবে না। আমার লক্ষ্মী সোনা মনি বলে তিন মেয়েকেই বুকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। চোখ ভিজে গিয়েছিলো। ছোট মেয়ে যূথী হাত ছাড়িয়ে বলেছিলো আব্বু আমি তোমার জন্যে চা নিয়ে আসি। মাঝু আর খুকু বললো তুমি এতো চিন্তা করবেনাতো আব্বু। দেখবে একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। মনিকে বলেছিলো তুমি কি যেয়ে ঈদে মেয়েদের কিছু কিনে দিতে পারবে? না আমার মনে হয় তার দরকার হবে না। তার চেয়ে টাকাটা থাকলে কখন কি হয় কাজে লাগতে পারে। ঠিক আছে যা ভাল মনে কর তাই করবে। সংসারের হিসাব নিকাশ সবসময় মনিই দেখে আসছে। রাশেদ সাহেবের মাথায় এগুলি ভালো কাজ করেনা।
loading...
loading...
অসাধারণ!
শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা জানালাম প্রিয় দাদু ভাই
loading...
বেলি শুভেচ্ছা।
loading...
শুভেচ্ছা প্রিয় বন্ধু।
loading...